নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

অর্ক

...

অর্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতীয় মুসলমানদের উচিৎ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে গো রক্ষা আন্দোলনে শামিল হওয়া

২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:২৭




কয়েকমাস আগে ভারতের মহারাষ্ট্রে গরু হত্যা আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমি যখন মুম্বাইয়ে ছিলাম তখন এই আইন ছিল না। যথারীতি সেখানকার মুসলিম হোটেলগুলোতে দেদার গরুর মাংস বিক্রি হতে দেখেছি। গরুর মাংসের একাধিক পদ সেখানে পাওয়া যেতো; কলিজি, ইস্টু, কিমা, চাপ, ভুনা ইত্যাদি; খেয়েছিও প্রচুর। তিন চারদিন টানা মাংস, বিরিয়ানি খেতে খেতে পরে আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। একই জিনিস আর কতো খাওয়া যায়, পরে মুগডাল, সবজি ও আরও অন্যান্য নিরামিষ খাবার খাওয়া শুরু করলাম ভাতের সাথে, মাঝেমাঝে দুপুরবেলায় অবশ্য রুটিও খেতাম। মুগডাল আর গরুর মাংসের দাম ওখানে কোলকাতার মতোই, মাত্র দুই চার রুপির কমবেশি। বরং আলু মটর সহ আরও কিছু নিরামিষ খাবারের দাম ওখানে মাংসের থেকেও বেশি। নিরামিষ খাবারের ব্যাপক প্রচলন মুম্বাইয়ে। বহুসংখ্যক মানুষ সেখানে নিরামিষভোজী। আমার তো মনে হয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই ওখানে নিরামিষভোজী। বেশিরভাগ হিন্দু হোটেলে দেখেছি, সিংহভাগ খাবারই নিরামিষ। অনেক হোটেল তো পুরোপুরি নিরামিষাশী। এছাড়া ম্যাকডোনাল্ডস থেকে শুরু করে মোটামুটি সব বড় বড় হোটেল, রেস্টুরেন্টগুলো তাদের খাবারের বিজ্ঞাপনে সর্বাগ্রে রাখে, নিরামিষ খাবারগুলো।
যাই হোক। আমরা নিজেদের সভ্য বলে দাবী করি। সভ্যতা আসলে কী? ধরুন আপনি একটা বাসে যাচ্ছেন। যানযটে দীর্ঘক্ষণ আটকে আছে বাসটা। নিঃসন্দেহে বিরক্তিকর। এমন সময় আপনি বিরক্তির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে সিটে বসে পা নাচানো শুরু করলেন। এতে আপনার হাটু, আপনার পাশের সহযাত্রীর হাটুতে বারবার মৃদু ধাক্কা দিতে লাগলো। ধরুন এসময় আপনার পাশের সহযাত্রীটি আপনাকে বললো, 'ভাই এভাবে পা' নাচাবেন না।' তখন আপনি কি করবেন? তার সাথে তর্ক বিতর্কে জরাবেন, 'এরকম আমি আগে আরও অনেকবার করেছি বাসে, কেউ তো আপনার মতো এরকম বিরক্ত হয়নি! আপনি এভাবে মাইন্ড করলেন কেন? একটু মৃদু স্পর্শ লাগলে কি সমস্যা, বাসের ঝাকুনিতে তো গা'য়ে গা'য়ে ধাক্কা লাগছে, ওটা কীভাবে আটকাবেন!' নাকি শুধু 'সরি' বলে বন্ধ করবেন পা' নাচানো। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, এই পোস্টটি ব্লগে যারা এই মুহূর্তে পড়ছেন, তারা কেউই সেই সহযাত্রীটির সাথে অহেতুক তর্ক বিতর্ক, বাদানুবাদে না জড়িয়ে 'সরি' বলে পা নাচানো বন্ধ করবেন। আর ঠিক এটাকেই বলে সভ্যতা; পরমতসহিষ্ণুতা, বিনয়, পরস্পরিক ভাতৃত্ববোধ সবকিছুই আছে এর মাঝে। এসব না থাকলে, প্রাচীন গুহাবাসী মানুষের সাথে আমাদের আর কোনও পার্থক্যই থাকে না!
আমার সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিবেশী যদি গরুকে তাদের পবিত্র প্রাণী বলে মনে করে, তাদের ধর্ম বিশ্বাসের কারণে। তাহলে আমি কেন নিতান্তই আমার উদরপূর্তির জন্য গরু হত্যা করে তাকে ব্যথিত করবো? আমার কি উচিৎ, আমার গরু খাওয়ার দাবী নিয়ে তার সাথে তর্ক বিতর্ক, ঝগড়াঝাঁটিতে জড়ানো? 'কেন আমি গরু খাবো না? গরু খাওয়া আমার নাগরিক অধিকার? আপনারা আপনাদের ধর্ম সংশোধন করে আমাকে আমার গরু খাওয়ার অধিকার ফিরিয়ে দিন? আপনি তাহলে গরুর চামড়া দিয়ে বানানো জুতা পড়া ছেড়ে দিন ইত্যাদি ইত্যাদি।' সত্যি এটা ভীষণ লজ্জার একটি ব্যাপার। একজন মানুষের মন মানসিকতা কতো নীচ, অসুস্থ, দুষিত হলে আমরা আরেকজনে ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে এভাবে কটাক্ষ করতে পারি। এতে আমাদের অজ্ঞাতে আসলে আমরা নিজেরা, নিজেদের ধর্মকেই প্রকারান্তরে তিরস্কার করে থাকি।
বেশ ক'বছর আগের কথা। আমি বোধহয় তখন স্কুলে পড়ি, সেসময় টিভিতে হঠাৎ কোনও একটা সাবানের বিজ্ঞাপন আসতে লাগলো। সেখানে দেখলাম বলা হচ্ছে একশো' শতাংশ হালাল সাবান। দেখে দারুণ আশ্চর্য হয়েছিলাম, সাবানের আবার হালাল হারাম কি! সাবান কি খাওয়ার জিনিস! পরে ব্যাপারটা জানতে পারি, প্রত্যেক সাবানেই সাধারণত শূকরের চর্বি, বা চর্বি থেকে সৃষ্ট তেল ইত্যাদি থাকে, তাই ওগুলো মুসলমানদের জন্য হারাম। এখন ওই কোম্পানি দাবী করছে, তাদের সাবানে শূকরের শরীরগত কোনও উপাদান নেই, তাই এটি হালাল!
বাংলাদেশে নাহয় ওরকম একটা বিজ্ঞাপন সার্বজনীন টেলিভিশন চ্যানেলে এভাবে প্রচার করা সম্ভব। কিন্তু এটা ভারত বা অন্য কোনও অমুসলিম দেশে সম্ভব নয়। এখন কি আমরা সেখানকার মুসলিমদের বলতে পারি যে, সারাজীবন বিধর্মীদের দেশে আপনি শূকরের তেল চর্বি দিয়ে বানানো সাবান গা'য়ে মেখে এসেছেন, তাই এতোদিন আপনার কোনও ধর্মকর্ম কিচ্ছু হয়নি!'
আজকে আমরা নিজেদের উদরপূর্তির জন্য আমাদের প্রতিবেশীকে বলছি, আপনি আপনার গরুর চামড়া দিয়ে বানানো জুতো পরা ছেড়ে দিন, আমি মাংস খাওয়া ছেড়ে দিব। এই কি আমাদের সভ্যতা জ্ঞান! কোথায় ভিনদেশী জুতা কোম্পানি বাটা, এপেক্স কোথায় কি প্রকৃয়ায় কীভাবে, কীসের চামড়া, গরু, গুইসাপ না ভেরার চামড়া দিয়ে জুতা তৈরি করে এনে তাদের শোরুমে রাখছেন, আমরা কিচ্ছু জানি না। সে জুতা আমরা ক্রয় করে পরিধান করি। এখন একজন ধর্মপ্রাণ হিন্দুকে সেই জুতার দিকে তর্জনী উঁচিয়ে আমরা বলছি, আপনার ওটা গরুর চামড়া দিয়ে বানানো জুতা। আপনি ওই জুতো পরেছেন, তাই আমিও এখন গরুর মাংস খাবো। বাহ! কী সুন্দর অন্যের ধর্মের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা প্রদর্শন!
(আগামী পর্বে সমাপ্য)

মন্তব্য ২৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৭

বিজন রয় বলেছেন: চোরা না শোনে ধর্মের কাহিনী।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৪

অর্ক বলেছেন: লেখাটা খুব অল্প সময়ে লিখেই পোস্ট করা। আর চুপ করে থাকা যায় না। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

২| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৬

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ভালো যুক্তি, সুন্দর মতামত।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৯

অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ। এতো শুরু, আরও অনেক কিছু বলার বাকি আছে।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:০০

অর্ক বলেছেন: আপনার মন্তব্য খুব গুরুত্বপূর্ণ আমার জন্য। সবসময় পাশে থাকার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ আরেকবার।

৩| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:২৫

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: প্রতিউত্তরে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গেলাম ভাই।

পরের পর্ব পড়ার আশা রইল।

৪| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:২৭

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: আলোচনা চলতে থাকুক। পোষ্টে চোখ থাকবে।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:০৮

অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৫

প্রশ্নবোধক (?) বলেছেন: @বিজন রয়, আপনার মন্তব্যটি খুব ভাল লাগল।

৬| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০২

ভাললাগে না বলেছেন: Click This Link

http://beef2live.com/story-world-beef-exports-ranking-countries-0-106903

ভন্ডামির ১টা সীমা আছে। নিজেরা গরু মেরে দেশের বাইরে বিক্রি করবে কিন্তু নিজের দেশের লোকেদের খেতে দিবে না। উপরের লিংকে সেগুলা দেখেন। আর বাসের যে যুক্তি দিলেন তাতে বলি, আমার সিটে বসে এমন কাজ করি যাতে অন্যের কষ্ট হয় না, তাইলেই কোন সমস্যা নায়। আশা করি উত্তর পেয়েছেন। আমি পা ঝাকাব কিন্তু অন্য কে কষ্ট দিয়ে নয়। যদি মনে করেন যে পা ঝাকানই হচ্ছে আপনাকে বিরক্ত করার জন্য তাইলে আপনার সমস্যা। আপনার দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা কেউ করছে তাও যদি গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে চান তাইলে সেটা আপনার দোষ।

৩০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৪২

অর্ক বলেছেন: আপনার মন্তব্য ঠিক পোস্টের সাথে প্রাসঙ্গিক নয়। গরু রপ্তানি আমদানির সাথে পোস্টের কোনও সম্পর্ক নেই। ভারতের যেসব রাজ্যে যেমন উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র ইত্যাদি সেসব রাজ্যের মুসলিমদের স্থানীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবার কথা বলেছি। এর কোনও বিকল্প নেই।
বাসের ব্যাপারটা ঠিক আমি আপনাকে হয়তো বোঝাতে পারিনি।

৭| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:০৮

জাহিদ হাসান বলেছেন: কে কি খাবে , কে কি পরবে এই কোন সভ্য রাষ্ট্রের মাথাব্যাথা থাকতে পারে না!

৩০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৭

অর্ক বলেছেন: আপনার মন্তব্য একেবারে হাস্যকর। প্রত্যেক সমাজে অসংখ্য অলিখিত সীমারেখা থেকেই যাই, কি খাবেন কি পরবেন ইত্যাদি। কোরিয়ানরা কুকুর খায়। এখন কোরিয়া প্রবাসী কেউ এসে এদেশে কুকুর খাওয়া শুরু করলে সমাজ তা গ্রহণ করবে না।

৮| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৩১

আফতাব মোবারক বলেছেন: জাহিদ হাসান বলেছেন:-
কে কি খাবে , কে কি পরবে এই কোন সভ্য রাষ্ট্রের মাথাব্যাথা থাকতে পারে না!

৩০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৪

অর্ক বলেছেন: উত্তরও সেখানেই পাবেন।

৯| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:২৯

আবু তালেব শেখ বলেছেন: গরু তো একটা পশু মাত্র তাকে নিয়ে এতো রাজনিতি করার কারন কি। মানুষ পিটিয়ে মেরে গরু বাচানো কোন কোন ধর্ম??/

৩০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৩

অর্ক বলেছেন: সারা পোস্টে আমি কোথাও মানুষ পিটিয়ে হত্যা করা সমর্থন করেছি কি! ভারত বিরাট দেশ পৃথক রাজ্যে পৃথক আইন। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে বলেছি। চুরি, ডাকাতি, খুন আপনি সমর্থন করেন? না। কারণ ওসব অপরাধ। তেমনি অপরাধ উত্তর প্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে গরু জবাই করা। সেখানে আপনাকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতেই হবে। আবার পশ্চিম বাংলায় এই আইন নেই।

১০| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৮

তিতাস৮১ বলেছেন: আবাল আর কাকে বলে ফালতু পোস্ট। ভারতের মত একটা বর্বর উগ্র হিন্দুবাদি রাষ্ট্র আর আছে কিনা জানিনা।মানুষ কে মানুষ মনে না করে গরু নিয়া লাফালাফি। এটা হল ভারতের মুসলমানদের উপর হিন্দুদের জবরদস্তির সামান্য একটা নমুনা মাত্র। আর আমাদের দেশের কিছু পাগল আছে যারা না বুজে লাফালাফি করে।

৩০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:২৮

অর্ক বলেছেন: ভদ্র ভাষায় কথা বল! উপরে আরও অনেক মন্তব্য আছে, কেউ তো মতো অভদ্র শব্দ ব্যবহার করেনি।

১১| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৫১

এম আর তালুকদার বলেছেন: বাংলাদেশের হিন্দুদের কি তাহলে মুসলিম আইন মেনে চলা উচিত নাহ !!!

৩০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৫

অর্ক বলেছেন: সার্বজনীন আইন সবাই মেনে চলে।

১২| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:০০

এম আর তালুকদার বলেছেন: কোরবানী আল্লাহর আইন। মুসলমানেরা গরু কুরবানী দেয় তাই মুসলমানদের কি গো রক্ষা আইন মানা সম্ভব ??? সৃষ্টিকর্তার আইন মানবে নাকি মানুষের তৈরি আইন মানবে !?

৩০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:০৯

অর্ক বলেছেন: উত্তর আপনার জানাই। বিকল্প ব্যবস্থা আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.