নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ভবঘুরে মানুষ । ভবের ঘরে প্রবেশের নেশায় ঘুরে ফিরি দিবানিশি।

আলী নওয়াজ খান

ভবঘুরে মানুষ আমি । ভবের ঘরে প্রবেশের নেশায় ছুটে মরি দিবানিশি। তবুও পাইনা খুজে তারে।

আলী নওয়াজ খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

র্ধম উৎপত্তির ইতিকথা

২৭ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৮



র্ধম উৎপত্তির ইতিকথা

র্ধমের উৎপত্তির ইতিহাসকে মানব সভ্যতার সূচনা বা মানবসৃষ্টি থেকে কখনো পৃথক করা সম্ভব নয়।তাই সৃষ্টিজগতে এমন কখনও ছিলনা যখন মানুষ ছিল কিন্তু ধর্মছিল না।কেননা, ধর্ম হল মানুষের মানবিক বিকাশ ও জীবনযাত্রার পদ্ধতি । যে পদ্ধতি তাকে তার মানবিক বৈশিষ্ট্যগুলো সংরক্ষণ ও আলোর ভুবনে যাত্রার পথর্নিদেশনা দিবে যা মানুষসৃষ্টির চুড়ান্তু লক্ষ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। অতএব বস্তুবাদীচিন্তায় কল্পিত ধারণা, যে প্রাকৃতিক র্দূযোগের ভীতি বা অজ্ঞতা থেকে র্ধমের উৎপত্তি তা কোন ক্রোমেই সঠিক নয়।
কেননা পবিত্র কুরআনের দৃষ্টিতে ধর্ম ও র্ধামিক একই পয়সার এপীঠ আর ওপীঠ স্বরূপ ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে । আর উভয়ের সৃষ্টা হলেন মহান পতিপালক আল্লাহর রব্বুল আলামীন। তাই প্রতিটি মানুষের ধর্মপ্রবনতা তারই একটি সৃষ্টিগত সহজাতপ্রবৃত্তি বা সৃষ্টাপ্রদত্ত বৈশিষ্ট্য । অতএব এমননটি নয় যে মানুষ কোন একসময় র্ধমহীন অবস্থায় ছিল পরে তার সাথে একটি জীবন পদ্ধতিকে সংযুক্ত করা হয়েছে। কেননা মfনব সৃষ্টির র্পূবেই মহান স্রষ্টা ঘোষনা দিচ্ছেন যে আমি ভূ-পৃষ্ঠে আমার প্রতিনিধি পাঠাতে চাই।[সুরা বাকার ৩০ নম্বর আয়াত]।
অতএব সৃষ্টিজগতের মহান পতিপালক মানবসৃষ্টির শুরুতেই প্রথম ব্যক্তিকেই তাঁরই প্রতিনিধিস্বরূপ প্রেরণ করছেন। যিনি মানব সভ্যতার প্রথমব্যক্তি এবং ঐশীদূত আর তার দায়িত্ব হল ঐশী আর্দশের ছোয়ায় নবপ্রজন্মকে খোদার বৈশিষ্ট্যে গুনাম্বিত করা। মহান সৃষ্টা শুধুমাত্র মানবজাতির প্রথমব্যক্তিকেই ঐশী দূতস্বরূপ প্রেরণ করেই ক্ষ্যান্ত হননি বরং সৃষ্টি লগ্নের শুরুতেই আদম সন্তানদের প্রত্যেকরেই সত্তায় খোদায়ী আর্দশের প্রদ্বীপ জ্বেলে দিয়েছেন যাতে কোনক্রোমে আধারের পথে গমন না করে।
সুরা আল আ'রাফের ১৭৯ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন-
আর যখন তোমাদের প্রতিপালক আদম সন্তানদের পৃষ্ঠদেশ থেকে তাদের বংশধরদের বের করেছিলেন এবং তাদেরকে তাদের নিজেদের ওপর সাক্ষী রেখে জিজ্ঞেস করলেন, “আমি কি তোমাদের প্রতিপালক নই? তারা বলেছিল, নিশ্চয়ই আপনি আমাদের প্রতিপালক, আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি। এটা আমি এজন্য করেছিলাম যাতে কিয়ামতের দিন তোমরা না বল, আমরা তো একথা জানতাম না।”
অতএব মানবসৃষ্টির পূর্বেই মহানসৃষ্টা অনাগত মানবসৃষ্টির সকল সত্তার কাছে নিজের পূর্ণ পরিচয় দিয়েছেন আর এই সত্তাগত স্রষ্টাপরিচিতিই প্রতিটি মানুষকে খোদার দাসত্বের পথে ধাবিত করেছে। তাই মানুষের খোদা প্রবণতার ইতিহাস তার সৃষ্টিগত বৈশিষ্ট্য যা তার নিজের সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে বিরাজ করছে। সুতরাং র্ধমের উৎপত্তির ইতিহাস অনুসন্ধান করতে বস্তুবাদীদের মত অপ্রমানিত কাল্পনিক ধারণার উপর নির্ভর করে চলার কোন সুযোগ আমাদের নেই।
পবিত্র কুরআনে সুরা আর রূমের ৩০ নম্বর আয়াতে এবিষয়ে বলা হয়েছে ; فِطْرَتَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا মহান আল্লাহ মানুষকে আল্লাহর প্রকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন’। আর এই ঐশীপ্রকৃতি যার উপর মানবসত্তা সৃষ্টি সেই প্রকৃতিকেও فَأَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّينِ حَنِيفًا ‘তুমি একনিষ্ঠ ভাবে নিজেকে (একত্ববাদী) ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ’ একই আয়াতে মহান প্রভু বলছেন এই র্ধম যা প্রভু সৃষ্টি করেছেন তার কোন পরির্বতন নেই। মহান প্রতিপালক বলেন: لَا تَبْدِيلَ لِخَلْقِ اللَّهِ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। আর এটাই সরল ধর্ম।
অতএব মহানস্রষ্টা ঐশী র্ধমের উপর ভিত্তিকরেই মানব সত্তা সৃষ্টি করেছেন তাই ধর্ম হল প্রতিটি মানুষের সত্তাগত বৈশিষ্ট্য যে বৈশিষ্ট্যের কোন পরির্বতন সম্ভব নয়। আর এর পাশাপাশি মহান প্রতিপালক মানবজাতির ঐ সত্তাগত বৈশিষ্ট্যকে প্রতিপালন ও সম্ভাবনাময়ী প্রতিভাকে বিকাশের লক্ষ্যে যুগে যুগে ঐশী র্ধমের প্রতিনিধি পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন । যাতে প্রতিটি ব্যক্তি নিজেকে অবমুল্যায়ন করে পার্থিব চাকচিক্য ও জাগতিক আর্কষনের বশিভুত হয়ে তার সত্তাগত প্রবণতাকে ভুলে না যায় ।
প্রতিটি ব্যক্তি যে খোদায়ী সত্তার আর্দশ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন সে ব্যাপারে মহানবী (স:)-এর এই হাদিসটি আমরা এখানে বর্ণনা করতে পারি, এই হাদিসটি আহল সুন্নাতের অধিকাংশ মুহাদ্দীস বর্ণনা করেছেন এবং আহলে বাইতের রেওয়ায়েতেও বর্ণিত হয়েছে। মহানবী (স.) বলেন :
رسول الله صلى الله عليه وسلم أنه قال: (مَا مِنْ مَوْلُودٍ إِلاَّ يُولَدُ عَلَى الْفِطْرَةِ، فَأَبَوَاهُ يُهَوِّدَانِهِ أَوْ يُنَصِّرَانِهِ أَوْ يُمَجِّسَانِهِ(
মহানবী (স.) বলেন : প্রতিটি শিশু খোদায়ী সত্তার প্রকৃতিতে জ্ন্মগ্রহণ করে । অতপর তাকে তার পিতামাতা ইহুদী, খৃষ্টান, র্যাতুষ্ট্র বানায়।
- সহিহ বোখারী, কিতাবুল জানায়েজ, ৮০ তম অধ্যায়, ৯৩ পৃষ্ঠা।
আর এজন্যই যুগে যুগে যত নবী রসুল এসেছেন তারা কেউই কিন্তু র্ধম নিয়ে আসেননি বরং তারা মানবপ্রকৃতির সত্তাগত ধর্মের যুগোপযোগী ব্যখ্যা প্রদান এবং প্রতিটি ব্যক্তির নিজ সত্তা যা খোদায়ী প্রকৃতির রংয়ে রঞ্জিত তা প্রত্যক্ষণের অন্তরায়গুলো অপসরণ করতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।
সুরা ফুসসিলাত ৫৩ আয়াতে মহান স্রষ্টা বলেন : سَنُرِیهِمْ آیاتِنا فِی اَلْآفاقِ وَ فِی أَنْفُسِهِمْ حَتّی یَتَبَیَّنَ لَهُمْ أَنَّهُ اَلْحَقُّ
এখন আমি তাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী প্রদর্শন করাব পৃথিবীর দিগন্তে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে; ফলে তাদের কাছে ফুটে উঠবে যে, এ কোরআন সত্য। আপনার পালনকর্তা সর্ববিষয়ে সাক্ষ্যদাতা, এটা কি যথেষ্ট নয়?
অতএব কোন পারিপার্শিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ফলে ধর্মের উৎপত্তি হয়নি বরং মানুষের সৃষ্টির সফটওয়্যারটাই হল খোদায়ী প্রকৃতি আর এই প্রকৃতি হল মানবজাতির মুল ধর্ম । আর এই ধর্মকেই ব্যাখ্যা বিশ্লেষন করতে যুগেযুগে নবী- রাসুলগণ আগমন করেছেন।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:২২

হাফিজ বিন শামসী বলেছেন:
সুন্দর লেখা উপহার দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

২৮ শে মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:২৮

আলী নওয়াজ খান বলেছেন: জনাব হাফিজ বিন শামসী @ ধৈর্য্য ধরে পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ। আশাকরি সময় করে আমার লেখাগুলো পড়ে মতামত দিবেন, খুশী হব।

২| ২৭ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৮:০৩

গুলফাম বলেছেন: ইসলামের এই দিকটাই সবচেয়ে সৌন্দর্যের দিক। ইসলাম মূলত অন্যান্য ধর্মের মত কিছু উপাসনা নির্ভর ধর্ম নয়। এটা মানুষের ভেতরের সত্ত্বার প্রকৃতির সাথে মিশে থাকা এক জীবনবোধ। এটা মানুষের চব্বিশ ঘণ্টার জীবন-জীবিকা। কিন্তু আমরা আজ ইসলামকে অন্যান্য ধর্মের আদলে শুধু নামাজ-রোজা আর ইবাদত-বন্দেগী ভিত্তিক একটা ধর্মের রূপ দিয়ে ফেলেছি। যার ফলে পৃথিবী ইসলামকে অন্যান্য ধর্মের চেয়ে ভিন্ন কোন দৃষ্টিতে দেখতে পায় না।

লেখককে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন বিষয়গুলো আলোচনায় নিয়ে আসার জন্য।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৫৩

আলী নওয়াজ খান বলেছেন: জনাব গুলফাম @ আপনাকেও ধন্যবাদ্

৩| ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:২৬

বরুন মালাকার বলেছেন: ধর্ম শব্দটি গোলমেলে, ইসলামের সাথে যার মিল খুবই কম।
আধিভৌতিক বিশ্বাসের চেয়ে জীবন ও দায়িত্ববোধ বেশী উচ্চকিত ।

০২ রা এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:২৫

আলী নওয়াজ খান বলেছেন: জনাব বরুন মালাকার @ পর্দাথবিজ্ঞানের রাজ মুকুট অর্জনকারী বিজ্ঞানীরাও আজও সৃষ্টিজগতের মহারহস্য উদ্ঘাটনে সফল হননি । শধুতাই নয় বরং (বিগ ব্যাঙ্গ) মহাবিস্ফোড়নের সুত্রের সমস্যা গুলোও সমাধান দেয়ার আজীবন ক্ষমতা রাখেনা আধুনা বিজ্ঞান। অথচ ধর্ম এখানে এর সমাধান দিয়েছে বিশেষ করে ইসলাম ধর্ম । তাই ধর্ম সর্ম্পকে গবেষণা না করে তার বিরুদ্ধে অযৌক্তিক অপবাদ আদৌ সুশীল সমাজের কাজ নয়।
মত প্রকাশের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.