নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই ব্লগের সকল লেখা একান্তই আমার নিজস্ব মতামত ও আমার ভাললাগা। সবার ভাল নাও লাগতে পারে। কারও কিছু খারাপ লাগলে আমি অত্যান্ত দুঃখিত।

আনন্দ ধারা

আমি আনন্দধারা। লিখতে ভালবাসি। ভালবাসি অনলাইনে ঘুরে বেড়াতে।

আনন্দ ধারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

জঙ্গিবাদ হচ্ছে একটা আদর্শ !

০৮ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:৫৯

টাইটেল দেখেই অনেক নাক ছিটকাবেন এটা কি বলে। কিন্তু পড়লেই বুঝতে পারবেন, কেন বলা হয়েছে এই কথা ! :)

"জঙ্গিবাদ হচ্ছে একটা আদর্শ। এইটাকে বল প্রয়োগে দমন করা যাবেনা। আপনি একজন দুইজন বা বিশ পঞ্চাশ জন মানুষ মেরে ফেলতে পারেন, কিন্তু আইডিয়াকে না। আইডিয়া ইজ বুলেটপ্রুফ বলে একটা কথা আছে। আবার রুমির ক্র্যাক প্লাটুনের সাথে দেশপ্রেমের দুই তিনটা কথা মুড়িয়ে সাথে আমার দেশে হাত দিলে ব্লা ব্লা করবো বলে অতি আবেগি পোস্ট দিয়েও এদের দমন করা যাবেনা। এদের কাপুরুষ বলেও বলা যাবেনা, আমরা গুলশানের ঘটনায় দেখেছি এরা রাত থেকেই ওইখানে ছিলো, পুলিশ র‍্যাব আর্মি আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে, কেউই পালানোর চেষ্টা করেনি, তারা আর্মি আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে। তার মানে তারা জানতো তারা মৃত্যুর মুখে পড়বেই।
যারা মৃত্যুর মুখেও অবিচল থাকে তাদের আর যাই হোক কাপুরুষ বলা যায়না। তাহলে তাদের মোকাবেলা করবে কিভাবে? ব্যপারটা এখন অনেক ক্ষেত্রেই সরকারের উপরে নির্ভর করছে, তারা চাইলে হবে, তারা না চাইলে হবেনা। কারন এইটা সৃষ্টির পেছনেও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভুমিকা আছে উনাদের। এদের মোকাবেলা করতে হলে বন্দুক বা গুলির ভয় না দেখিয়ে আগে কারন খুজতে হবে কেনো এরা এই ভুল পথে গিয়েছে? কিভাবে তাদের মনের ভিতরে উগ্রবাদের বীজ রোপন করা হয়েছে? তাদেরকে সাকসেসফুলি এক্সপ্লয়েট কেনো করা গিয়েছে এইসব খুঁজে বার করতে হবে। তাদেরকে সহজে এক্সপ্লয়েট করা গিয়েছে তার প্রধান কারন আমাদের সরকার তাদের রাজনীতির প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে ধর্মকে দাড় করিয়েছে। ধর্ম বিষয়ে মুক্ত আলোচনা, প্রচারনা এক প্রকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কোথাও এক দল মানুষ যদি ধর্ম নিয়ে আলোচনা করতে জড়ো হয় তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যা বলা হবে তা হলো জিহাদিরা সন্ত্রাসের পরিকল্পনা করতে জড়ো হয়েছে। ধর্মীয় পোশাক পরা দেখলেই জিহাদি বলে সন্দেহ করা হয়। এতে করে হয় কি এই বিষয়ে প্রচারনার, জানার বা আলোচনা করার স্কোপ কমে আসে। যারা আগ্রহী তারা আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যায়, যেহেতু ধর্ম বিষয়ে বাইরে খুব বেশি বক্তব্য বা আলোচনা শোনার চান্স পায়না তাই তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এক পক্ষীয় বক্তব্যে অনুপ্রানিত হয়, ভুল বা সঠিক যাচাই করার সুযোগ পায়না। এর চান্স নেয় উগ্রবাদীরা। তারা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ধর্মের দৃষ্টিভঙ্গি বলে চালিয়ে দিতে পারে, আর যেহেতু মুক্ত আলোচনা কম হয় তাই যাচাই করার চান্স এদের হয়না, এরা যাচাই করার জন্যে নির্ভর করে যারা এদের এক্সপ্লয়েট করছে তাদের উপরে। অথচ সব জায়গায় এই নিয়ে কথা বলা আলোচনা আর সঠিক ভাবে ধর্মের কথাগুলো ব্যাখ্যা করার সুযোগ দেয়া হলে এইসব উগ্রবাদীরা চান্স পেতোনা। অথচ আমাদের হচ্ছে উলটো, মাদ্রাসার ছেলে মানেই বাই ডিফল্ট জঙ্গি, এমন একটা ধারনা সৃষ্টি করা হয়েছে জনমনে। মাদ্রাসায় পরা গরিবের ছেলেগুলাকে সমাজের সামনে হেয় করা হয় প্রতিনিয়ত, এতে করে তারা সামনে আসতে সাহস পায়না, আর এর চান্স নেয় আইসিসের মত দল গুলো। মাদ্রাসায় কেউ না পড়লে ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা কারা দিবে? তখন ব্যাখ্যাকারীর জায়গা নিবে আইসিসের মতো দল গুলো, নিজেদের মন মতো কুরআন হাদীসের ব্যক্ষা দিবে তারা। এইটাই তো স্বাভাবিক। প্রকৃতি শুন্যস্থান পছন্দ করেনা, যখন ভালো গুলোকে উপ্রে ফেলা হয় উদ্যেশ্যমুলক ভাবে সেখানে সেই শুন্যস্থান পুরন করে নেয় আগাছা গুলো।
এর পর আরেকটা গুরুত্তপুরন এলিমেন্ট হলো রাজনৈতিক অসহিস্নুতা। ভিন্নমতের গলা টিপে ধরা হয়েছে কঠোর ভাবে। আমাদের মনে রাখতে হবে এইসব উগ্রবাদীদেরও একটা রাজনৈতিক এজেন্ডা থাকে, যখন রাজনীতির অনেকগুলো অপশন থাকবে তখন যাচাই বাছাই করার সুযোগ থাকবে, কোনো একটা দল একপক্ষীয় ভবে নিজেদের মত করে মানুষকে ধর্মীয় উগ্রবাদী মতাদর্শে দীক্ষিত করতে পারবেনা, মিস লীড করতে পারবেনা। কিন্তু যখন গনতান্ত্রিক দল গুলোকে অবরুদ্ধ করা হয় তখন সমাজের একটা অংশ যারা কথা বলতে চায় তারা আগ্রহী হয় চরম্পন্থার দিকে, এবং তাদেরকেই টার্গেট করে ব্রেনওয়াশ করা হয়। তাদের আগ্রহকে ধর্মীয় ভাবে দায়মুক্তি দেয়া হয়, যখন কোনো ইচ্ছাকে পুরন করতে সেখানে ধর্মীয় এলিমেন্ট ঢুকানো হয় তখন মানুষ সেই ইচ্ছা পুরনে সাহসী হয়ে উঠে, এইটাকেই তারা ইউজ করে জঙ্গি বানায়,সাধারন মানুষ খুন করাকেও অপরাধ বলে মনে করেনা তারা। তাই গনতন্ত্র চলার পথের বাধা অপসারন করা জরুরি।
আপনারা বিরোধী দলকে ভিন্ন মতের মানুষকে নিশ্চিহ্ন করে শুন্যস্থান তৈরি করবেন সেই শুন্যস্থান পুরন করবে চরমপন্থিরা। যখন আমি তুমি, আমরা তোমরা, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আর বিপক্ষের শক্তি, রাজাকার
আর ছাগু বলে বিভেদ সৃষ্টি করবেন তখন ঐক্যবদ্ধ হবার তাগিতে মানুষ চরমপন্থার দিকেই ঝুঁকবে এইটা স্বাভাবিক ব্যপার। তারা যখন দেখবে একদিকে নিপীড়নকারী সরকার অন্যদিকে অথর্ব বিরোধীদল যারা
অন্যায়ের প্রতিবাদ করার যোগ্যতা রাখেনা তখন তারা দুইটাকেই বাদ দিয়ে ধর্মের দিকে ঝুকে যেখানে জাস্টিস আছে, কিন্তু আপনারা ধর্মের মুখও বন্ধ করে ধর্মকে কেবল মসজিদে নামাজ পড়া আর ঈদ উদযাপনের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছেন, ধর্মের শিক্ষাগুলো দেয়ার মতো পরিবেশ বিনষ্ট করেছেন তখন তারা ধর্মীয় উগ্রবাদিতায় উৎসাহিত হয় যেখানে কিছু মানুষ ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে অন্যায় অপরাধ রক্তপাত করতে উৎসাহিত করে তরুণদেরকে, আর তরুনেরা সাধারণ ভাবে সঠিক ভাবে ধর্মীয় শিক্ষা না পাওয়ায় তাদের মেন্টরেরা যা বলে তা-ই চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে নেয়। আর আপনারাও দেশে জঙ্গি আছে আর সেই জঙ্গী দমনে আপনাদের দরকার আছে বলে আন্তর্জাতিক ভাবে নিজেদের অপকর্মের বৈধতা আর অনৈতিক ভাবে ক্ষমতায় থাকার যথার্থতা প্রমান করতে চাইলে ঘটনা আরো খারাপের দিকেই যাবে। এখনো সময় আছে, পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে যাওয়ার আগেই সতর্ক হোন। অন্যের উপরে দোষ তুলে নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে যাবেন না। তাতে বিপদ বাড়বে, কমবেনা। মনে রাখবেন পরিস্থিতির কাছে আপনারা দুর্বল, ওরা বুঝিয়ে দিয়েছে আপনারা সক্ষম নন, ওরা যাদের মারার তাদেরকে আগেই মেরেছে, যাদেরকে বাচিয়ে রাখার তাদের তারাই দয়া করে বাচিয়ে রেখেছে যাতে আপনারা বুঝতে পারেন যে জনগণকে নিরাপত্তা দেয়া আপনাদের পক্ষে সম্ভব না, তারা চাইলেই জনগনের ক্ষতি করতে পারে। পুলিশ র‍্যাব আর্মি এসে জনগণকে বাচাবে এই ভেবে পরিতৃপ্তির ঢেকুর তুলে লাভ নেই, বাস্তবতা উপলব্ধি করুন, আর্মি আসলে কাউকেই বাচাতে পারেনাই, তাদেরকেই উদ্ধার করা হয়েছে যাদেরকে টেরোরিস্টেরা ছেড়ে দিয়েছে। তারা যাদের মারতে চেয়েছে তাদেরকে ঠিকই মেরেছে, কেউ বাচাতে পারেনি। তারা চাইলে সবাইকেই মেরে ফেলতে পারতো। আর্মি যা করেছে তা হলো সেই ৬ বা ৭ বা ৮ জনকে অভিযানে হত্যা করেছে, যার জন্যে তারা নিজেরাও প্রস্তুত ছিলো, এর বেশি কিছু নয়। তাই তাদের সহজ ভাবে নিয়ে নিজেদের আর দেশের বিপদ ডেকে আনবেন না দয়া করে। প্রিভেন্টেশন ইজ অলওয়েজ বেটার দ্যান কিউর।
সত্যিকারের গনতন্ত্র মুক্তি পাক, সত্যিকারের বাক স্বাধীনতা মুক্তি পাক, ধর্মীয় স্বাধীনতা মুক্তি পাক, উগ্রবাদিতা নিপাত যাক।"

~~ কায়সার রিগান


মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:০২

আনন্দ ধারা বলেছেন: প্রিভেন্টেশন ইজ অলওয়েজ বেটার দ্যান কিউর<< ঠিক ।। শুরুটা করতে হবে প্রতিটা পরিবার থেকে, একেকটি পরিবার হবে একেকটা রক্ষা কবচ। জানি না সেই দিন কবে, কিন্তু আমার হাতেই তো আছে একটা পরিবার, সুতরাং শুরুটা আমিই করি। এই হোক আমাদের ব্রত।

২| ০৮ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৩৪

ঢাকাবাসী বলেছেন: আপনার কথার সাথে একমত।

০৯ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:২১

আনন্দ ধারা বলেছেন: আসুন আমাদের ঘরে যে ছোট ছোট মানুষ গুলো আছে, তাদেরকে শিক্ষা দেই সবার উপরে আল্লাহ বা ঈশ্বর আছেন, তার সান্নিধ্য পেতে হলে আগে তার শ্রেষ্ট সৃষ্টি মানুষকে ভালবাসো, এটাই হোক আমাদের প্রথম পদক্ষেপ। খারাপ ভাল সেই বিচার করার অধিকার আমাদের দেয়া হইনি। সুতরাং আমাদের বাচ্চাদের গনহারে পজেটিভ দিকগুলো শিখাতে হবে, খারাপ কে ভাল না বাসতে পারুক, অন্তত ঘৃনা যেন না করে সেইদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৩| ০৮ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৪৪

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সহমত

০৯ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:২৩

আনন্দ ধারা বলেছেন: পুরো সমাজকে আপনি সংশোধন করতে পারবেন না, কিন্তু আপনি আপনার নিজের পরিবারকে তো নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন, তবে তাই করুন। এইভাবে সবাইকে নিয়েই আমাদের সমাজ, আমাদের দেশ। আমি আশাবাদী।

৪| ০৯ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:০৯

নতুন বলেছেন: এই্ আদশ`কে আমাদেরই পরাজিত করতে হবে।

তার দায়িত্ব আমাদের জনগনের ... সবার...

আমি করছি আমার চারপাশের মানুষের সাথে কথা বলে... সচেতন সবাইকে এই আদশ`কে পরাজিত করার জন্য কাজ করতে হবে।

০৯ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:১৭

আনন্দ ধারা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। অনেক অনেক খুশি হলাম আপনার কথা শোনে। এভাবেই জাস্ট একজন মানুষ তার নিজের পরিবারের দায়িত্ব নিলেই অনেক কিছু করা সম্বভ :)

৫| ০৯ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ২:২৯

নতুন বলেছেন: কোন কিছুর শুরুটা নিজের থেকেই শুরু করা উচিত,...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.