![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বাস করি কল্পলোকে। আমি নিঃশ্বাস নেই অসীম শূন্যতায়।আমি আঁকি ছবি মনের রঙিন ক্যানভাসে।আমি কবিতা লিখি ভালোবাসার গদ্যলোকে।আমি গান গেয়ে যাই নিজ সুর অলিন্দে।তবুও করতে পারিনি স্পর্শ আমার আমি কে।।
দুমুঠো ভাতের এত দাম ?
পেটের উপর দাঁড়াইয়া জুতা দিয়া পিষছে। পেটে ঘুষাইছে। মুখে খামছাইছে। মাথারে দেওয়ালের সঙ্গে আছাড় দিত। বাঁশের কঞ্চি দিয়া সারা শরীরে পিটাইছে। আরেকটা লাঠি দিয়া শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুঁতা দিছে। যখন মারত, কিছু বলতে গেলে বেশি মারত। মাইর শেষ হওয়ার পর রক্ত ধুইয়া ফেলতাম। আমারে কাঁচা কচুও খাওয়াইছে।’
মাত্র নয় বছর বয়সী স্মৃতি এভাবেই বর্ণনা দেয় তার শারীরিক নির্যাতনের। এ নির্যাতন যিনি করতেন, তাঁকে স্মৃতি চাচি ডাকে। তাঁর নাম শোভা। আর কোনো নাম আছে কি না, স্মৃতি তা জানে না।
রাজধানীর গুলশানে শোভার বাসাতেই দুই বছর ধরে স্মৃতি কাজ করত। স্মৃতির সারা শরীরে কালচে দাগ। বুকের বেশ খানিকটা জায়গায় কালচে জখম হয়ে আছে। এ ছাড়া তার যৌনাঙ্গের আশপাশে এবং পিঠেও নানা ধরনের দাগ। দুই হাতের তালুতে দাগ এবং খসখসে। চোখের চারপাশে এবং পায়ের পাতার ওপরও কালচে হয়ে আছে। স্মৃতি বর্তমানে গুলশানের সাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। ২২ ফেব্রুয়ারি তাকে ভর্তি করা হয়েছে। যাঁরা তাকে মারধর করতেন, তাঁরাই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে কথা হয় স্মৃতি ও তার বাবার সঙ্গে। স্মৃতির বাবা শাজাহান শিকদার প্রথম আলোকে জানালেন, স্মৃতি গুলশানে জিয়া ফকির (শোভার স্বামী) নামে একজনের বাসায় কাজ করত। ২১ ফেব্রুয়ারি জিয়া ফকির ফোন করে মেয়েকে নিয়ে যেতে বলেন। তখন স্মৃতি জিয়ার শ্বশুড়বাড়ি ঢাকা জেলার দোহারে ছিলেন। সেখানে আনতে গেলে স্মৃতি জিয়ার মেয়েকে জমিতে দেওয়া সার খাইয়েছে বলে অভিযোগ করে। এ ছাড়া অন্যান্য অভিযোগের কথা বলে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলেন। দোহারেই জিয়া এবং স্মৃতিরও বাবার বাড়ি।
শাজাহান শিকদার বলেন, ‘মেয়েরে আনতে গেলে তার নামে অভিযোগ শুইন্যা আমি নিজেও তারে মার দেই। তারপর তারে নিয়া বাইর হই। রাস্তায় বাইর হইলে মাইয়া কয়, “আব্বা আমি হাঁটতে পারতেছি না।” তারপর বিস্কুট, জিলাপি খাইতে চায়। বাড়িতে ঢুইক্যাই কয় ভাত খামু। হাউত হাউত কইরা এক গামলা ভাত খায়। তারপর কয় পেটে ব্যথা। ওর মা জামা কাপড় খুইল্যা দেহে এই অবস্থা। পরে মাইয়্যারে জয়পাড়া সরকারি হাসপাতালে নিয়া যাই। তারা ঢাকা অনতে কয়।’
শাজাহান শিকদার জানালেন তিনি জিয়ার গ্রামের বাড়িতেই কাজ করে বড় হয়েছেন। একই এলাকায় তাঁদের বাড়ি। জিয়ার বাড়ি এলাকায় ‘ফকির বাড়ি’ নামে পরিচিত। শাজাহান শিকদার প্রথম আলোকে জানালেন, জিয়া মাসিক কোনো বেতন দিতেন না স্মৃতিকে। তবে দরকারের সময় জিয়া তাঁকে সাহায্য করতেন। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর এখন হাসপাতালে স্মৃতির চিকিৎসারও খরচ দিচ্ছেন জিয়া।
শাজাহান শিকদারের কাছ থেকে মুঠোফোনের নম্বর নিয়ে জিয়া ফকিরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে প্রথম আলোর পরিচয় দিয়ে কথা বলা শুরু করতেই তিনি লাইন কেটে দেন। তারপর থেকে তাঁর মুঠোফোনটি বন্ধ রয়েছে। শাজাহান শিকদারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জিয়াউর রহমান (জিয়া ফকির) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) মিরপুর কার্যালয়ের মটরযান পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত।
শাজাহান শিকদার দিনমজুরের কাজ করেন। চার মেয়ে দুই ছেলে তাঁর। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। স্মৃতি ও তার আরেক বোনকে কাজ করতে দিয়েছেন। দুই ছেলে বাড়িতে থাকে। ভাতের জন্যই শাজাহান শিকদার স্মৃতিকে কাজে দিয়েছিলেন।
স্মৃতি জানাল, ঘর মোছা, পরিষ্কার করা, থালা বাসন ধোয়া, তিন বছর বয়সী মেয়ের সঙ্গে খেলা করাসহ সারা দিনই কাজ করতে হতো। রাতে ঘুমাতে ঘুমাতে ১২টা বেজে যেত। আবার সকালে আজানের সময় ডেকে দিত। দোহারে চাচির মায়ের বাড়িতে সকালে ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরি হওয়ায় চাচির মা ঘুম থেকে টেনে তুলে সিঁড়ি থেকে লাথি দিয়ে নিচে ফেলে দেন।
স্মৃতি বলে, ‘আমারে বলাইছে যে আমি নাকি চাচির মেয়েরে সার খাওয়াইছি। আসলে আমি খাওয়াই নাই। তারা আমারে মিথ্যা কথা বলতে বলে। না বললে তারা আমারে আর আমার আব্বারে মারবে বলে। তাই আমি ভয়ে স্বীকার করি। চাচি আমার সব কথা মোবাইলে রেকর্ড কইরা রাখছে।’
স্মৃতির বক্তব্য হলো, গত দুই বছরে চাচি প্রায়ই মারধর করতেন। শুধু যে চাচি মারতেন তা–ই না, চাচির মা, চাচা, আরেক চাচার বউসহ অনেকেই মারতেন। এমনকি বাসার আরেকজন কাজের মেয়ে, সেও মারত। একজন মারতে থাকলে কেউ স্মৃতিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসত না। দিনে শুধু একবেলা খাবার জুটত স্মৃতির কপালে।
স্মৃতি বলে, ‘সকালের খাবার দিত দুপুর ১২টার দিকে। সেই দিন যে মাছ, মাংস রান্না করত, তা দিত না। দিত আগের দিনের কোনো তরকারি। সারা দিন আর খাবার দিত না। পানি খাইয়া থাকতাম। ফ্রিজে মিষ্টি টিষ্টি থাকলেও কিছু খাইতে দিত না।’
স্মৃতি জানাল, তাকে বাইরের কোনো মানুষের সামনে বের হতে দেওয়া হতো না। এমনকি তার বাবা দেখা করতে এলে তাকে ঘরে তালা দিয়ে রাখা হতো। অন্যদিকে স্মৃতির বাবাকে বলত, স্মৃতি এখানে অনেক ভালো আছে। সে বাড়ি যেতে চায় না। তাই সে আপনার সঙ্গে দেখা করবে না। বাবা এ কথা শুনে খুশি মনে চলে যেত।
সাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার সিনথিয়া তারিন বলেন, ‘স্মৃতি প্রস্রাবের ইনফেকশন ও শরীর ব্যথা নিয়ে ভর্তি হয়। আর শারীরিক নির্যাতনের চিত্র তো দেখতেই পাচ্ছেন। বিভিন্ন পরীক্ষায় স্মৃতির শরীরের ভেতরে কোনো আঘাত পাওয়া যায়নি।’
স্মৃতির বাবা শাজাহান শিকদার এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলা করেননি।
----------------------------------------------------------------------
আমার বক্তব্য;
ঢাকাতে পড়াকালীন এক আত্মীয়ের বাসায় প্রায়ই যেতাম--- আত্মীয় বলতে গুটি কয়েক আত্মীয়ের মধ্যে উনারাই ছিলেন নিকটাত্মীয় --- তাছাড়া সিলেট থেকে কুনো কাজে ঢাকাতে গেলে উনাদের বাসায় যাওয়া ছিল অবধারিত। রিপোর্টটা পড়ে সাথে সাথেই মনে পড়ে গেল অনেক কথা। মনটা বিষিয়ে উঠলো।
মেয়ের বয়স নিতান্তই ৬/৭ ছিল-- প্রায়ই দেখতাম খালি গা-- হাফ প্যান্ট -- হাতে কাঁচের চুড়ি--নামটা আমার সঠিক মনে নেই-- এতটুকুন মেয়ে এর মধ্যে সব কাজই করছে-- কিছুটা অবাক হতাম---- পান থেকে চুন খসলেই তার ডাক পড়ে-- বারিন্দায় দাড়িয়ে ঢাকার আকাশ দেখছিলাম, এমন সময় দেখি আপন মনে কি দিয়ে যেন খেলা করছে-- জিগ্যেস করতেই ভয়ে সিটিয়ে গেল।।
বাড়ির কর্তা বয়স তখন পঞ্চাশের ঘরে-- ভীষণ ধর্মপ্রান-- খালি গায়ে হাঁটেন ঘরের ভিতর-- গায়ে তাবিজ কবচ -- কথাবার্তায় আচার আচরনে পরিচয় মিলে উনি জাত ঢাকাইয়া কুট্টি---আমাদের বাসায় সিলেটে বেঢ়াতে আসলে উনি একা দরগায় হোটেল ভাড়া করে থাকতেন-- মাজার ভক্ত।
ক্লাস ছিলনা এক সপ্তাহ--- ভাবলাম যাই উনাদের বাসায়-- দুদিন থেকে আসি-- আর উনাদের ছেলে ছিল আমার বয়সেরই --- গেলে জম্পেশ আড্ডা দিতাম একসাথে-- যাই হোক রাত্রের খাওয়া দাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়লাম---সকালে ঘুম ভাঙল ধুরুম ধুরুম আওয়াজ আর বিকট কান্নার শব্দে-- ধড়মড় করে উঠে বসলাম-- ঘটনার আকস্মিকতায় কিছুটা বিব্রত বোধ করলাম-- যা বুঝলাম, নিজের কানকেও বিশ্বাস করাতে কষ্ট হচ্ছিলো--- পাশের রুমে দরজা বন্ধ করে উনি পিচ্চিকে পিটুনি দিচ্ছেন-- আমার দরজা খোলার চেষ্টা ও বৃথা গেল--- কিচেনে গিয়ে দেখি বাড়ির গিন্নীর কোন বিকার নেই--- জিজ্ঞেস করতেই বললেন ও কিছুনা ওরে মাঝে মধ্যে এই ট্রিটমেন্ট উনি দেন-- ঘৃণায় আর এই বাসায় থাকতে ইচ্ছে হল না--- একটু পর দেখা গেল মেয়েটাকে-- ফুপিয়ে ফুপিয়ে আমাকে চা দিয়ে গেল--- সব আবার স্বাভাবিক--- পাশের রুমে শোনা গেল কোরান তেলাওয়াত--- রুমে গিয়ে দেখি ভদ্রলোক কোরান পড়ছেন--একটু আগেই নিষ্পাপ একটা বাচ্চাকে যমের মত পিটিয়ে এত মোলায়েম কণ্ঠে কিভাবে কোরান পড়ছিলেন , আমার বোধগম্য হচ্ছিলো না---এত পুণ্য উনি রাখেন কোথায় ?? বললাম উনাকে, এতটুকুন একটা বাচ্চা এরকম করে কিভাবে পিটালেন ?? বললেন '' ছোট হলে কি হবে ছেমড়ির জান কই মাছের জানের থেকেও শক্ত । আর বেশিক্ষন থাকিনি ওই দিন--চলে এলাম। ঢাকায় থাকা অবস্থায় ওই বাসায় আর যাইনি---
পাঁচ বছর পর লন্ডন থেকে দেশে ফিরার পর গেলাম-- গিয়ে দেখি ছেমড়ি তখনো ছিল--- কত কমপ্লেইন ওর নামে--- পাড়ার দুকানিদের সাথে লাইন মারে!! মনে মনে বললাম,সেই ভাল কাউকে ধরে যদি মেয়েটা পালিয়ে বেঁচে যায় !!
২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৪৪
ভূতের কেচ্ছা বলেছেন: সব আবার স্বাভাবিক--- পাশের রুমে শোনা গেল কোরান তেলাওয়াত--- রুমে গিয়ে দেখি ভদ্রলোক কোরান পড়ছেন--একটু আগেই নিষ্পাপ একটা বাচ্চাকে যমের মত পিটিয়ে এত মোলায়েম কণ্ঠে কিভাবে কোরান পড়ছিলেন , আমার বোধগম্য হচ্ছিলো না---এত পুণ্য উনি রাখেন কোথায় ? সহমত.ভাই..
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৫০
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: আসলেই দুঃখজনক!