নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যান্ত্রিক সব খোলা চিঠি

অপ্রয়োজনে অনেক কথা বলে যাই, কিন্তু বলা হয়না আরো অনেক বেশী কথা- অনেক আপন মানুষদেরকে। তাইতো, এই খোলা চিঠি। হয়তো কারোর চোখে পরবে কোনদিন, যখন আমি থাকবোনা.....

আনন্দক্ষন

মানুষ হয়ে জন্মে যখন ফেলেছি, তাই নিরুপায় হয়ে মৃত্যুকে বরন করতেই হবে। পৃথিবীতে এসেছিলাম একা, জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে চলতে হয় একা, মরতেও হবে একা। তাই তো নিজের খুশি মতো বাচবার চেষ্টা করে চলেছি, আনন্দের সাথে। জন্ম নেবার সময় মাকে কষ্ট দিয়ে ছিলাম আর কিছু অক্ষমতার জন্য চলার পথে ইচ্ছে না থাকা সত্বেও কষ্ট দিয়েছি ভালোলাগা মানুষগুলোকে। তাই হয়তো পৃথিবীটা ছাড়বার সময় এদেরকেই আবার কষ্ট দিতে হবে ! তাই তো কেবল ভালোলাগার- ভালোবাসার এই মানুষগুলোকে গুরুত্ব দেই। সমাজ নামক জঞ্জালটাকে এড়িয়ে চলি আর প্রতিটা নিঃশ্বাসের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই সৃষ্টিকর্তাকে।

আনন্দক্ষন › বিস্তারিত পোস্টঃ

তুষার দেশে আমার এক একটা দিন...সপ্তদশ পর্ব

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:১০





আজ একটু সকাল সকাল বাসায় ফেরা । সচরাচর রাত বারটার আগে ফেরা হয়না এ্যলেনের। আজ একটু বিশ্রাম নেবার ইচ্ছা, পারলে দোকানেও যেতে হবে কিছু কেনা কাটা করতে। কিন্তু সবার আগে ঘুম। গত তিনদিন কেবল দু-এক ঘন্টা করে ঘুমাতে পেরেছে। আনন্দের সাথেও কথা হয়না বেশ অনেকদিন। ভাবতে ভাবতেই ফোন আসে,



: তুমি কি এ্যলেন? আমি পুলিশ অফিসার, হাসপাতাল থেকে বলছি।

: হ্যা, আমিই এ্যলেন। কি ব্যপার?

: আনন্দ নামের একটি মেয়ে একসিডেন্ট করেছে, তার ফোনের ICE (In Case of Emergency) থেকে তোমার নাম্বার পাওয়া গেছে। তুমি কি তাকে চেনো?



: হ্যা, আনন্দ আমার খুব ভালো বন্ধু। ওর কি অবস্থা?



মুহুর্তের মাঝে সব ক্লান্তি যেন অসহায়ত্বের রুপ নিল। আনন্দের কোন কিছু হলো না তো? অফিসারের কয়েক মুহুর্তের শ্বাস নেবার সময়টুকুও যেন এ্যলেনের কাছে অনেক যুগ মনে হতে লাগলো।



: না, তেমন কোন সাংঘাতিক দুর্ঘটনা না তবে, ও জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। তাই আমরা ওর পরিচয় এবং পরিবারকে জানাবার জন্যই চেষ্টা করছি। তুমি কি আমাদের কোন সাহায্য করতে পারো।



: আমি আসছি , এক্ষনি। এসে সব কথা বলছি।



সেবার, একটা একসিডেন্টে আনন্দের কেবল পা ভেংগে গিয়েছিল। কিন্তু একই ঘটনায় দুজন মারা যায়। আনন্দের সাথে ওদের কোন যোগাযোগও ছিলনা। আনন্দ হাটছিল রাস্তার পাশের ফুটপাথ দিয়ে, আর রাস্তার বরফে একটা গাড়ি নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ধাক্কা দেয় পর পর দুটো গাড়িকে। তৃতীয় গাড়িটা রাস্তার এই ধাক্কা এড়াবার জন্য ব্রেক করে কিন্তু তারপরও ধাক্কা খায় দ্বিতীয়টার। সেই ধাক্কা সামলাতে না পেরে রাস্তা ছেড়ে, ফুটপাথ পার হয়ে গাড়িটা গিয়ে আছড়ে ফুটপাথের পাশের পাইন গাছটায়। সেই সময়টায় আনন্দ আকস্মিক ঘটে যাওয়া দূর্ঘটনা বুঝে উঠবার আগেই সরে যায় ফুটপাথের পাশে, কিন্তু বেশি সরতে পারেনা একটা পাইন গাছের কারনে। আর তারই ফলাফল সরুপ আনন্দকে আঘাত করে গাড়িটা। অপ্রত্যাশিতভাবে আনন্দ তেমনভাবে আঘাত পায়নি কেবল ভাগ্যের জোরে।



আনন্দের অবস্থা এতোটা খারাপ হতো না। ওর চোটও তেমন বেশি ছিলনা। কিন্তু তৃতীয় গাড়িটার ড্রাইভার জ্ঞান হারিয়ে ফেলে আঘাতের কারনে, আর গাড়ির নিচে যে কেও চাপা পরে আছে , তা কারোর জানা ছিলনা। ফলে সবচেয়ে শেষে আনন্দকে উদ্ধার করে পুলিশ, এর মাঝে অনেক বেশি রক্তক্ষরনে আনন্দের অবস্থা আশংকাজনক হয়ে পরে।



পুলিশ ওর ফোন লিস্টের ICE (In Case of Emergency) নম্বরে এ্যলেনের নাম উল্লেখ থাকায়, সেসুত্র ধরে এ্যলেনকে জানায়।



এদের দেশে, রোগীকে হাসপাতালে বেশি সময় রাখার পক্ষপাতি না কতৃপক্ষ। তারপর আবার আনন্দের কোন ইনসুরেন্স করা ছিলনা। আর সরাসরি যে গাড়িটা আনন্দকে আঘাত করেছে, দুর্ঘটনাটায় তার কোন দোষ না থাকায় সেও আনন্দের চিকিৎসার খরচ বহন করার জন্য বাধ্য না। এমনকি তার গাড়িও কোন ক্ষতিপুরন পাবেনা, প্রথম গাড়ির কাছ থেকে।



সব মিলিয়ে এ্যলেন যা জানলো, তাতে আনন্দ হাসপাতালে প্রাথমিকভাবে যে চিকিৎসা পেয়েছে, তা পুলিশের কোন একটা হিসাবের মাঝে ধরা হবে, কিন্তু ওর ঔষধ কিংবা পরবর্তিতে হাসপাতালে অবস্থান করতে হলে নিজের পরিশোধ করতে হবে। যা অনেক বেশি ব্যয় বহুল। পুলিশ এবং ডাক্তাররা এ্যলেনকে তাই আনন্দকে বাসায় নিয়ে যাবার পরামর্শ দিল। প্লাস্টার করেই ওকে ছেড়ে দেয়া হবে, সে হিসেবে এ্যলেনকে প্রস্তুতি নিতে বললো ওরা।





হাসপাতালে জ্ঞান ফেরার পরও, আনন্দকে কয়েক ঘন্টা থাকতে হয়েছিল। যদিও আনন্দের জ্ঞান ছিল, কিন্তু আসলে ওর বিচার -বিবেচনা যেন ঠিক কাজ করছিলনা। কিছুটা চুপ চাপ, কেমন যেন আচরন ছিল। তবে ডাক্তারা বলেছে, এটা স্বাভাবিক। কিছুটা ঘটে যাওয়া ঘটনার আকষ্মিকতায় আর বাকিটা কড়া বেদনা নাশকের কারনে। আগামী কালের মাঝে ঘোর কিছুটা কেটে যাবে আর ঘটনার কারনে যে অস্বাভাবিকতার সৃষ্টি হবে, তার উপর নির্ভর করে থেরাপীর জন্য বলা হবে পরবর্তিতে যোগাযোগের পর।



আনন্দের ব্যপারে কোন সিদ্ধান্ত নিতে সাহস পাচ্ছেনা , এ্যলেন। তাই মাঝ রাত, ওয়ার্কিং ডে সব কথা ভাবলেও, ববকে ফোনে জানায় সব কিছু।



ববের সাথে আনন্দের বন্ধুত্ব বেশ ঘনিষ্ঠ, আর এ্যলেন তা ভালোই জানে। আর ববকে এ্যলেনের ব্যক্তিগতভাবে খুব বেশি ভালো না লাগলেও, আনন্দের কারনে মাঝে বহু দেখা হয়েছে, এবং সম্পর্কটাও সহজ, সাধারন। তাই এ্যলেনের এই মুহুর্তে ববের কথাই মনে পরে।







বব এ্যলেনের কাছ থেকে একসিডেন্ট আর আনন্দের হাসপাতালের ব্যপারে সব কিছু শোনে। এতো রাতেও সাহায্য করতে পারতে পারবে ভেবে দেরী না করে আসার কথাই সিদ্ধান্ত নেয়। এরকম একটা বিপদে সমস্যার থাকে অনেক। এ্যলেন যেন অনেকটা স্বস্থি পায় ববের আসার আশ্বাসে।





**********************************************

আনন্দের বাসা দোতলায়। সিড়ি দিয়ে কি করে উঠবে তার একটা কোন ব্যবস্থা করতে হবে। তারপর আবার একবার দোতলায় ওঠাবার পর, কোন ভাবেই নামবার কথা ভাবা যাবেনা। চাইলে ডুপলিকেট চাবি এ্যলেন নিয়ে রাখতে পারে, প্রতিদিন অন্তত তাতে ওকে দেখতে যাওয়া যাবে, কিন্তু আনন্দকে নিচে নেমে দরজা খুলতে হবেনা। কিন্তু একা কোনভাবেই আনন্দকে রাখা যাবে না , অন্তত আগামী তিনদিন।



এ্যলেন জানে আনন্দের দেশ থেকে আসা এখানে অনেকেই পরিচিত আছে, এবং তারা অনেকেই বিবাহিত। সুতরাং আনন্দ তাদের কাছে থাকতে পারে। কিন্তু আনন্দ, এধরনের কোন সাহায্য নিতে চাইবেনা তা এ্যলেনের জানা।



এ্যলেন কি থাকবে আনন্দের বাসায় , কয়েকদিনের জন্য? না, সেটাও সম্ভবনা। আনন্দের বাসায় একটা মেয়ে আছে, সাবলেটে। তার চেয়েও বড় সমস্যা, আনন্দের টয়েলেটে যাবার জায়গাটা এতো ছোট যে কোন ভাবেই স্ক্রচ নিয়ে ভেতরে ঢোকা সম্ভব না।



হাজারটা সমস্যা আর সমাধান খুজতে খুজতে কখন যে সময় পার হয়ে গেছে, লক্ষ্য করেনি এ্যলেন। ববের ডাকে ধ্যান ভাঙ্গে এ্যলেনের।



- আনন্দের সাথে কথা হলো। কিন্তু ওকে তো স্বাভাবিক মনে হলো না।

- ওটাই তো বড় সমস্যা। ওকে একা রাখা যাবেনা। কিন্তু এখন ডিসচার্জ নিয়ে কোথায় রাখা হবে ওকে?



আনন্দের বাসার ব্যপারে ববের কোন ধারনা নেই, সে কখোনো যায়নি। তাই এ্যলেন সব বিষয় আলোচনা কারার পর বব পুরো বিষয়টার ভয়াবহতা বুঝতে পারলো।



- হম, আমার বাসায় নেয়া যায়, কিন্তু আমি তো চারজন ব্যচেলারের সাথে থাকি। আনন্দ তো এভাবে থাকতে পারবেনা।

- সেটা হলে তো আমার বাসায় নিয়ে যাওয়া যায়, কিন্তু আনন্দ পচ্ছন্দ করবেনা, পুরোপুরি জ্ঞান ফিরলেই রাগ করবে। ও এসব ব্যপারে খুব খুত খুতে।



- কিছু করার নাই। চলো! আজ রাতে আমি আর আনন্দ , তোমার বাসাতেই থেকে যাই। পরে সব বুঝিয়ে বলবো।



মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:২০

আসাদুজ্জামান আসাদ বলেছেন: চালিয়ে যান ভালা লাগলো। পরবর্তী পর্বের আশায় থাকলাম

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৩০

আনন্দক্ষন বলেছেন: ধন্যবাদ ভালো লাগা জানিয়ে যাবার জন্য। চেষ্টা করবো, তাড়াতাড়ি পোষ্ট দেবার।

২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৫৩

বড়দাদা বলেছেন: আগামী পর্ব তারাতারি চাই

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৫৫

আনন্দক্ষন বলেছেন: চেষ্টা থাকবে....। ধন্যবাদ সাথে থাকবার জন্য।

৩| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:২৯

রবিউল ৮১ বলেছেন: এ্যলেন কি থাকবে আনন্দের বাসায় , কয়েকদিনের জন্য? না, সেটাও সম্ভবনা। ---বুঝলাম না এ্যলেন তো আনন্দর সাথেই থাকে?
আনন্দের বাসায় একটা মেয়ে আছে, সাবলেটে।---এইটার আমদানি হইলো কবে আবার?আ ন ন্দ তো সাবলেট নিলই এ্যলেনকে।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৫৯

আনন্দক্ষন বলেছেন: সবুর করেন, সব প্রশ্নের উত্তরই আসবে একে একে......।

সব কিছুই যদি "নব ধারাপাত" স্টাইলে চান, তাহলে তো সমম্যা। প্রথম দিকে এক, দুই, তিন কে চিনাইছি ধারাবাহিকভাবে, এখন নামতাটা না হয় আগেই শিখলেন, পরে যোগ-বিয়োগের হিসাব।

৪| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৮:২৬

এক্সপেরিয়া বলেছেন: তাড়াতাড়ি পরের পর্ব চাই ।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২৮

আনন্দক্ষন বলেছেন: প্রফ্‌ লাঠি নিয়া আসবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.