নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্ত ও সাদা মনের মানুষ হতে আগে চাইতাম। এখন আর চাই না। এখন একটু মুক্তি চাই, চাই জীবনটা শেষ হবে এই অপেক্ষার অবসান। [ মৃত্যুটা খুব স্বাভাবিক; বেঁচে থাকাটা অস্বাভাবিক।]
ছবিঃ গুগল মামা দিয়েছে।
আমই আজকাল অনেকটাই মিসির আলি হয়ে গেছি। আমার কাছে প্রায়ই মনে হয়ে আমার নিজের মাঝে কিছু পরিবর্তন বা অতি প্রাকৃতিক বিষয় তৈরি হচ্ছে তা হুমায়ুন আহমেদের সেই মিসির আলি থেকে কম কিছু নয়। বরং মাঝে মাঝে আমার কাছে সেই মিসির আলি থেকেও অনেক বেশি মনে হয়।
একবার আমি আমাদের গ্রামের বাডিতে গেলাম। অনেক দিন পর আসাতে নিজের মাঝেই বেশ অনেক আনন্দবোধ করছিলাম। কিছুটা সময় রেষ্ট নিয়ে ঘর থেকে বের হলাম। বাড়ির চারপাসাটা ঘুড়ে দেখছি। আমাদের বাড়ির দক্ষিন উত্তর কোনার দিকে একটা ছোট আম গাছ আছে। যা অনেক বেশি ছোট গাছ। কিছু মজার বিষয় হল এই গাছটাতেই বেশ অনেক আম ধরে আছে। কাচা পাকা আম জিভে জল আশার মত।
যাই হোক বিকালে দাদা বাজার থেকে আসলেন। দাদাকে দেখে আমি একটু এগিয়ে গেলাম। সামনে গিয়ে দাদাকে বললাম দাদা অই গাছ থেকে কয়েকটা আম পেড়ে খাই। কিন্তু দাদা কিছু টা রাগ দেখিয়ে বললেন না না এই গাছের আম খাওয়া যাবে না। পাকলে আমি এই আম্রে বীজ করব। এই কথা শুনে মনটাই খারাপ হয়ে গেল। আমি পরক্ষণেই বললাম যা, দাদা খেলে এই আম আজই খান। নাহলে আফসোস থেকে যাবে। এই আমের মেয়েদ আজ মাঝ রাত পর্যন্তই। যাই হোক দাদা আমার কথায় পাত্তা দিলেন না। ভেবেছিলাম কিছুটা ভয় পেয়ে এক দুইটা আম বুঝি পেড়ে দিবেন। গুলি কাজ করল না।
আমি দাদার সাথে ঘুরাঘুরি করতে লাগলাম। রাতে খেয়ে আমি আজ দাদার সাথেই ঘুমাতে গেলাম। লম্বা একটা জার্নি করার কারণে রাতে আর ঘুম ভাংগেনি। এক ঘুমেই রাত কাবার। কিন্তু সকালে কিছুটা হৈচৈ শুনে ঘুম থেকে উঠলাম। জানালা দিয়ে বাহিরে উকি দিতেই দেখি বেশ কয়েকজন মানুষের জটলা। ঘটনা কি!!!
বিছানা থেকে উঠে বাহিরে বেরিয়ে এলাম। বারান্দায় দাদা মন খারাপ করে বসে আছে। কি হয়ছে জিজ্ঞাসা করতেই ছোট চাচী কইল- ছোট চারা গাছটার আম সব আম রাতে চোরে লইয়া গেছে গা। এমনি দাদা বলতে লাগল যে আমার নাতিটা আমিডি খাইতে চাইছিল। আমি দিছি না। হে আমারে একবার কইছিলও যে আমডি থাকত না। খাইলে খাও না হলে আফসোস থাকব। আমি হের কথা হুনছি না।
তার বেশ কিছু দিন পর আম্বার আমরা পরিবারের সবাই বাড়ি গেলাম। বাড়িতে দেন দরবার। দাদা তার ছেলে মেয়েদের সয়-সম্পদ ভাগ করে দিচ্ছেন। যে দিন গেলাম তার পরের দিন দরবার বসল। অনেকটা থম থমে পরিবেশ। আমি কিছুটা দূরে দাড়িয়ে সব দেখছি আর শুনছি। সারা সকাল গেল দুপুর হল। বেশির ভাগ সম্পদ ভাগ শেষ। এখন চলছে দুপুরের খাওয়া পর্ব। আমি তাদের সাথে খেতে বসলাম। খেতে খেতে এক মুরুব্বী আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে নাতি কি বুঝলা…… খুশি হয়তাছনি? আমি উত্তরে বললাম যে আসলে দাদা এই পর্যন্ত যা হলে তাতে আমার কোন ইন্টারেষ্ট নেই। আমার আগ্রহ হল দাদার যে ঐ গরুটা, ঐটা কাকে দিবে?? সেইটাই এখকন দেখার বিষয়। তা নাতি তোমার মতে কাকে দেওয়া উচিৎ বলে মনে হয়?? আসলে দাদা আমার মনে বলেন বা ইচ্ছা বলে তা হল এই গরুটা ছোট কাকাকে দেওয়া উচিৎ।
আর কোন কথা না বলে আমি উঠে গেলাম। হাত ধুয়ে বাহিরে ঘুড়ছি। অপেক্ষায় আছি আবার কখন দরবার শুরু হবে।
সবাই নামাজ থেকে এসে আবার বসেছে। একে একে সব শেষ। এবার গরুর কথা উঠতেই মেঝ চাচা বলে উঠলেন যে গরুটা যেন তাকে দেওয়া হয়। দাদা আর তাতে দ্বী-মত করলেন না। দিয়ে দিলেন। এই বিষয়ে কেউই কিছু কইল না। হঠাত আমি বলে উঠলাম। দাদা এইটা ঠিক হচ্ছে না। গরু ছোটকাকাকে দেওয়া উচিৎ। না হলে গরুও মাস তিনেকের মাঝেই মারা যাব। পরে কিন্তু আফসোস কইরেন না।
কিন্তু কেউওই আমার কথা কর্ণপাত করল না। সব শেষ। যার যার মত চলে গেল।
আমরা সবাই আরো দুই তিন দিন গ্রামের বাড়িতে বেড়ালাম। তারপর যথারীতি চলে গেলাম ঠিকানায় যে খানে বাবা চাকুরী করেন।
দিন যায় মাস যায় এই ভাবে প্রায় তিন মাস তিন দিন হয়ে গেল। এমনি এক দুপুরে অফিস থেকে এসে বাবা দুপুরের খাবার খেতে বসলেন মাত্র। বাবার মোবাইল ফোন বেজে উঠল। বাবা হ্যালো বলতেই ঐ পাশ থেকে মেঝ কাকা বলতে লাগলেন- বাইছা আব্বা যে গরুটা আমারে দিল ওইডা আজকা ভোর রাইতে মইরা গেছে। গরুডা আমার হইছে না।
আর তেমন কিছু না বলে হঠাত করেই ফোনটা কেটে দিল।
দীর্ঘ বছর দুই পর হঠাত একদিন-
দাদা আমাদের বাসায় আসলেন। থাকবেন বেশ কয়েক দিন। তেমনি এক বিকাল বেলায় দাদা আমাকে ডাকলেন। তার মনটা মনে হল কিছুটা বিষণ্য। কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম- দাদা কি হয়ছে? মন খারাপ কেন? দাদা বললেন মন খারাপ না। কিছুটা চিন্তা করতেছি। তোর সাথে পরামর্শ করি। তুই ত আমার দরবেশ শাহ্। যা কর তা সত্যি হয়ে যায়। বলেই হাসলেন।
ঠিক তখন থেকেই আমি নিজের মাঝে আলাদা কিছু অনুভব করতে লাগলাম। আসলেই কি আমি মিসির আলীর মত হয়ে যাচ্ছি। আমি আমাতে আমিত্ত্ব খুজেঁ পাচ্ছি!!!!
২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১২
ফেনা বলেছেন: পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনাকে। ভাল থাকবেন সতত।
২| ২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৬
বিজন রয় বলেছেন: আপনি কেমন আছেন? অনেক দিন পর আপনার এখানে আসলাম। আপনি তবুও তো কিছু পোস্ট নিয়ে ব্লগে আসেন, আমি অনেক দিন থেকে অনিয়মিত। চেষ্টা করছি কিছু সময় ব্লগে দেওয়ার জন্য।
আপনি আমার কবিতা সংকলন পোস্টগুলোর নিয়মিত পাঠক ছিলেন।
আপনার প্রয়ি পোস্ট সংকলনে সে পোস্টগুলোর কয়েকটা এখনো বিদ্যমান।
অনেক অনেক শুভকামনা।
২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:১৬
ফেনা বলেছেন: কেমন আছেন আপনি?
আমিও এখন অনেক ব্যস্ত। অফিসের কাজের ফাকে ফাকে মাঝে মাঝে চেষ্টা করি একটু ঢু মারতে।
যাইহোক পড়ার জন্য এবং মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৩| ২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি আপনাকে যা ভাবেন আপনি তাই।
২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:১৭
ফেনা বলেছেন: ঠিক তাই। অনেক ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য এবং সুন্দর ও গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য।
ভাল থাকবেন সতত।
৪| ২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:২৮
শায়মা বলেছেন: বাহ নতুন মিসির আলীর গল্প!
২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৩৫
ফেনা বলেছেন: কেমন আছেন?
পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভাল থাকবেন।
৫| ২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৪৯
কামাল১৮ বলেছেন: আমরা হাজারটা কথা বলি সেই সব কথা মনে রাখি না।ঘটনাক্রমে কোন কথা মিলে গেলে সেটা মনে রাখি এবং প্রচার করি।এছাড়া আর কিছুই না।
২২ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:৫৬
ফেনা বলেছেন: হুম তা ঠিক। তবে কি জানেন-যদি এমন হয় দশটা কথার মাঝে পাচঁ বা ছয় বা সাতটা কথায়ই মিলে যাচ্ছে। তখন এইটাকে কি বলবেন।
৬| ২২ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৩৩
কামাল১৮ বলেছেন: তবে তাকে বলা চলে তার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা ভালো।তথ্যের বিশ্লষণ করার ক্ষমতা রাখে।
২২ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৪০
ফেনা বলেছেন: এই কথার যুক্তি আছে।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৭| ২২ শে নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টি করা চরিত্র মিসির আলি।
দারুন এক চরিত্র। তিনি হৃদয়বান ও মানবিক। মিসির আলির মতো মানুষ এই সমাজে সম্ভবত নেই।
২২ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৩৩
ফেনা বলেছেন: তিনি হৃদয়বান ও মানবিক।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৮| ২২ শে নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৪
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: হেহেহে মিসির আলির নয়া সিরিজ তাহলে শুরু হলো। বেশ ভালো লাগলো।আমরা কি আগামীতে দাদার সাথে পরামর্শের কিছু ঝলক পেতে পারি?
পোস্ট লাইক।
শুভেচ্ছা জানবেন।
২২ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৩৪
ফেনা বলেছেন: আছে। ইনশাল্লাহ অফিসের ফাকে যখনই সময় পাব নিয়ে আসব।
৯| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:০৬
প্রথম সারির নিরাপদ ব্লগার বলেছেন: কিছু মনে করবেন না, শিরোনামটা আসলে গল্পের সাথে যায় না।
মিসির আলী একটি অসম্ভব রকমের যুক্তিবাদী চরিত্র। তিনি সবসময় যুক্তির আলোকে ধারণা করেন, ভবিষ্যৎবাণী করেন না।
গল্প অনুযায়ী আপনাকে হিমু বলা যায়। হিমু কোন ধরনের যুক্তি ছাড়াই ভবিষ্যৎবাণী করে এবং সেগুলো সত্যি হয়। সকল মানুষের কাছেই হিমু রহস্যময় কিন্তু হিমু নিজেকে রহস্যময় মনে করে না।
২৫ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৪৮
ফেনা বলেছেন: সুন্দর এবং গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
১০| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৪৯
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
আমাদের অনেক পূর্ব ধারনা পরে বাস্তবে পরিণত হয়। সেই ধারণা বা কল্পনা বা কথা মিলে যাওয়াটা আজ নতুন বিষয় না। হয়তো বিজ্ঞানে এর ভালো ব্যাখ্যা আছে। আমার সঠিক জানা নেই। গল্প ভালো লেগেছে। +++
২৫ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৪৯
ফেনা বলেছেন: কথা সঠিক।
সাথে সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যাবাদ।
ভাল থাকবেন সতত।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৬
প্রথম সারির নিরাপদ ব্লগার বলেছেন: গল্পটা ভালো। হোক তা সত্যি কিংবা কল্পনা।