![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পরিমাপ সম্পর্কে আমরা কম বেশি সবাই জানি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পরিমাপের গুরূত্ব অপরিসীম। এমন একটি দিনও মনে হয় খুঁজে পাওয়া যাবে না যেদিন আমরা কোন কিছু পরিমাপ করিনা। আজ এ প্রসঙ্গে সামান্য কিছু আলোচনা করবো, বিশেষ ধরনের কিছু নয় খুব সাধারণ আলোচনা । এর প্রথম কারণ হচ্ছে আমি বিশেষজ্ঞ নই দ্বিতীয়তঃ বেশির ভাগ ব্লগারও এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নন।
পরিমাপ কি? কোন কিছুর পরিমাণ নির্ণয় করাকেই পরিমাপ বলে।পরিমাপ করতে গেলে প্রথমেই যে জিনিষটির প্রয়োজন হয় তা হল একক (Unit)। একক কি? কেতাবি ভাষায় বলতে গেলে-
সর্বজনগ্রাহ্য বা যে আদর্শ প্রমাণ কোন পরিমাণের সাথে তুলনা করে ঐ পরিমাণকে পরিমাপ করা হয় তাকেই একক বলে। অর্থাৎ একক হচ্ছে এমন একটা প্রমাণ যা সম্পর্কে সবাই (বেশিরভাগ ব্যক্তি) অবগত এবং স্থান কাল, পাত্র ভেদে যে প্রমাণের কোন পরিবর্তন হয় না। যেমন ১০ মিটার কাপড়, আমি মাপলে যতটুকু হবে আপনি মাপলে ততটুকুই হবে, বাংলাদেশে ১০ মিটার কাপড় বললে যতটুকু কাপড় দেবে, ফ্রান্সেও ১০ মিটার কাপড় বললে ততটুকু কাপড় দেবে । এটাই এককের সার্বজনিনতা ।
ভিন্ন ভিন্ন দেশে একই জিনিষ পরিমাপের জন্য ভিন্ন ভিন্ন একক দেখা যায়। যেমন- ক’বছর আগে আমাদের দেশে ভর মাপার জন্য সের, মণ ইত্যাদি ব্যাবহার করা হত ইংল্যন্ডে এই একই কাজে আউন্স, পাউন্ড ব্যবহার করা হয়, ফ্রান্সে ব্যবহার করা হয় গ্রাম, কিলোগ্রাম ইত্যাদি। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বা তথ্য আদান প্রদানে সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যা দূর করতে একটি আন্তর্জাতিক একক পদ্ধতি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যাকে SI বা International System of Unites বলে, যা মূলতঃ ফ্রেন্চ Systeme International d’unite’s থেকে গ্রহণ করা হয়েছে।
SI মূলতঃ মেট্রিক পদ্ধতির একটি রূপ। এই পদ্ধতিটি ব্যবহারের একটি সুবিধা হল এটি দশ ভিত্তিক পদ্ধতি। এর একটি ধাপের সাথে আরেকটি ধাপের পার্থক্য হল দশ (বা এর গুনিতক) গুন বা দশ ভাগ। আমরা গণনার কাজে যেহেতু দশ ভিত্তিক পদ্ধতি ব্যবহার করি তাই এ পদ্ধতিতে হিসাব করা অনেক সহজ।
যেমন- আমাদের যদি জিজ্ঞাসা করা হয় ১৪০০ মিটারে কত কিলোমিটার, তাহলে খাতা কলম না নিয়েই আমরা বলে দিতে পারবো ১.৪ কিলোমিটার (যেহেতু ১০০০মিটার = ১ কিলোমিটার)। কিন্তু যদি জিজ্ঞাসা করা হয় ১৪০০ ইঞ্চিতে কত ফুট তাহলে ব্যপারটি আর অত সহজ থাকে না।
যাহোক বৈজ্ঞানিক কাজে অসংখ্য ধরনের জিনিষ মাপতে হয়, তার জন্য এককও অসংখ্য রকমের। যেমনঃ ভরের একক কিলোগ্রাম, দূরত্বের একক মিটার, সময়ের একক সেকেন্ড, রোধের একক ওহম, কম্পাঙ্কের একক হার্টজ, দ্রুতির একক মিটার/সেকেন্ড ইত্যাদি। অসংখ্য ধরনের একক হলেও মূলতঃ এদেরকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় যথা ১) মৌলিক একক (Base Unit) ২) লব্ধ একক (Derived Unit)।
মৌলিক একক (Base Unit) কি? - যে সমস্ত একক অন্য কোন এককের উপর নির্ভরশীল নয় তাই মৌলিক একক।
লব্ধ একক (Derived Unit)কি?- যে সমস্ত একক মৌলিক এককের উপর নির্ভরশীল তাকে লব্ধ একক বলে।
অনেকটা আমাদের ছোট বেলায় পড়া Vowel, Consonant বা মৌলিক, যৌগিক পদার্থের মত। লব্ধ একক অসংখ্য হলেও বিজ্ঞানীরা মাত্র ৭টি একককে মৌলিক এককের মর্যাদা দিয়েছেন । নিচে সেই ৭ টি মৌলিক এককের একটি তালিকা দেওয়া হল-
অসংখ্য লব্ধ একক রয়েছে। যেমনঃ দ্রুতির একক মিটার/সেকেন্ড , ক্ষেত্র ফলের একক বর্গ মিটার, আয়তনের একক ঘন মিটার বা লিটার ইত্যাদি। এ জন্য এ বিষয়ে আর বিস্তারিত আলোচনা করলাম না, নিচে শুধু একটা ছোট তালিকা দিলামঃ
আগেই বলা হয়েছে SI পদ্ধতির এক ধাপ থেকে অপর ধাপের পার্থক্য দশ (কোন কোন ক্ষেত্রে হাজার) গুন বা দশ ভাগ এবং এই প্রত্যেকটি ধাপ বা স্তরের এক একটি নাম (prefix) আছে।যেমনঃ ডেকা, হেক্টো, কিলো বা ডেসি, সেন্টি, মিলি ইত্যাদি। এখন প্রশ্ন হতে পারে এত নামের প্রয়োজন কি? একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টা পরিষ্কার হবে-
যদি বলি একটি পরমাণুর ব্যস প্রায় ০.০০০০০০০০০০১ মিটার বা আমার কম্পিউটারের RAM টি ১০০০০০০০০০ বাইটস (আসলে ১০৭৩৭৪১৮২৪ বাইটস, যেহেতু কম্পিটারের হিসাব বাইনারি পদ্ধতিতে হয়) তাহলে আপনার পড়তে গিয়ে যেমন অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে আমার লিখতেও একই অবস্থা হবে এবং ভুল হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক বেশি। কিন্তু তার পরিবর্তে আমি যদি লিখি একটি পরমাণুর ব্যস প্রায় ১০ পিকো মিটার আর আমার কম্পিটারের RAM টি ১ গিগা বাইটস, তাহলে সেটি পড়তে, লিখতে, বুঝতে সুবিধা হবে আবার ভুল হওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকবে । কিন্তু SI পদ্ধতির সব ধাপগুলোর নাম (prefix) আমরা কি জানি। মনে হয় আমরা বেশির ভাগ ব্যক্তিই তা জানিনা। নিচে এর একটি তালিকা দিচ্ছি সম্ভব হলে তালিকাটি সেভ করে রাখবেন আশা করি কাজে লাগবে।
আজকের মত লেখা এখানেই শেষ করছি। লেখাটি যদি আপনাদের কোন কাজে আসে তবে আমার শ্রম স্বার্থক হয়েছে মনে করবো। সকলকে ধন্যবাদ।
০৩ রা নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:২৭
বিষাদ সময় বলেছেন: প্রিয়তে নেওয়ায় আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা। ভাল থাকুন সব সময় সেই কামনা।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:৫১
নক্শী কাঁথার মাঠ বলেছেন: অসাধারন লেখা, সরাসরি প্রিয়তে। ধন্যবাদ।