নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ হয়ে জন্মে যখন ফেলেছি, তাই নিরুপায় হয়ে মৃত্যুকে বরন করতেই হবে। পৃথিবীতে এসেছিলাম একা, জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে চলতে হয় একা, মরতেও হবে একা। তাই তো নিজের খুশি মতো বাচবার চেষ্টা করে চলেছি, আনন্দের সাথে। জন্ম নেবার সময় মাকে কষ্ট দিয়ে ছিলাম আর কিছু অক্ষমতার জন্য চলার পথে ইচ্ছে না থাকা সত্বেও কষ্ট দিয়েছি ভালোলাগা মানুষগুলোকে। তাই হয়তো পৃথিবীটা ছাড়বার সময় এদেরকেই আবার কষ্ট দিতে হবে ! তাই তো কেবল ভালোলাগার- ভালোবাসার এই মানুষগুলোকে গুরুত্ব দেই। সমাজ নামক জঞ্জালটাকে এড়িয়ে চলি আর প্রতিটা নিঃশ্বাসের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই সৃষ্টিকর্তাকে।
আমার নিজস্ব পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি যে বস্তুটার সম্মুখীন আমাকে হতে হয় তা হলো, বিষ্ময়। যা আমার ভাবনার মাঝে আশ্রয় করে, তা সম্ভাবনার মুখ দেখে না । আর যা কল্পনাতে আনাও এক বাক্যে অবাস্তব, তা আমার সামনে এসে দাড়ায় অযাচিতের মতো।এমনি ভাবেই সুযোগ এসেছিল Langkawi যাবার।
সম্প্রতি সময়ে একা কিংবা দলবেঁধে অনেক ঘুরে বেড়ালেও Langkawi বেড়াতে যাওয়া যেন সম্পূর্নই আলাদা, এবার আমি গাইড, আর আমার সংগী একজন ষাটোর্ধ ভদ্রমহিলা।
সচরাচর এই বয়সী মানুষেরা হয় খুব বেশি অস্থির, অল্পেই রেগে যান কিংবা ভয় পেয়ে যান দ্রুত। তার চাইতেও বড় ভয় - অসুস্থতা। উচ্চরক্তচাপ, সামান্যই ক্লান্তি কিংবা কেবল রাতের ঘুমে সমস্যা হলেই , পরেরদিনের সময়সূচি থেকে শুরু করে নির্ধারিত সকল কিছুর পরিবর্তন অনিবার্জ। সমস্যা আরো ব্যপক হয় যদি - ভদ্রমহিলাটি বাঙ্গালী, উপরোন্তু জন্মদাত্রী মা হন।
আমার "বাঙ্গালী" মা, আজো বাঙ্গালী । সন্তান গাইড হলেই দুঃশ্চিন্তা দ্বিগুন, তারপর যদি আবার তার অভিজ্ঞতার ঝুলি হয় খালি, তা হলেই হলো। সাদা চামড়াদের এডভেঞ্চারের গল্পে আহ্লাদিত হলেও, নিজেদের সামান্য অনিশ্চয়তা
- অমার্জনীয় অপরাধ বলে বিবেচিত হয় আমাদের কাছে। কিন্তু বিধাতার ইচ্ছা বলে কথা।
জীবনে প্রথমবারের মতো গাইড হবার এই অভিজ্ঞতা আমার মোটেও সুখকর না। এই পেশায় দায়িত্ব অনেক, কাষ্টোমারের সন্তুষ্টি কম। আয় বলতে কিছুই নাই। তারপর আবার নিজেরও এই প্রথমবারের মতো মালেশিয়া যাওয়া, তাই উপভোগের চাইতেও উদ্বিগ্ন এই আমার, দুশ্চিন্তাতেই কেটেছিল পুরোটা সময়। তবে আমার ভ্রমনের সাথী (মা) উপভোগ করেছেন খুব। ভালোও লেগেছে মালেশিয়া আমাদের দুজনেরই।
***ক্যামেরার চোখ দিয়ে দেখা টুকরো টুকরো Langkawi ***
আকাশ থেকে Langkawi এর ৯৯টা দ্বীপের কয়েকটা...
Langkawi এর Pantai Cenang রাস্তার ধারেই সবচেয়ে popular আর সুন্দর beach। দ্বীপের south-western beachটা সবচেয়ে আকর্ষনীয়। ২ কিমি দীর্ঘ এই beachটা Sunset Beach নামে পরিচিত।
Beach এর ধার ঘেষে আছে অসংখ্য খাবারের দোকান...
অসাধারন এই ডাব আর তার বিক্রেতা (পরে কোনদিন সুযোগ হলে বলবো তার কথা), হয়তো আমার স্মরনে থাকবে সারা জীবন...।পরেপরে
Sunset Beach এ Sunset এর অপেক্ষায়....
Langkawi sunset beach এর এই resort গুলোতে থাকবার অভিজ্ঞতা সত্যিই অসাধারন:
Beach ৯৯-১৫০ রিংগিতে উপভোগ করা যায় এমন অনেক অভিজ্ঞতার, যদি সাথে সাহসী সংগী থাকে, আমার ষাটোর্ধ মাকে নিয়ে উড়বার সাহস করিনি...তবে Beach বসে চুপচাপ এই দৃশ্য উপভোগ করার জন্য তো লোক চাই, তাই না?
Beach এর পাশেই নামকরা রেস্তোরা The Cliff ,
প্রথমদিনে, আমরা Beach এর রুপে মুগ্ধ হয়ে কাটিয়ে দিলাম আমাদের
সারা সন্ধ্যা। দীর্ঘ যাত্রার ক্লান্তি যেন কেটে গেল এক নিমিষে।
তারপর আবার রাতের এই খাবার Delta restaurant এ... খাওয়ার
সাথে এই Sunset ফ্রি
রাতের Beach
পরদিন সকালে বের হলাম, Langkawi ভ্রমনে।সময় একদিন তাই, শুরু করলাম টেক্সিতে। ২৫ রিংগি প্রতি ঘন্টা হিসেবে, ঘুরে বেড়ানো খুবই লাভজনক যদি দলটা বড় হয়। আমাদের দুই জন হিসেবে খরচটা একটু বেশি মনে হচ্ছিল।
Kilim Geoforest Park হচ্ছে Langkawi এর Mangrove forest দেখবার একটা আকর্ষন। বিভিন্ন রকম Package এ যাওয়া যায়। আমরা Reserve নৌকায়, ১ঘন্টার Package এ ২৫০ রিংগি দিয়ে ঘুরেছিলাম, তবে ৪ ঘন্টার Package অনেকে মিলে বেড়ালে খরচ অনেক কম। Fish farm, Eagle feeding, Cave visit ....
জেটি ।
এই Trip এ Fish farm (বাম দিকের ঘরগুলো) এ দেখা মেলে জ্যন্ত অনেক মাছের..বিষয়টা আমাদের কাছে তেমন কিছু না হলেও সাদা-চামড়াওয়ালাদের কাছে আকর্ষনীয়।
মাছের ফার্মে দেখা মিললো, এই কাকড়া জাতীয় প্রানীটির সাথে
Trip এ আছে (Cave visit) গুহায় ঘুরে বেড়াবার ব্যবস্থা।
গুহায় যাবার রাস্তা।
Air Hangat Village হচ্ছে Hot Spring Spot। যদিও আমার অদ্ভুত ভালোলাগায় মন ভালো হয়ে গিয়ে ছিল এখানে এসে, Air Hangat Village আপনার কাছে আকর্ষনীয় কিনা দেখে নিন tripadvisor থেকে।
Langkawi Craft Complex সুন্দর জায়গা, Langkawi ঐতিহ্য এক নজরে দেখতে পাবেন, তবে "কেনাকাটা পাগল" সাথে থাকলে, না যাওয়া মঙ্গল। তাই ছবি যোগ করে, আপনাদের বিপদে ফেললামনা। নিজেকেই সামলাতে আমার কষ্ট হয়েছে, অন্যদের আর কি বলবো।
Black sand beach টা খুব ছোট হলেও, দেখবার মতো , যদিনা আপনার আগে কোন কালো বালির সৈকত দেখার অভিজ্ঞতা না থাকে।
এছাড়াও আছে, Oriental village, এখান থেকেই ক্যাবেল কারে ওঠার স্টেশন দেখে নিন THE ORIENTAL VILLAGE ,
ক্যাবল কার, Sky Bridge, এ উঠবার সৌভাগ্য হয়নি, বৃষ্টির কল্যানে। এক অর্থে আমাদের ২০০ রিংগি বেচেও গেল।
Wild Life Park এর ঢোকার মুখে টিকিটের দামটা শুরুতে সামান্য দ্বিধায় ফেলে দিলেও হাজারও পাখির ভীরে, সত্যিই মন ভালো হয়ে যায়। টিকিট জন প্রতি ২৫ রিংগি ছিল, সম্ভবত।
......
Eagle Squre , অসাধারন সুন্দর একটা জায়গা। স্পটে নেমে দেখি আমার ক্যামেরার ক্ষিদে পেয়েছে। তাই চোখের ক্যামেরায় ভিডিও করে রাখলাম সারা জীবনের জন্য।
শেষের দিন বিকেলে, নামলো মুষলধারে বৃষ্টি। মনটা খারাপা হলো ঠিকই কিন্তু এই সুযোগে, কটেজের বারান্দায় বসে দেখতে পেলাম, শান্ত-মায়াময় এক সৈকত।
[ বি.দ্র।
গাইড হিসেবে এটা আমার প্রথম ভ্রমন কাহিনী..।জান
জানিনা ব্লগের পাতায় কতটুকু আকর্ষনীয় করে ফুটে উঠলো langkawi? তবে নির্জন দ্বীপের এই সৈকত আসলেই সুন্দর।
সবচেয়ে ভালোলাগার জিনিসটা আমি লক্ষ্য করলাম ফিরে আসবার পর। তা হলো- অসাধারন এক মুক্তির স্বাদ, মোবাইল নামক যন্ত্রনাটার হাত থেকে আমার মাকে রেহাই দেবার কারনে। চেনা পৃথিবী, অজানা দুঃচিন্তা, কেবল শংকা সাথে নিয়ে ঘুরে বেড়াবার এই যন্ত্রনাটা আমাদের সাথে ছিলনা ১০দিন। আমরা যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম বহুদুরে।
এতটুকু শেয়ার করতেই আমার রবিবার শেষ। হয়তো কোনদিন জানাবো বাকি অংশ...যদি বেঁচে থাকি..।]
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৩:২৩
আনন্দক্ষন বলেছেন: ধন্যবাদ... আবারো।
কোন কাজে নিয়মিত হওয়া আমার কর্ম না, তবে চেষ্টা করবো এবার।
আগের পোষ্টে, আনন্দের একাকীত্ব আপনাকে নাড়া দিয়েছে, কিন্তু এখানে হয়তো বাহিরের লোক দেখানো রুপটা উঠে এসেছে, যেখানে একাকীত্বকেও লুকিয়ে রাখার নিয়ম।
তবে এটা সত্য যে, আপনার এই "একাকী" থিউরী কেন জানি মাথায় সেঁটে গিয়েছিল। ভাবছিলাম, আমি কেন আনন্দের মাঝে হারিয়ে যাচ্ছি? নাকি আনন্দ খুব বেশি আমাকে অধিকার করে নিচ্ছে?
২| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৬:৪৮
এহসান সাবির বলেছেন: দারুন সব ছবি...
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:১৬
আনন্দক্ষন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ.., অধমের সামান্য চেষ্টাকে উৎসাহিত করবার জন্য।
[বি:দ্র: বিনয়টা না দেখালে হচ্ছিলনা, কারন ছবি সুন্দর হওয়ার পিছনে আমার কৃতীত্ব নাই, জায়গাটাই অসাধারন রকম সুন্দর।]
৩| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৭:৫৭
উযায়র বলেছেন: সমস্যা আরো ব্যপক হয় যদি - ভদ্রমহিলাটি বাঙ্গালী, উপরোন্তু জন্মদাত্রী মা হন।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:১৩
আনন্দক্ষন বলেছেন: লেখক বলেছেন: ভাইরে, এখনো মনে পরে...।হয়তো
হয়তো টেক্সির ড্রাইভারের সাথে এমনি কোন কথা বলতেছি, অথবা জানতে চেয়েছি কোন জায়গা যাবার ব্যপারে কোন পরামর্শ, পেছনের সীট থেকে শুনতে পেতাম বকাসূচক বানী...।
রাস্তার ছবি তুলতেছি- পিছনের সীটে মা আমার উদ্দেশে মধুর বানী ব্যয় করতেছে.
সবচেয়ে দুঃখের, এই ডিজিটাল ক্যমেরার যুগেও আমার মা, ৩৩টার ফিল্মে আটকে আছে, একই পোজে একের ধিক ছবি তিনি তুলবেন না।
দুঃখিত, মায়ের গুনগান গাইতে বসলে, আরেকটা পোষ্ট হয়ে যাবে।
৪| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৫
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: দারুন !
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৫
আনন্দক্ষন বলেছেন: ধন্যবাদ....
৫| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৪
মোঃ ইসহাক খান বলেছেন: ছবিগুলোতে অনেক ভালোলাগা রেখে গেলাম।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৯
আনন্দক্ষন বলেছেন: My pleasure
৬| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৭
আমি ইহতিব বলেছেন: ভালো লিখেছেন, জায়গাটা আসলেই অনেক সুন্দর।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:১৩
আনন্দক্ষন বলেছেন: ধন্যবাদ.. তাহলে মনে হয়, গাইড হিসেবে আমি খুব একটা মন্দ না। কি বলেন?
কিন্তু দুঃখ হয় যখন দেখি- আমাদের দেশটা এর চাইতেও সুন্দর কিন্তু সেটা নাগালের বাহিরে।
কিন্তু সুন্দরের সাথে যখন "আন্তরিকতা মেশানো পেশাদারী (professionalism)" - "সততা" আর "নিরাপত্তার" মিশ্রন হয়, সেটা হয়, বিদেশ- যা উপভোগ করা যায়।
৭| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৩
আমি ইহতিব বলেছেন: না ভালো গাইড আপনি, স্বীকার করতেই হবে।
ভালো বলেছেন, আমাদের দেশে পরিচালণার অদক্ষতার জন্য পর্যটন শিল্প আজও সফলতার মুখ দেখতে পারেনি, অথচ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে আমরা কোন দিক থেকে পিছিয়ে নেই।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:০৯
আনন্দক্ষন বলেছেন: সহমত...।
আশা রাখি, কোন একদিন বদলে যাবে সবকিছু।
৮| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৩৩
রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: প্রিয় পোষ্টে নিতে পারছি না। কাজ করছে না অপসন। কাজে লাগার পোষ্ট। ভালো থাকুন
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২২
আনন্দক্ষন বলেছেন: I am glad...Thanks a lot for consideration......
৯| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:০১
মশিকুর বলেছেন:
ছবিব্লগ সবসময়ই ভাল লাগে। বিমান থেকে তোলা ছবি গুলা সহ আরও কয়েকটা বিশেষভাবে ভাল লাগলো।
+
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:২৯
আনন্দক্ষন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ....। আপনা
আপনাদের সাথে আমার দেখা-অনুভব করা আনন্দগুলোকে ভাগ করে নিতে পেরে আমিও আনন্দিত।
শুভ কামনা সব সময়ের জন্য।
১০| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:১৭
রবিউল ৮১ বলেছেন: গত এক বছর পড়ার খুব প্রেশার গিয়েছে।ছুটির দিন গুলোও গেছে পড়ার পিছনে।গত বছর থেকেই ভাবছিলাম এই বছরে পুরো ছুটি গুলো মাকে দিবো।মাকে বাংলাদেশের দর্শনীয় জায়গাগুলো দেখাবো।কিন্তু বিধিবাম।বছরের শুরুতেই হরতাল আবরোধ।শেষও হচ্ছে না।মন মেজাজ তাই খুবই খারাপ।কখন যে শান্তির সময় আসবে?
০২ রা জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৭:৫৩
আনন্দক্ষন বলেছেন: আশা করি মাকে নিয়ে ঘুরতে পেরেছিলেন কোভিডের আগমনের আগেই।
sorry for the late reply...some technical problem in my system make me not to entry in blog.
hope every thing is fine and you are doing well.
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ২:৪১
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খুব চমৎকার হয়েছে। নিয়মিত এবং আরো লিখুন। এর আগের পোষ্টটার মত কিন্তু এই পোষ্টটাকে ততটা একাকী লাগে নাই।
চালিয়ে যান শুভ কামনা রইল।