নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ভবঘুরে মানুষ । ভবের ঘরে প্রবেশের নেশায় ঘুরে ফিরি দিবানিশি।

আলী নওয়াজ খান

ভবঘুরে মানুষ আমি । ভবের ঘরে প্রবেশের নেশায় ছুটে মরি দিবানিশি। তবুও পাইনা খুজে তারে।

আলী নওয়াজ খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

Philosophy শব্দের অর্থ ও ইতিহাস

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৭



‘দর্শন’ একটি বাংলা শব্দ। দর্শনের সমার্থক ইংরেজি শব্দ হলো Philosophy। Philosophy শব্দটি একটি (গ্রীক) যৌগ শব্দ; Philien ও Sophos শব্দদ্বয়ের সমন্বয়ে গঠিত। Philien -এর অর্থ হলো ভালোবাসা, অনুরাগ বা তৃষ্ণা। আর Sophos শব্দের অর্থ হলো, জ্ঞান ও বুদ্ধিবৃত্তি (ব্যাপক ও সার্বিক অর্থে) । অর্থাৎ Philosophy শব্দের প্রাথমিক ও আভিধানিক অর্থ হলো জ্ঞানপ্রেম, প্রজ্ঞা ও বিদ্যার প্রতি ভালোবাসা। পরিভাষাগত অর্থে Philosophy হলো যে কোন বিষয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক গবেষণা বা অনুসন্ধান।
Philosophy শব্দটি কবে, কোথায় ও কিভাবে উৎপত্তি হয়েছিল তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। যেমন কেউ বলে থাকেন, সর্বপ্রথম পিথাগোরাস (Pythagoras -৫১০-৫৭৮ খ্রি.পূ.) এ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। আবার কারো কারো অভিমত হলো শব্দটি সক্রেটিস (Socrates -৩৯৯-৪৬৯ খ্রি.পূ.) সর্বপ্রথম ব্যবহার করেছিলেন। তাদের মতানুযায়ী তৎকালীন গ্রীক সমাজে একশ্রেণীর তথাকথিত বুদ্ধিজীবীর আর্বিভাব ঘটেছিল যারা নিজদেরকে Sophist পরিচয় দিতেন। Sophist শব্দের অর্থ হলো বুদ্ধিমান, জ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবী। শব্দটির মধ্যে জ্ঞানের বড়াই ও আমিত্বের অহংকার ফুটে ওঠে। এই শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীর বুদ্ধির ক্রমশ অবনতি ঘটে একপর্যায়ে এসে তাদের বুদ্ধির ভিত্তি অপযুক্তির ওপর দণ্ডায়মান হয়। এ সময়ে ‘যুক্তি’ শব্দের সমার্থক হয়ে দাঁড়ায় ‘অপযুক্তি’। তাদের সকল যুক্তি ও চিন্তা-ভাবনার মূল সূত্র ছিল মানুষের ব্যক্তিগত উপলব্ধিই হল বাস্তবতার একমাত্র মানদণ্ড। তাই তারা তাদের উপলব্ধির ভিত্তিতে যুক্তি প্রনয়ণ করে সত্য-মিথ্যা নির্ণয় করতেন। এভাবে কখনো তারা ইচ্ছানুযায়ী সত্যকে মিথ্যায় পরিণত করতেন। আবার মিথ্যাকে তথাকথিত যুক্তির আলোকে সত্য রূপে প্রমাণ করতেন। খ্রিস্টপূর্ব ৫ শতকে গ্রীসে এ জাতীয় চিন্তার উৎপত্তি ঘটেছিল দু’টি কারণে :
১. বিস্ময়কর ও পরস্পর বিরোধী বিভিন্ন দার্শনিক চিন্তার আবির্ভাব।
২. বক্তৃতা ও তর্ক- বিতর্কের ব্যাপক প্রচলন, বিশেষ করে আদালতে বাদী ও আসামীদের অভিযোগ বা দাবি প্রমাণের ক্ষেত্রে বিচারক ও আইনজীবীরা তাদের বক্তব্যে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতেন।
অর্থাৎ একদিকে নিত্যনতুন দার্শনিক মতের উদ্ভব এবং প্রতিপক্ষের চিন্তাকে খণ্ডনের জন্য তথাকথিত যুক্তি ও অপযুক্তির আশ্রয়ে তারা তাদের লক্ষ্য হাসিল করতেন। ফলে সামাজিক চিন্তা-ভাবনার অঙ্গনে এক অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করতে থাকে।
আবার অন্যদিকে তৎকালীন গ্রীক সমাজে আর্থিক লেনদেনঘটিত বিভিন্ন বিবাদ ও সমস্যা মীমাংসার জন্য বিষয়টি আদালতে নেয়া হলে সেখানে তর্কবাগীশ আইনজীবীরা বিবাদী বা বাদীর পক্ষে আদালতে মর্মস্পর্শী বক্তব্য পেশ করতেন। তাদের এসব বক্তব্য শোনার জন্য বিপুল সংখ্যক উৎসুক লোক সেখানে এসে ভীড় জমাতো।
আস্তে আস্তে এ শ্রেণীর আইনজীবীদের ব্যবসা বেশ জমজমাট হয়ে ওঠে। তারা এ সুযোগ কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে বক্তব্যের বিভিন্ন কৌশল ও বাকপটুতার পদ্ধতি শিক্ষার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে শিক্ষাকেন্দ্র খুলে বসেন।
এ শ্রেণীর ব্যবসায়ী আইনজীবী আরো খ্যাতি অর্জনের উদ্দেশ্যে এবং বাকপটুতায় নিজের পারদর্শিতা প্রমাণে সর্বদা সচেষ্ট থাকতেন। এই প্রচেষ্টার সূত্র ধরে তারা যে কোন দাবিকেই (তা সত্য হোক বা মিথ্যা) সত্য প্রমাণে যুক্তি প্রদান করতেন, এমনকি কখনো কখনো একজন আইনজীবীই দু’পক্ষের সত্যতা প্রমাণের জন্য যুক্তি প্রদান করতেন। এভাবে ক্রমশ তাদের চিন্তা-চেতনা এমন এক অবস্থা ধারণ করলো যে, তারা বিশ্বাস করতে শুরু করলেন, বস্তুত সত্য কিংবা মিথ্যা বলে কিছু নেই, বরং সত্য হলো যেটাকে মানুষ সত্য মনে করে, আর মিথ্যা হলো মানুষ যেটাকে মিথ্যা হিসাবে ধারণা করে। এ চিন্তা-ভাবনা ক্রমশ বিশ্বের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে এবং অবশেষে এই সূত্রের উদ্ভব ঘটে যে, প্রকৃতপক্ষে সার্বিকভাবে বাস্তবতা হলো : মানুষের অনুভব ও উপলব্ধি নির্ভরশীল একটি বিষয়।
এ জাতীয় পণ্ডিতরা যেহেতু এ বিদ্যায় যথেষ্ট পারদর্শী ছিলেন তাই নিজেদেরকে Sophist ১ নামে পরিচিয় দিতেন যার অর্থ হল জ্ঞানী বা পণ্ডিত। পরবর্তী যুগে এসে উল্লিখিত মতাদর্শই Sophism নামে পরিচিতি লাভ করে। Sophist মতাদর্শের ব্যক্তিবর্গের মধ্যে Protagoras (৪১০-৪১৫ খ্রি.পৃ.) ও Gorgias (৩৭৫-৪৮৩ খ্রি.পূ.) সর্বাধিক প্রসিদ্ধ।
এমতাবস্থায় সক্রেটিস নিজের বিনয়ী ভাব প্রকাশ ও তাদের থেকে নিজেকে পৃথক এবং আপন চিন্তাধারাকে ভিন্নরূপে উপস্থাপনের জন্য Philosophy শব্দটি ব্যবহার করেন। অর্থাৎ তিনি নিজেকে
Philosopher (জ্ঞান বা প্রজ্ঞাপ্রেমিক) খেতাবে পরিচয় দেন।২ পরবর্তীকালে ঐ খেতাবটিই বিশেষ একটি শাস্ত্রের নামের পরিভাষায় পরিণত হয়।

পাদটীকা
১. সোফিস্টরা গ্রীসের রাজধানী এথেন্সের অধিবাসী ছিলেন না। বরং তারা অন্য এলাকা থেকে এথেন্সে আসেন।
২. শাহরেস্তানী-মিলাল ওয়াল নিহাল; ২য় খণ্ড,পৃ. ২৩১।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০২

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি কি ফিলসফি নিয়ে লিখতে গিয়ে, লজিক নিয়ে আলোচনা করলেন?

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:২৫

আলী নওয়াজ খান বলেছেন: জনাব আপনার প্রশ্নের উত্তর শিরেনাম পড়লেই পাবেন। ধন্যবাদ , আপনাকে সবখানেই পাওয়া যায় ।

২| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: জানলাম।

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৫৮

আলী নওয়াজ খান বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:০৭

Hermes বলেছেন: সুন্দর ইতিহাস

১০ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১:৫০

আলী নওয়াজ খান বলেছেন: ধন্যবাদ ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.