নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমিও একদিন লাশ হব, সেই লাশ মাটির নিচে থেকে রোদ বৃষ্টিতে ভিজে অংগার হবে। বৃষ্টি ভিজা কাদায় শরীর ভিজে যাবে, শুধু অনুভবে নিথর লাশ হয়ে রয়ে যাব শেষ বিচারের অপেক্ষায়.......

ফেনা

মুক্ত ও সাদা মনের মানুষ হতে আগে চাইতাম। এখন আর চাই না। এখন একটু মুক্তি চাই, চাই জীবনটা শেষ হবে এই অপেক্ষার অবসান। [ মৃত্যুটা খুব স্বাভাবিক; বেঁচে থাকাটা অস্বাভাবিক।]

ফেনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোট গল্পঃ মা তোমার কোলে ঘুমাব

২৯ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:০১

মন খারাপ করে তিতাসের পাড়ে বসে আছে ইমতিয়াজ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেরি না করে বাসায় চলে আসে, তাহলে অন্তত দু’টা দিন বেশি থাকা যাবে মা’র কাছে। ছোট মাত্রায় অনেক বড় আসা। কিন্তু মার কাছে তার শান্তিটা পাওয়া হয়ে উঠেনা। ইমতিয়াজের বাবা ওর কাছে তিন লক্ষ টাকা রেখেছিলেন। ভেবেছিলেন ঢাকাতে যেহেতু ছোট দুই ছেলে পড়ালেখা করে, তাদের সেমিষ্টার ফি ও অন্যান্য কিছু খরচ বাবদ ব্যবহার করবেন। কিন্তু ইমতিয়াজের ভাবনায় ঢুকে পড়ে একটা মস্ত ভূল ভাবনা। কিছু লোকের কথায় সে ঐ টাকা বাবা-মাকে না বলে একটা ব্যবসায় বিনিয়োগ করে বসে। ভাবে ছোটদের সেমিষ্টার ফি দিতে আরো ছয় মাস আছে। এর মধ্যে কোন একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে। নিজেরও প্রতিষ্ঠা পাওয়ার একটা পথও তৈরি হয়ে যাবে। কিন্তু ভূল তো ভূলই। কথায় আছে না- লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। আবার তারা-তারির কোন কাজ ভাল নয়। ঠিক এমনটায় হল। তার টাকাগুলু আটকে যায়। প্রতিষ্ঠানটা সরকারি বিভিন্ন ঝামেলায় পড়ে ধ্বংসের পথে। টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটায় মিলিয়ে যায়।
এই সবের জের ধরে ইমতিয়াজের বাবা ওর সাথে প্রায়ই রাগারাগি করেন। এবার ঈদে বাসায় আসার পর একটু বেশিই করে ফেলেছেন। গত রাতে ইমতিয়াজ খেতে পর্যন্ত পারেনি। সকালে ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরি হওয়াতে ওর বাবা এসে যাতা গালাগালি করে অফিসে চলে যান। প্রচন্ড মন খারাপ হয় ইমতিয়াজের। নদীর পাড়ে এসে গোপনে নিভৃতে কাঁদতে থাকে।
এখন আর কোন কিছু ভাল লাগে না। প্রতিনিয়তই মনে হয় মরে যায়। কিন্তু পারে না। মাকে এত বেশি ভালবাসে; এটা আসলে ব্যাখ্যা করা যায় না। কোন কিছু করতে গেলেই মার কথা আগে মনে হয়। শুধু ঐ কাজটাই মাকে না বলে করা। আর তাই এখন সম্পূর্ণ পৃথিবীটা অনর্থক মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে জীবনটা হল একটা ভাসমান কচুরি পানা। যার ভাসতে ভাসতে জীবন কাটে, শেষ হয় পচেঁ।
সারা দিন বাসায় যাওয়া হয়নি, খাওয়াও হয়নি। ফলে সন্ধায় বাসায় ফিরার পর ইমতিয়াজ দেখে মা কাদঁছে। ভাত নিয়ে টেবিলে বসা। সেও খায়নি। ঘরে ঢুকতেই মা ওকে টেনে নিয়ে খেতে বসালেন। নিজের হাতে খেতে নিলে মা ওকে না দিয়ে নিজে খাওয়াতে শুরু করলেন। কিন্তু খাওয়াটা আর শেষ করা যায়নি। ঐ দিক থেকে বাবা চেচিয়ে বলতে লাগলেন- ” গাধাটাকে খাইয়ে লাভ কি? এর চেয়ে যদি একটা কুত্তা পালতাম অনেক বেশি ভাল হত। যা বলতাম তাই শুনত। এইডা তো কুত্তা থেকে অধম।” গলা দিয়ে ভাত আর নামে না ইমতিয়াজের। চোখ দিয়ে দর দর করে পানি পরতে থাকে।
সকালে বাবা মাকে বলছে- ” গাধাটাকে বলিও বিদেশে চলে যেতে। সব ঠিক করে দিতেছি। যা টাকা লাগে দিমুনে। দান মনে করেই দিমু। ফেরত দেওয়া লাগব না। এর বদলে যদি কিছু কামায় করতে পারে। অর পিছে যা খরচ করছি তার কিছুটা উছুল হইব। যা খরচ করছি তা দিয়া আলিশান দু’টা বাড়ী করতে পারতাম।” এই কথা বলে অফিসে চলে যায়। কষ্টে ইমতিয়াজের বুকটা মোচর দিয়ে উঠে। কারণ মাকে ছেড়ে সে কখনো দূরে থাকে পারে না। ঢাকাতেই থাকতে ওর অনেক কষ্ট হয়। সময় পেলেই চলে আসে। এর আগে অনেক বার বিদেশে যাওয়ার সব ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু মাকে ছেড়ে যেতে হবে তাই নাকচ করে দিয়েছে। আর আজ নিজে মাকে গিয়ে বলে-” মা, মাগো আমি বিদেশ যাব।” এই কথা বলতেই চোখে পানি এসে যায়। চোখের পানি মুছতে মুছতে আবার বলে-” বাবাকে বলিও দান হিসাবে যদি দেয় তবে চিলে যাব। যে দেশেই হোক চলে যাব।”
যারা বিদেশে যাওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করে, তাদের অনেক কষ্ট হয়, অনেক সময় লাগে। এমন কি মাসের পর মাস, অনেক সময় বছর ও ফুরিয়ে যায়। আর ইমতিয়াজের মাসও ঘুরেনি। সব ব্যবস্থা হয়ে গেল। রাতে আর ঘুম আসে না। বুক ভেঙ্গে কাঁন্না আসে। মাকে ছেড়ে যেতে চাইছে না মন। বার বার কেন যেন মনে হচ্ছে মৃত্যু বুঝি খুব কাছে চলে এল ইমতিয়াজের।
আগামীকাল ফ্লাইট। সব গুছিয়ে নিচ্ছে ইমতিয়াজ। মা-বোন সবাই কাদঁছে। কিন্তু ইমতিয়াজ নির্বিকার। যেন একটা রোবট। কোন অনুভুতি নাই। চোখে পানিও নাই। কেমন যেন হয়ে গেছে।
রাতের বেলায় সবাই যখন ঘুমানুর চেষ্টা করছে ইমতিয়াজ তখন বারান্দায়। এক দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা খুঁজছে। আর ভাবছে, ইউরোপের আকাশ কি এই রকই, ও খানে কি মা আছে?? এই সব প্রশ্নের সাথে শুধু মনে হচ্ছে সে বুঝি আর বাচঁবে না। পরের দিন দুপুরে সবার কাছ থেকে অদ্ভুত এক নির্বিকার বিদায় নেয় ইমতিয়াজ। শুধু মার সামনে গিয়ে বলে-” মা, তুমি যদি আমাকে ভালবাস তা হলে নিজের যত্ন নিও। আর আমার জন্য একটা দোয়াই করিও , আমি যেন মরার আগে তোমার কোলে ফিরে আস্তে পারি। আমার শান্তির ঘুমটা যেন তোমার কোলে হয়।” মাকে আর ধরে রাখা যায়নি। হাউ-মাউ করে কাদতে শুরু করে। ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বলতে থাকে-” আমার ছেলেকে কোথাও যেতে দিব না। আমার ছেলেকে কোথাও যেতে দিব না।” কিন্তু ইমতিয়াজ মাকে ছাড়িয়ে সামনে যেতে থাকে। পিছনে মার কান্নার আওয়াজ কানে এসে বারি খায়। প্রতি বারই মাথাটা ঝিম ঝিম করে উঠে।
বড় একটা প্লেন ইমতিয়াজকে নিয়ে আকাসে উড়াল দেয় নতুন এক অজানা ঠিকানায়।
বিদেশের মাটিতে পা রাখতেই ইমতিয়াজ কেমন একটা ঘোরের মাঝে পড়ে যায়। গাড়িতে করে যাওয়ার সময় হঠাত লাফিয়ে উঠে বলতে থাকে- “আমি যাব না, আমি মার কাছে যাব।“ আশেপাশের মানুষগুলো অদ্ভুত এক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকে ইমতিয়াজের দিকে।
হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের কাজ দিয়ে নতুন জীবনের শুরু হল। কিন্তু ইমতিয়াজ ভেবেছিল পরিশ্রম করতে হবে তবে এতটা তা তার চিন্তার বাইরে। কাজটা পাথর ভাঙ্গার কারখানায়। মাসে তিনশ ডলার। মানে বাংলাদেশের টাকায় প্রায় চব্বিশ হাজার টাকা। এত পরিশ্রম করে এই বেতনে কিভাবে টিকে থাকবে তা ভাবতে ভাবতে একজন এসে ওকে বলল যে তুমি কি রাতের বেলায় পরিষ্কারের কাজ করতে পারবে? মাসে দুইশ ডলার পাবে। সে এক প্রকার লাফিয়ে উঠে বলল, জি আমি পারব। শুরু হল দিন রাত কাজ। টাকার জন্য। রাতে শুধু তিন থেকে চার ঘন্টা ঘুমানো জন্য পায়।
থাকা-খাওয়া ফ্রি বাবদ কাজ শেষে যেখানে থাকে সেখানের সব কাজ করতে হয়। ফলে এক অমানবিক জীবন চলতে থাকতে ইমতিয়াজের। মাঝে মাঝে শরীর আর চলতে চায় না। কিন্তু মার কান্না আর বাবার বকা, তিরস্কার ও অবহেলা মনে হলে তখন মনটা ভেঙ্গে যায়। কেমন যেন পাথর ভাঙ্গার মত আওয়াজ করে বুকটা ভেঙ্গে যায়।
এইদিকে মার শরীরটা দিন দিন খারাপ হতে থাকে। ডাক্তারী সব পরীক্ষার পর বুঝা গেল মার ব্রেন টিউমার হয়েছে। আবল তাবল বলা, খাওয়া দাওয়া না করা সব মিলিয়ে বাড়িতে এক কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আবার মা কারো সাথে কথা বার্তাও ইদানিং বলে না। শুধু ইমতিয়াজ ইমতিয়াজ বলে কেদে উঠে। স্বপ্ন দেখে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠা এখন এক প্রকার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। মার এই খারাপ অবস্থা বাবা বোন কেউই ইমতিয়াজকে জানানি। জানালে আবার না কিছু করে বসে। একবার দেশে ইমতিয়াজ ফোন দেয় তখন তাকে বলা হয় মা সহ বাসার সবাই ভাল আছে। মা সাথে কথা বলতে চাইলে- বোন তখন বাবার দিকে তাকায়, বাবা তখন বলে যে, ফোনে অত কথা কইয়া টাকা খরচ না করে টাকা দেশে পাঠাতে বল। আমার টাকা কি বলদের পুটকি দিয়া পড়ে!!
হঠাত করে ইমতিয়াজে পাথর ভাঙ্গার কাজটা চলে যায়। তাতেই মনে হয় ইমতিয়াজের ভাগ্যের পরিবর্তন আসে। নতুন একটা কাজের অফার পায়। নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ, বেতনও ভাল। কিন্তু তাতে কিছু শর্ত থাকে। যা ইমতিয়াজের জন্য অনেক কঠিন। একটা জাহাজে কাজ করতে হবে। বেতন এক হাজার ডলার। কিন্তু কয়েক মাস পর্যন্ত দেশে যোগাযোগ করা যাবে না। কোন প্রকার সুযোগ সুবিধা নাই। ইমতিয়াজের মনে পড়ে মা বোনের কথা সাথে বাবার তিরস্কার। তার প্রতি বাবার টাকা নিয়ে তিরস্কার সব সর্ত মেনে নিতে বাধ্য করে। দুই তিন দিন পর জাহাজে চলে যায়। দেশের সাথে তার যোগাযোগ বন্ধ। এ দিকে মার অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে। মাকে হাস্পাতালে ভর্তি করা হয়। ছোট বোনটা ভাইকে কাদতে কাদতে ফোন করে, আর আপন মনে বির বির করে বলতে থাকে ভাইয়া তুমি চলে আস। কিন্তু ইমতিয়াজের ফোন বন্ধ। ওকে আর খবর দেওয়া গেলনা। বেশ কিছু দিন পর মা ইমতিয়াজ ইমতিয়াজ করতে করতে হাসপাতালেই ছটফট করতে থাকে। এক দিন খুব ভোরে মার অবস্থা বেশি খারাপ হয়ে গেল, সবাই আল্লাহকে ডাকছি।
দুইদিন পর মাকে আইসিইউ থেকে বের করে আনা হল। কিন্তু সুস্থ না, নিরব মা, লাশ মা। সবাই একেবারে নিরব। কারো চোখে পানি নেই। কেউ কাদছে না। সবাই যেন একেক জন একেকটা পাথর।
দাফন শেষ করে সবাই ফিরে গেছে। বোনটা চেচিয়ে চেচিয়ে বিলাপ করছে। আর বলছে- আমার আম্মারে আইনা দাও, ও আম্মা গো তুমি কই গেলা গো। ও ভাই গো আম্মা মইরা গেছেগা। তুমি দেখলা না। এইভাবে কাদতে কাদতে অজ্ঞান হয়ে যায়। আবার জ্ঞান ফিরে এলে- আমার মা নাই, আমার ভাই নাই। সব মইরা গেছে। বলেই চেচাতে থাকে।
তখন ইমতিয়াজের বাবার এক বন্ধু ওর বাবারে বলে ইমতিয়াজ আসলনা কেন? তখন ওর বাবা বলে – ওর তো গত তিন চার মাস ধরে কোন খবর নাই। খবর নেওয়ার অনেক চেষ্টা করছি। লাভ হয় নাই।
ইমতিয়াজ জাহাজ থেকে ফিরে তার আগের বাসায় আসে। এখন হাতে জোন কাজ নাই। কিন্তু সারাক্ষই অস্থির থাকে। মনটা খালি আনচান করে। বাসায় অনেক বার ফোন দিছে, কেউ ফোন ধরে না। মনের মাঝে কেমন যেন একটা শুন্যতা বারি খায়। বুকটা মার জন্য খালি খালি লাগে। বুঝতে পারে নিশ্চয় মার কিছু হয়ছে। আর কোন ভাবানা নাই। দেশে চলে আসার জন্য প্রস্তুতি নেয় । ইমতিয়াজ সন্ধ্যায় বাংলাদেশ এয়ারপোট এ নামে। বাসায় অনেক বার কল দিয়েছে কিন্তু একটা কলও কেউ রিসিভ করেনি।
বাসার দিকে যতই এগিয়ে যা্চছে ইমতিয়াজ ততই বুকে হার্টবিট এর আওয়াজ বেরে যাচছে। গাড়িতে বসেই এক অজানা কারণে ঘাচছে। মাঝে মাঝে মনে হচছে হার্টবিট এর আওয়াজ কানে ঢোল পিটানোর আওয়াজের মত জোরে আসছে।
বাসার সামনে দাঁড়িয়ে কনিং বেল এ হাত রাখতেই ইমতিয়াজের সারা শরীর কাপছে।
বেল বাজতেই ছোট বোনটা দজাটা খুলে ওকে দেখেই জড়িয়ে ধরে হওমাও করে কাদতে থাকে। আর বলতে থাকে- ভাইয়া মা নাই। ইমতিয়াজ পাথর হয়ে যায়। দুই চোখ দিয়ে দর দর করে পানি ঝরতে থাকে কিন্তু কোন আওয়াজ বের হয়না। বোনের কান্না দেখে আর থাকতে পারে না। ‘আম্মা’ বলে জোড়ে এক ডাক দিয়ে মাটিতে বসে পড়ে। দুই ভাই-বোনের অঘোরে কান্না দেখে আশে পাশের মানুষ জড়ো হয়ে যায়। মার জন্য ভাই-বোনের কান্না দেখে প্রতিবেশিরা স্তব্ধ হয়ে যায়। দাড়িয়ে থাকে নির্বিকার।
এই রাতেই ইমতিয়াজ মার কবরে যায়। মার কবরের পাশে বসে কাদতে থাকে। আর বলতে থাকে- মা আমি ফিরা আইছি তো। তুমি উঠ। তুমি আমারে ভালবাসনা? মা ও মা, আমি বিদেশ যাওয়ার সময় বলছিলাম না, আমি ফিরা আইসা তুমার কোলে ঘুমাব। আমার শান্তির ঘুমটা তুমার কোলে ঘুমাব। মা উঠ, জলদি উঠ। তোমার ইমতিয়াজ ফিরা আইছে। আমি ঘুমাব। আমি তোমার কোলে ঘুমাব। এই বলে ইমতিয়াজ মার কবরের উপর নিঃচুপ শুয়ে থাকে।
সারা রাত ইমতিয়াজ আর বাসায় ফিরেনি। সকালে সবাই খুজত থাকে। বাবা বোন ভাই সহ আন্তীয় সজন সবাই চার পাশে অনেক খুজে, কোথাও পাওয়া যায়নি।
ছোট বো্নটা কাদতে কাদতে মার কবরের দিকে যায়। কিছুটা দুর থেকেই দেখতে পায় মার কবরের উপর শুয়ে আছে ইমতিয়াজ। একে একে সবাই ডাকে। কিন্তু ইমতিয়াজ যে ঘুম থেকে উঠেনা। এ যে চিরস্থায়ী ঘুম। জেগে উঠবার নয়।
দুইটা কষ্ট লাশের ইমারতের উপর বোনটা অঝোরে কাদতে থাকে।
বাবা আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না। বুকের ভিতরে জমে থাকা কষ্টের পাথর ফেটে নোনা জলের ঝরনা বেরিয়ে এল।
চির দিনের মত নিরব হয়ে যাওয়া মার কোলেই ইমতিয়াজ তার শান্তির ঘুম ঘুমিয়ে গেল। শোকে পথর করে দিয়ে গেল একটা পরিবারকে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: দূর মিয়া এত কষ্টের গল্প কেউ লিখে?
মনটা দিলেন খারাপ করে।

২৯ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:১৫

ফেনা বলেছেন: গল্পটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

ভাল থাকবেন।

২| ২৯ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:১৩

কথার ফুলঝুরি! বলেছেন: খুবই খারাপ লাগল গল্প টা পরে। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এমন অনেক কাহিনী আছে আমাদের আসে পাশে। বাবা মা সবাইকে রেখে দূরে গিয়ে পড়াশোনা এবং বিদেশে গিয়ে কষ্টের চাকরী ও দেশে বাবা মা এর আশা সবকিছু মিলিয়ে একটা ছেলের জীবন আসলেই অনেক কঠিন। কঠিন বাস্তবতা। ভাল লিখেছেন ভাইয়া

২৯ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:১৯

ফেনা বলেছেন: ধন্যবাদ কষ্ট করে আমার লেখা গল্পটা পড়ার জন্য।

ভালথাকবেন সতত।

৩| ২৯ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩২

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: প্রবাসীদের জীবনে এমন অনেক কষ্টের ঘটনা হয়। আমার নানা ও নানী মারা গিয়েছিলেন ১ বছরের ব্যবধানে। তখন আমার মামা ছিলেন প্রবাসী। বাবা মা কাউকেই তিনি ফেরত পাননি প্রবাস জীবনের কারণে...

৩০ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৯

ফেনা বলেছেন: দীল ছেড়া কষ্ট নিজেরটা শুধু নিজেই অনুভব করা যায় অন্যকে বঝানে যায় না।
এইটাই বাস্তবতা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.