নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যান্ত্রিক সব খোলা চিঠি

অপ্রয়োজনে অনেক কথা বলে যাই, কিন্তু বলা হয়না আরো অনেক বেশী কথা- অনেক আপন মানুষদেরকে। তাইতো, এই খোলা চিঠি। হয়তো কারোর চোখে পরবে কোনদিন, যখন আমি থাকবোনা.....

আনন্দক্ষন

মানুষ হয়ে জন্মে যখন ফেলেছি, তাই নিরুপায় হয়ে মৃত্যুকে বরন করতেই হবে। পৃথিবীতে এসেছিলাম একা, জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে চলতে হয় একা, মরতেও হবে একা। তাই তো নিজের খুশি মতো বাচবার চেষ্টা করে চলেছি, আনন্দের সাথে। জন্ম নেবার সময় মাকে কষ্ট দিয়ে ছিলাম আর কিছু অক্ষমতার জন্য চলার পথে ইচ্ছে না থাকা সত্বেও কষ্ট দিয়েছি ভালোলাগা মানুষগুলোকে। তাই হয়তো পৃথিবীটা ছাড়বার সময় এদেরকেই আবার কষ্ট দিতে হবে ! তাই তো কেবল ভালোলাগার- ভালোবাসার এই মানুষগুলোকে গুরুত্ব দেই। সমাজ নামক জঞ্জালটাকে এড়িয়ে চলি আর প্রতিটা নিঃশ্বাসের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই সৃষ্টিকর্তাকে।

আনন্দক্ষন › বিস্তারিত পোস্টঃ

তুষারকন্যার গ্রীষ্মদেশে এক একটা দিন.........২৭তম পর্ব

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৭

পুরোনো দিনের কথা, যা কেবলই পেছন থেকে টেনে ধরে। আবার তারাই যেন চালিকা শক্তি সম্মুখে এগোবার......হয়তো সেকারনেই আনন্দ থেমে আছে এক জায়গায়।





লেখাপড়া কিংবা চাকুরী চলাকালীন সময়ে অনেক বাধা পার হতে গিয়ে আনন্দ শিখেছে অনেক কিছু। হারিয়েছি কি তা সে জানে না, জানতে চায়ওনা। কিন্তু পেয়েছে অনেক কিছু। এটাই ওর ভালো কিংবা মন্দ দিক। হিসাবের খাতাটাতে কেবল পাওয়ার হিসাব, না পাওয়ার হিসাবটা করেনা বলেই, উচ্চাকাক্ষা আনন্দের মাঝে কাজ করেনা কোনদিন।যা পেয়েছে তাতেই খুশি, সন্তুষ্ট। অনেক বেশি পাবার আশা করতে সে চায়না।



মাঝে মাঝে আনন্দের মনে হয়, কোনদিন হয়তো জানতও না এতো কিছু ছিল আনন্দের চারপাশটায়, যদিনা নিজের শহর-বাড়ি-পরিবার থেকে দুরে আসার সুযোগ হতো। আনন্দ বাড়ি থেকে বের হয়েছিল বহুদিন আগে। আন্ডারগ্রেড করতে হয়েছিল, নিজের শহর থেকে ভিন্ন একটা শহরে। সেই থেকে হোষ্টেল জীবনের শুরু আর আনন্দের অচেনা, একলা পথ চলার শুরু।



যেদিন প্রথম হোষ্টেলে যাবার কথা ছিল, তার আগের রাতে আনন্দের মা আনন্দকে অনেক কথা বলেছিলেন।এমন কথা কোনদিন তিনি বলেননি এর আগে।তাই হয়তো আজো কানে বাজে কথাগুলো।



**************************************************



আজ থেকে প্রায় পনের বছরেরও বেশি সময় আগের কথা।তখন বাসার সবাই ঘুমিয়ে পরেছিল, কেবল বড় ভাই কম্পিউটারে কাজ করছিল।কোন একটা কারনে মায়ের ঘরে গিয়েছিলাম। দেখি মা, বিছানার পাশের চেয়ারটায় চুপচাপ বসা। হঠাৎ করেই বললেন অনেক কথা, যেন জমেছিল কথাগুলো ।



এখনো মনে পরে। মায়ের বক্তব্যের মূল কথা ছিল- "আমার আগামীর দিন গুলো নিয়ে, একবারের জন্যও তিনি অতীতকে টানেননি, আমার সেদিনকার পরিনতির জন্য"



আমার পরিবারে আমিই ছিলাম একমাত্র, যার লেখাপড়ার ফলাফল ভালো না হওয়ার কারনে সবাইকে অনেক বেশি সমস্যায় পরতে হয়েছে। তবু আমার মা সেটা বলেননি একটি বারের জন্যও। বললেন অনেক কথা খুব গোছানো ভাবে। যার মূল ছিল- হোষ্টেলের জন্য, আমার এই বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়াই শেষ, আমার কোনদিনই ফেরা হবেনা এই পরিবারে । আর এখন থেকে আমার নিজের একটা নিজস্ব জগৎ হবে, যেখানে যেকোন পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমার নিজেকেই, পরিবারের অনুমতি নেবারও হয়তো সুযোগ থাকবেনা,। আর পরিবার থেকে দুরে থাকার কারনে হয়তো অনেক জবাবদিহিতা থাকবেনা, অনেক স্বাধীনতা থাকবে তবে যেকোন ঘটনার ফলাফলেরন দায়িত্বভারও আমারই, আমার নিজের ভাগ্য সেদিন থেকে আমার নিজে হাতে গড়া, তাই এর সব দায় হবে আমার।



সেকারনেই সেদিন থেকে আমি স্বাধীন, কিন্তু দায়িত্বের সাথে সেই স্বাধীনতা উপভোগ করার যে আদেশ আমার মা দিয়ে ছিলেন তা আমার পিছু ছাড়ে না। দেশ-বিদেশ হাজার শহর, বন্দর ঘুরে বেড়িয়ে আজো তাই আমি কেবলই নিষ্ঠার সাথে দায়িত্বপালনের চেষ্টায় তৎপর। ভয় হয় কেবল নিজের মনটাকে নিয়ে, সব চিন্তার শেষেও যে সে কেবলই বাঁধ ভাঙ্গতে চায়, কিন্তু পারেনা দায়িত্ব এড়াতে ।



**************************************************

এ্যলেন চলে গেল। বহু দুর। হয়তো আর কোনদিন দেখা হবেনা। একটা ছোট্ট চিঠি আর অল্প সময়ের কিছু কথা, কিছু সময়ের জন্য পথচলা। ছোট্ট একটা রেস্টুরেন্টে বসে দুকাপ চা সাথে কিছু স্নেকস্‌ শেষ হতে যে সময়টুকু লাগে তাই হয়তো শেষবারের মতো দেখা হবার স্মৃতি হয়ে থাকবে।



ওল্ডসিটিতে জেটির কাছে, ওর সাথে দেখা হয়েছিল। দিনের শেষে শহরের মানুষগুলোর মাঝে ছিল ঘরে ফেরার ব্যস্ততা। আর আমার? দায়িত্বের সাথে স্বাধীনতাকে অপঃব্যবহার না করে, মাকে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে সদা ব্যস্ত এক সন্তানের তৎপরতা ছিল কেবল ঘরে ফিরবার । যেখানে নিজের ইচ্ছা, আবেগ, ভালোলাগার চাইতেও অন্য অনেক কিছুর গুরুত্ব বেশি।



ভালো থেকো বন্ধু। ভালো থেকো















মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪০

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: বেশ ভাল জীবন কথা
ভাললাগা +

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৭

আনন্দক্ষন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ...।মন

২| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫০

এক্সপেরিয়া বলেছেন: আপনার লেখাগুলো পড়লে কিরকম একটা অনুভুতি হয়.... অনেক দিন পর আপনার ব্লগে আসলাম.... অন্য পর্বগুলো সময় করে পড়ব....

৩| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫০

এক্সপেরিয়া বলেছেন: আপনার লেখাগুলো পড়লে কিরকম একটা অনুভুতি হয়.... অনেক দিন পর আপনার ব্লগে আসলাম.... অন্য পর্বগুলো সময় করে পড়ব....

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২৮

আনন্দক্ষন বলেছেন: আমি কৃতজ্ঞ, তবে জানি না এতো প্রসংশার দাবী রাখে কিনা আমার অনুভূতিগুলো।

ধন্যবাদ, আমার এই লেখার পাতায় সাথী হবার জন্য।

৪| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৩

মৌন প্রতিজ্ঞা বলেছেন: মা' কে দেখিনা অনেক দিন হয়ে গেল,, ভাই আপনার লেখাটা পরে "মা" কে খুব দেখতে ইচ্ছ হচ্ছে।

ভাললাগা + +

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২৬

আনন্দক্ষন বলেছেন: মা, এমন এক নাম। না দেখে থাকা যায়না। বার বার দেখলেও সাধ মেটে না।উপরওয়ালার কাছে কৃতজ্ঞতা, মা আজ পাশে আছে বলে।

প্রত্যাশা করি, মায়ের প্রতি এই ভালোবাসা আপনার-আমার যেন আমৃত্যু থাকে।

৫| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৭

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: কিছু অনুভূতি চেপে ধরল...দারুণ লাগল।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২২

আনন্দক্ষন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ, আমার অনুভূতি আপনাকে ছুয়ে গেছে শুনে ভালো লাগলো।

৬| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০৪

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খুব চমৎকার করে লিখেছেন! অনেক ভালো লাগল!!

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২৩

আনন্দক্ষন বলেছেন: ধন্যবাদ, অনুপ্রেরনার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.