নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান নিজের কাছে না রেখে সবাইকে জানানো উচিত

আনাস হাসান

শখের বসে লিখি। অল্প জানি সেটাই সবাইকে জানাই

আনাস হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্যা লাস্ট ওয়ার্ডস পার্ট ২

০২ রা মে, ২০১৮ রাত ৮:১০

দ্যা লাস্ট ওয়ার্ডস পার্ট ১
আগের পার্ট

সাদা মার্বেলের উপরে পিস্তলটা পড়ার পরপর লুটিয়ে পড়ল দেহটা। হ্যাঁ, মৃত বা প্রায় মৃত কাউকে এভাবেই বলা হয়। গলগল করে রক্ত বের হচ্ছে। চোখে ভেসে আসছে কিছু স্মৃতি। বলা হয় মৃত্যু পথযাত্রী সবাই জীবনের ভালো মুহূর্ত দেখতে পায় চোখের সামনে বা তার প্রিয় ব্যক্তিদের। আমি কেনো তার সাথে থাকা মাত্র ৩ মাসে সময়ের কিছু স্মৃতি দেখতে পাচ্ছি। সে কি আমার এতোটাই প্রিয়? লম্বা সময় একসাথে কাটালে মায়া জন্মায়। তিন মাস কি লম্বা সময়?
ঘোলা হয়ে আসছে কল্পনা। তাকে বুঝাতে পারলাম না আমার আবেগ।

থানায় খবর আসার পর থেকেই পুলিশ খুব ব্যস্ত । এই এলাকায় এমন কেস খুব কম হয়। বলা যায় গত ৫ বছরে এটাই প্রথম। ৫ বছর আগে একটা মার্ডার কেস পাওয়া যায়। তাছাড়া সময় কাটে চুরি,জমি দখল ইত্যাদি কেস নিয়ে। ওসি সাহেব থানায় না এসেই ঘটনাস্থলে। বাড়িটা তিন তলা। একটি করে ফ্লাট। প্রতি ফ্লাটে তিনটা বেডরুম। ঢাকার মানুষ এভাবে ফ্লাট বানায় না। এমন বিলাসিতা করতে জমি এবং মন দুইটাই লাগে। বাসায় কেউ নেই। সবাই হাঁসপাতালে। বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাত্র স্নাতক শেষ করে চাকরীর জন্য প্রস্তুতি নেয়ায় সবাই ব্যস্ত।

ছেলেটির ঘরের সাথে বারান্দা। বেশ আগে বানানো হলেও আধুনিক গ্রিল ছাড়া বারান্দা। তাই সামনের যায়গা খুব সুন্দর করেই দেখা যায়। বাতাসের পরিমাণও বেশী। এমন সুন্দর যায়গায় দাঁড়িয়ে হলেও মরার চিন্তা বাদ দেয়া যায়। ফ্লোরে দেয়া হয়েছে সাদা মার্বেল। সেখানে এখন ফুটে আছে জমাট বাধা লাল রক্ত। দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট। পাশে পাওয়ে গেছে পিস্তল। আর বাসার কিছু জিনিষ যা ধারনা করা হচ্ছে সবসময়ই এমন থাকতো ।ঘটনা দেখে বুঝা যায় আত্মহত্যা।

ওসি সাহেবর নাম জামান চৌধুরী। প্রথমে পোস্টিং সাভার তারপর ২ মাস যাবত এখানে। তাকে জানানো হয়েছে কিছুক্ষণেই এখানে পৌঁছাবে ডিবি পুলিশের দল। এতো সাধারণ একটা কেসে কেনো ডিবি সেটাই মাথায় আসেনা অসি সাহেবের। দেখাই তো যাচ্ছে আত্মহত্যা। যদিও তিনি আসার অনেকে আগেই হাঁসপাতালে নেয়া হয়েছে। পরিবার থেকে কিছু না জানালেও গুলির শব্দেই এলাকাবাসী তাদের খবর দেয়। তখন ভোর ৫ টা। জামান সাহেব এসেছেন সকাল ৭ টায়। কিছুক্ষণেই ডিবি পুলিশের গাড়ি চলে এলো। সাথে ফরেনসিক বিভাগের লোক।

গাড়ি থেকে নেমেই সোজা তিন তলায়। এসেই জামান সাহেবের সাথে হাত মেলালেন ডিবি অফিসার সাকিব রহমান। দেখতে বিদেশী মুভির পুলিশের মতোই। চোখে সানগ্লাস। গ্রে রঙের প্যান্ট সাথে কালো রঙের টি-শার্ট।
- জামান সাহেব, এখন থেকে এই কেসের দায়িত্ব ডিবির।
প্রথমেই এমন কথার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না ওসি সাহেব। কেউ যেনো গালের উপর থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।
- কিন্তু এখানে তেমন কিছুই নেই। বুঝাই যাচ্ছে আত্মহত্যা। তাহলে কেনো খামাখা......
হাত উঁচিয়ে তাকে থামিয়ে দিয়ে একটা কাগজ হাতে দিলেন সাকিব। কি লিখা আছে তা না খুলেই বুঝে গেলেন ওসি সাহেব। তাদের কাজ এখন শুধুই তদন্তে সাহায্য করা। অনেক চিন্তা মাথায় ধরলেও রাগে অগ্রাহ্য করে বের হয়ে গেলেন ।

রুমে ঢুকেই ফরেনসিকের লোকজন কাজে নেমে গেলো। সাকিব ঘরের বাকীটা দেখতে লাগলেন। বেশ গুছানো ঘর। এই বয়সের ছেলেদের ঘরে যা থাকে। খাটের পাশে অনেক বই। এক পাশের টেবিলে ল্যাপটপ। খাটে পাওয়া গেলো দুটো মোবাইল। বারান্দায় যেয়েই চোখে পড়ল পিস্তলটার দিকে। যেখানে ছেলেটা পড়েছে তার থেকে মাত্র ৩ ফিট দূরে সেটা। অন্যান্য ক্রাইম সিনের মতো হলেও খটকা লাগলো কিন্তু ঠিক বুঝা গেলো না।

হাসপাতালে যাতে হবে। পরিবারের সাথে কথা বলা জরুরি। আর ছেলেটার সাথেও।

হ্যাঁ বেচে আছে সে। গুলি লেগেছে বুকের ডান পাশের নিচের দিকে। বাম দিকে না করে কেনো ডান দিকে গুলি করা হলো সেটাও ভাবার বিষয়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মে, ২০১৮ রাত ৯:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: ওসি জামান চৌধুরী, ডিবি অফিসার সাকিন রহমান --- এই দুইজনের মধ্যে কে রহস্য বের করবে??
আমি মনে মনে একজনকে ভেবে নিয়েছি। দেখি মিলে কিনা।

২| ০৩ রা মে, ২০১৮ রাত ৩:২৭

আনাস হাসান বলেছেন: দেখা যাক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.