![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বাস করি কল্পলোকে। আমি নিঃশ্বাস নেই অসীম শূন্যতায়।আমি আঁকি ছবি মনের রঙিন ক্যানভাসে।আমি কবিতা লিখি ভালোবাসার গদ্যলোকে।আমি গান গেয়ে যাই নিজ সুর অলিন্দে।তবুও করতে পারিনি স্পর্শ আমার আমি কে।।
খণ্ড চিত্র ১: ছাত্রদলের জনি খাটে রক্তাত্ত শুয়ে আছে--- পাশে মায়ের বুক ফাটা আহাজারি !
খণ্ড চিত্র ২: আহনাফ ওয়াদিহ—বয়স তখন ৫/৬—স্কুল থেকে দৌড়ে বাইরে এল – বাবাকে দেখেই বলল, বাবা আমার টিচার তোমার সাথে কথা বলতে চায়—আমি জিজ্ঞেস করি, কেন বাবা?? সে বলে শুধু টিচার ই না ক্লাসের সবাই আমার বাবাকে দেখতে চায়—ক্লাসে ঢুকলাম— ক্ষুদে ক্ষুদে শিক্ষার্থী সহ সবাই এলিয়েন দেখার মত আমাকে দেখছে---ওয়াদি রীতিমত উচ্ছ্বসিত—টিচার এগিয়ে এসে করমদন করলেন—ঘটনার সূত্র যা জানতে পারলাম তা হল ওয়াদির বিজ্ঞান ভিত্তিক বিশেষ নলেজ দেখে টিচার আমাকে দেখতে চেয়েছেন—কারন স্কুলে এগুলো এখনো শিক্ষা দেয়া হইনি বা ওয়াদির এই বয়সে তা জানার কথা নয়--—প্রসঙ্গত সেই সময়ে ওয়াদির কপোট্রনে চার্লস ডারউইন বিবর্তন মতবাদ, প্রিমিটিভ হিউম্যান আর্টস, রেইনবও বিন্যাস কি কেন কিভাবে হয়, জাহাজ পানিতে ভাসে কেন, পরিপাক ক্রিয়া, মানুষের জনম বিদ্যা, প্ল্যানেটারি সিস্টেম ইত্যাদি ইত্যাদি ঢুকিয়ে দিয়েছি—টিচার জানতে চাইলেন কিভাবে?? আমি বললাম ছেলেকে খুব ভালোবাসি তাই?? সবাই হেসে ফেলল—পরিষ্কার করলাম, না আসলে এনসাইক্লপেদিয়া কিনে দিয়েছি আর ওইখান থেকে মাঝে মাঝে ওকে বুঝাই--- স্কুল থেকে বের হবার পর দেখলাম পিচ্চির ভাবটাই আলাদা—বলল ‘’ dad, I am so proud of you, everyone jealous on me coz I ve got dad like you’’ – একটা হাসি দিয়ে বললাম হ্যাঁ বাবা আমি ও তোমার উপরে জেলাস কারন আমার বাবা যদি আমাকে এরকম সময় দিতেন !
খণ্ড চিত্র ৩ : ১৯৯৬ । নির্বাচন সামনে—বিএনপির একদল লোক বাসার ওয়ালে সাইফুর রহমানের পোস্টার লাগাতে আসলো—আমি বাধা দিয়ে ফিরিয়ে দিলাম—ওরা আব্বার কাছে বিচার নিয়ে আসলো—প্রসঙ্গত, আব্বা উনার বন্ধুর পক্ষে দিন রাত খেটে ক্যানভাস করছিলেন—তবে আমার জানা ছিলনা যে ওরা আব্বার অনুমতি নিয়েই দেয়ালে চিকা মারতে এসেছে। যাই হোক রাত এগারোটার দিকে আব্বা এসে আমার দিকে হুঙ্কার দিলেন—মার্শাল আর্টের কায়দায় আমার পিঠে দু তিনটা কিল দিলেন—এই প্রথম, আব্বা কোনদিন আমাকে প্রহার করেননি—তাই ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হচকিত হয়ে গেলাম—রাগে গজ গজ করে আব্বা জামাতের পক্ষে কাজ করছি বলে ভথসনা করলেন। আফসোস--- এই শাসনটা যদি আব্বা আমাকে নিয়মিত করতেন তাহলে হয়তো আজ জীবনটা একটু অন্যরকমই হতো।ছাত্র রাজনীতির মত ঘৃণ্য একটা ব্যাপারে নিজেকে জড়িয়ে ক্যারিয়ার টাই শুধু নষ্ট করিনি – বাবার স্বপ্ন আশা আকাঙ্ক্ষার সমাধি দিয়েছি।
তিন ধরনের খণ্ড চিত্রে আমার শুধু এতুকুই বলার ছিল--- আমার চোখের সামনে আমার আদরের টুকরো নষ্ট হয়ে যাবে এ কষ্ট আমি সহ্য করতে পারবো কিভাবে?? —আজ বাংলাদেশের সব বাবাদের স্বপ্ন এভাবে ধুলিস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে—আদরের ছেলেরা নষ্ট রাজনীতির গ্রাসে রাস্তায় মরছে।সব বাবারা কি কোন প্রতিবাদ মূর্ছা ঘঠন করতে পারেনা এই নষ্ট ছাত্র রাজনীতির বিপক্ষে??—আমার ইচ্ছে ছিল এক সময় দেশে গিয়ে সেটল হব—শুধু এই ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এই নরকে পড়ে আছি—চাইনা আমার বাবার মত আমি ও সম ব্যাথায় কষ্ট পাই—বাবা তুমি ভালো থেক—পৃথিবীর সব বাবাদের মনের সপ্ন যেন বাস্তব হয়।
©somewhere in net ltd.