![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশ এ বর্তমানে বিদ্যুৎ নিয়ে চলছে এক মহা জগাখিচুরি। একদিকে চলছে ধুমছে চাপাবাজি অপরদিকে চলছে বিদ্যুতের জন্য মানুষের হাহাকার। এর মাঝে ক্ষণে ক্ষণে দায়িত্বপ্রাপ্তরা আমাদের কৌতুক শোনাতে ভুল করেন না।
বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ও উৎপাদনক্ষমতা কত এই তথ্য পিডিবি, বিদ্যুৎ মন্ত্রনালয় কেউই সঠিকভাবে দিতে পারবে না , কারন কারো কাছেই এই সত্য ডাটা নেই(বিশ্বাস না হলে একটু খোঁজ নিয়ে দখতে পারেন)।
উৎপাদন ক্ষমতা আর উৎপাদন কিন্তু এক কথা নয়। একটি যন্ত্র সেটা বানানোর সময় তার ক্ষমতা যা ছিলো সেটা হলো তার রেটেড উৎপাদন ক্ষমতা। আর কয়েক দেশ ঘুরে , অনেক বছর ব্যবহারের পর এখন তার যে উৎপাদন সক্ষমতা হলো বর্তমান উৎপাদন ক্ষমতা। এই শব্দগুলোর সাথে খুব আর একটা শব্দ খুব দরকার আর সেটা হলো কর্মদক্ষতা। ব্যয়িত শক্তির কি পরিমান কাজে পরিনত হচ্ছে সেটা বোঝা যায় এই কর্মদক্ষতা দিয়ে। ইনপুটের কি পরিমান আউটপুটে পরিনত হচ্ছে সেটাই কর্মদক্ষতা। বতমান বিদ্যুতের জগাখিচুরি এই কর্মদক্ষতার সাথে অনেকখনি সম্পর্কিত।
বর্তমানে দেশের বিদ্যুতের হালচাল সংক্ষেপে এরকমঃ
সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট পাওয়ার প্লান্টঃ ৪৩ টি
পাওয়ার প্লান্ট (কামিং সুন): ১ টি
নিউক্লিয়ার প্লান্টঃ ১ টি
মার্চ ২০১৭ এর তথ্যমতে , বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা (মেঃওঃ): ১৩,১৭৯
এ বছর ১৮ এপ্রিল ২০১৭ সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন (মেঃওঃ): ৯,২১২
সিস্টেম লস: ১৩.১০%
বিতরণ লস: ১০.৬৯%
সিস্টেম লস আর বিতরণ লস এর কোন মা বাপ নাই, এটা সবসময় থাকে , একে বাদ দিয়ে হিসাব করার কোন উপায় নেই।
২০০৯ সালে ৬ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহনের সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিলো মাত্র ৩২৬৮ মেগাওয়াট । সেটাকে টেনে প্রায় ১৪,০০০ মেগাওয়াট এ নিয়ে যাওয়া অনেক বড় একটা সাফল্য বলতেই হবে।
কয়েকদিন আগে যখন প্রচণ্ড গরম সেই সাথে লোডশেডিং চরমে ছিলো তখন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী যে হিসাব দিলেন তাতে দেখা গেলো চাহিদার তুলনায় উৎপাদন অনেক (প্রায় ১,৫০০ মেগাওয়াট) বেশি। অনেকেই হাসি ঠাট্টা করেছে এটা নিয়ে ।
একটু পিছনে ফিরে দেখি-- বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু আর এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নিজে। নসরুল হামিদ সাহেব মানবিক বিভাগ থেকে ঢাবি থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন শেষে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে অবস্থিত University of Harvard এর John F. Kennedy School থেকে Certificate Program on Leadership সম্পন্ন করেন। আর এই মন্ত্রলানালয় এর লোকজন কেমন বিজ্ঞ তা তাদের ফেসবুক পেজ এর বিভিন্ন সময়ের তথ্যবহুল স্ট্যাটাস দেখেই বোঝা যায়।
চাহিদার থেকেও উৎপাদন বেশি , তারপরও কেন এত লোডশেডিং ?
একটা ঘোড়া তার যৌবনকালে যে পরিমান বোঝা বহন করতে পারে শেষ বয়সে তার পক্ষে আর সে পরিমান বোঝা বহন সম্ভব হয় না। ধরুন একটা ঘোড়ার পরিনত বয়সে সর্বোচ্চ ১০ মন বোঝা বহন করতে পারে। বৃদ্ধ বয়সে হয়ত পারবে সর্বোচ্চ ৫ মন। এখন কারো কাছে যদি ৩ টা বৃদ্ধ ঘোড়া থাকে আর সে যদি দাবি করে তার ৩ টা ঘোড়া মিলে একবারে ৩০ মন বোঝা বহন করতে পারবে । আর সে যদি সত্যি সত্যি ৩০ মন চাপায় তাহলে কি হবে ?
ঠিক একই ঘটনা ঘটছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থায়। চায়না আর রাশিয়া থেকে পাওয়ার প্লান্ট এর যেসব যন্ত্র ক্রয় করা হয়েছে তার সবই ওই সব দেশে ব্যবহার করে তার কার্যক্ষমতার সর্বোচ্চটুকু ব্যবহার করার পরই বাংলাদেশ এর কাছে বিক্রি করেছে। এতে করে এই সব যন্ত্রগুলো এখন তাদের রেটেড কর্মদক্ষতার চেয়ে অনেক কম উৎপাদন করতে সক্ষম । কোন কোন ক্ষেত্রে উৎপাদন ক্ষমতা মাত্র ২০-৩০ %। এর ফলে দেখা যাচ্ছে , যে মেশিন থেকে ৩০০ মেগাওয়াট পাওয়ার কথা , তা থেকে ১০০ মেগাওয়াট এর কিছু কম বা বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এর সাথে অপছন্দের ব্যক্তির প্লান্ট থেকে বিদ্যুৎ না কেনা একটা অন্যতম একটা কারন।
বিদ্যমান প্লান্ট এর অনেক কম কর্মদক্ষতা, সিস্টেম লস, বিতরণ লস, অপছন্দের ব্যক্তির প্লান্ট থেকে বিদ্যুৎ না কেনার দরুন উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ১৪,০০০ মেগাওয়াট হওয়া সত্ত্বেও এ বছর ১৮ এপ্রিল ২০১৭ সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে মাত্র ৯,২১২ মেগাওয়াট, নগদ ঘাটতি প্রায় ৫০০০ মেগাওয়াট(এটা অবশ্য কিছু কম হবে। গতকাল ১৩ জুন গ্রিডে নাকি আবার ৪০০ মেগাওয়াট যোগ হয়েছে) । বিনিময়ে দেশ লোডশেডিং এ ডুবে থাকে।
বিদেশ থেকে পুরাতন মেশিন কেনার মাধ্যমে ভালো পরিমান টাকা পাচার হয়েছে, কিছু কিছু মানুষ পাওয়ার প্লান্ট এর ব্যবসায় করতে গিয়ে রাতারাতি ধনী হয়েছে, দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিশেষ একটি দেশের পছন্দের মানুষদের হাতে চলে গেছে।
গলাবাজি তো অনেক হলো । এবার আর কিছু পুরাতন মেশিন কিনে আনো বাবা, আরো কিছু প্লান্ট স্থাপন করো। আরো কিছু টাকা পাচার করো, আরো কিছু মানুষকে ধনী বানাও, তাও অন্তত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা আর একটু ভাল করে দাও। আমাদের টাকা তোমরা খাও ( তোমরাই তো খাবে ) তাও বিদ্যুৎটা ভালোমত সরবরাহ করো। আর পারলে একটা প্লান্ট এর জন্য না হয় ভালো মেশিন কিনে এনো।
২| ১৪ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:২৪
তপোবণ বলেছেন: বিদ্যুৎখাতে বিদ্যুৎগতিতে ধন পাচার হচ্ছে আবার কেউ আঙ্গুল ফুলে রাতারাতি কলাগাছ হচ্ছে। জয়তু!
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:১০
রিনকু১৯৭৭ বলেছেন: https://minhaj77.wordpress.com/ এটা পড়ে দেখতে পারেন