![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আলহামদুলিল্লাহ আসসালাতু আসসালামআলা রাসুলিল্লাহ
রফিক অফিস থেকে বাড়ি ফিরতেই তার ছোট্ট মেয়ে বায়না ধরল।
: বাবা, দই আইসক্রিম খাবো। বাবা আমাকে একটা দই আইসক্রিম কিনে দাও।
: দেখো মেয়ের কান্ড ! বাড়ি ফিরতে না ফিরতেই মর্জি আর দস্যিপনা শুরু। বলছিল রফিকের স্ত্রী নীলা।
: আচ্ছা ঠিক আছে, বাবা। তুমি না আমার সোনা মেয়ে। কাল তোমার জন্য অফিস থেকে ফেরার সময় দই আইসক্রিম নিয়ে আসব। বলে সান্ত্বনা দিচ্ছিল রফিক।
কিন্তু মেয়ের সেই আবদার কি আর থামে! না বাবা! তুমি এনে দাও। এনে দাও। এনে দাও।
রফিক সাহেবের খারাপ লাগে না। প্রতিদিন অফিস শেষে বাড়ি ফেরার পর, তার ছোট্ট মেয়েটি সারা খন তাদের ঘর মাতিয়ে রাখে। এ যেন তাঁর পরম আনন্দের ব্যাপার।
রফিক ছোট্ট একটা বেসরকারি চাকরি করে। ছোট্ট মেয়ে তুলি, তিনি ও তার স্ত্রী এ নিয়ে তার সুখের সংসার। তার মা-বাবা মারা গিয়েছেন অনেক আগে। বসতভিটা ও নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে। এখন ঢাকায় ছোট্ট একটি ভাড়া বাড়িতে তারা থাকে। সুখেই কাটছে তাদের সংসার জীবন ।
রাতের খাবার খেয়ে বিছানায় রফিক ও তার স্ত্রী। ছোট্ট মেয়েটি ঘুমিয়ে পড়েছে।
: ওগো শুনছো মেয়ের তো পাঁচ বছর হতে চলল এবার তো তাকে একটা স্কুলে ভর্তি করাতে হবে।
: হ্যা তুমি ঠিকই বলেছ। এ নিয়ে আমিও চিন্তা করছি। কাছের স্কুলটা তেমন একটা ভালো শুনেছি নাকি ভালো পড়ায় না তাই একটু দূরের ওই স্কুল টাতে ভর্তি করাবো বলে ভাবছি।
: ওই স্কুলে তো অনেক খরচ। তাছাড়া যাতায়াতে অনেক খরচ হবে। তুমি কিভাবে দিবে?
: ও নিয়ে তুমি চিন্তা করো না। আমি এক ভাবে চালিয়ে নিতে পারব। একটা মাসিক রিকশা ভাড়া করব । তাতে করে প্রত্যেক দিন তুমি তুলিকে স্কুলে নিয়ে যাবে তাহলেই তো হলো।
: এত খরচ তুমি সামাল দিতে পারবে?
: আরে বললাম তো, এটা নিয়ে তুমি ভেবো না। আমি চালিয়ে নিতে পারব। আর ভালো কথা! তোমার জন্য একটা কানের দুল বানাতে দিয়েছি। ছয় বছর ধরে আমাদের বিয়ে হয়েছে। অথচ তোমাকে তো তেমন একটা কিছু দিতে পারলাম না। তাই এবারের ঈদে তোমাকে একজোড়া কানের দুল দিতে চাই।
: সত্যি! তুমি পারোও বটে! আমার দুল টুল চাইনা। মেয়ে বড় হতে চলেছে। তার ভবিষ্যতের কথা আমাদের চিন্তা করতে হবে না!
: ভালো একটা কথা মনে করেছ। ভাবছি আগামী মাসে মেয়ের নামে ব্যাংকে একটা ডিপোজিট করব।
: সত্যি তুমি আমাদের জন্য কতই না ভাবো।
নীলার মনে একটা গভীর প্রশান্তি বয়ে গেল। আমাদের এ সুখের সংসারে যেন কোনো অশুভ ছায়া না আসে। ভাবতে ভাবতে তার বুকের ভেতরটা ধক করে ওঠে।
পরদিন সকাল। যথারীতি রফিক নাস্তা সেরে হাসিমুখে তার মেয়ে এবং স্ত্রীর কাছ থেকে বিদায় নিল। এবার তার অফিস যাওয়ার পালা
অফিসে সারাদিন সে কাজ করলো। মাঝে মাঝে মেয়ের দই আইসক্রিম এর আবদারের কথা তার মনে পড়তে লাগলো।
অফিস ছুটি। এখন তার বাড়ি ফেরার পালা। মনটা তো তার বাড়িতেই পড়ে আছে। বাস স্ট্যান্ডে বাসের জন্য দাঁড়াল রফিক। রাস্তার ঠিক ওই পাড়ে আইসক্রিমের দোকান। সে ছুটে গেল সেখানে। একটা দই আইসক্রিম কিনল । দই আইসক্রিম এর দিকে তাকাতেই তার মেয়ের হাসি মুখ তার চোখে ভেসে উঠলো। ছোট্ট আইসক্রিম টির মূল্য তার কাছে অনেক। এটি তার মেয়ের মুখে হাসি । সে হাসির দাম রফিকের কাছে অমূল্য। এটি পেয়ে তার ছোট্ট মেয়েটি কি যে খুশি হবে এবং তার সাথে তার গালে আলতো করে একটি চুমু দিয়ে দিবে। অসাধারণ সে অনুভূতি।
হঠাৎ হর্ন এর শব্দে তার কল্পনার রাজ্যের সমাপ্তি ঘটে।
আইসক্রিম টি নিয়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে পথে থাকা একটি সে হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়। একদম রাস্তার মাঝামাঝি। বিপরীত দিক থেকে একটি বাস প্রচন্ড গতিতে আসছে।হাত দিয়ে সে ইশারা করলো বাস ড্রাইভার কে। আরেকবার ইশারা করল। কিন্তু বাসটি থামলো না। তার মাথা থেঁতলে দিয়ে চলে গেল। রক্তের ফোটায় মাখামাখি হলো দই আইসক্রিম। তার স্বপ্ন ভঙ্গ হলো। অনেকগুলো স্বপ্নের ইতি ঘটলো। সেগুলো কি আর কখনো পূরণ হবে?
১১ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:০২
মোঃ আল মামুন শাহ্ বলেছেন: আসলে প্রত্যেকটা মানুষেরই অনেক স্বপ্ন থাকে। মৃত্যুর সাথে সাথে সেই স্বপ্নগুলো ইতি ঘটে। এটি আমার গল্পের মূল বিষয়। প্রথম মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি সাথে থাকবেন।
২| ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:১২
রাকু হাসান বলেছেন:
শেষ টা খারাপ লাগলো ।
১১ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:১৮
মোঃ আল মামুন শাহ্ বলেছেন: স্বপ্নভঙ্গ হলে তখন খারাপ লাগে। অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
৩| ১২ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:০৭
আখেনাটেন বলেছেন: কত শত স্বপ্নের এভাবেই বলী হচ্ছে রাস্তাগুলোতে?
ভালো লিখেছেন।
১২ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:১০
মোঃ আল মামুন শাহ্ বলেছেন: হ্যাঁ ভাই। প্রতিদিন শত শত প্রাণ ঝরে যাচ্ছে রাস্তায়। তুমি তোর খবর সবাই রাখলেও স্বপ্ন ভঙ্গের খবর কেউ রাখে না। একটা মানে একটা পরিবারের স্বপ্ন ভঙ্গ। অথচ মৃত্যু নিয়ে অনেকে ঠাট্টা মশকরা করে।
৪| ১২ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:১৭
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: মধ্যবিত্তের স্বপ্নের অপমৃত্যু...
১২ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৮:৫০
মোঃ আল মামুন শাহ্ বলেছেন: হ্যাঁ ভাই ঠিক ধরেছেন । ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য
৫| ১২ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: আগেকার দিনের মানুষ,লজ্জা বুঝতো না ঘৃনা বুঝত।
আর এখন মানুষ ঘৃনা বুঝেনা লজ্জা বুঝে।
১২ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১:৫৯
মোঃ আল মামুন শাহ্ বলেছেন: এই অধম আপনার মন্তব্যের সারমর্ম ও প্রাসঙ্গিকতা বুঝতে পারছে না। দয়া করে যদি একটু বুঝিয়ে বলতেন।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:০০
সনেট কবি বলেছেন: করুণ গল্প।