নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এটা রাসূল সাঃ এর জন্মের বহু আগের কাহিনী....
রাবিয়ার মৃত্যুর পর সমস্ত ইয়ামানের রাজত্ব চলে যায় আবু কারব হাস্সান ইবনে তুব্বান আস’আদের হাতে। তাঁর পিতা তুব্বান আস’আদ আগে থেকেই পূর্ব দিক দিয়ে মদীনায় (ইয়াসরিব) আসতেন এবং এভাবে মদীনাবাসীদেরকে বিব্রত না করেই সুকৌশলে আপন আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করেন। সেখানে তিনি নিজের এক পুত্রকে প্রতিনিধি নিযুক্ত করেন। কিন্তু উক্ত পুত্র সহসা গুপ্তঘাতক কর্তৃক নিহত হয়। এরপর তুব্বান মদীনা ধ্বংস ও তার অধিবাসীদেরকে নির্মূল করার পরিকল্পনা নিয়ে আবার সেখানে আসেন। অতঃপর আমর বিন তাল্লার নেতৃত্বে লোকদের একটি দল সংঘবদ্ধ হয়। তারা শেষ পর্যন্ত তাঁর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এই দলটি এমন ভাব দেখায় যে, তারা যেন দিনের বেলায় তাঁর সাথে যুদ্ধ করে ও রাত্রে আতিথেয়তা করে। তুব্বান তাদের এ আচরণে বিষ্মিত হয়ে বলেন, আশ্চর্য! এ জাতি বাস্তবিক পক্ষেই ভদ্র ও সম্ভ্রান্ত। এভাবে যুদ্ধ অব্যাহত থাকলো। এমতাবস্থায় একদিন দু’জন ইহুদী পন্ডিত মদীনা ও তার অধিবাসীদেরকে ধ্বংস করার ব্যাপারে তাঁর ইচ্ছ্রা কথা জানতে পেরে তাঁর কাছে আসেন। তারা তাঁকে বললেন,“হে রাজা, এ কাজটি করবেন না আপনি যদি জিদ ধরেন, তাহলেও আপনার সমনে অপ্রতিরোধ্য বাধা আসবে। ফলে আপনি যা চান তা করতে পারবেন না। অথচ আপনি অচিরেই শাস্তি ভোগ করবেন।” রাজা বললেন, “কি আরণে আমি শাস্তি ভোগ করবো?” তারা বললেন, “মদীনা শেষ যামানার নবীর আশ্রয় স্থল। কুরাইশদের দ্বারা তিনি পবিত্র স্থান থেকে বহিস্কৃত হবেন এবং এখানে এসে বসবাস করবেন।”
এ কথা শুনে রাজা নিবৃত্ত হলেন। তাঁর মনে হলো নোক দুটো যথার্থই জ্ঞানী লোক। তাদের কথঅয় রাজা মুগ্ধ হলেন। তিনি মদীনা ত্যাগ করে ঐ পন্ডিতদ্বয়ের ধর্ম গ্রহন করলেন।
তুব্বা তথা তুব্বান আস’আদ ও তাঁর গোত্রর লোকেরা পৌত্তলিক ছিলেন।তিনি ইয়ামানের পথে মক্কা অভিমুখে রওয়ানা হলেন। উসমান ও আমাজ নামক স্থানদ্বয়ের মধ্যস্থলে পৌঁছলে হাযাইল ইবনে মুদারাকা গোত্রের কতিপয় লোক তাঁর কাছে বললো,“হে রাজা, আপনি কি এমন এবটি অজানা ঘরের সন্ধান পেতে ইচ্ছুক, যা হীরক, মণিমুক্তা, চুন্নিপান্না প্রভৃতি মূল্যবান সম্পদে পরিপূর্ণ, অথচ আপনার পূর্ববর্তী রাজারা সে ব্যাপারে অজ্ঞ ছিল।” রাজা বললেন, “হ্যাঁ, এরকম ঘরের সন্ধান অবশ্যই পেতে চাই।” তারা বললো, ‘মক্কাতে একটি ঘর আছে। মক্কাবাসীরা সেখানে ইবাদাত করে ও তার পাশে নামায পড়ে।”
আসলে বনী হুযাইলের লোকেরা তুব্বানকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে েেদয়ার উদ্দেশ্যেই এ পরামর্শ দিয়েছিল। কেননা তারা জানতো, কাবাঘরকে করতলগত করার ইচ্ছে যে রাজাই করেছ এবং তার ওপর আক্রমণ যে-ই চালিয়েছে, সে-ই ধ্বংস হয়েছে।
তুব্বানের ইচ্ছাহলো, বনী হুযাইলের পরামর্শ অনুসারে কাজ করবে। কিন্তু তা করার আগে সেই ইহুদী পন্ডিতদ্বয়ের কাছে দূত পাঠিয়ে তাদের মতামত জানতে চাইলেন। পন্ডিতদ্বয় বললেন, “আপনাকে ও আপনার সৈন্য সামন্তকে ধ্বংস করাই বনী হুযাইলের ইচ্ছা। পৃথিবীতে আল্লাহর কোন ঘরকে আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ নিজের মালিকানায় নিতে পেরেছে বলে আমাদের জানা নেই। তারা যে পরামর্শ দিয়েছে সে অনুসারে আপনি যদি কাজ করেন তাহলে আপনার ও আপনার সহচরদের সমূলে বিনাশপ্রাপ্ত হতে হবে। এটা অনিবার্য ও অবধারিত।” রাজা বললেন, “তাহলে আমি যখন ঐ ঘরের কাছে যাব তখন আমার কি করা উচিত বলে আপনারা মনে করেন?” তারা বললেন “মক্কাবাসীরা যা করে আপনিও তাই করবেন। ঘরের চারপাশে তাওয়াফ করবেন এবং তার সম্মান ও তাজীম করবেন। তার কাছে থাকাকালে মাথায় চুল কামিয়ে ফেলবেন। যতক্ষণ ঐ ঘরের কাছ থেকে বিদায় না হন ততক্ষণ অত্যন্ত বিনয়াবনত থাকবেন।” রাজা বললেন, “আপনারা এসব করেন না কেন?”তারা বললেন, “খোদার কসম, ওটা আমাদের পিতা ইব্রাহীমের বানানো ঘর। এ ঘর সম্পর্কে আপনাকে আমরা যা যা বলেছি সবই সত্য। তবে ঘরের চারপাশে বহুসংখ্যক মূর্তি স্থাপন করে মক্কাবাসী আমাদের ঐ ঘরের কাছে যাওয়ার পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। ঐ ঘরের কাছে রক্তপাত(নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও) চালু রেখেও তারা আমাদের যাওয়া বন্ধ করেছে। তারা অংশীবাদী ও অপবিত্র।”
তুব্বান ইহুদী আলেমদ্বয়ের উপদেশ মেনে নিলেন এবং তা বাস্তবায়িত করলেন। এরপর হুযাইল গোত্রের সেই লোকদের কাছে গেলেন এবং তাদের হাত পা কেটে দিলেন। অতঃপর মক্কায় গেয়ে পবিত্র কা’বাঘর তাওয়াফ করলেন, তার পাশে পশু জবাই করে কুরবানী আদায় করলেন এবং মাথার চুল কামালেন। এভাবে তিনি ছয়দিন মক্কায় কাটালেন। এ ছয়দিন পশু কুরবানী করে মক্কাবাসীকে খাওয়ানো এবং মধু পান করানোই ছিল তাঁর প্রধান কাজ। তিনি স্বপ্নে দেখলেন কা’বা শরীফকে তিনি যেন গিলাফ দিয়ে আচ্ছাদিত করছেন। অতঃপর তিনি খাসফ নামক মোটা কাপড় দিয়ে কা’বায় গিলাফ চড়ালেন।
তিনি আবার স্বপ্ন দেখলেন যে, আরো ভালো কাপড় দিয়ে কা’বাকে গিলাফ পরাচ্ছেন। সুতরাং পরে তিনি মূল্যবান ইয়ামানী কাপড়ে কা’বাকে আবৃত করলেন। ঐতিহাসিকদের ধারণা, এই তুব্বা তথা তুব্বানই প্রথম ব্যক্তি যিনি কা’বা শরীফকে গিলাফ পরিয়েছিলেন এবং কা’বার মুতাওয়াল্লী জুরহুম গোত্রের লোকদেরকে গিলাফ পরানোর অসীয়াত করে গিয়েছিলেন। তিনিই প্রথম কা’বা ঘরকে পবিত্র করার (মূর্তি থেকে মুক্ত করা এর অন্তর্ভুক্ত ছিল) নির্দেশ দেন, কা’বার ধারেকাছে যেন তারা রক্তপাত না ঘটায়, মৃতদেহ এবং ঋতুবর্তী মহিলাদের ব্যবহৃত ময়লা বস্ত্রখ- ফেলে না রাখে-এসব ব্যাপারে তিনি সবাইকে সাবধান করে দেন। তিনি কা’বা ঘরের জন্য দরজা তৈরী ও তালাচাবির ব্যবস্থা করেন।
চলবে...
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:২০
আরব বেদুঈন বলেছেন: আপনাদের ভাল লাগাই আমার কাম্য।শুক্রিয়া।
২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:০৯
কানিজ রিনা বলেছেন: বেশ ভাল লাগল আপনার লেখা অনেক
জানা হোল। ধন্যবাদ।
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:২১
আরব বেদুঈন বলেছেন: নাদের ভাল লাগাই আমার কাম্য আর জানতে থাকুন, জানার কোন শেষ নেই।
শুক্রিয়া।
৩| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:২৬
ইমরান আশফাক বলেছেন: এবার হজে আমি প্রথমবারের মত কাবা শরীফ স্পর্শ করতে সক্ষম হলাম, এমনকি হাতীমের মধ্যে ও যেতে সক্ষম হলাম। সাধারনত: তাহাজ্জুত নামাজের আগে বা পরে এই সুযোগ পাওয়া যায়।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:০৯
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: ভাল লাগিলো।