![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিশুমৃত্যু আর শিশুহত্যা এক না ।
আমি অনেক ছোট তখন , সেই সময় আমার একটা ভাই মারা যায় । যার চেহারা হয়েছিলো অনেক সুন্দর , স্বাস্থ্য অনেক ভালো ছিলো । মেজো কাকু মনে হয় নাম রেখেছিলেন সাব্বির । কয়েকমাস বয়সেই সবাইকে ছেড়ে চলে যায় । ওর যাবার সময় বাবাকে দেখেছিলাম থমকে বসে থাকতে আর মা অনেক কেদেছিলেন । আমার তেমন কষ্ট লাগেনি তখন ।
কিন্তু এখন আমার নিজের একটা পিচ্চি ভাই সেই সাথে বাড়িতে আরো অনেকগুলো ছোট ছোট চাচাতো ভাই বোন আছে , যারা কেমন যেন অনেক বেশি আপন হয়ে গেছে । সেটা আমার সেই চলে যাওয়া আপন ভাই সাব্বিরের থেকেও মনে হয় বেশি । এদের কেউ সামান্য অসুস্থ হলে বা আঘাত পেলে কষ্ট অনেক বেশি লাগে। আর এদের কেউ হটাত মারা গেলে যে কষ্ট পাবো তা আমার আপন ভাই সাব্বির চলে যাওয়া থেকে অনেক বেশি হবে। আর এদের কেউ যদি হত্যার শিকার হয় ............
এর কারন হয়ত এটা যে শিশু খুব অল্প বয়সে চলে যায় , সে মায়া রেখে যায় একটু কম । আর স্বাভাবিক মৃত্যু হলে মানুষ বুকে পাথর চেপে হলেও মেনে নিতে চেষ্টা করে । একটু বড় হলে সে মায়ার বাঁধনে বেঁধে ফেলে সবাইকে । তখন তাঁর আকস্মিক বিদায় খুব কষ্টেরই হয় ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী , আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনার অনেক বক্তব্য শুনি , অনেক সত্য অসত্য কথা থাকে , কিন্তু সব থেকে আলাদা নির্ভেজাল মনে হয় আপনার ১৫ আগস্টের স্মৃতিচারণ । সেখানে আপনি যখন আপনার আদরের ছোটভাই শেখ রাসেল কথা বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন , তখন হয়ত আপনার শত্রুরও চোখ ভিজে যায় । আপনি অনেকবারই বলার চেষ্টা করেছেন আপনি স্বজন হারানোর ব্যাথা নাকি বুঝতে পারেন । সেটা সত্য হলে আপনি কিছুটা অনুভব করতে পারেন হয়ত কলিজার টুকরা সন্তান হারানো কত কষ্টের ।
সিলেটের শিশু রাজনকে দিয়ে বাংলাদেশে নতুন করে শিশু হত্যা শুরু হয় । একে একে আরো অনেক গুলো শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে । একসাথে একই বাড়ির ৪ ভাইবোনকে হত্যা করা হয়েছে । কত ভয়ংকর অবস্থা । গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় একই পরিবারের দুই সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে। কুমিল্লায় শিশু হত্যা করার জন্য নাকি ঢাকায় বসে পরিকল্পনা করা হয়েছে আবার খুনি ভাড়া করা হয়েছে ঢাকা থেকে ।
এ এক অন্যমাত্রার পৈচাশিকতা ! হয়ত দ্বন্দ্ব আছে বাবা বা মায়ের সাথে , তাঁর বদলা হিসেবে এই শিশু হত্যার সিরিজ কর্মসূচি চলছে সারা দেশে ।
একসময় শিশুমৃত্যুর হার অনেক বেশি ছিলো ,এখন সেটা অনেক কম । কিন্তু হটাত করে শিশুহত্যার হার বেড়ে গিয়ে হয়ত সেই ঘাটতি উসুল করে দিবে । এক মাসে ২৮ শিশু হত্যা ! ! !
কিছুদিন আগে পরকিয়ার ঘটনা জেনে যাওয়ার অপরাধে কিছু শিশু জীবন দিয়েছে । কিন্তু এখন যা চলছে তা রীতিমত ভয়ংকর ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী , আপনার ভাই রাসেল এর বিদায় যেমন আপনাকে কাদিয়েছিলো এখন যেসব বোন তাদের ভাই হারাচ্ছে তাদের কষ্ট কোন অংশে কম না । অতিদ্রুত এই কফিনের মিছিল আপনার থামানো উচিত । সংবিধান বা মানুষের বিবেক কোনকিছুই এই জঘন্য ঘটনার অনুমোদন দেয় না ।
এটা যদি আরো কিছুদিন চলে তবে সমাজে হয়ে যাবে স্বাভাবিক । এখন যেমন খুন , ধর্ষণ , ছিনতাই , চাদাবাজি সমাজে ডাল ভাত হয়ে গেছে । কেউ দেখলেও আর এসবের এখন প্রতিবাদ করে না । আমাদের নীরবতা বা নির্লিপ্ততা হয়ত শিশুহত্যার মত ঘটনাকেও ওই ডাল ভাতের পর্যায়ে নিয়ে যাবে ।
২| ০২ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:১১
সুঁই বলেছেন: অপমৃত্যু খুব নারকীয় ব্যাপার। প্রায় প্রতিদিনই শুনছি এসব খবর। মৃত্যু যেন ডাল ভাত। কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দরকার ছিল। মানবতা বোধ যেন উঠেই যাচ্ছে।
৩| ০২ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৫৮
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: কোন হত্যারই সঠিক বিচার হয়না, তদন্ত হয়না তাই এখন এই শিশু হত্যা আরো বেড়ে গেছে।
বন্ধ হোক শিশু হত্যা।
৪| ০২ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৪৭
মুনতাসিন মাহমুদ বলেছেন: প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাসেল ছাড়া কেউ শিশু না
৫| ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:২৫
বৃতি বলেছেন: কিছুক্ষণ আগেই এক শিক্ষিকা মা তার দুই ছেলেমেয়েকে হত্যা করেছেন মর্মে সংবাদপত্রে এক খবর দেখলাম। পড়ে স্বাভাবিকভাবেই মন খুব খারাপ হলো। বাবা হোক, মা হোক, পাড়া প্রতিবেশি বা অচেনা ব্যক্তি দ্বারা হোক- মানসিকভাবে অসুস্থ এসব যাবতীয় লোকদের প্রথম এবং প্রধান ভিক্টিম হচ্ছে অবুঝ শিশুরা। আর একজন মা-ই যদি হত্যাকারী হন, শিশুদের আশ্রয়স্থল বলতে এই পৃথিবীতে আর থাকলো কি!
আপনার বক্তব্যের সাথে পুরোপুরিভাবে সহমত। এ বিষয়ে গণসচেতনতা ভীষণভাবে জরুরী।
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:০৫
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: দেশের মানুষ যখন প্রাচ্যের একজন অভিনেতার অস্কার পাওয়া নিয়ে আলোচনায় মশগুল, ক্রিকেট খেলা নিয়ে বিশ্লেষকের ভুমিকায়, রাজনীতির মারপ্যাঁচ কষতে ব্যস্ত অথবা কোন নায়িকার স্বল্প বসনা নিয়ে চিন্তিত তখন আমাদের শিশুগুলোকে নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে। সমাজে বিচারহীনতা এবং অসুস্থ মানসিকতার প্রকাশ এই নির্মম শিশু নির্যাতন। বিচারহীনতার সংস্কৃতি শেকড় গেঁড়ে বসেছে আমাদের সমাজে।
সাম্প্রতিক সময়ে এমন কোন দিন দেখি নি, যে দিন পেপারে শিশু হত্যার খবর পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের মানুষগুলো কেন এমন হয়ে যাচ্ছে? এত এত অস্থিরতা আমাদেরকে গ্রাস করছে? আমরা তো ভাই এত খারাপ জাতি ছিলাম না, একটা শিশু তার নিজের বাসাতেও নিরাপদ নয়। ব্যাপারটা কি সবার গা সওয়া হয়ে গেছে নাকি নিজের বাচ্চা না মরলে কারো টনক নড়বে না? এই দেশে যে শিশু হত্যার মহোৎসব চলছে, একটি জাতীয় পৈশাচিকতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই ব্যাপারে আমরা কি কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করব না? কোন গরজ দেখাবো না? নাকি আরেকটি চুমুর ইভেন্ট খুলব? চুমিয়ে চুমিয়ে শিশু হত্যার বিচার চাইব?
আমি সত্যি আর ভাবতে পারছি না। মনটা ভীষন বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে।