নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ হয়ে জন্মে যখন ফেলেছি, তাই নিরুপায় হয়ে মৃত্যুকে বরন করতেই হবে। পৃথিবীতে এসেছিলাম একা, জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে চলতে হয় একা, মরতেও হবে একা। তাই তো নিজের খুশি মতো বাচবার চেষ্টা করে চলেছি, আনন্দের সাথে। জন্ম নেবার সময় মাকে কষ্ট দিয়ে ছিলাম আর কিছু অক্ষমতার জন্য চলার পথে ইচ্ছে না থাকা সত্বেও কষ্ট দিয়েছি ভালোলাগা মানুষগুলোকে। তাই হয়তো পৃথিবীটা ছাড়বার সময় এদেরকেই আবার কষ্ট দিতে হবে ! তাই তো কেবল ভালোলাগার- ভালোবাসার এই মানুষগুলোকে গুরুত্ব দেই। সমাজ নামক জঞ্জালটাকে এড়িয়ে চলি আর প্রতিটা নিঃশ্বাসের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই সৃষ্টিকর্তাকে।
৯ই অক্টোবর কিংবা ১৪ই নভেম্বর, স্মরনীয় হয়ে থাকবে কি?
খুব কাছের, খুব বেশি আপন কোন মানুষকে বহুদিন পর দেখতে পেলে, কেমন জানো অচেনা লাগে। "বহুদিন পর" - শব্দ দুটোর দিকে চোখ পরতেই হাসি পেল আনন্দর। এই বহুদিন খুব বেশিদিন কি? মাত্র ৫৩দিন। তাতেই যেন অনন্তকাল বলে মনে হচ্ছে আনন্দের।
এই যোগাযোগের দুনিয়ায় প্রায় দুমাস এ্যলেনকে না দেখে থাকাটা কেমন যেন অন্য রকম এক অনুভূতির তৈরী করেছে আনন্দের ভেতর। বিশেষ করে স্কাইপ, ওভিও, ফেইসবুকের যখন মানুষ দুটোর হাতের নাগালে, সেসময়ে একজন নিকট মানুষের একটা ছবি না দেখা, কিংবা ৩৫দিন কন্ঠস্বর না শুনতে পাওয়া বুঝি কেমন অস্বাভাবিক মনে হয় আনন্দের।
তবে হাপিয়ে উঠেছিল কি, আনন্দ ? নাহ্। না দেখবার, না কথা বলবার মাঝে হাহাকার ছিল, শুন্যতা ছিল। ছিল সব পাওয়ার মাঝে, কিছু একটা না পাওয়া। আবার অনেক না পাওয়ার মাঝে ঘিরে ছিল, চেনা সেই মুগ্ধতা। না দেখার মাঝেও যেন, চোখ বন্ধ করলেই সেই অতিসাধারন মুখোবয়ব, কিংবা না শুনতে পাওয়া কন্ঠস্বর যেন কানের কাছে বলে যায় শেষ সন্ধ্যার সেই আর্তনাদ করে কেঁদে ওঠা এ্যলেনের ভালোবাসবার স্বীকারোক্তি।
আনন্দ আজ সেই "বহুদিন" পর এ্যলেনের খুব সম্প্রতি তোলা কোন ছবি দেখলো, এ্যলেনেরই একটা ওয়েবসাইটে। আশ্চর্য হলেও সত্য, ছবিটা দেখবার পর পরই যে কথাটা আনন্দকে আশ্চর্য করেছে তা হচ্ছে- "ও, এ্যলেনের রুম এটা"। যেন
যেন আনন্দ, এ্যলেনকে দেখবার চাইতেও ওর পারিপার্শ্বিক
অবস্থা দেখবার প্রতি বেশি আগ্রহী। এই হলো মানব চরিত্র। মানুষ যেন অতিকাছের মানুষগুলোকে এতো বেশিই কাছে- একান্ত নিজের করে ফেলে যেন সেই আপন মানুষটারই কোন অস্বস্তিত বলে কিছু থাকেনা, তার পারিপার্শ্বিকতা, তাকে ঘিরে থাকা অন্যসব কিছু হয়ে যায় মূখ্য। এ্যলেনের পেছনে থাকা বিছানাটা, আধ খোলা কোন দরজা, কিংবা হেঙ্গারে ঝুলানো কালো জ্যাকেটটা সব কিছুই যেন নিখুতভাবে দেখলো আনন্দ। কিন্তু এ্যলেনকেই যেন দেখলোনা ঠিক করে। আনন্দ কি এ্যলেনের ঐ স্থির ছবিটার চোখের দিকে তাকাতেও ভয় পায়?
হয়তো তাই। আর সেজন্যই তো, কোন আগ্রহ নেই যোগাযোগ করবার। দেখবার, কিংবা ভালোমন্দ জানবার। এখন কেবল দুরত্ব বাড়াবার সময়। না দেখে, না কথা বলে বাঁচবার জন্য অভ্যস্থ হবার সময়। সেকারনেই এতোটা সময় পার হয়ে গেলেও হাপিয়ে ওঠেনি আনন্দ, আছে বেঁচে নির্জীবের মতো।
**************************************************
খুব অদ্ভুদ মানুষ বললেই হয়, আনন্দকে। একটা সময় ছিল যখন পচ্ছন্দ না করলেও মোবাইল ফোনটা ব্যবহার করতো, পরিবার থেকে দুরে থাকতো বলে। এখন আর সেসব ঝামেলাও নেই। অফিস আর বাসায় আছে ল্যন্ডফোন। আর আছে সার্বক্ষনিক ইন্টারনেট লাইন। তাই মোবাইল নামক যন্ত্রনাটাকে বিদায় জানাতে পেরে মহাখুশি আনন্দ।
যদিওবা এই আচরন বন্ধু মহল কিংবা আত্বীয় পরিজন কেউই সানন্দে গ্রহন করেনি, বরং ইংগিতে ভালোভাবে মানষিক সমস্যার আভাস দিয়ে সচেতন নাগরিক হবার দায়িত্ব পালন থেকে মোটেও বিরত থাকেনি, তবু আনন্দের কোন ভাবাবেক হয়েছে বলে মনে হয়নি। শুধু সমস্যা হয়েছে, দেশের বাহিরে চাকুরীর আবেদন করবার সময়। স্থান-সময় বিবেচনা না করে যৌথ পরিবারের ল্যন্ডফোনে আনন্দের খোজ করার কারনে বিরক্তি সৃস্টি করলেও তাতে কারোর কোন অসুবিধা হচ্ছে বলে মনে হয়নি।
আর স্কাইপ? আনইন্সটল করে, বেচারী আনন্দ চেয়েছে নিজের পৃথিবী থেকে দুরে সরে আসতে। হ্যা, আনন্দ কোনদিনই তার একান্ত পৃথিবীটাতে বেশি মানুষের সমাগম রাখতে পচ্ছন্দ করতোনা। তাই স্কাইপ, গুগোল কিংবা যেকোন যোগাযোগ মাধ্যমে আনন্দ থাকে খুব অল্প কিছু মানুষ নিয়ে। আর ফেইসবুক, তার লেটা চুকেছে বহু বছর আগে। একটা সময়ছিল, পরিবার পরিজনদের ছবি দেখবার আগ্রহ থেকে একটা একাউন্ট রেখেছিল, একটা সময় মনে হলো - ঝামেলা। তাই তাও আর রাখলোনা গোনার মাঝে। তাই বলে আনন্দ অসামাজিক কিংবা ঘরকুনো নয় মোটেও।
ভালো ভাবে মেলামেশা, সামাজিকতা প্রয়োজন মতো করে, তবে সবাইকে সব জায়গায় প্রবেশাধিকার দেবার মাঝে আনন্দের ঘোর আপত্তি। সেকারনে আনন্দকে অনেককেই ঠিক বুঝে উঠতে পারেনা। খুব সাধারন উদাহারন, স্কাইপ একাউন্টে কারোর বন্ধু হবার অনুরোধ আনন্দ বিবেচনায় আনে না। আনন্দের একান্ত কিছু মানুষ, যারা ভালোবাসা কিংবা বন্ধুত্বের বাহিরে অবস্থান করে, আনন্দ কেবল তাদের নিয়েই যেন বাচতে চায়, তার এই স্বল্প সময়ের দুনিয়াতে। আর বিশ্বাস করে, এদের মাঝে থাকবেনা কোন দেয়াল, কোন ভন্ডামী। কিন্তু এই প্রত্যাশা বেশি মানুষের কাছ থেকে করা যায়না বলেই "আনন্দের পৃথিবীটা" খুব সীমিত।
কিন্তু সমস্যা হলো, সাধারন মানুষ এই অতি সাধারন বিষয়টাকে এড়িয়ে যেতে পারেনা। তারা বোঝেনা, "আনন্দ ইচ্ছার বাহিরে একটা মুর্হুতও ব্যয় করতে চায়না" - এই কথাটার চাইতেও, একজনকে আপন করে নেবার পর দুরে ঠেলে দেয়া আনন্দের অপচ্ছন্দ কিংবা, আনন্দ নিজের মাঝেও যেন একটা অদৃশ্য দেয়ালে ঘেরা পৃথিবীতে থাকতে বেশি ভালোবাসে। সামাজিক জীব চারপাশের এই মানুষেরা, কেবলই নিজের মতো করে সবাইকে বাঁচাতে চায়, বিবেচনায় আনতে চায়না ভিন্ন মত, ভিন্ন ধারা ।
১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৮
আনন্দক্ষন বলেছেন: দেরীতে উত্তর দেবার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
অসংখ্য ধন্যবাদ প্রসংশার জন্য।
ছবিটা, একদিন দুপুরে লাঞ্চরুমে অপেক্ষায় ছিলাম অভেনে খাবার দিয়ে, ভালো লাগলো বছরের প্রথম তুষারপাতে ছেয়ে যাওয়া মাঠটা, ধরে রাখলাম অতি সাধারন মোবাইলের ক্যামেররাতে।
আর লাইনদুটো? বলতে পারেন আমার ideology, যাকে আকড়ে ধরে বেচে আছি।
২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:১৯
রবিউল ৮১ বলেছেন: দেয়াল।
১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৬
আনন্দক্ষন বলেছেন: হ্যা, দেয়াল! সমস্যাটা কেবল তার অদৃশ্যতা নিয়ে। যদি দেয়ালটা দৃশ্যমান হতো, তবে বাঙ্গালী অনেক অজাচিত প্রশ্নবানে বিদ্ধ করতে সাহস পেতনা। যারা তাদের সীমানা বুঝতে পারেনা, তারা সচেতন হনা হলেও, আমাদের জীবনটা অনেক নির্ভেজাল হতো।
ঠিক বললাম কি?
৩| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৩
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
ভাল লিখেছেন।
১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩২
আনন্দক্ষন বলেছেন: কেবল ধন্যবাদ দিলে, অকৃতজ্ঞের মতো শোনায়। কেননা আপনাদের এই অনুপ্রেরনাতেই লেখার সাহস পাই।
৪| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩৭
রবিউল ৮১ বলেছেন: মানুষ নিজের দেয়াল টুকু শুধু নিজেই দেখে এবং বুঝতে পারে ।এই দেয়াল টুকু অনেক সময় তার অতি আপনজন দেখতে পায়,বুঝতে পারে। তবে ভাগ্য খারাপ হলে আপনজনও কোন দিন ওই দেয়াল টুকু দেখতে পায় না।
১৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৭
আনন্দক্ষন বলেছেন: আপনজন! এটা একটা জটিল শব্দ। সেই মানুষটিই আপন যে এই দেয়াল দেখতে পায়, দেয়ালের ভেতরে যার অবস্থান, আর দেয়ালটাকে যে সম্মান করে।
কিন্তু সমাজের চোখে আপন বলতে বোঝায়, অন্য কিছুকেই.....।
৫| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১১
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খুব চমৎকার একটা লেখা! এই ধরনের লেখা পড়তে আমার বেশ ভালো লাগে। তাছাড়া আপনার লেখনি যেমন সুন্দর তেমনি লেখার গভীরতাও পাঠক হিসেবে আমার কাছে বেশ উপভোগ্য।
২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:২৪
আনন্দক্ষন বলেছেন: আন্তরিকভাবে দুঃখিত দেরীতে উত্তর দেবার জন্য।
আমি বাক্যহারা। তবে যদি সত্যিই আপনার কথা সত্য হয়, আমার উচিত কাজকর্ম ছেড়ে দিয়ে ব্লগে বসা। এই দেখুন না, দুনিয়াদারী করতে করতে ব্লগে একবার ঢুঁ মারার সময়টুকু হয়না।
প্রত্যাশা করি ভালো থাকুন, নিজের মতো করে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:২৩
খেয়া ঘাট বলেছেন: ছবিটা সুন্দর ।লিখা ভালো লেগেছে।
"সমাজ নামক জঞ্জালটাকে এড়িয়ে চলি আর প্রতিটা নিঃশ্বাসের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই সৃষ্টিকর্তাকে।
এই লাইনটাও ভালো লেগেছে।