নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রিজিকের রহস্যময় ফায়সালা

আলমগীর হাসান সিদ্দিকী

সত্য ও সুন্দরের পূজারী

আলমগীর হাসান সিদ্দিকী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিস্ত্রী না কবিরাজ (প্রকৌশলী না ডাক্তার) ?

১৪ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৫৫

মুস্তাফিজ। প্রথম ম্যাচে এসেই ভারতের ওপর যে তান্ডব চালিয়েছিল, তা ভোলার না। আমাদের কার্টার মাস্টার তার সেই ধার হারিয়ে ফেলেছে। ভারত তাকে আইপিএলে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের সেই দলের কোচ মুস্তাফিজকে পরামর্শ দেয় তার বোলিং অ্যাকশন পরিবর্তন করার জন্য। মুস্তাফিজ তাই করে। ফল হিসেবে সে আর আগের ফর্মে ফিরতে পারেনি। এখন আর সে উইকেট পায় না। সে তার স্বকীয়তা হারিয়ে দেউলিয়া।
আমাদের দেশের ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে এই ঘটনা অহরহ ঘটছে। একটা ছেলে বা মেয়ে জন্ম নেয়া মাত্রই তার মা-বাবা ঠিক করে ফেলে তাদের সন্তানকে তারা হয় কবিরাজ না হয় মিস্ত্রী বানাবে। সন্তানের আদেও সেই সক্ষমতা আছে কিনা সেটা বিবেচ্য বিষয় না। ফল যা হবার তাই হচ্ছে। কবিরাজ হবার প্রতিভা নিয়ে জন্ম নেয়া ছেলেটা বাপ মায়ের ঠেলায় পরে হয়ে যাচ্ছে মিস্ত্রী। কেউ কেউ পড়তে এসে শেষই করতে পারেনি। কেউ কেউ কবিরাজ বা মিস্ত্রী হতে না পেরে চলে যায় অন্যকোন লাইনে। নিজের সন্তানকে শুধু এবং কেবল শুধুমাত্র কবিরাজ বা মিস্ত্রী বানাতে চাওয়া বাপের ছেলে হয়ে যায় মার্কেটিং অফিসার, কখনও কখনও মিস্ত্রী বা কবিরাজ হতে না পারা ছেলে হয়ে যায় মিস্ত্রী বা কবিরাজদের খাটানো কোন প্রতিষ্ঠানের উচু মানের কোন কর্মকর্তা, নিজে মিস্ত্রী বা কবিরাজ না হয়েও মহিষের মত খাটিয়ে নেন মিস্ত্রী বা কবিরাজদের দিয়ে।
সন্তানকে মিস্ত্রী বা কবিরাজ বানাতে চাওয়া বাপদের স্বপ্নপুরনে সহযোগিতার ষোল কলা পূর্ণ করে দিয়েছে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশের প্রচলিত সরকারি শিক্ষাব্যবস্থায় যে ছেলে বা মেয়েটা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্য না, সে ঠিক বাপের টাকার জোরে মিস্ত্রী বা কবিরাজ হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে মনে হয় শিশু জন্মের হার থেকে মিস্ত্রী বা কবিরাজ বৃদ্ধির হার বেশি। রাস্তাঘাটে বের হলে যতজন লেবার পাওয়া যায় তার থেকে বেশি মিস্ত্রী বা কবিরাজ ঘুরঘুর করে। ফলাফল যা হবার তাই। দিনমজুরের চেয়ে মিস্ত্রী বা কবিরাজ এর মাসিক আয় অনেক কম।
কোন ডিপার্টমেন্ট এ পড়ো? এই প্রশ্নের জবাবে ইইই বলে অনেকদিনই স্যারদের কাছে বকা খেয়েছি। আর এখন? নিজের ডিপার্টমেন্ট যখন বলি ইলেকট্রিক্যাল & ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং। তখন পাশ থেকে বানিজ্য বা মানবিক থেকে পাশ করা মুরুব্বি সংশোধন করে বলে, ইইই তাই না? আস্তে করে বলি, হ্যা।
প্রচলিত অর্থে সবচেয়ে মেধাবী ছাত্রকে অবশ্যই বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে হবে। তারপর মিস্ত্রী বা কবিরাজ হতে হবে , না হয় এমবিএ করে কোন অফিসে চাকরি করবে।
আর দেশ চালাতে মানুষ লাগে মোটা দাগে নির্বাচিত ৩০০ জন, আর গৃহবধুদের মাঝ থেকে চেহারা সুরত দেখে ১৫০ জন। এদের মাঝে অনেকেই আছে সন্ত্রাসী, আধাশিক্ষিত, খুনি, ঋণখেলাপি। অবলীলায় দেশটা এদের হাতে ছেড়ে দিয়ে হায় হায় করতে থাকি।
যদি এই মেধাবীদের (মিস্ত্রী বা কবিরাজ) কেউ রাজনীতিতে যায়, সবার দৃষ্টিতে সে যেন বিরাট পাপ করে ফেলেছে। যদি মেধাবী তারা হয়েই থাকে তবে দেশের ভারটা তাদের হাতেই দেয়া উচিত ছিলো, কিন্তু তা যে এই দেশে ভাবাও পাপ।
একটু ভিন্ন চিন্তা, আলাদা কিছু করতে চাওয়া এখানে অনেক বড় অপরাধ। রাজনীতিবিদ হতে চাও, উদ্যোগটা হতে চাও, ক্রিকেটার হতে চাও, নিজের মনের মত করে উচ্চশিক্ষার প্লান করতে চাও, ক্যারিয়ার নিজের মত সাজাতে চাও ----- বাবা ভুলে যাও ওসব। এটা বাংলাদেশ। তুমি তোমার মায়ের পেটে আসার আগেই তোমার বাবা মা ঠিক করে ফেলেছে তোমাকে তারা মিস্ত্রী বা কবিরাজ বানাবে। খাল কেটে নদীর পানির গতিপথ পরিবর্তন করার মতই তোমার বাপ মা আর পাশের বাড়ির আংকেল আন্টিরা তোমার সব সুপ্ত প্রতিভার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে , তোমাকে দিয়ে আর ওসব কিছু হবে না তুমি এখন শুধু মিস্ত্রী বা কবিরাজ হবা।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:২৫

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আপনার মেধাবী আর রজনৈতিক মেধাবীদের বুদ্ধিগত পার্থক্য অনেক।। তাই সবাই "সেরকম না হলে" রাজনীতিতে আসে পারে না।।। ফলাফল দেশ চাালনার ভার আর পায়ই না :-P

২| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:২৭

মোঃ শরিফুজ্জামান সুজন বলেছেন: ভালো লাগলো ভাই চালিয়ে যান। শুভকামনা রইলো।

৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৮:০০

শাহিন-৯৯ বলেছেন: সন্তানকে মিস্ত্রী বা কবিরাজ বানাতে চাওয়া বাপদের স্বপ্নপুরনে সহযোগিতার ষোল কলা পূর্ণ করে দিয়েছে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার মান টেনে নিচে নামাচ্ছে এরাই ৷

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.