নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আর্য্য মিঠুন

আর্য্য মিঠুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

হঠাৎ মেঘ

১৫ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:১৩




চার বছরের নিষাদ আর দীপ্তির প্রেমখানা অবশেষে ভাঙ্গিলা গেলো। সবকিছুই ঠিক পথে চলিতেছিলো । বিবাহের জন্য দুজনে মনস্থিরও করিয়া ছিলো। কিন্তু পিতৃ-মাতৃহীন নিষাদ যেইবার মহাস্থানগড় ভ্রমণ করিতে বাহির হইলো, তখন একটি দুর্ঘটনায় নিষাদ প্রাণ হারাইল। অগত্যা প্রেমখানা আর নিঃশ্বাস ফেলিবার স্থান পাইলো না। দীপ্তি শোকে পাথর হইয়া গেলো। পৃথিবীর কোন অনুভূতি তার হৃদয়স্থলে প্রবেশ করিবার পথ খুজিয়া পাইলো না। সে ভীষণ এক প্রতিজ্ঞা করিল, সে আর কখনো বিবাহ করিবে না, একাই কাটাইবে এই অভিশপ্ত জীবন।



দুই মাস কাটিয়া গেল। আজকাল দীপ্তির একখানা বাজে স্বভাবে হইয়াছে । ফেসবুকে এই দুষ্ট বালকের সাথে প্রায় চ্যাট করা হয়। প্রথম প্রথম খুব বিরক্তি প্রকাশ করিত। কিন্তু ঐ বালক নাছোড়াবান্দা। শত অপমানেও না দমিয়া এমন ভাব করিত যেন ইহাই মানব জাতির অপমান গলাঃধরন করাই হইলো কথোপথনের সাধারণ নিয়ম। অবশেষে একটু একটু করিয়া দীপ্তিও কখন যে এই ধূর্ত বালকের কথার জালে জড়াইয়াছে সে নিজেও জানিত না।



ছয় মাস পরে। আজ দীপ্তির মন প্রশান্তি জোয়ার যেন উচ্ছ্বাস তুলিয়াছে। একদা সে ভাবিয়াছিলো ভালবাসো চিরতরে তাহার নিকট হইতে মুখ ফিরাইয়া লইয়াছে। কিন্তু ফেসবুকে সেই দুষ্ট বালক তাহাকে আমার নতুন করিয়া বাচিতে শিখাইয়াছে। জানাইয়াছে ভালোবাসা মরে নাই, তাহার মাঝে প্রেম আজও সজীব। আজ তাহাদের প্রথম সাক্ষাৎ। দীপ্তি যুগ লদের জন্য একটি বিশেষ রেস্টুরেন্ট তাহার জন্য অপেক্ষায় পাগল হইয়া উঠিয়াছে। কেন সে আসিতেছে না? আর যে সহে না।



দীপ্তি ভীতিতে থরথর করে কাঁপিতেছে। সে কি ঠিক দেখিতেছে। নাকি ইহা তাহার দিবাস্বপ্ন কিংবা অলীক কল্পনা। তাহার সামনের কেদারায় নিষাদ বসিয়া আছে। কি করিয়া সম্ভব !!! নিষাদ কিছুটা শান্ত আর খানিকটা বিরক্ত কন্ঠে বলিল, তুমি এটা করতে পারলে? কিভাবে পারলো? চারটা বছরের ভালোবাসার কোন মূল্য রাখলে না। দীপ্তি অনেক কষ্টের সহিত সাহস সঞ্চার করিয়া বলিল, তুমি বেঁচে আছো? কিভাবে ??? নিষাদ এইবার ক্রোধে গর্জন করিয়া বলিল, কেন বেঁচে আছি তাই খুব কষ্ট হচ্ছে নাকি? অর্ঘ্য ঠিক বলে ছিলো। মেয়েদের ভালোবাসা হলো লোকাল লেগুনার মত, দুইদিন অন্তর ফুশ। দীপ্তি খানিকটা স্বাভাবিক হইল এইবার, বলিল, এইসবের মানে কি? নিষাদ এইবার ষড়যন্ত্রে ইতিহাসের পর্দা উন্মেচন করিল। ঘটনা এইরূপ, তাহার সখা অর্ঘ্যের একবার তাহাকে চ্যালিঞ্জ ছুড়িয়া বলিয়া ছিলো, ভালোবাসা নিয়ে অতো বড়াই করিসনি, তুই না থাকলে দুইদিনে ভালোবাসা মরে ভূত হয়ে যাবে, এই বছরও টিকবে না। কথা নিষাদের হৃদয়ে ব্যাপক ভাবে আঘাত করিয়াছিলো। তাই সে চ্যালেঞ্জ গ্রহন করিয়া অর্ঘ্যকে লইয়া সমগ্র ষড়যন্ত্রের নির্মাণ করে। সে রাজশাহীতে একখানা চাকুরী লইয়া চলিয়া যাইবে আর তাহার বন্ধুরা রটাইবে সে মরিয়া গিয়াছে, অপরদিকে তাহার মিত্র অর্ঘ্য দীপ্তিকে বশ করিবার প্রয়াস করিবে। যদি ছয় মাসের মাঝে অর্ঘ্য যদি দীপ্তিকে বশ করিতে পারে তাহলে নিষাদ পরাজিত হইবে এবং আজ সে পরাজিত হইয়াছে। দুই জন প্রায় ঘন্টা ব্যাপিয়া চুপ চাপ বসিয়া রইলো। কখনো কখনো অতিশয় আপন মানুষও একদম অচেনা হইয়া যায়।



চার মাস পর । নিষাদ তার প্রেমের কাছে পরাজিত হইলো। এই বঞ্চনা স্বীকার করিয়াও সে দীপ্তিকে ছাড়িতে পারিল না, বিবাহ করিলো। ভূত-পূর্ব ঘটনায় লাভের লাভ ইহাই হইয়াছিলো যে পরবর্তী জীবনে দীপ্তি কখনো নিষাদের সহিত মাথা তুলিয়া কথা বলিবার সাহস করিতে পারে নাই।


মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:৪৩

সুমন কর বলেছেন: আপনার গত পোস্টে, আপনি আমার মন্তব্যের উত্তর না দিলেও বাকিগুলোর উত্তর দিয়েছেন !!

১৫ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:১৫

আর্য্য মিঠুন বলেছেন: দিয়েছিলাম দাদা, নেট স্লো কারণে হয়তো আপলোড হয়নি, একটু বড় ছিলো কমেন্টা :(

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.