![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বলার মত কোন বিশেষ গুনাবলি আমার নাই ।
ছোটবেলায় যখন একটি ছেলেকে জিঙ্গেস করা হয় বড় হয়ে কি হবে প্রায় ৫০ শতাংশ উত্তর দিবে আমি ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার হবো । আমার শুরুটা সেই প্রথম থেকেই একটু আলাদা আমি কখনো বলি নাই আমি ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হবো জীবনে প্রথমবার আমার হওয়ার ইচ্ছা ছিলো কম্পিউটার । তখন ক্লাস ওয়ানে পড়ি । ইচ্ছাটা টিকে ছিলো ক্লাস থ্রী পর্যন্ত।
ক্লাস থ্রী তে কি বুঝে হঠাৎ ইচ্ছাটা ঘুড়ে আর্মি অফিসার এর দিকে হয়ে গেলো বলতে পারবো না এই ইচ্ছাটা টিকে ছিলো বেশ কিছু দিন। প্রাইমেরীর গন্ডি পেরিয়ে হাইস্কুলে পারি দেবার পর যখন সবাই আমাকে পিচ্ছি বলে ডাকতো তখন ঠিক ধরে ফেলেছি আমার এই ইচ্ছে পূরণ হবার নয়।
বাবা মা এর সাথে বাবার চাকরির সুবাদে গ্রাম ছেড়ে ততদিনে আমি ঢাকায় । ক্লাস সিক্স উত্তরার বন্ধি জীবনের প্রথম ৬ মাস পড়াশুনা আর নতুন শহরের পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে গিয়ে বেশকিছু দিন আমার স্বপ্ন দেখায় ছুটি পড়লো । সকালে স্কুল বিকালে ডে-কেয়ার এরপরে বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত হতো। টিভি দেখে দেখে বাকিটা সময় কাটাতে হতো ।
বেবলেট,পকিমোন, বেবী লুনি টিউনস ছিলো আমার ছুটির দিনের বন্ধু । আর বড় ভাই এর সাথে ক্রিকেট খেলা দেখতে দেখতে ক্রিকেট ও আমাকে পেয়ে বসে ভালো করেই মাঝে মাঝে টিভিতে হাইলাইটস দেখি । বড় বোনের সাথে গান শুনতে শুনতে নচিকেতা তা আর সুমনের গানগুলো আমার মুখস্ত হয়ে গিয়েছিলো। স্বপ্ন দেখা শুরু করে তখন ভাবতাম নচিকেতা কিংবা কবির সুমন তো হবই ।
খাচার পাখি মুক্ত হই সিক্স এর পরীক্ষার শেষে । সকলের ক্রিকেট খেলার হাতেখড়ি কোথায় আমার জানা নেই আমার হাতেখড়িটা এই ইট-কাঠের চার দেয়ালের মাঝেই উত্তররা ১১ নম্বর সেক্টরের ৪ রোডের মাঠে । সেই শুরু প্রথম হাত ঘুড়িরে ফাস্ট বল করতে শেখা , প্রথম উইকেটের পিছনে দাড়িয়ে কিপিং করা, লম্বা লম্বা ক্যাচ ধরা এইতো। টিফিনের টাকা জমিয়ে একটা ক্রিকেট ব্যাট ও কিনে ফেলি। আর ততদিনে বাসার সামনের ছোটমাঠ পেরিয়ে ১১ নম্বরের বড় মাঠে চলে যাই । বড় ছয় ও মারি মাঝে মাঝে ,উইকেট ও নিয়ে ফেলি একটা দুটা । এলাকায় সবার আদর পেতেই শুধু শুরু করি না সকাল সকাল বাজির ম্যাচ খেলতে এ পাড়া ও পাড়া করে বেড়াই তখন । যখন খেলার জন্য ডাক পড়তো তখন স্বপ্ন দেখতাম আফতাব আহমেদ হবো । কিন্তু মুশি নামের একটি ছেলে খেলা শুরু করার পর সবাই যখন আমাকে মুশফিক বলে ডাকতো মনে অজান্তেই কখন যে মুশি হবার স্বপ্ন বুনে ফেলি ধরতে পারনি । স্বপ্ন দেখায় মাশুল গুনতে হয়েছে পরীক্ষার খাতায় ক্লাস সেভেন থেকে এইটে ফাস্ট থেকে থার্ড হয়ে যখন উঠি বাবা আমার ক্রিকেট ব্যাটটা ভাঙতে বসেছে তখনি ।
এরপর উত্তরার জীবন আর বন্ধুদের সাথে সাথে আমার ক্রিকেট এর প্রিয় মাঠ কে ফেলে চলে আসতে হয় বনশ্রী তে নতুন স্কুল নতুন পরিবেশ মানিয়ে নিচ্ছি কিন্তু স্বপ্ন কিন্তু তখনো ক্রিকেট । আস্তে আস্তে কি করে যেন পরিচয় হয়ে উঠে এলাকার একটি ক্রিকেট একাডেমীর সাথে শুনেছি এখান থেকে নাকি আশরাফুল জাতীয় টিমে গেছে । স্বপ্ন তখন ফিকে থেকে রঙ্গিন হয়ে উঠে অনেক চেষ্টার পর ও বাসা থেকে অনুমতি না পেয়ে শেষে নিজের জমানো টাকায় ভর্তি হয়ে যাই । এই প্রথম লাল শক্ত বল দিয়ে পায়ে প্যাড হাতে গ্যালাভস লাগিয়ে নেটে ব্যাট করা । প্রথম প্রথম খুব ভয়ে ভয়ে থাকতাম টানা বেশ কিছু ম্যাচ বসে ছিলাম দলে আসার সুযোগ হয়নি । এরপর হঠাৎ চলে আসে সেইদিন প্রথম ক্লাবের হয়ে মাঠে নামি ভালো খারাপ কিছুই করিনি ৩২ রান করে ফিরেছিলাম । এরপর আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি দলের হয়ে নিয়মিত ম্যাচ খেলতাম ডাক মারলে ও বাদ পড়তে হয়নি কারন বিশ্বাস অর্জন ততদিনে হয়ে গেছে । এখনো মনে আছে সকালে স্কুলে না গিয়ে ম্যাচ খেলেতে গিয়ে বাসায় ফিরে মাইর খেয়েছিলাম। কিন্তু ক্রিকেট আমি ছাড়িনি তখনো
দেখতে দেখতে ক্লাস নাইনের মাঝামাঝি বড় ভাও বোনদের রেজাল্ট ভালো ছিলো বলে আমার উপর আলাদা একটা চাপ ছিলো ভালো কিছু যে আমাকেও করতে হবে । নাইনের ২ টার্মে ফেল মেরে বসি ২ সাবজেক্ট এ । তখনি বুঝতে পারি একসাথে দুই নৌকায় পাড়ি এক জীবন পাড়ি দেয়া সম্ভব না একটা নৌকা ছাড়তে হবে । যেহেতু লেখাপড়া ছাড়া সম্ভব নয় ছাড়তে হলো রক্তের সাথে মিশে যাওয়া ক্রিকেটকেই। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু তখন লেখাপড়া মানি শুধুই লেখাপড়া সকাল ৬টায় স্যার এর বাসা আর রাত ১ টায় ঘুমাতে যাওয়া ছিলো আমার প্রতিদিনের রুটিন এর মাঝে ৪টি স্যার এর বাসা স্কুল কোচিং তো ছিলোই । দেখতে দেখতে ১২ মে ২০১১ জীবনে সেদিন মনে হয় সত্তিকারের হাসি হেসেছিলাম । হয়তো বাবা মা কে খুশি করতে পেরেছি কিন্তু আমি মন থেকে তখনো ক্রিকেট কে বিদায় জানতে পারিনি । স্বপ্ন তখন পড়াশুনা করেই কিছু একটা করবো ।
শুরু কলেজ জীবন ভালোই চলছিলো জীবনটা হঠাৎ কোন এক ঝরে এলোমেলো হয়ে একা হয়ে পড়ি খুব একা । তখন আমার পরিচয় হয় নতুন জীবনের সাথে পুরো দমে পাঠক হয়ে যাই আমি গল্পের বই এর সাথে সারাটা দিন আগের মত আর একটা বই পড়তে ৭ ৮ দিন করে লাগে না তখন । নিজের মনের কথা গুলো যখন কেউকে বলতে না পেড়ে সেই কথা গুলো কে খুজে পেতাম গল্পের বইয়ের পাতায় তখন ধরেই নিয়েছিলাম আমি লেখক হবো । খাতা কিনে শুরু করেছিলাম একদিনে ৪০ পাতা লিখে সেই শুরু সেই শেষ ।
বনশ্রী ছেড়ে এখন আমি ধানমন্ডির আসে পাশে পাড়ি জমালাম । একঘেয়ে একা একা জীবন কাটা শুরু হয়েছে তখন ফেজবুকিং আর মুভি দেখে লেখক হবার স্বপ্নের সাথে তখন যুক্ত হলো আমি মুভি মেকার হবো । মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি এর মত পরিচয় হয়ে যায় বাংলাদেশ চিলন্ডেন ফিল্ম সোসাইটির সাথে যাদের হচ্ছে মুভি নিয়ে । এবার আমি একমত খালি পরীক্ষা শেষ হোক আমি ও একটা শর্ট ফিল্ম বানাবো যেমন কথা তেমন কাজ এইচ এস সি শেষ করে সব ঝামেলা চুকিয়ে জানুয়ারী ১৪ তে প্রথম শর্ট ফিল্ম বানানোর কাজে নামি ৭ দিন খেয়ে না খেয়ে বানালাম একটা শর্ট ফিল্ম । কিন্তু যা চেয়েছি তা করতে না পেরে আমি আবার হতাশ। মনে হয় এ স্বপ্নটা ও এখানেই ইস্তফা যাবে ।
আসলে যারা অনেক স্বপ্ন দেখে তাদের স্বপ্ন পূরণ হয়না বলে মনে হয় ।
২| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৭:৩৮
লাল সবুজের ফেরি্ও্য়ালা বলেছেন: একমত আমিনুর ভাই
৩| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৮:৫১
নাহিদ ইসলাম ৩৫০ বলেছেন: হুম..............
প্রযুক্তি বিষয়ক বাংলা ব্লগঃ আইডিয়া বাজ
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৭:১৭
আমিনুর রহমান বলেছেন:
আমাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থা স্বপ্ন শুধু দেখার জন্যই বলে পুরনের জন্য নয়!