নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানলা আমার মানেনা আজ ধর্মের বিভেদ/জানলা জাতীয়তাবাদের পরোয়া করে না

অঞ্জন ঝনঝন

অঞ্জন ঝনঝন আমার আসল নাম না। আমি সামুর নিয়মিত ব্লগারও না। মাঝেমধ্যে ঘুরে যাই ভাল্লাগে।

অঞ্জন ঝনঝন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সংকেত_আলপনঃ মোর্স কোড ও একটি প্রেমের গল্প।

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩১



চলুন একটি গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। ধরে নিই যে আমাদের গল্পের নায়কের নাম রোমিও। আমাদের রোমিও একজন 'হতভাগা' ছাত্র। সে জাঁদরেল একজন শিক্ষকের অধীনে একটা ছাত্রাবাসে থাকে । এদিকে রোমিওর জানপাখি জুলিয়েট আবার থাকে ঠিক রাস্তার অপর পাশের বিল্ডিংয়েই। একজনের জানালা থেকে দেখা যায় অপরের জানালা । তো স্বাভাবিকভাবেই তাদের রাত বিরেতে একটু সুখ দুঃখের গল্প করার ইচ্ছা জাগতেই পারে। কিন্তু এদিকে রোমিওর হোস্টেলে স্মার্টফোন/ কম্পিউটার তো দূরের কথা সাধারণ ফোনই ব্যবহার করতে দেয়া হয় না। তাহলে উপায়!

রোমিও ঠিক বুদ্ধি বের করে ফেলল! ঠিক করল সবাই ঘুমাতে যাবার পর জানালার সামনে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির ও ইশারার মাধ্যমে তারা কথা বলবে। রাত এগারোটায় হোস্টেলের নিয়ম অনুযায়ী সবাই ঘুমালো। রোমিও জুলিয়েট দুই জানালায় মুখোমুখি। নীরবে চেয়ে আছে একে অপরের দিকে।
কিন্তু ঠিক এসময়ই ভিলেন শিক্ষকের চিৎকার। "রোমিও রুমের লাইট অফ করে ঘুমাও!!!!"
আহা বেচারা! আলোয় দেখা যাচ্ছে জুলিয়েটের চোখে জল চিকচিক করছে। রোমিও যে ডুবে গেছে অন্ধকারে।

কিন্তু না রোমিও হেরে যাবার পাত্র নয় সে পর্দায় হাজির হল একটা টর্চলাইট নিয়ে এরপর শুরু করল এটির আলো দিয়ে অক্ষর লিখে জুলিয়েটকে মেসেজ দেয়া। যেমন O বুঝাতে আলোর একটি
বৃত্ত আঁকল, I বুঝাতে আঁকল একটি লম্বা রেখা। কিন্তু দেখা গেল বিষয়টা তেমন সহজ নয়। আলোর এমন নাড়াচাড়ার পাঠোদ্ধার করা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই জুলিয়েটের পক্ষে সম্ভব হয়নি।

পরদিন বুদ্ধি নিয়ে হাজির জুলিয়েট। তারা ঠিক করল প্রত্যেকটা অক্ষরের জন্য ভিন্ন ভিন্ন বার লাইট জ্বালাবে নেভাবে। A এর জন্য ১ বার B এর জন্য ২ বার Z এর জন্য ছাব্বিশ বার এভাবে। এতে দেখা গেল শুধুমাত্র How are you? লিখতেই তাদের লাইট জ্বালাতে নেভাতে হচ্ছে ১৩২ বার। তারওপর ক্রম মনে না থাকায় দিতে পারেনি প্রশ্নোবোধক চিহ্নও।

এসময় রোমিওর মনে পড়ল একটা সিনেমার কথা যেখানে সে এভাবে লাইট দিয়ে মোর্স কোডের মাধ্যমে মেসেজ পাঠাতে দেখেছ। এরপর তারা জানল মোর্স কোড সম্পর্কে। আর এটি দিয়ে "How are you?" মেসেজ দিতে তাদের সংকেত দিতে হল মাত্র একত্রিশ বার। দিতে পারল প্রশ্ন বোধক চিহ্নও। এরপর তারা সুখে শান্তিতে দিন কাটাতে লাগল।

চলুন চট করে আমরাও দেখি আসি মোর্স কোড কি জিনিস?


ধরে নেই আপনি লাইট জ্বালিয়ে নিভিয়ে সংকেত দিবেন। তবে এখানে সংকেত আছে দু ধরণের। একটা খুবই স্বল্প সময়ের জন্য লাইট জ্বালানো, আরেকটা একটু দীর্ঘ সময়ের জন্য। লেখার ক্ষেত্রে এ স্বল্পক্ষনের সংকেতকে প্রকাশ করা হয় ডট দিয়ে, আর একটু বেশীক্ষণের টিকে ড্যাশ চিহ্ন দিয়ে। আর এ দুটির কম্বিনেশনেই গঠিত করা যায় ইংরেজি সবগুলো অক্ষর এবং সিম্বল গুলো। কোন কম্বিনেশন কি বুঝায় জানতে লক্ষ্য করুন উপরের টেবিলটি ।


এখানে একটা বিষয় কি লক্ষ্য করেছেন যে এখানে এলফাবেটের ক্রমের সাথে ডট, ড্যাশের ক্রমের কোন মিল নাই! মানে ক্রম ঠিক থাকলে A বুঝানোর কথা ছিল ডট দিয়ে আর B বুঝানোর কথা ছিল ড্যাশ দিয়ে কিন্তু এখানে ডট আর ড্যাশ প্রকাশ করছে E আর T কে। এমন কেন হল?
এর কারণ হচ্ছে ইংরেজি ভাষায় লেটারগুলোর ব্যবহার। যে অক্ষরগুলোর ব্যবহার সবচেয়ে বেশী যেমন E, T এগুলোর কোড কে করা হয়েছে সহজ । আর কম ব্যবহৃত শব্দগুলোর জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে জটিল কোড গুলো।

সাধারণত এক্ষেত্রে ডট এর জন্য যতটুকু সময় ধরে লাইট জ্বালানো হয় ড্যাশের জন্য জ্বালানো হয় এর তিনগুণ। অর্থাৎ ডটের জন্য যদি এক সেকেন্ড লাইট জ্বালান তবে ড্যাশের জন্য রাখবেন তিন সেকেন্ড।

মোর্স কোডে দুটি অক্ষর, দুটি শব্দ ও দুটি ডট, ড্যাশের মধ্যে গ্যাপটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতিটি ডট, ড্যাশের মধ্যে একটি ডটের সমান সময় লাইট বন্ধ রাখতে হবে, আর প্রতিটি অক্ষরের মাঝে রাখতে হবে একটি ড্যাশের সমান, আর প্রতিটি শব্দ আলাদা করার জন্য দুটি ড্যাশের সমান সময় লাইট বন্ধ রাখতে হবে।
ধরুন এক সেকেন্ড পরপর আপনি একটি ডট ও ড্যাশের সিগনাল দিবেন, তাহলে প্রতি অক্ষরের মাঝে লাইট বন্ধ রাখবেন তিন সেকেন্ড, আর প্রতি শব্দের মাঝে ছয় সেকেন্ড।
.
তাহলে রোমিওর মত আমরা ও শিখে গেলাম মোর্স কোড দিয়ে কিভাবে সংকেত পাঠাতে হয়। তবে বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই এ সংকেত রিসিভ করে প্রথম টেবিল থেকে পাঠোদ্ধার করা বেশ কঠিন একটা বিষয়। যেমন কেউ আপনাকে পাঠালো "_.._" চিহ্নটি; আপনি পুরো টেবিল একে একে খুঁজে শেষে এসে দেখলেন এটি আছে X এ। এ সমস্যা দূর করার জন্য দেখুন কোড অর্ডার টেবিলটি।


আপনি এতে কোড দেখেই সরাসরি চলে যেতে পারেন সেই সারিগুলোতে যেখানে চারটি ডট, ড্যাশের সহযোগে কোড দেয়া আছে। এবং বের করতে পারেন এর মানে।

এ মোর্স কোডের একটা বিখ্যাত সিগনাল হচ্ছে SOS সিগনাল। এটি শব্দের সংক্ষিপ্তরূপ না। মোর্স কোডের সবচেয়ে সহজ কোডগুলোর একটি। এটির কোড হচ্ছে
"ডটডটডট ড্যাশড্যাশড্যাশ ডটডটডট"
এটি আন্তর্জাতিক ডিস্ট্রেস সিগনাল হিসেবে স্বীকৃত। বর্তমান এই এসওএস এর কোর্ডটি আরো সংক্ষিপ্ত করে এখন কেবল প্রতিটি অক্ষরের শেষে মাত্র একটি ডটের সমান গ্যাপ রাখা হয় অনেক ফ্লাশলাইটে দেখবেন এই SOS অপশন থাকে।

মোর্স কোড কিন্তু প্রযুক্তির জগতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। টেলিগ্রাফে বৈদ্যুতিক পালস ব্যবহার করে মোর্স কোডের মাধ্যমেই মেসেজ পাঠানো হত। আর একটা বিষয়কি এখনো লক্ষ্য করেছেন যে এই কোডের সাথে কম্পিউটারের মূল ভাষার অনেক মিল রয়েছে? কম্পিউটার যেমন খালি দুইটা বিষয়ই বুঝে বাইনারির ১ এবং ০ আর মোর্স কোডেও আছে কেবল দুটি বিষয় ডট এবং ড্যাশ।

সবশেষে একটা মজার কথা আমি আর আমার এক ভাই এই মোর্স কোডে কথা বলতাম ডট কে বলতাম ডিহ আর ড্যাশ কে ডাহ। তো দেখি এখন নিচের শব্দটার মানে বলুন তো
ডিহডিহডিহডিহ ডিহডিহ।

মন্তব্য ২১ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:১২

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: হাই অঞ্জন ঝনঝন !:)

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৫:০৭

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: .-. .. --. .... - বিলিয়ার রহমান ভাই :D

২| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:১৮

শায়মা বলেছেন: নীচের শব্দটার মানে অঞ্জন ঝনঝন :)

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৪:৫৮

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: হইলনা দিদিমনি। ফেইল করে গেলেন ;) সামনের পরীক্ষায় আরো ভাল প্রস্তুতি নিবেন :D

৩| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:২৫

বিলিয়ার রহমান বলেছেন: শব্দটার মানে সম্ভবত "HI"

৪| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৫১

জাহিদ অনিক বলেছেন: .... . .-.. .-.. --- / .- -. .--- .- -. / .. / .-.. --- ...- . -.. / - .... .. ... / .--. --- ... -

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৫:৪৬

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: - .... .- -. -.- ... :)

৫| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৫৪

জাহিদ অনিক বলেছেন: ডিহডিহডিহডিহ ডিহডিহ = HI

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৫:৪৭

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: .-. .. --. .... -

৬| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৩৯

কালীদাস বলেছেন: হা হা হা, ব্যাপক ইন্টারেস্টিং গল্প বানিয়েছেন মেইন টপিকে টানার জন্য :)
সুপাঠ্য!

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৫:৪৮

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: - .... .- -. -.- ... :)

৭| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:১২

আমি তুমি আমরা বলেছেন: HI

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:০৭

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: .-. .. --. .... - :)

৮| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:১৪

আসাদুজ্জামান সুমন বলেছেন: বাহ
মজা পেলাম :D B-) :) :D

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৯

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য। - .... .- -. -.- ... :)

৯| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৩

ভাবুক কবি বলেছেন: কি লিখুম ভাবতাছি





আরেকটু ভাবতে দিন

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩০

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: আইচ্ছা ভাবতে দিলাম :)

১০| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০০

মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: বেশি না, অল্প একটু ঘুরাইতেসে মাথাটা :||

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৭

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: এটা মোর্স কোডে লিখেন :D

১১| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৩৭

শোভন কুমার বর্ধন বলেছেন: হুম

১১ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ২:২২

অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: 'হুম' মানেটা কি আমি ঠিক ধরতে পারি না। যদি তেমন কিছু বলার নাই থাকে কষ্ট কইরা হুম খানা বলারই বা কি দরকার?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.