![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি চিরদূর্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস, মহা- প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস! আমি মহাভয়, আমি অভিশাপ পৃথ্বীর, আমি দুর্বার, আমি ভেঙে করি সব চুরমার! আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল, আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল! আমি মানি না কো কোন আইন, আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন!
স্বপ্ন, আগোরা, ফ্যামিলি নিড, নন্দন ইত্যাদি সুপার-শপ চেইনগুলো শহর জুড়ে তাদের দোকানগুলোকে শাখায় ও আকারে যে গতিতে সম্প্রসারিত করছে তা চমকপ্রদ! ভীতিপ্রদও কি? তবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আবহে বাজার করা যে প্রীতিপদ, সেই বিষয়ে বিতর্কের অবকাশ নাই। দরদামের হেপার বদলে ধরে দেয়া কর-দাম! থলে বহনের বদলে মসৃণ মেঝেতে ঠ্যালা গাড়ি! এই আশ্চর্যজনক দোকানগুলো আসলেই দারুণ স্বয়ংসম্পূর্ণ। এদের পণ্যের সমাহারের ব্যাপকতা, আকারের বিশালতা অজ্ঞাত কারণে গায়ে কাঁপন ধরিয়ে দেয়! কী বিক্রি করে না তারা? কী বিক্রি করতে চায় না তারা? খাওনের, দেওনের, পরনের, বহনের, গায়ে মাখনের-- সকল প্রকার পণ্যদ্রব্য হরেক রঙে, ধরণে, গড়নে ও বিকল্পে ক্রেতাসাধারণের হাতের নাগালে বিনীত ও সুবিধাজনকভাবে হাজির। শুকনা বাজার, ভেজা বাজার, কাচা বাজার, পাকা বাজার-সব!
উত্তরায় জসিমুদ্দিনের কাছে এদের প্রকাণ্ড একটি শাখার বিশেষ শোকেসে সাজানো তাজা দর্শন কিন্তু হিমায়িত মাছ-মাংসের পাশাপাশি একটি স্থানে কাচের তৈরি বিশালাকারের ট্যাঙ্কে সাঁতার কাটে জীবন্ত মাছ! ছনের ছাউনি ও স্বচ্ছ দেয়াল দিয়ে তৈরি ঘরের ভেতর হেঁটে বেড়ায় সোনালি-রুপালি-দেশি-বিদেশী মুরগী! মানে, ‘হিমাগারে সংরক্ষিত নিস্তেজ মাছ-মুরগী, অসতেজ শাক-সবজি বিক্রি করে’- এমন অপবাদও তারা আজ ঘোচাতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। অবশ্য এই ক্ষেত্রে এখনও তারা অনেক দুর্বল। সমাহারও এদের সীমিত। মানুষ তাই মনের মত বাজার করতে কাঁচা বাজারেই যান; বরং সৌখীন লোকেরা সুপার শপের ভেতর এসির বাতাসে মলিন হয়ে পড়া শাকসবজি, শাকসবজির দাম, কিংবা গুড়া মাছ, ঢেঁড়সের সাথে ভ্যাট যোগ হয় দেখে স্মিত, হাস্য করেন। তাছাড়া রাস্তার পাশের কাঁচা বাজারগুলোতে ঘুরে ঘুরে, দামাদামি করে, বেছেবুছে মাছের ডুলা ও সবজির থলে নিয়ে বাজার করার মজা ওসব স্থানে কই? ওখানে "তুই বেটা বেশি দাম রাখস" বলে কষে একটা ঝাড়িও যে দেয়া যায় না!
কিন্তু ভাববার বিষয়, দৈত্যাকৃতির নগরগুলোতে বসবাসকারী ব্যস্ত নাগরিকদের প্রয়োজনকে খুব ভালভাবে বুঝতে পেরে অত্যন্ত সুবিধাজনক এবং আগ্রাসী এইসব সুপার শপগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় এখনও জনপ্রিয় স্থানীয় বাজার আর কত দিন টিকে থাকতে পারবে? কর্তাদের সন্তানেরা কি তাদের মত করে বাজার করাকে উপভোগ করবে? কিংবা উপভোগ করলেও নিত্যনতুন সংযোজনে চাহিদার নিয়মিত সম্প্রসারণ, জীবনযাত্রার দুর্দমনীয় গতি কি তাদের ওভাবে ছুটির দিনে ডুলা হাতে, ফুরফুরে চিত্তে বাজার করার সুযোগ দেবে?
ত্রিশ ওয়াটের বাল্ব জ্বলা টিনের বাক্সের ভেতরে করে একসময়ের বিক্রিত বালু কিচকিচ বাটার-বনগুলো পর্যন্ত বায়ুনিরোধক প্ল্যাস্টিকের প্যাকেটের ভেতর ঢুকে পড়েছে। স্বাদে অস্বাস্থ্যকর বাটার-বনগুলোর ধারের কাছেও নেই কিন্তু ওগুলোই এখন বাজারে প্রতিষ্ঠিত। ঠ্যালাগাড়ির চা-বিড়ির দোকানেও এখন এই প্যাকেট বাটার-বন! মানুষ স্বাস্থ্যকর জীবন চায়। স্থানীয় উৎপাদকরা পিছিয়ে থাকলে কেউ না কেউ কখনও না কখনও তো সুযোগ নিবেই। ফরমালিন দেয়া ফল-মাছ বিক্রি করে আর কয় দিন? ড্রেনের পাশে, রাস্তার শেষে আর কয় দিন? কিন্তু কেন এরকম হচ্ছে? কেন এই খুচরা, স্থানীয় বিক্রেতারা ঝারা-পারা দিয়ে উঠছে না? ভাল-খারাপ-অন্যায়-অত্যাচার-আগ্রাসন-বঞ্চনা জানি না কিন্তু শুধু মনে হয়, কর্পোরেটদের কাছে এদের পরাজয় প্রত্যাসন্ন! কর্পোরেটদের কাছে এদের পরাজয় প্রত্যাসন্ন!
০৬ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:১২
আরাফাত শাহরিয়র বলেছেন: "সাধারনটা আরো বেশী সাধারন হবে" তাই না?
২| ০৬ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:১৫
জুন বলেছেন: তাছাড়া রাস্তার পাশের কাঁচা বাজারগুলোতে ঘুরে ঘুরে, দামাদামি করে, বেছেবুছে মাছের ডুলা ও সবজির থলে নিয়ে বাজার করার মজা ওসব স্থানে কই? ওখানে "তুই বেটা বেশি দাম রাখস" বলে কষে একটা ঝাড়িও যে দেয়া যায় না! ঠিক বলেছেন ।
+
০৬ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:২৯
আরাফাত শাহরিয়র বলেছেন: ধন্যবাদ!
৩| ০৬ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:৩৩
অেসন বলেছেন: আর্থিক অবস্থা উন্নতির সাথে সাথে মানুষ মনে হয় আরামপ্রিয় ও অলস হয়।
বর্তমান প্রজন্মে যদিওবা প্রতিযোগিতার মধ্যে থাকলেও পরবর্তী প্রজন্মে
কর্পোরেটদের বিজয় সুনিশ্চিত।
ধন্যবাদ।
০৬ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১:৪৮
আরাফাত শাহরিয়র বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ০৬ ই মে, ২০১৪ সকাল ১১:১৪
সজল আহমদখ বলেছেন: পিলাচ দিলাম +
০৬ ই মে, ২০১৪ সকাল ১১:২১
আরাফাত শাহরিয়র বলেছেন: পিলাচের জন্য ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই মে, ২০১৪ সকাল ৯:৫১
সোহানী বলেছেন: কর্পোরেটদের কাছে এদের পরাজয়ের কোন সুযোগ নেই। কারন এতো জনারন্য দেশে ধনী গরীব বৈষম্য যতদিন থাকবে দু'ধরনে মার্কেট ততদিন থাকবে। আর বৈষম্য যত প্রকট হবে কর্পোরেটদেরটা ততবেশী বিলাশি হবে অপরদিকে সাধারনটা আরো বেশী সাধারন হবে।