![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
আবু সাইদের আত্মত্যাগ কি শুধু বৈষম্যহীন এক সমাজের স্বপ্ন দেখিয়েছিল, নাকি তা এখন নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টির এক ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে? জুলাই অভ্যুত্থানের সেই রক্তক্ষয়ী দিনগুলোর এক বছর পেরোতে না পেরোতেই যেন আবারও শুরু হয়েছে 'চেতনার ব্যবসা'। যে আন্দোলন হয়েছিলো চেতনার নামে আখের গোছানো বন্ধ করার জন্য, সেই আন্দোলনের আইকন শহীদ আবু সাইদের স্বপ্নগুলোই আজ প্রশ্নবিদ্ধ। একজন মেধাবী ছাত্র, পরিবারের স্বপ্ন, বোনের আকাঙ্ক্ষা সব কিছু রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের শিকার হলো।
যোগ্যতা থাকার পরও আবু সাইদদের মতো অসংখ্য তরুণ সরকারি চাকরিতে বঞ্চিত হলো, কারণ শাসকগোষ্ঠী অনুগতদের নিয়োগ দিতেই বেশি আগ্রহী ছিল। এই বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তই সাধারণ শিক্ষার্থীদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায় রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছিলো। আমরা দেখলাম কীভাবে পেটের দাবিকে বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র বলে ১৫০০ এর বেশি মানুষকে হত্যা করা হলো, কত মানুষ আহত হয়ে কাতরাচ্ছে আর স্বজন হারানোর দুঃসহ বেদনায় দিন কাটাচ্ছে তার হিসেব নেই। আর এখন, সেই আন্দোলনের চেতনাকে পুঁজি করে আবারও শুরু হয়েছে অবৈধ নিয়োগের মহোৎসব, নতুন বৈষম্যের জন্ম হচ্ছে।
জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে উঠে আসা নতুন দলটি, যাদের উপর দেশের মানুষ বিশ্বাস রেখেছিল একটি গণতান্ত্রিক ক্রান্তিকালীন সময়ে হাল ধরার জন্য, তারাও যেন সেই পুরোনো পথেই হাঁটছে। তদবির, ঘুষ বাণিজ্য এই শব্দগুলো আবার তাদের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিরপেক্ষ হবে, এই ধারণা বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মানুষের মনে ছিল। তাই প্রতিটি নিয়োগ, পদায়ন ও পদোন্নতি নিরপেক্ষ ও দৃষ্টান্তমূলক হবে, এটাই ছিল সাধারণের প্রত্যাশা। কিন্তু কী দেখছি আমরা? তাদের লক্ষ্য যেন একটি রাজনৈতিক দলকে প্রতিষ্ঠিত করা, এই যুক্তি দেখিয়ে যে কেবল তারাই জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা রক্ষা করতে সক্ষম। অথচ জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা কোনো একার দায় নয়, সারা দেশের ছাত্র-জনতার সম্মিলিত দায়। এই একপেশে চেতনার ধারক-বাহক হওয়ার যে কুফল বাংলাদেশ ভোগ করেছে, তার দগদগে ঘা এখনো শুকায়নি।
বাংলাদেশের মানুষ অনেক অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেখেছে, কিন্তু এমন দুর্বল, নিয়ন্ত্রণহীন সরকার আগে কখনো দেখেনি। কারো উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ নেই, যে যা পারছে নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করে যাচ্ছে। তারা যেন নতুন রাজনৈতিক দলটির বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ভাগীদার হচ্ছে। ১/১১ এর সরকারের সময় সরকারি নিয়োগ প্রায় দুই বছর বন্ধ ছিল, কিন্তু এবার তো নিয়োগ ও পরীক্ষা চলছে। কিছুটা স্বস্তি আসলেও, মিডিয়াতে যখন পরপর অবৈধ তদবির ও নিয়োগের খবর আসে, তখন এই স্বস্তি কতক্ষণ টেকে? অভ্যন্তরীণ নিয়োগের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রতিটি মানুষ সোচ্চার ছিল, অথচ এক বছর যেতে না যেতেই বিশেষ চেতনা ও দল ভাঙিয়ে অভ্যন্তরীণ নিয়োগ হচ্ছে।
সুশীল সমাজের কিছু মানুষ এসবকে ছোটো খাটো অনিয়ম বলে চালিয়ে দিতে চান, কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, এই সরকার নিরপেক্ষ ও অন্তর্বর্তীকালীন। তাদের সময়ে এ ধরণের নিয়োগ কোনোভাবেই কাম্য নয়। তারা ক্ষমতায় এসেছে এসব অবৈধ নিয়োগ বন্ধ করার জন্যই। মিডিয়াকে দোষারোপ করার আগে নিজেদের দিকে তাকানো উচিত। একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো বিরোধী পক্ষ বা সরকার পক্ষ থাকতে পারে না।
মিডিয়ায় যেটুকু খবর আসে, তার বাইরে যে আরও কত অনিয়ম ঘটছে, তার হিসেব কি আমাদের কাছে আছে? মানুষ সরল বিশ্বাসে তাদের উপর আস্থা রেখেছিল, কিন্তু এভাবে একের পর এক অনিয়মের খবর আসতে থাকলে সেই আস্থা হারাতে সময় লাগবে না। চাকরির গ্রুপগুলোতে ইতিমধ্যে এসব অনিয়মের খবর দেখে চাকরিপ্রত্যাশীরা কেউ কেউ নতুন রাজনৈতিক দলের দিকে ঝুঁকছে বাড়তি সুবিধা পাওয়ার আশায়, আবার কেউবা হতাশায় নিমজ্জিত হচ্ছে। এই বিশাল অংশটিই জুলাই অভ্যুত্থানের সবচেয়ে প্রকৃত অংশীদার। তাদের দাবিগুলোর আড়ালে যেন বাকি সব রাজনৈতিক খেলা চলছে। কিন্তু এই চাকরিপ্রত্যাশীদের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে নতুন দলটি এখন আর তেমন সোচ্চার নয়।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকে। দেশের মানুষের ভালো-মন্দ দেখার চেয়ে তারা নিজেদের ভালো-মন্দের দিকেই বেশি মনোযোগী। তারা ব্যস্ত থাকে তাদের আদর্শবাদীদের কে 'খাম্বা' বলছে তার বিরুদ্ধে কী বলা যায়, বা কে 'রাজাকার' তার বিচার কী হবে, তা নিয়ে। শত শত মানুষ কবরে চলে গেলেও তাদের যেন তাতে মাথাব্যথা নেই।
তারা সবাই দেশের ক্ষমতা নিতে লোলুপ, কিন্তু যদি জিজ্ঞাসা করেন কীভাবে বিনিয়োগ আনবেন, সরকারি চাকরিতে ন্যায্য নিয়োগ দেবেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে কী করবেন, চায়না-আমেরিকাকে কীভাবে ভারসাম্যপূর্ণভাবে সামলাবেন, মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের যুবকদের বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা শেখাবেন, অথবা বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার পাশাপাশি অন্যান্য দেশের বাণিজ্য কীভাবে বাড়াবেন এসব নিয়ে তাদের কোনো চিন্তাভাবনা নেই, তাই জনগণের সামনে কিছু বলতেও পারেন না। কীভাবে এসব সামলাবেন এর উত্তরে তারা বলবে, 'সংস্কার ও নির্বাচন হলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।' কবে এই দেশের মানুষ তাদের 'মানুষ' হিসেবে দেখতে পাবে, কবে তাদের 'মানুষ' হওয়ার শিক্ষা হবে, সেই অপেক্ষায় যেন আজ জাতি!
১৪ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:৫০
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: সময় করে লেখায় ঢু মেরেছেন তাই শুকরিয়া ।
২| ১৪ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:৩৩
কামাল১৮ বলেছেন: বৈষম্যহীন সমাজ একটি অলীক কল্পনা।বৈষম্য থাকবে তবে সেটা সীমা ছাড়িয়ে না যায়।সেই সীমা নির্ধারণ করবে কে?
১৪ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:৫২
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: বৈষম্যহীন সমাজ থাকুক বাট সেটা যাতে ১০০ এবং ১০ এর যে ডিফারেনস তা না হয় ।
৩| ১৫ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ২:০১
লুধুয়া বলেছেন: এইরকম কোটার জন্যই তো এরা জুলাই কান্ধ করেছিলো।
১৫ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ২:২১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: যদি এমন কিছু এদের মনে থাকে তাহলে সফল হবে না ।
৪| ১৫ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ২:৩১
কামাল১৮ বলেছেন: এই আন্দোলন ১০ রাই করেছিলো কিন্তু আজ তারা একশর মালিক।মালিক কখনো শ্রমিকের সমান হতে চায় না।
১৫ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ২:৪৮
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: মালিক হওয়ার কিছু নিয়ম আছে । যেনতেন ভাবে মালিক হলে শ্রমিকেরা মানবে না ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:৩৩
ঢাবিয়ান বলেছেন: ডক্টর ইউনুস কাংখিত সংস্কার বাস্তবায়ন করতে পারে নাই। আসলে উনাকে করতে দেয়া হয় নাই। স্বৈরাচারের পতন হলেও স্বৈরাচারী সিস্টেমের এতটুকু পরিবর্তন হয় নাই। এই অবস্থার জন্য মুল দায়ী বিএনপি। তারা যদি এত বড় রক্তক্ষয়ী অভ্যূত্থানের পর জাতীয় ঐক্যের উপড় জোড় দিত , ডক্টর ইউনুসকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিত তাহলে ডক্টর ইউনুস সিস্টেম থেকে স্বৈরাচারের দোসরদের সরাতে সক্ষম হতেন এবং জনগনও এতদিনে একটা কাংখিত পরিবর্তন দেখতে সমর্থ হত। কিন্তু বিএনপি শুরু থেকেই ইন্টারিম সরকারকে অসহযোগিতা করেছে। বিএনপি মনোনিত উপদেষ্টাদের সহযোগিতায় বিএনপি সিস্টেম থেকে স্বৈরাচারের দোসরদের সরানোর বদলে তাদের সাথে আতাত করেছে। এদের সহায়তায় প্রসাষন , আদালত সর্বত্র বিএনপির প্রভাব প্রতিষ্ঠিত করেছে। একই সাথে সংস্কারে অমত প্রকাশ করেছে , জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজী নয় জানিয়েছে , লীগের প্রত্যাবর্তন ও নির্বাচনে আগ্রহী বলেও জানিয়েছে। অর্থাৎ আওয়ামিলীগ পুনর্বাসন ও ভারতের দালালিতে তাদের সর্ব প্রকার ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেছে। আমরা কেবল এনসিপির কাছ থেকে জবাবদিহিতা চাইছি, কিন্তু বিএনপির ক্লিয়ার বিশ্বাসঘাতকতার বিরুদ্ধে কিছু বলতে আগ্রহী নই। যাই হোক এনসিপির জন্য বিষয়টা ইতিবাচক বলেই মনে করি।। কারন তাদেরকে আমরা লীগ বা বিএনপি টাইপ লুটেরা রাজনৈ্তিক দল বলে ভাবি না। আশা করি তারা প্রতিটা অভিযোগ নিয়ে জবাব্দিহিতা নিশ্চিত করবে।