![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আসসালামু আলাইকুম। আমি আমাতুস সামী তাহেরা। আমি ২০১৯ সালে সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ থেকে ইউনানী চিকিৎসার উপর বি.ইউ.এম.এস. ডিগ্রী অর্জন করেছি। আমি আমার এই ব্লগে ইউনানী চিকিৎসা বিষয়ে আলোচনা করব যাতে সাধারণ মানুষ স্বল্প খরচে ও ঘরোয়া ভাবে নিজেদের চিকিৎসা করতে পারে।
ইউনানী চিকিৎসা শাস্ত্র আমাদের দেশে হেকীমী চিকিৎসা নামে পরিচিত। আবার কারো কাছে এটি ভেষজ চিকিৎসা বা ইসলামীক চিকিৎসা পদ্ধতি নামেও পরিচিত।
‘ইউনানী’ শব্দটি ‘ইউনান’ শব্দ থেকে এসেছে। প্রাচীন ইতিহাস গ্রন্থ ও বাইবেল থেকে জানা যায় যে, মহাপ্লাবনের পর হযরত নূহ (আঃ) এর ৩ পুত্র জীবিত ছিলেন। তারা হলেন, হাম, শাম এবং ইয়াফেস বা যেপ্যাথ। ইতিহাস থেকে আরো জানা যায়, হযরত নূহ (আঃ) এর বংশধরগণ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তাদের নাম অনুসারে ঐ জায়গাগুলোর নামকরণ করা হয়। তেমনি ইয়াফেস বা যেপ্যাথের এক পুত্রের নাম ছিল ইউনান বা যাভান, যিনি প্রাচীন গ্রীসে বসবাসের জন্য যান। এবং তার নাম অনুসারে প্রাচীন গ্রীসের পূর্বনাম ছিল ‘ইউনান’। উক্ত ইউনান তথা প্রাচীন গ্রীসে সর্বপ্রথম চিকিৎসা বিদ্যার জন্ম লাভ করে। প্রাচীন গ্রীস বা ইউনানের সুবিখ্যাত চিকিৎসক ছিলেন এসকেলিপিয়াস, যিনি সর্বপ্রথম চিকিৎসার সূচনা করেন। গ্রীসে বা ইউনানে তাঁকে দেবতা হিসেবে পূজা করা হতো। তাঁর মূর্তি রক্ষিত ঘরে দূরারোগ্য ব্যাধির রোগীদের দরজা বন্ধ করে রাখা হত। যখন রোগী স্বপ্নে এসকেলিপিয়াসকে দেখত তখন তাঁর নিকট রোগের প্রতিকার চাইত। এমতাবস্থায় স্বপ্নযোগে রোগী যে উপদেশ পেত তা সে পালন করত।
এসকেলিপিয়াসের ১৯ তম বংশধর হলেন চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক হিপোক্রিটাস। যিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানকে অন্ধকার, কুসংস্কারের জগত থেকে বের করে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। পূর্বে চিকিৎসা শাস্ত্র নির্দিষ্ট গোত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি শপথনামা প্রণয়ন করেন এবং যে এই শপথনামা পূর্ণ করবে বলে অঙ্গীকার করত তিনি কেবল তাদেরকেই চিকিৎসা শাস্ত্র শিখাতেন যা আজও চিকিৎসা বিজ্ঞানে “হিপোক্রেটিক ওথ” নামে পরিচিত।
হিপোক্রিটাস হলেন ইউনানী চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক। খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগে ইসলাম যখন পারস্য, সিরিয়া প্রভৃতি স্থান বিজয় করতে শুরু করে তখন কতিপয় চিকিৎসক মুসলমান হন। এবং পরবর্তীতে ইউনানী চিকিৎসা বিদ্যার পুস্তক সমূহ আরবী, ফার্সীসহ বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হতে থাকে এবং আরব ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় যাকারিয়া আল রাজি এবং ইবনে সীনার মত মহান মুসলিম চিকিৎসকের আবির্ভাব হতে থাকে। একসময় ইউনানী চিকিৎসা বিজ্ঞান আরব ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করে। তখনই এই চিকিৎসা বিদ্যা ‘ইসলামিক চিকিৎসা বিদ্যা’ বা ‘আরবীয় চিকিৎসা বিদ্যা’ নাম লাভ করে।
ইউনানী চিকিৎসককে ‘হেকীম’ বলা হয়। তাই কেউ কেউ একে ‘হেকীমী চিকিৎসা’ বলেও অভিহিত করেন। আর যারা ইউনানী শাস্ত্রকে আয়ুর্বেদের অংশ মনে করেন তাদের ধারণা ভুল। কেননা আয়ুর্বেদের জন্ম ভারতবর্ষে, অপরদিকে ইউনানী চিকিৎসার উৎপত্তিস্থল হল প্রাচীন গ্রীস।
___আমাতুস সামী তাহেরা
বি.ইউ.এম.এস. (ব্যাচেলর অফ ইউনানী মেডিসিন এন্ড সার্জারী)
সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ঢাকা, বাংলাদেশ।
২৮ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৭
আমাতুস সামী তাহেরা বলেছেন: আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
যেহেতু ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক উভয় চিকিৎসার মূল উৎস একই অর্থাৎ ভেষজ, তাই হাসপাতাল একাসাথে রাখা হয়েছে।
২| ২৭ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:২৭
খায়রুল আহসান বলেছেন: ব্লগে সুস্বাগতম! শুভ হোক আপনার ব্লগযাত্রা, আনন্দময় এবং নিরাপদ হোক!
ইউনানি চিকিৎসা সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না। অতি সংক্ষেপে এর কিছুটা ইতিহাস এখন জানা হলো। ধন্যবাদ।
ইউনানি চিকিৎসা ব্যবস্থায় কি বড় বড় রোগব্যাধির চিকিৎসা সম্ভব?
২৮ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০৬
আমাতুস সামী তাহেরা বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
দূরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার জন্য অনেক গবেষণা প্রয়োজন। বাংলাদেশে এক্ষেত্রে তেমন সুযোগ নেই। তবে মেধাবী ইউনানী চিকিৎসকগণ যদি এই ব্যাপারে জোর প্রচেষ্টা চালান তাহলে ইনশাআল্লাহ্ অদূর ভবিষ্যতে ইউনানী চিকিৎসা দ্বারা দূরারোগ্য ব্যাধির সফল চিকিৎসা করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।
৩| ২৮ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২০
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ব্লগে স্বাগতম! ইউনানি আর আয়ুর্বেদ যে দুইটি ভিন্ন দেশে আবিষ্কৃত চিকিৎসা পদ্ধতি এটা জানতাম না। লেখা ভালো লেগেছে।
২৯ শে নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:২৭
আমাতুস সামী তাহেরা বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৩৪
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: ব্লগে স্বাগতম।
১৯ শে জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৫৮
আমাতুস সামী তাহেরা বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ব্লগে স্বাগতম। আপনার পরিসংখ্যানে দেখাচ্ছে : ব্লগ লিখেছি: ১১ ঘন্টা ১৬ মিনিট । সম্ভবত আমিই আপনার ব্লগে প্রথম ভিজিটর।
পোস্টটা ভালো লেগেছে। হেকিমি বিদ্যার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস জানলাম, যা সম্পর্কে আদতে কিছুই জানতাম না।
ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক হাসপাতাল আলাদা না হয়ে একসাথে হওয়ার কারণ কী? এ দুটোর মধ্যে কি সম্পর্ক আছে?
শুভেচ্ছা রইল।