নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গফরগাঁও ময়মনসিংহ জেলার একটি বৃহৎ থানা। কাছাকাছি সময় একবার ঢাকা থেকে ট্রেনে করে গফরগাঁওয়ে গিয়েছিলাম। ভোরের ট্রেন। বলাকা এক্সপ্রেস। ঢাকা টু ময়মনসিংহ; মোটামুটি মাঝখানে গফরগাঁও থানার অবস্থান। জায়গাটার বিশেষত্ব কিছুই নেই। যেমন হয়ে থাকে আমাদের দেশের আর দশটা মফস্বল শহর, তেমনি গফরগাঁওও একটি। সার সার দোকানপাট, ছোটো ছোটো আবাসিক ভবনাদি চারপাশে, সবখানে চা সিগারেটের দোকান ইত্যাদি। গফরগাঁও স্টেশনের সদর দরজা দিয়ে বেরিয়ে দশ পনেরো কদম হেটে গেলেই চোখে পড়বে ‘ঢাকা মিষ্টান্ন ভাণ্ডার’ নামক মিষ্টির একটি দোকান। সড়কের পাশেই। ওখানে নিমকি আর রসগোল্লা খেয়েছিলাম। বিল দিতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম, বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে সম্ভবত এটাই সবচেয়ে সুলভ রসগোল্লা’র দোকান। প্রতি পিস মাত্র দশ টাকা। কাছাকাছি সময়ে বাংলাদেশের আরও বেশ কয়েক জায়গায় রসগোল্লা খেয়েছিলাম, এসবের দাম ছিল প্রতি পিস পনেরো থেকে বিশ টাকার ভিতর। ওখানে মাত্র দশ টাকা। দামে সস্তা হলেও মানের দিক থেকে কিন্তু কোনওরকমের কোনও আপোষ করা হয়নি, নির্ভেজাল খাটি সব উপাদান দিয়ে তৈরিকৃত রসগোল্লা। খেলেই তা বোঝা যায়। স্বাদের ব্যাপারে নতুন করে কী বলবো, খেতে দারুণ সুস্বাদু। রসগোল্লা খেতে যারা ভালবাসেন, তাদের অবশ্যই সময় সুযোগ করে একবার হলেও গফরগাঁওয়ের ওই বিশেষ দোকান থেকে রসগোল্লা খেয়ে আসতে বলবো। আশা করি কেউ হতাশ হবেন না। অন্যান্য বিভিন্ন পদের মিষ্টিও সেখানে পাওয়া যায়। ওগুলোও নির্ঘাত তুলনামূলক সুলভ হবে। এছাড়া গফরগাঁওয়ে খাবার দাবারের মূল্য বাংলাদেশের অন্যান্য জায়গার তুলনায় বেশ কমই মনে হয়েছে আমার। স্টেশন সংলগ্ন একটা ছোটো হোটেলে দেখলাম ভুনা খিচুড়ি ২৫ টাকা, বিরিয়ানি ৪০ টাকা। ভুনা খিচুড়ি খেয়েছিলাম, নামমাত্র দুয়েক পিস মুরগির মাংস দেয়া তাতে। খেতে অবশ্য মন্দ নয়, এবং পরিমাণও সন্তোষজনক। এরপর গেলে ওদের ৪০ টাকার বিরিয়ানিটা ট্রাই করবো। পাশের আরেকটি হোটেলে দেখলাম প্রমাণ সাইজের চারকোণা পরোটা ভাজা হচ্ছে। খাইনি যদিও। খিচুড়ি রসগোল্লা নিমকি টিমকি খাবার পর আর অতো বড় পরোটা নিয়ে বসবার উপায় ছিলো না। ওই বিরাট পরোটাটার দাম যদি পাঁচ টাকা হয়, তাহলেও বিস্মিত না হয়ে উপায় থাকবে না। বেশ বড়সড় তেলে ভাজা গরমাগরম চারকোণা পরোটা। আহ, দেখতেও ভালো লাগে! হা হা হা। আরেকটা কথা গফরগাঁওয়ে গেলে কিঞ্চিৎ ময়মনসিংহের ভাষা জেনে গেলে ভালো। অন্য ভাষায় কথা বলতে শুনলে, উক্ত ব্যক্তি ময়মনসিংহ অঞ্চলের নন দেখে স্থানীয়রা খানিকটা বিস্মিত বোধ করেন। এর গফরগাঁওয়ে আসার কী কারণ হতে পারে? বোধহয় মনে মনে ভাবেন।
বাংলা নববর্ষে পান্তা ইলিশ খাওয়ার ধূম পরে আমাদের দেশে। বিশেষ করে বৃহৎ শহরগুলোতে। অনেকেই এখানে সেখানে মজা করে পান্তা ভাত ইলিশ ভাজা খায়। ব্যাপারটা নিয়ে বিভিন্ন লেখা এখানে সেখানে বহুবার পড়েছি। এই ব্লগেও পড়েছি। সেভাবে নতুন করে আমার আর কিছু বলবার নেই। ব্যাপারটা অত্যন্ত নোংরা ও অমানবিক একটি প্রবণতা। মানুষের শুভবুদ্ধি জাগ্রত হোক। নিয়মিত পান্তা খেয়ে প্রতিদিন কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করা এ দেশের দরিদ্র কৃষক, কামলা, দিনমজুর ইত্যাদি মেহনতি মানুষের কাছে এটা কোনও উপলক্ষ বা শখ নয়। তারা আদতে নিরুপায় অসহায়, তাই নিতান্তই বাধ্য হয়ে তারা পান্তা (পানিতে ভিজিয়ে রাখা বাসি ভাত) খেয়ে থাকে। আগামীকাল যারা উল্লাস করে এখানে ওখানে পান্তা ভাত শখ করে খাবেন, তাদেরকে বলবো, আপনারা কখনও সুযোগ হলে নিত্যই যারা পান্তা খেয়ে জীবন অতিবাহিত করে থাকে, তাদের সঙ্গে কিছুদিন থাকুন। দেখবেন, কতো অল্পতে বেঁচে থাকে সেইসব প্রকৃত পান্তা খাওয়া মানুষেরা! আমি হলফ করে বলতে পারি- এরপর আপনারা জীবনে কোনওদিন, আর কোনও বাংলা নতুন বছরই পান্তা ভাত খেয়ে উদযাপন করবেন না।
মানুষ আর দশটা প্রাণীর মতোই একবার জন্মগ্রহণ করে, তারপর এক পর্যায়ে মরে যায়। মাঝখানের এই জীবন, এই মানব জীবন... এটা নিয়েই এই পৃথিবী। এই পৃথিবী মানুষেরই। মানুষই একমাত্র অধীশ্বর এই গ্রহের। মানুষ সবকিছু তাদের সুবিধা মতো গড়ে নেয়, সাজায়। যেভাবে মানুষের এইসব শহর নগর গড়ে ওঠে তরতরিয়ে; দেদার বনভূমি ধ্বংস হয়, নির্বিচার পশুপাখি হত্যা করা হয়, নানান রকম কীটনাশক প্রয়োগ করে যাবতীয় পোকামাকড়কে ধ্বংস করা হয়। এসব শুধু মানুষই পারে, তাই এই পৃথিবী শুধুই মানুষের। মানুষই এর শেষ কথা। ধরুন, এই বিশাল পৃথিবীতে এখন একটা সিংহ আর একটা মানুষই শুধু অবশিষ্ট আছে। উভয়েরই অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই চলছে। তারা পরস্পর পরস্পরকে বিন্দুমাত্র বিশ্বাস করে না, বিধায় পৃথিবীতে তাদের সহাবস্থান সম্ভব নয়। সিংহের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ে সেই মানুষ কখনওই জয়ী হবে না। শুধুমাত্র এক মোক্ষম থাবাতেই মানুষটার ধর থেকে আস্ত মাথাটাই আলাদা করার শক্তি ধারণ করে অতিকায় হিংস্র সিংহটি। হাতের কাছে পেলে দু মিনিটেই মানুষটাকে ছিঁড়েখুঁড়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলে অবশিষ্ট হাড্ডিগুড্ডি, বর্জ্য পদার্থ আবর্জনার মতো স্তূপাকারে আস্তাকুড়ে ফেলে রাখবে বনের রাজা। কিন্তু তবুও, মানুষের অগণ্য চতুর কৌশলের কাছে সিংহই শেষ পর্যন্ত হেরে যাবে। মানুষ প্রকৃতি থেকে উপাদান সংগ্রহ করে তীর ধনুক, সূক্ষ্ম বর্শা ইত্যাদি অস্ত্র বানাবে। তারপর গোপনে ছায়ার মতো অনুসরণ করবে সিংহকে, এভাবে এক পর্যায়ে নিখুঁত ছক আঁকবে সিংহ বধের। তারপর একদিন ঠিক ঠিকই পিছন থেকে সুযোগ বুঝে কৌশলে চোরাগোপ্তা হামলা করে হত্যাও করবে সে মহা পরাক্রমশালী সিংহকে। কিন্তু সে কোনওদিনও সিংহের মুখোমুখি হবে না। সে সাহস মানুষের নেই, ছিলোও না, হবেও না কোনওকালে। পক্ষান্তরে সিংহ কিন্তু কখনওই লুকিয়ে, পিছন থেকে চোরাগোপ্তা হামলা করে প্রতিপক্ষকে বধ করে না। সিংহ হুঙ্কার দেয়, ভীষণ গর্জন করে, তারপর আকাশ বাতাস মাটি কাঁপিয়ে প্রকাশ্যে শত্রুর দিকে ধাবিত হয় তীব্র গতিতে।
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৫৯
অর্ক বলেছেন: জি পাঠান্তে মন্তব্য রাখার জন্য অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৪২
বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: রসগোল্লা আর পান্তা ইলিশ।
ভালই লাগল। শুভেচ্ছা রইল।
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:০০
অর্ক বলেছেন: রসগোল্লা বাঙালি’র এক মহান সৃষ্টি! ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:০৭
নীল মনি বলেছেন: শুকরিয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ার সাথে ধন্যবাদ গৃহীত হল।আবার এলাম ☺
১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:২০
অর্ক বলেছেন: বেশ বড়সড় লেখা, আবার পড়লেন নাকি? আর শুকরিয়া... এতো অনেক ওজনদার শব্দ... এখানে! মনে হচ্ছে আপনি বিরাট মনের একজন মানুষ।
৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:৫৯
নীল মনি বলেছেন: লেখা বড়সড়। একবারই পড়েছি। ঠিক এটার ওজন কেমন জানি না আমি । আলহামদুলিল্লাহ্ বিরাট বড় মন এখনো হয়ে পারেনি
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ২:১৩
অর্ক বলেছেন: ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৫১
নীল মনি বলেছেন: রসগোল্লা খেতে ইচ্ছে করছে ।
জীবন নিয়ে অনেক কথায় জানলাম। ভালো লিখেছেন তবে রসগোল্লার মত হয়নি।একটু কঠিন লেগেছে জীবনের হিসেব নিকেষ।