নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি দলে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল

আরাফাত শাহরিয়র

আমি চিরদূর্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস, মহা- প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস! আমি মহাভয়, আমি অভিশাপ পৃথ্বীর, আমি দুর্বার, আমি ভেঙে করি সব চুরমার! আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল, আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল! আমি মানি না কো কোন আইন, আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন!

আরাফাত শাহরিয়র › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঢাকার রাস্তায় পথচারীরা যেন মানুষ নয়; রেসের ঘোড়া!

২৮ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:৩০

ঢাকা-চট্টগ্রামের বেশিরভাগ রাস্তাঘাট, ফুটপাতগুলো যে রকম ব্যস্ত, জনাকীর্ণ; রাস্তায় ছুটে চলা নড়বড়ে, ভাঙাচোরা বাস, টেম্পো, ট্যাক্সি, রাতের ট্রাক এবং অন্যান্য যানবাহনগুলো যে মাত্রার বেপরোয়া, সেই তুলনায় এই দুটি শহরে দুর্ঘটনার পরিমাণ তুলনামূলক বরং কমই! এর একটি কারণ হতে পারে এই যে, জ্ঞান হওয়ার পর থেকে এরকম ঝুঁকিপূর্ণ, জনাকীর্ণ, অসুস্থ হাউকাউ ভরা রাস্তাঘাটে চলাচল করে করে শহর দুটিতে বসবাসকারী পথচারীরা এমনই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে যে তারা আজ দিগবেদিক-জ্ঞানশূন্য চালকদের গাড়িগুলোর সাংঘাতিক উদাসীনতাকে হেয় করে নির্ভার, নিঃশঙ্ক (সংজ্ঞাহীনও কি?) অবস্থায় রাস্তা পারাপার হতে পারে। হয়ত রাস্তাগুলোতে তাদের জীবন এক সেকেন্ডের এদিক ওদিকে ঝুলে থাকে, কিন্তু তা নিয়ে ভেবে দেখার অবকাশ তারা স্বেচ্ছায় প্রত্যাখ্যান করে বলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধাতব দানব-কোমল মানব প্রতিযোগিতায় তারাই জয়ী হয়।



নিজের জীবন এবং ঘরে অপেক্ষমাণ স্বজনের ভালবাসার গুরুত্বকে তুচ্ছ করা অকুতোভয় ঢাকা-চট্টলাবাসীদের রাস্তা পারাপার হওয়ার অভাবনীয় ক্ষমতা-দক্ষতা চেয়ে চেয়ে দেখার মত। বাসগুলোর পেছনে- “ভাল ড্রাইভার বাসের পেছনে ধাক্কা দেয় না” লিখা থাকলেও অনুরূপ বিবৃতি বাস চালকদের কোনোভাবেই দায়বদ্ধ (কিংবা প্রলুব্ধ) করতে পারে না। তারা একজন আরেকজনের পিছনে কারণে-অকারণে ধাক্কা দেয়! যেন তাদের যানগুলো ধাতব দানব নয়, শিশু-পার্কের ক্ষুদ্রকায় বাম্পার-কার! আর এইরকম অতিকায় বাসগুলোর মধ্যকার ভয়াবহ ধাক্কাধাক্কির ফাঁকফোকর দিয়ে মানুষ, অন্ধ কিন্তু উচ্চ-সংবেদনশীল চামচিকার মত যেভাবে ফুড়ুৎ-ফারুত করে চলা ফেরা করে তাতে নিশ্চিত করে বলা যায় যে তারা দুঃসাহসী এবং একই সাথে নির্বোধ। তবে এর ভেতর হয়ত নেশা, কেমন মোহও আছে! সামনের জনকে দেখলে, পেছনের জনও যাবে। আসলে প্রবৃত্তিতে ছাগলে-মানবে খুব বেশী পার্থক্য নেই!



আমি নিজ চোখে দুটো দৈত্যাকৃতির বাসের মাঝখানের সরু, দ্রুত সঙ্কুচিত হতে থাকা অস্থায়ী সুরঙ্গ দিয়ে ফুড়ুৎ বের হয়ে এসে এক লোককে ড্রাইভারের দিকে শুধু একটা সাধারণ রক্তচক্ষুর ‘তাকান’ দিয়ে শার্টের কাঁধের দিকটা একবার ঝেড়ে নিয়ে খুশী মনে হেটে চলে যেতে দেখেছি! আর অল্পের জন্য রক্ষা পাওয়ার নিক্ষিপ্ত দৃষ্টি বেমালুম উপেক্ষা করে, ‘যেন কিছুই হয়নি’- এমন ভঙ্গীতে ততক্ষণে বাসের চালক সামনের বাসটির পেছনে তার বাসখানা লাগিয়ে দিয়ে বসে আছে; অশ্লীল ভঙ্গীতে!



আবার এদিকে, বাস-স্টপগুলোতে থামার সময় ধীরে ধীরে গতি কমাতে অনিচ্ছুক চালকরা যখন পারলে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের গায়েই বাস উঠিয়ে দিয়ে সজোরে ব্রেক কষতে চায়, তখন দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের শারীরিক প্রতিক্রিয়া দেখে একরকম অসুস্থ বিনোদন পাওয়া যায়। যেন তাদের পায়ে ডাণ্ডা-বেড়ি পরানো আছে। অথবা চাকা আর মাড-গার্ডের ফাঁক দিয়েও একটা পথ আছে যেটা দিয়ে বাসের ভেতর ঢুকে পড়া যায়! নইলে বাসগুলো অমন বিপদজনক-ভাবে গায়ে উঠে আসতে চাইলেও এরা নড়তে-চড়তে ওরকম আলস্য বোধ করে কিভাবে?



সকালে স্বাস্থ্যকর নাস্তা খাইয়ে, পরিষ্কার, টানটান করা জামাকাপড় পরিয়ে মা-বাবারা যখন তাদের সন্তানদের স্কুলে পৌঁছে দেয়ার পথে বিপদজনক-ভাবে রাস্তা পার হয় তখন তাদের দেখতে অদ্ভুত নির্লিপ্ত এবং ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে অসহায়ও লাগে (মানে চেহারা দেখে লাগে না)। এটা ঠিক যে কখনো ফুট-ওভার ব্রিজগুলো থাকে তাদের পায়ের নাগালে, তথাপি তারা বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে সরাসরি রাস্তায় নেমে পড়েন, ব্রিজের দিকে চেয়েও দেখেন না একবার। তারপরও, ফুট-ওভার ব্রিজগুলোর সংখ্যা আশঙ্কাজনক রকম কম। হকারদের দৌরাত্ম্যে ফুটপাথে হাঁটার নেই উপায়। আর রাস্তায় তো গাড়িই ধরে না, মানুষ কিভাবে ধরে? তাতেই তবু অনাহূতের মত চালকদের বিরক্তির উদ্রেক করে পথচারীরা পদচারণ করে বেড়ান! আবার তারাই যখন গাড়িতে চড়ে বসেন, তখন চোখের পলকে গাড়ির উন্নাসিক যাত্রীতে রূপান্তরিত হয়ে গাড়ির গতি কমিয়ে দেয়া, কিংবা জ্যামে ফেলে দেয়া পথচারীদের প্রাণপণে কিন্তু নীরবে (কখনো সরবেও) গালমন্দ করেন! বলে বসেন, “আরেহ! শালারে (কিংবা শালীরে) মাইরা দিয়া চইলা যায় না ক্যান?”



সন্ধ্যা নেমে এলে ঢাকা বিমানবন্দরের সামনের রাস্তাটার মাঝখানে মলিন চেহারার ট্রাফিকপুলিশদের একটা মোটা দড়ির এক মাথা ল্যাম্প পোষ্টে বেঁধে আরেক মাথা টেনে ধরে সটান হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। আর সেই দড়ির পেছনে ম্যারাথন দৌড়বিদদের মত চেহারা করে উন্মুখ পথচারীরা প্রচণ্ড গতিতে ছুটে চলা যানবাহনগুলোকে এক হাতের ইশারায় থামিয়ে দিয়ে রাস্তায় ঝাঁপিয়ে পড়ার উত্তেজনায় ভারী শ্বাস নেয়! দড়ি দিয়ে তাদের আটকে রাখা, রাস্তায় ঝাঁপিয়ে পড়তে না দেয়া ট্রাফিক পুলিশদের মুখভঙ্গি দেখলে মনে হয় পথচারীরা যেন মানুষ নয়; রেসের ঘোড়া! তারা শুধু ছুটবে এবং ব্রিডিং করবে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:৪৫

ঢাকাবাসী বলেছেন: পৃথিবীতে সবচাইতে নিকৃস্ট অসভ্য আইকিউ বিহীন নির্মম অশিক্ষিত ড্রাইভার বাংলাদেশের!

২৮ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:১৪

আরাফাত শাহরিয়র বলেছেন: কোনো সন্দেহ নাই!

২| ২৯ শে মে, ২০১৪ সকাল ৯:১৬

আজীব ০০৭ বলেছেন: ঢাকাবাসী সাথে সহমত

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.