নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হ্যা লো ব্লগারস !
আশা করি নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যমূল্যের উর্ধ্বগতি আর অসহনীয় যানজট নিয়ে ভালোই আছেন। বাংলাদেশ এমনিতেই সমস্যা সংকুল দেশ। আমাদের সমস্যার শেষ নাই। আবার নিত্য নতুন সমস্যা আমাদের ঘাড়ে আসে ইচ্ছা অনিচ্ছায়। ধর্ষন, মাদক, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এহেন বিবিধ সমস্যার পাশাপাশি প্রায় প্রতিদিনই আমরা নতুন নতুন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। যেন বিধাতা একের পর এক পরীক্ষা নিচ্ছেন আমাদের সহ্য শক্তির। অবাক করার মত বিষয় হলেও সত্য এক সময়কার প্রতিবাদী আমরা কিন্তু বেশ সহনশীল জাতিতে পরিণত হয়েছি। আমরা এস্টাবলিসমেন্টের বিরুদ্ধে টু শব্দটিও করি না। আমরা যেন বুঝে গেছি সেই মহান আপ্ত বাক্য 'শক্তের ভক্ত, নরমের যম'।
ছোটবেলা থেকেই একটা কথা শুনে এসেছি 'মগের মুল্লুক'। আমি জানতাম না এই মগ কারা ? কেনই বা মগের মুল্লুক শব্দটি ব্যবহার করা হয়। বড় হতে হতে বুঝলাম মগের মুল্লুক মানে হচ্ছে চরম বিশৃঙ্খলা। জোর জবরদস্তির শাসন। বিচারহীনতা। বড় হতে হতে আমি দেখলাম গোটা দেশটাই মগের মুল্লুক (যদিও এখানে মগ আছে হাতে গোনা তাও প্রান্তিক অবস্থায়)। এখানে আসলে জবরদস্তির শাসনই চলে। যার শক্তি বেশি, যার পেছনে মানুষ বেশি ক্ষমতা তারই। বাকীরা হাজার সত্য কথা বললেও তাদের কথার কোন মূল্য এই দেশে নাই। যেহেতু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভেড়া হবার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভেড়ার পেছনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাজেই হয় ভেড়া হও না হয় ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা হয়ে ঘরে খিল দাও।
দুই
যাই হোক প্রসংগ থেকে অনেক দূরে সরে এসেছি। আজকে এসেছি রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমার মনোভাব আপনাদের ভাগাভাগি করতে। মনের মধ্যে কিছুটা হতাশা, শংকা এবং ক্ষোভ নিয়ে ব্লগ লিখতে বসেছি। এদিকে আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে দেখিয়েছে ঊপকূলে ভারী বর্ষনের সম্ভাবনা আছে। আর সেই উপকূলেই আমরা সম্প্রতি প্রায় চার লক্ষ রোহিঙ্গাকে নতুন করে শরনার্থী হিসেবে থাকতে দিয়েছি।
শরনার্থী হিসেবে আসা এই মানুষগুলো বেশির ভাগ আশ্রয় নিয়েছে টেকনাফ, উখিয়া এবং কক্সবাজারে মেরিন ড্রাইভের দুই পাশে। এর বাইরেও অনেকে আগে থাকা রোহিঙ্গা আত্মীয় স্বজনদের কাছেও আশ্রয় নিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী, স্বেচ্ছাসেবক এবং সাংবাদিকের হৃদয় বিদারক বর্ননায় পাষানেরও মন কাঁদতে বাধ্য। বাঁচার তাগিদে এদের যে সংগ্রাম এটা মানব ইতিহাসের যেকোন গণ অভিবাসনের চাইতে কম কষ্টের নয়। পেছনে নল তাক করা সামরিক বাহিনী, দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা নিজের গ্রাম সহায় সম্পদ, কাধে মা, বুকে সন্তান, যেকোন সময় ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরিত হবার আতংক, পানিতে ডুবে মরার আতংক। আহ ! কি দুঃসহ!
তিন
রোহিঙ্গা সংকট আমাদের জন্য নতুন কিছু না। গত শতকে কম করে হলেও তিনবার এবং এই শতকে অন্তত দুইবার রোহিঙ্গারা সামরিক বাহিনী ও স্থানীয় সেটলারদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে নাফ নদী পেরিয়ে আমাদের দেশে এসেছে। ২০১৬ সালের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ও টেকনাফের লেদা’র দুটি শরণার্থী ক্যাম্পে নিবন্ধিত রোহিঙ্গা রয়েছেন প্রায় ৩৩ হাজার। এছাড়াও কুতুপালং, লেদা ও শামলাপুরে রয়েছে আরও ৩টি অনিবন্ধিত শরণার্থী ক্যাম্প। এ তিনটি অনিবন্ধিত ক্যাম্পসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত আরও ৫ লাখ রোহিঙ্গা। যাদের কোনও সঠিক পরিসংখ্যান সরকারের কাছে নেই। সাম্প্রতিক ঘটনায় ধারনা করা হয় প্রায় ৪ লক্ষের কাছাকাছি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মোট জনসংখ্যা প্রায় ত্রিশ লক্ষ। তার মধ্যে প্রায় নয় লক্ষ বাংলাদেশে বসবাস করছে। বলা যায় মানবতার খাতিরেই এই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছে বাংলাদেশ। সমস্যা সেখানে না। সমস্যা হচ্ছে পদ্ধতিতে, কৌশলে। তার আগে আসুন একটু ঠান্ডা মাথায় ভাবি। যাদের ধর্ম নিয়ে মাথা গরম তারা একটু তফাতে থাকেন। কারণ আমি খুব ভালো করেই জানি রোহিঙ্গারা যদি মুসলিম না হয়ে হিন্দু হত এবং মায়ানমার যদি মুসলিক প্রধান দেশ হত তাহলে আপনাদের নিরানব্বই শতাংশই মুখে কুলুপ এটে বসে থাকতেন এবং কিছুই হয়নি এমন একটা ভাব ধরতেন। কথা না বাড়িয়ে আসল আলোচনায় যাই।
প্রথমেই, বাংলাদেশের পক্ষে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া ছাড়া আর কোন পথ খোলা ছিল কি ?
আমার মনে হয় না। মায়ানমার বেশ ছক কষেই এবারের রোহিঙ্গা নিধন শুরু করেছে এবং এর পেছনে যে শুধু মায়ানমার আছে এমনটা আমি মনে করি না। স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে রোহিঙ্গা নিধন তথা উচ্ছেদের ক্রিম যতটা না মায়ানমারের ভাগে যাচ্ছে তার চেয়ে বেশি যাচ্ছে চীন এবং ভারতের দিকে। কিছুটা ক্রিম রাশিয়াও পাচ্ছে। কিভাবে ? সে ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনার দরকার, সেটা হয়ত অন্য সময় করব সুযোগ পেলে। এখন এত এত শক্তিশালী রাষ্ট্র যারা বাংলাদেশের বন্ধু বলেই আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় জাহির করে তারা যখন সব পল্টি নিয়ে ফেলে তখন আসলে একা বাংলাদেশের পক্ষে কিছুই করার থাকে না। চীনের এক ধমকে মায়ানমার ক্ষান্ত দিত, কিংবা ভারতের দরকার ছিল যেচে পড়ে মায়ানমার সরকারকে সমর্থন জানানো। রাশিয়া তো সরাসরি একে মায়ানমারের অভ্যন্তরীন বিষয় উড়িয়ে দিল।
এত এত বন্ধুর বেইমানীতে শেখ হাসিনা এক রকম বাধ্য হয়ে অবস্থার শিকার হয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন। নইলে তিনি খুব ভালো করেই জানেন রোহিঙ্গারা রাজনৈতিকভাবে কখনই আওয়ামী লীগের মিত্র হবে না এবং তাদের এদেশীয় মিত্র হচ্ছে জামায়াত-হেফাজত। কাজেই, তিনি পারত পক্ষে এদের আশ্রয় দিতেন না।
দ্বিতীয়ত, সরকার কি প্রস্তুত ছিল ?
আমার কাছে কোন পয়েন্টেই মনে হয়নি সরকারের কোন প্রস্তুতি আছে কিংবা সরকার পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের এহেন লেজে গোবরে অবস্থা দেখা যায়নি। বিশেষ করে ২০১৪ সালের নির্বাচনকালীন ধকল কাটিয়ে ওঠার পর এই রোহিঙ্গা ইস্যুতেই এই সরকার একটু টাল মাটাল অবস্থায় পড়েছে। এখানে ইন্টেলিজেন্সের ব্যর্থতা চূড়ান্ত। কোন ধরনের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক কিংবা সামরিক পদক্ষেপ দৃশ্যমান ছিল না। দেশে চলমান বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে না দিতে রোহিঙ্গা সংকট সরকারকে বেশ বেকায়দায় ফেলে দিতে সক্ষম হয়েছে। যার ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা তার জন্য সহজ হবে না।
তৃতীয়ত, শরনার্থী প্রবেশে কোন ধরনের মনিটরিং কি হয়েছিল ?
আমার মনে হয় না। সরকার প্রথম ধাক্কায় তাদের ঠেকাতে চেয়েছে। যখন দেখেছে ঢল ঠেকানো যাচ্ছে না এবং দেশের ভেতরের জনমত রোহিঙ্গা শরনার্থী নেয়ার পক্ষে, তখন রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের স্বার্থেই হোক কিংবা অবস্থা প্রেক্ষিতে হোক তাকে সীমান্ত খুলে দিতে হয়েছে। বানের জলের মত রোহিঙ্গা ঢুকেছে। সম্ভবত সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গা একবারে এবারই ঢুকেছে। কিন্তু সমস্যাটা এখান থেকেই শুরু হয়েছে। শরনার্থী নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে আমাদের সেনাবাহিনীর। যারা এখানে মূখ্য ভূমিকা পালন করতে পারত। কিন্তু তাদের প্রায় অনুপস্থিত রাখা হয়েছে পুরো প্রক্রিয়া থেকে। ফলে কে রোহিঙ্গা আর কে বাংলাদেশী সেটা তফাত করা কঠিন হয়ে গেছে।
চতুর্থত, ত্রান কার্যক্রম কি যথেষ্ঠ এবং পরিকল্পিত ?
এক শব্দে এই প্রশ্নের জবাব হচ্ছে 'না'। ত্রান কার্যক্রমে চূড়ান্ত অব্যবস্থাপনা পরীলক্ষিত হচ্ছে। ত্রান নিয়ে লুটপাট হচ্ছে আবার শরনার্থীদের যা দরকার সেটা না দিয়ে অপ্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে দেয়া হচ্ছে। ত্রান সংগ্রহেও ব্যপক অনিয়মের খবর পাওয়া যাচ্ছে। মানে রোহিঙ্গা ইস্যুকে ক্যাশ করে বেশ একটা রমরমা ব্যবসার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের বিষয়টা আর দশটা দুর্যোগকালীন পরিস্থিতির সাথে এক করে দেখলে ভুল হবে।কাজেই, এখানেও পুরো কার্যক্রম সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে নিয়ে এসে পরিবারভিত্তিক ও নিবন্ধনের ভিত্তিতে পরিচালনা করলে অনেকটাই সুষ্ঠুভাবে করা যেত।
পঞ্চমত, সরকার কি কূটনৈতিক ততপরতায় সফল?
এখন পর্যন্ত তেমন মনে হয়নি। বরং কিছুটা কোনঠাসাই বলতে হবে বাংলাদেশকে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে কিছুটা পজিটিভ সাইডে আছে বাংলাদেশ। এটার উপর ভর করতে পারলে হয়ত সংকট কাটিয়ে ওঠার রাস্তা বের করা সম্ভব। সরকার যেটা করতে পারত, দেশে অবস্থানরত সকল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে ব্যপকভাবে জনমত তৈরি করতে পারত। যদিও পরে চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু জানেন তো সময়ের এক ফোর অসময়ের দশ ফোর।
চার
এবার আসা যাক এখন যা করনীয় বলে আমি মনে করি সেটা নিয়ে আপনাদের সাথে কথা বলি। অনেকেই আমার সাথে একমত হবেন। কেউ কেউ দ্বিমত হতে পারেন। আপনাদের মতামতগুলো শুনতেই তো ব্লগে আসা। এখানেও আমি চেষ্টা করব পয়েন্ট বাই পয়েন্ট বলতে। কিছু বিষয় আগেই উল্লেখ করেছি। এখানে একটু গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করছি,
১) সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র প্রদান। পরিবারভিত্তিক রেশন কার্ড প্রদান।
২) রাষ্ট্রপতির অধীনে রোহিঙ্গা ত্রান সেল গঠন এবং সকল ব্যক্তিগত-সাংগঠনিক, সরকারী-বেসরকারী, দেশি-বিদেশি সহযোগীতা এখানে সংগ্রহ করে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে সেই ত্রান পরিবারভিত্তিক রোহিঙ্গাদের প্রদান।
৩) পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম, ফেসবুকে বলেছেন রোহিঙ্গা এতিম শিশুদের সন্তানহারা মা-বাবার আওতায় আনা যায় কিনা সেটা সরকার ভেবে দেখছে। এই ধরনের সংকটে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়ে শিশু এবং নারীরা। এদের সমূহ সম্ভাবনা থাকে পাচারকারীদের হাতে পড়ার। আর না পড়লেও নারীরা অনেক সময় পেটের দায়ে শরীর বেচতেও বাধ্য হয় এবং এ থেকে উক্ত অঞ্চলে যৌনবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ারও সম্ভাবনা থাকে। কাজেই, এই দিকটা বিশেষ নজরে আনা দরকার।
৪) খুবই গুরুত্বপূর্ন বিষয় হচ্ছে চিকিতসা। বছরের পর বছর অপুষ্টিতে ভোগা এই জনগোষ্ঠী সাথে করে অনেক রোগ জীবানু নিয়ে এসেছে। জাতিগত সংঘাতের বয়ে বেড়াচ্ছে অনেকেই। এদের সবচেয়ে আগে যেটা দরকার চিকিতসার ব্যবস্থা করা। প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবক চিকিতসকদের দিয়ে সেনা তত্ত্বাবধায়নে মেডিকেল ক্যাম্প বা হাসপাতাল স্থাপন করা উচিত দূর্গত এলাকায়।
৫) খাদ্য চিকিতসার পরই যে জিনিসটা দরকার সেটা হচ্ছে আশ্রয়। মাথা গোজার ঠাই। উপকূলীয় এলাকা ঝড়প্রবন হওয়ায় এখানে একটু শক্ত পোক্ত আবাসন দরকার। আবার এই এলাকায় এত খাস জমি আছে বলেও মনে হয় না। কাজেই এদের ছোট ছোট কিন্তু টেকসই এবং নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে জাতিসংঘের মাধ্যমে।
৬)স্থানীয় জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তার স্বার্থে উপদ্রুত এলাকায় জরুরী অবস্থা এবং বাংলাদেশের নাগরিক ব্যতিত সকলের জন্য সান্ধ্য আইন জারি করা উচিত।
৭) যেহেতু হঠাত আসা এই শরনার্থীদের জন্য স্থানীয়রা বেশ বেকায়দায় পড়েছে তাই তাদের জান-মালের নিরাপত্তা এবং সস্তায় নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা করতে হবে।
৮) রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্যে প্রয়োজন শক্তিশালী কূটনৈতিক ততপরতা। মুখে আস্ফালন আর বাস্তবে চাল কিনতে পাঠালে রোহিঙ্গা আর ফেরত যাবে না। আমার আপনার করের টাকায় এদের পালতে হবে বছরের পর বছর। কাজেই রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থাও আমাদেরকেই করতে হবে।
৯) সারা দেশে বৌদ্ধ ও আদিবাসী পাহাড়িদের জান মালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। একজনের দায় আরেকজনের ঘাড়ে চাপানোর নোংরা কৌশল থেকে বের হয়ে আসা দরকার। ফেসবুকে ইতিমধ্যে কয়েকটা ঘটনা পেয়েছি যা জাতি হিসেবে মাথা নত করে দেয়। ক্ষেত্রবিশেষে আমরা যে মগেদের চাইতে নিকৃষ্ট সেটা প্রমাণ করা যেকোন মূল্যে ঠেকানো দরকার।
পাঁচ
পরিশেষে যেটা বলতে চাই। রোহিঙ্গাদের মধ্যে উগ্রপন্থী যে অংশটি আরাকান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে, তাদের ব্যপারে শংকিত হবার যথেষ্ঠ কারণ আমাদের আছে। আরাকান বলতে এরা যে রাষ্ট্রের কথা বলে সেখানে আমাদের কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম থেকে ফেনী পর্যন্ত সেই রাষ্ট্রের অংশ। শরনার্থী হিসেবে আসা অনেক রোহিঙ্গাই বলছে এটা তাদের জমি, নিজের জমি দখল নিতে এসেছে তারা। আরসা বা আরাকান মুক্তি সংস্থার সদস্য প্রায় দেড় লাখ। এই বিশাল গেরিলারা কিন্তু বেশির ভাগই তাদের পরিবারের সাথে আসেনি। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের গহীন জংগল দিয়ে তাদের আমাদের দেশে প্রবেশ করা কঠিন কিছু না। নিকট অতীতে বিভিন্ন সময়ে জঙ্গি হামলায় রোহিঙ্গা সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও পাওয়া যায়। পাওয়া যায় জামায়াত ঘেষা রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের বিভিন্ন ততপরতার খবরও। কি পরিমাণ রোহিঙ্গা আমাদের দেশের বিভিন্ন মাদ্রাসায় পড়াশুনা করছে, কি পরিমাণ আমাদের পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশে অবস্থান করছে তার কোন সঠিক হিসাব কারও কাছে নেই।
মানবতার খাতিরে কাউকে আশ্রয় দিয়ে নিজ ভূমে পরবাসী হবার কোন ইচ্ছাই আমার নেই। কথায় আছে 'চাচা আপন প্রাণ বাঁচা'। বন্যা পরবর্তী সময়ে চালের দাম যখন আকাশ চুম্বি তখন রোহিঙ্গাদের প্রতি সাধারনের ভালোবাসা আস্তে আস্তে ফিকে হয়ে আসবে সেটাই স্বাভাবিক। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠীও কতটা আমাদের পাশে দাড়াতে পারে অতীত ঘাটলেই তার একটা নিদর্শন পাওয়া যাবে
সামনে কঠিন দিন আসছে। সরকারের জন্য আমাদের জন্য। সামনের বছর আবার নির্বাচন ! সব মিলিয়ে জমেছে খেলা !
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:০৮
আরিফ রুবেল বলেছেন: বাস্তবতার খাতিরে পরিস্থিতি বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক। আবার এত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার ভার বহন করাও বাংলাদেশের উচিত হবে না পরিস্থিতি এবং বাস্তবতা বিবেচনায়। বাংলাদেশের এখন দরকার আভ্যন্তরীন সমস্যার সাথে যুদ্ধ করা। এই অবস্থায় বহিঃশক্তির সাথে যুদ্ধে জড়ানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। বন্যা পরবর্তী সময়ে চাল ডাল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পন্যের যে উর্ধ্বগতি লক্ষনীয় সেটা কাটাতে পদক্ষেপ নেয়া দরকার। এই অবস্থায় রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশকে আরো নাজুক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেবে। আর যেকোন নাজুক পরিস্থিতির সুযোগ নেয়ার জন্য ওত পেতে থাকা শত্রুর অভাব বাংলাদেশের নেই।
২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:০৭
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
রোহিঙ্গাদের মধ্যে উগ্রপন্থী যে অংশটি আরাকান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে, তাদের ব্যপারে শংকিত হবার যথেষ্ঠ কারণ আমাদের আছে। আরাকান বলতে এরা যে রাষ্ট্রের কথা বলে সেখানে আমাদের কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম থেকে ফেনী পর্যন্ত সেই রাষ্ট্রের অংশ। শরনার্থী হিসেবে আসা অনেক রোহিঙ্গাই বলছে এটা তাদের জমি, এটাও আমাদের দেশ ওটাও আমাদের।
আরসা বা আরাকান মুক্তি সংস্থার মুল যোদ্ধা ও নেতৃত্ত সবই বহিরাগত, পাকিস্তানি, আরব।
কথিত মুল দেশ রাখাইন/আরাকান এলাকার সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই, তার বাপেরও ছিলনা। আগেও ছিলনা,নেই।
বাবা করাচিবাসি পাকি আর মা কথিত রোহিংগা। এদের সন্তান বা বাষ্টার্ড ‘আতাউল্লাহ’ নামে একজন উর্দুভাসি রোহিঙ্গা। ভাষা উর্দু, পশতু, আরবী। আরাকানের বাংলা বা চাটগাইয়া ভাষা জানে না। এরপরও সে নিজেকে রহিঙ্গা নেতা দাবি করে।
এখন আরসা সংগঠনটির নেতা আতাউল্লাহ জঙ্গিদের কাছে ‘আবু আমর জুনুনি’ নামেও পরিচিত। এই আরব এলাকার নাম " আবু আমর জুনুনি " , আইএস এবং আমাদের দেশের কিছু নব্য জেম্বি জংগীদের নাম (আবু জাররা) একই স্টাইলের !
এই জঙ্গিদের স্থানীয় সদস্য প্রায় দেড় লাখ। এই বিশাল গেরিলারা কিন্তু বেশির ভাগই তাদের পরিবারের সাথে আসেনি। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের গহীন জংগল দিয়ে তাদের আমাদের দেশে প্রবেশ করা কঠিন কিছু না। নিকট অতীতে বিভিন্ন সময়ে জঙ্গি হামলায় রোহিঙ্গা সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও পাওয়া যায়। পাওয়া যায় জামায়াত ঘেষা রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের বিভিন্ন ততপরতার খবরও। কি পরিমাণ রোহিঙ্গা আমাদের দেশের বিভিন্ন মাদ্রাসায় পড়াশুনা করছে, কি পরিমাণ আমাদের পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশে অবস্থান করছে তার কোন সঠিক হিসাব কারও কাছে নেই।
এখনই সতর্ক না হলে বাংলাদেশ এখন যুদ্ধ এড়াতে পারবে না। জঙ্গি গেরিলারা এখন সীমান্ত পার হয়ে বার বার হামলা করবে। বাংলাদেশী জেহাদিরা সহযোগিতা করবে। সীমান্তবর্তি রহিংগা বস্তিগুলো হবে ওদের মানব ঢাল।
বার বার মার খেয়ে একপর্যায়ে বার্মা পালটা হামলা করবেই, সেটা আর্টিলারি + বিমান হামলা।
মধ্যপ্রাচ্যের মুল নাট্যকাররা কক্সবাজারকে পেশোয়ার বা কাশ্মির সীমান্তের মত যুদ্ধক্ষেত্র বানানোর স্বপ্ন দেখছে।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৪২
আরিফ রুবেল বলেছেন: আরাকানের গেরিলারা মায়ানমারে কি করল সে ব্যপারে আমার অতটা মাথা ব্যাথা নেই যদি না তার প্রতিক্রিয়া আমাকে ভোগ করতে হত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বাধীনতাকামী আন্দোলন পরিচালিত হচ্ছে আমরা কি সেসব নিয়ে আগ্রহী ?
আরাকান নিয়ে যে গভীর আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক খেলা চলছে সে কথা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হবার দরকার নেই। চোখ কান খোলা রাখলেই হয়। সমস্যাটা হয় এক কান আর এক চোখ খোলা রেখে কিছু দেখতে গেলে। আপনার মন্তব্যের শেষাংশ যে যুদ্ধের আশংকা আপনি করছেন আমার মতে সেটা লাগার সম্ভাবনা থার্টি-সেভেনটি। না লাগার সম্ভাবনাই বেশি। তবে হ্যা এখানে যৌথ সন্ত্রাসবিরোধী জোট গঠন হতে পারে। যে জোটে মায়ানমার-বাংলাদেশ-ভারত-চীন থাকবে। এ সকল অঞ্চলে যে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চলছে সেই সকল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে এখানে একটি যৌথ অভিযান চলবে। বা অভিযান না হলেও একটা চুক্তি হবে। যেই চুক্তি অনুযায়ী এই সকল রাষ্ট্র অপর রাষ্ট্রসমূহের বিচ্চিন্নতাবাদীদের ঘাটির ব্যাপারে তথ্য ভাগাভাগি এবং অভিযানের ব্যাপারে এক মত হবে।
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের এই একটা পথই আমার মতে খোলা আছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ-মায়ানমার ঐক্যমতে পৌছাবে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে আরাকান বা রাখাইন প্রদেশে একটি মুক্তাঞ্চল গঠন করে জাতিসংঘের তত্ত্ববধায়নে শরনার্থী শিবির গঠন করে সেখানে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবসনের ব্যবস্থা করবে। যদিও এই পদ্ধতিতে কয়জন রোহিঙ্গা ফেরত যাবে তার ঠিক নেই।
এছারা দু'টো পদক্ষেপ বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নিতে পারে। প্রথমত আরসাসহ যত রোহিঙ্গা মুক্তিকামী সংস্থা আছে তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করে তাদের নেতাদেরকে ধরে মায়ানমারের কাছে হস্তান্তর করতে পারে।
দ্বিতীয়ত, আরসাসহ সকল মুক্তিকামী সংস্থার সাথে মায়ানমার সরকারের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ তথা যুদ্ধবিরতি নিয়ে উদ্যোগ নিতে পারে।
প্রথমটার সমস্যা হচ্ছে এতে করে দেশের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা জঙ্গীরা মাথা চাড়া দেবে এবং সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক হামলা চালানো শুরু করবে এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও প্রকাশ্যে যুদ্ধে অংশ নেবে। তার প্রস্তুতি যে এদের আছে সে ব্যাপারে আমি মোটামুটি নিশ্চিত। পাশাপাশি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গা সিম্প্যাথাইজারদের ইমোশনকে কাজে লাগিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলবে জামায়াত-হেফাজত এবং কৌশলে ক্ষমতায় যাওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে রোহিঙ্গাদের।
দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গারা মায়ানমার সরকারের জন্য এমন কোন হুমকি না বা মায়ানমারের অভ্যন্তরে এমন কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি তারা করতে পারেনি যার ফলে কোনঠাসা হয়ে মায়ানমার তাদের সাথে আলোচনায় বসবে। আবার মুক্তিকামী রোহিঙ্গাদেরও দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এই অবস্থায় এত ত্যাগ শিকার করে কেউ যদি আলোচনার টেবিলে বসতে চায় তাহলে তাকে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত করার সম্ভাবনাই বেশি।
আর যুদ্ধবিরতি কিংবা যুদ্ধ কোনটাই যে সহজ না সেটা আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তিবাহিনীর ততপরতা এবং শান্তি আলোচনা থেকেই বোঝা যায়। পাহাড়ে এখনও ইউপিডিএফ সক্রিয়। পাহাড়ি বাঙালী সংঘাত নিত্যদিনের গল্প।
৩| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৪৭
দোদূল্যমান বলেছেন: কূটনৈতিক তৎপরতা দরকার মায়ানমারের ওপর জাতিসংঘ বা ওআইসি বা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কর্তৃক বাণিজ্যিক, সামরিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের এবং সেই সাথে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী খাতসমূহের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ট্রেডসুবিধা আদায় করে নেবার।
রোহিঙ্গারা উদ্বাস্তুরা বাংলাদেশের ভূ-খন্ড দাবী করেছে এই অভিযোগ আমি এই প্রথম শুনলাম। তাই নির্ভরযোগ্য সোর্স থেকে খবর আসা না পর্যন্ত এটা বিশ্বাস করছি না। “আরাকান বলতে এরা যে রাষ্ট্রের কথা বলে সেখানে আমাদের কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম থেকে ফেনী পর্যন্ত সেই রাষ্ট্রের অংশ।“, ‘শরনার্থী হিসেবে আসা অনেক রোহিঙ্গাই বলছে এটা তাদের জমি, নিজের জমি দখল নিতে এসেছে তারা।’—এই কথাগুলোর রেফারেন্স কী?
“আমি খুব ভালো করেই জানি রোহিঙ্গারা যদি মুসলিম না হয়ে হিন্দু হত এবং মায়ানমার যদি মুসলিক প্রধান দেশ হত তাহলে আপনাদের নিরানব্বই শতাংশই মুখে কুলুপ এটে বসে থাকতেন এবং কিছুই হয়নি এমন একটা ভাব ধরতেন।“--এটি নেহায়তই আপনার ব্যক্তিগত ধারনা বা দাবী যা আপনি প্রমান করতে পারবেন না। কারণ প্রমান করার জন্য যথেষ্ঠ কেইস লাগবে যেখানে অমুসলিমরা নির্যাতিত আর সারা দুনিয়ার মুসলিমরা দর্শক। কেন এরকম কেইস নাই? কারণ বর্তমান দুনিয়ায় মুসলিমরা-ই বেশি নির্যাতিত; অমুসলিমরা না।
৭১ এর উলটো ১৭। ৭১-এ আমরা দেখি ঘরহারা, স্বজনহারা, ক্ষুধার্ত বাংঙ্গালীরা ছুটছে ভারত আর আরাকানের দিকে; আর ১৭-তে দেখতে পাচ্ছি আরাকানি রোহিঙ্গারা ছুটছে বাংলাদেশের দিকে। রোহিঙ্গারা আমাদের মত অতো হিসেব কষলে মনে হয় ৭১-এ জায়গা দিতো না আমাদের বাপ দাদাদের।
আর আইন-শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, গুম, খুন, বিচার-বহির্ভূত হত্যাকান্ড, দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি নিয়ে উদ্বিগ্ন? ওটার জন্য রোহিঙ্গারা না ভাই, আমাদের সোনার ছেলেরাই যথেষ্ঠ।
আর দাদারা আমাদের ট্রনজিটসুবিধা নিয়ে বেশ ভালোই আছেন। ইদানিং শোনা যায় ৫ লক্ষের মত দাদারা আমাদের দেশে অবৈধ ভিসায় বিভিন্ন কোম্পানীতে উচ্চবেতনে কর্মরত। এইটা নিয়ে কিন্তু কোন উচ্চবাচ্য হয় না। দরকারও নাই। রোহিঙ্গাদের বাঁশ দেওয়া সহজ। আসেন ওইটা করার জন্য মুক্তবুদ্ধির চর্চা করতে থাকি।
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:০৮
আরিফ রুবেল বলেছেন: ব্লগার দোদূল্যমান, আপনার প্রশ্নের জবাব দেবার আগে এই চাচার অভিজ্ঞতাটা আপনার সাথে শেয়ার করি
এরপর ভোরের কাগজে প্রকাশিত এই বছর জানুয়ারী মাসের সাত তারিখের একটি প্রতিবেদন
আপনি রেফারেন্স চেয়েছেন আমি একজন প্রত্যক্ষদর্শি এবং একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদন দিলাম রেফারেন্স হিসেবে। পরে কি বুঝলেন সেটা আমাকে জানাবেন আশা করি।
আপনার দ্বিতীয় বক্তব্য সারা দুনিয়ায় মুসলিমরাই সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত। আপনি অবশ্য এটা বলেননি নির্যাতকের ভূমিকাটাও মুসলিমরাই সগর্বে ধরে রেখেছে। মধ্যপ্রাচ্য, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, আফ্রিকা কোথায় এদের নৃশংসতার খবর পাওয়া যায় না। ঘৃণার চাষ যদি সবচেয়ে বেশি কোন জাতি বর্তমান বিশ্বে করে থাকে সেটা হচ্ছে মুসলিম জাতি। আবার মুসলিমরাই নিজেদের ভিক্টিম হিসেবে উপস্থাপন করে। ইসলাম শান্তির ধর্ম। সেই ধর্মে অনুসারীরা কল্লা ফালানো আর বোমা মারা ছাড়াই কথাই বলতে পারে না।
আপনি বলেছেন ৭১ এ রোহিঙ্গারা আমাদের আশ্রয় দিয়েছিল। আমি এমন কিছু কোথাও পড়িনি বরং যত দূর জানি রোহিঙ্গারা পাকিস্তানের পক্ষে ছিলে এবং দেশভাগের সময় ওরা পাকিস্তানের সাথে যেতে চেয়েছিল এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষেই ছিল। আপনার বক্তব্যের পক্ষে কোন রেফারেন্স থাকলে দেবেন।
এই তো ভাই কাজের কথা বলেছেন আমি আমার নিজের দেশের অপরাধীদেরই সামলাতে পারছি না। সেখানে এই ভালনারেবল গোষ্ঠীর এত সংখ্যক জনগণকে নিজের দেশে ঢোকাচ্ছি ট্র্যাকিং রেকর্ড ছাড়াই। এভাবে এদের দেশের ভেতরে ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো যাবে না।
আবার আপনি জানেন না এদের ফেরত পাঠাবেন কিভাবে ?। যদিও আপনার মন্তব্য পড়ে মনে হচ্ছে না আপনি তাদের ফেরত পাঠাতে চান। তারপরও মায়ানমারের নাগরিক তো মায়ানমারেই ফেরত যাওয়া উচিত কি বলেন?
সবশেষে আপনি পাঁচ লক্ষ ভারতীয়র বাংলাদেশে কাজ করার কথা উল্লেখ করেছেন। এই আকালের বাজারে পাঁচ লক্ষ ভারতীয় বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে ছড়ি ঘোড়াচ্ছে। ব্যবসা বাণিজ্য করছে। বলা হয়ে থাকে ভারতীয় রেমিটেন্স প্রবাহের তালিকায় দ্বিতীয় দেশ বাংলাদেশ। এখন ভাই, যারা এদের নিয়োগ দিয়েছে তারা কি লাভ ক্ষতি বোঝে না ? বা যারা এদের সাথে ব্যবসা করছে এরা কি ভোদাই ? যদি ভোদাই না হয় এবং লাভ ক্ষতির নূন্যতম ধারনাও এদের থাকে তাহলে এরা যদি ভারতীয়দের দিয়ে কাজ করায় এবং ভারতীয়দের সাথে ব্যবসা করে তাতে আপনি আমি কি বলতে পারি। হ্যা বলতে পারি এরা ঠিকমত ট্যাক্স দেয় কিনা। এদের কাজ করার বৈধতা আছে কি না ?
ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি ভারতীয় কেন কারোই আমাদের দেশে কাজ করার অধিকার নেই। কিন্তু এই কথা বললে ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের নানা দেশে থাকা কোটি বাঙালীর সাথে বেঈমানী হয়ে যায়। এই সব দেশ যদি বলে এরা আর আমাদের দেশে কাজ করতে পারবে না তাহলে পরিস্থিতি কি হবে আল্লাহই ভালো জানেন। আরেকটা ব্যাপার কোন দেশের নাগরিকেরই বাংলাদেশে কাজ করার মেয়াদকাল ৫ বছরের বেশি থাকা উচিত না এবং কোন দেশ থেকে কতজন কাজ করবে তার সীমা নির্ধারণ করে দেয়া উচিত।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫৫
সোহাগ সালেহ বলেছেন: সত্যিই বলেছেন। আসলে অভাব যখন দরজায় এসে দাঁড়ায়, ভালোবাসা তখন জানালা দিয়ে পালায়। জাতি হিসেবে আমরা আবেগী। তাইতো ভুলও আমরা বেশি করি।
আবেগকে প্রশ্রয় দিলে আমাদের উচিৎ হবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া। আর বাস্তবতা মেনে চললে আমাদের উচিৎ হবে রোহিঙ্গাদের এদেশ থেকে বিতাড়িত করা। হ্যাঁ, আবারও বলছি, বাস্তবতা মানলে আমাদের উচিৎ হবে রোহিঙ্গাদের এদেশ থেকে বিতাড়িত করা।