নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি এক যাযাবর

আমি মিহু

আনাড়ি হাতের আনকোরা লেখক

আমি মিহু › বিস্তারিত পোস্টঃ

অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ঃ

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১৫


হযরত ঈমাম আবু হানিফা (রহঃ) বলেন “আমি আমার জীবনে লক্ষ লক্ষ হাদিস পড়ে এমন পাচটি হাদিস পেয়েছি যার মধ্যে ইসলামের শরিয়তের মূল কথার প্রায় সবটাই আছে”।
হযরত ঈমাম আবু দাউদ (রহঃ) বলেন “আমি আমার জীবনে লক্ষ লক্ষ হাদিস পাঠ করে এমন চারটি হাদিস পেয়েছি যার মধ্যে ইসলামী শরিয়াহ এর প্রায় সবটাই আছে।
দুজনের কথার মূল অর্থ হলো এই চারটি বা পাচটি হাদিস যদি কেউ আমল করতে পারে তাহলে তার জীবন ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক চলে যাবে। শরিয়তের সব টাই তার মানা হয়ে যাবে।
হাদিস গুলো হলোঃ
হাদিস নং ১. প্রতিটি কাজের ফলাফল নিয়তের উপর নির্ভরশীল। (বুখারি, মুসলিম)
কেউ যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে যেকোন আমল করে তাহলেই একমাত্র ইবাদাত কবুল হবে। তাছাড়া লোক দেখানোর জন্যে করলে রিয়া করার গুনাহ হবে। রিয়া হলো শিরক। আল্লাহ জাহান্নামে প্রথম পাঠাবেন রিয়াকার দের। প্রথম জাহান্নামে যাবে তিন জন ব্যাক্তি। ১. শহীদ ২. একজন দানবীর ৩. একজন বড় আলেম। তারা সবাই লোক দেখানোর জন্যে আমল করেছিল।
প্রতিটি ইবাদাতের প্রাণ হলো নিয়ত।
তাই যে কোন আমল সহিহ হতে হলে দুটো জিনিস দরকারঃ ১. ইখলাসুন নিয়াহ ২. আমালুস সুন্নাহ। অর্থাৎ নিয়ত হবে শুধুই আল্লাহর সন্তুষ্টি, আর আমল করতে হবে হুজুর সাঃ যেভাবে এই আমল করেছেন ঠিক সেভাবে। তাহলেই হবে সফল ইবাদাত।
হাদিস নং ২. সে’ই প্রকৃত মুসলিম যার জবান ও হাত থেকে অপর মানুষ নিরাপদ। (বুখারি, মুসলিম)
জবান এমন একটি অংগ যার কোন হাড় নেই, আল্লাহ এটা দিয়েছেনই নরম নরম কথা বলার জন্যে। ইসলামের কথা বলার জন্যে। কল্যাণের কথা বলার জন্যে। কারো গীবত করা যাবেনা। কাওকে আঘাত দিয়ে কথা বলা যাবেনা। যদি কারোন কোন আচরণ বা কাজ খারাপ লাগে, তাকে ডেকে একাকী এমন ভাবে বলতে হবে যাতে সে নিজেকে শুধ্রাতে পারে, ক্ষেপে না যায়। তাকে অপমান করার উদ্যেশ্যে করা যাবেনা। এবং দুয়া করতে হবে তার যেন পরিবর্তন আসে।
আর হাতের ক্ষতিও করা যাবেনা কারো। যদিও সে অন্য ধর্মের ও হয়। প্রতিটি বিধর্মী আল্লাহর আমানত। তাদের ব্যাপারে আল্লাহ ক্বিয়ামতের দিন জিজ্ঞাসা করবেন। তাদের সাথে ভালো আচরণ করতে হবে।
হাদিস নং ৩. ইসলামে কোন ব্যাক্তির সৌন্দর্য হচ্ছে সে অযথা কথা ও কাজ থেকে সে নিজেকে বিরত রাখে। (তিরমিযি)
সাহাবি গণ মোবাহ (যে কাজের কোন গুনাহ বা সাওয়াব নেই) কাজ এড়িয়ে চলতেন। তারা এমন কাজ করতেন না যার কোন দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ নেই। অপর এক হাদিসে এসেছে “যে চুপ থাকিল, সে নাযাত পাইলো” কথা কম বলা। কারন বেশি কথা বললেই মিথ্যা বলা লাগবে।
হাদিস নং ৪. একজন মানুষ তখন পর্যন্ত প্রকৃত মুমিন নয় যতক্ষন না সে নিজের জন্যে যা পছন্দ করে ঠিক সে জিনিস তার অপর মুসলিম ভাই এর জন্যে পছন্দ করে। (আবু দাউদ)
সাহাবিদের মধ্যে নিজের চেয়ে মুসলিম ভাই দের জন্যে ভালো জিনিস পছন্দ করার প্রবণতা ছিল। এর প্রকৃত উদাহরণ সা’ত ইবনে রব’ই রাঃ। তিনি ছিলেন মদীনার আনসার সাহাবি। নবী সাঃ হিজরতের পর তাকে আব্দুল্লাহ ইবনে আউফ রাঃ এর ভাই বানিয়ে দেন। তখন তিনি নিজের সম্পদের অর্ধেক তাকে দিয়ে দেন। এমনকি নিজের একজন স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ইদ্দত পূরণ করে তার সাথে বিয়ে দেন।
নিজের ভাই এর জন্যে এমন ত্যাগের উদাহরণ বিরল।
আরেক সাহাবি জাফর ইবনে আবু তালিব। তার বাড়িতে হুজুর সাঃ এর একজন মেহমান কে নিয়ে যান একবার। ঘরে খাওয়ার কিছু ছিলনা দু তিনটা রুটি ছাড়া। তারা নিজেরা না খেয়ে, সন্তান দের না খাইয়ে মেহমান কে খেতে দেন। আর তার স্ত্রীকে আগেই বলে রাখেন যখন খাওয়া শুরু হবে তখন যেন বাতি নিভিয়ে দেন। যাতে তিনি যে খাচ্ছেন না তা মেহমান বুঝতে না পারেন। আল্লাহ তার এই আচরণে খুশি হয়ে কুরানে আয়াত নাযিল করেন।
সুবহানাল্লাহ। ত্যাগের কত সুন্দর নজির।
হাদিস নং ৫. হালাল সুস্পষ্ট, হারাম সুস্পষ্ট। এর মাঝে কিছু জিনিস আছে যা সন্দেহ যুক্ত, এসব সন্দেহ যুক্ত জিনিস পরিহার করো। (বুখারি, মুসলিম)
অপর এক হাদিসে হুজুর সাঃ বলেন সে ব্যাক্তি পুরোপুরি মুমিন নয় যে হারাম করে ফেলার ভয়ে অনেক জায়েয জিনিস ও পরিহার না করে।
আরেক হাদিসে হুজুর সাঃ বলেন “যে ব্যাক্তি সন্দেহ যুক্ত (হালাল না হারাম এটা নিয়ে মতভেদ আছে) কাজ করে সে প্রকারান্তরে হারামের দিকেই যাচ্ছে”
অর্থাৎ যেখানে সন্দেহ হবে বা এক আলেম বলেন করা যায় আরেক আলেম বলেন করা জায়েয না এটা পরিহার করতে হবে। হারাম থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকা লাগবে।

এই পাঁচটি হাদিসের সারমর্ম এই যে, ১. যা করবো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করবো। অন্য কোন নিয়তে নয়। ২. নিজের জবান এবং হাত দ্বারা কারো ক্ষতি করবোনা, কারো দোষ বলবোনা। ৩. যে কোন অনর্থক অযথা কাজ ও কথা থেকে বিরত থাকবো। ৪. নিজের জন্য যা পছন্দ করবো অন্য ভাই এর জন্য ও তাই পছন্দ করবো। ৫. হালাল ও হারামের মাঝামাঝি সন্দেহ যুক্ত জিনিস থেকে বিরত থাকবো ইনশা আল্লাহ।
আল্লাহ আমাকে ও আপনাদের সবাই কে এই তৌফিক দান করুন। আমিন।

বিঃদ্রঃ এখানে কিছু প্রাসঙ্গিক হাদিস খুব সংক্ষিপ্ত ভাবে দেয়া হয়েছে। মূল আলোচনা পরিষ্কার করার জন্যে। ঐ হাদিস গুলো অনেক বিষদ ভাবে আছে। এখানে শুধু প্রয়োজন অনুযায়ী দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.