![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দালাল এবং তেলাপোকা টিকে থাকে অনাদিকাল!
মঈনুল হাসান পলাশ ॥
দালাল এবং তেলাপোকার মাঝে অদ্ভুত এক মিল আছে। বিজ্ঞানীদের গবেষণা বলছে, তেলাপোকাই হচ্ছে একমাত্র প্রাচীন প্রাণী, যে কিনা দশ কোটি বছর ধরে টিকে আছে এই পৃথিবীতে। পৃথিবীর সৃষ্টি ও তার পরবর্তীতে অনেক প্রাণী এসেছে। আবার কালের পরিক্রমায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। শুধু টিকে আছে তেলাপোকা। এবং ধারণা করা হচ্ছে, পৃথিবীর শেষদিন পর্যন্ত টিকে থাকবে এই কিম্ভূতাকার প্রাণীটি। কিন্তু, কিভাবে টিকে আছে অনন্তকাল ধরে এই ক্ষুদ্র প্রাণীটি? যেখানে বিরাটকায় ডায়নোসর, প্রকৃতির চরম পরিবর্তনের মুখে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে! কিন্তু,নিশ্চিহ্ন হয়নি তেলাপোকা। একটাই কারণ। তেলাপোকা সর্বভূক। বেঁচে থাকার জন্য সে দুনিয়ার যে কোনো জিনিস খেতে পারে।
আর দালাল? দালাল তার নিজের স্বার্থে,পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ মানুষটির পদতলে লুটিয়ে পড়তে পারে।
ফলে,দালাল অস্তিত্বের সংকটে পড়ে না। যে কোনো পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে পারে।
আচ্ছা? তেলাপোকার প্রয়োজন কি আমাদের? বরং চরম বিরক্তিকর এবং ক্ষতিকর এই প্রাণীটি তাড়াতে আমরা সচেষ্ট থাকি।
একইভাবে দালালও উৎকট বিরক্তিকর,ক্ষতিকর আর পরগাছা ধরণের। দালাল দু’ধারী ক্ষতিকর প্রাণী। সে একই সাথে তার সাময়িক প্রভূর পরগাছা হয়ে তার রক্ত চোষে। আর অন্যদিকে নিরপরাধ,সাধারণ মানুষের ক্ষতি করে বেড়ায় তার প্রভূর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে। কিন্তু প্রভূর ক্ষমতা ফুরালেই, সে রক্ত খেয়ে ঢোল থাকা জোঁকের মতোই আলগা হয়ে ঝরে যায়।
দেখবেন, কোনো দেশে যখন একটু অস্বাভাবিক অবস্থা থাকে, তখন দালাল শ্রেণী সক্রিয় থাকে বেশী। যেমন শুষ্ক মৌসুমে নালা-নর্দমার স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে, মশার উপদ্রব বেড়ে যায়।
দালালের প্রথম কাজ নিজের স্বার্থ উদ্ধার করা। অন্যকে প্রভূর কাছে ঘেঁষতে না দেয়া। নিজেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে জাহির করা। অন্যের কাজ ও চিন্তায় বাগড়া দেয়া। আর সারাক্ষণ ক্ষতিকর চিন্তা ও ফন্দি আঁটা অন্যের বিরুদ্ধে। এরা শুধু তেলাপোকা নয়, ছাড়পোকার গুণ অর্জন করে।
আল্লাহতায়ালা ক্ষতিকর প্রাণীগুলোকে সৃষ্টি করেছেন, মানুষকে সচেতন থাকার জন্যে। সাবধান থাকার জন্যে। তবে মানুষরুপী অনিষ্টকারী দালাল জাতীয় প্রাণীগুলোকে আল্লাহ অভিশপ্ত করে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। এরা মানসিকভাবে অসুস্থ। সারাক্ষণ অন্যের ক্ষতির চিন্তা আর সুবিধাবাদী পরগাছা জীবন কোনো স্বাভাবিক মানুষ ভাবতে পারে না।
হালে দেশে, দালালী ক্যান্সারের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। আপনার কাজ কিংবা কথা মনোঃপুত না হলেই এদের কাজ হলো অপবাদ দিয়ে অতিষ্ঠ করে তোলা। অবস্থা এমনই যে, দালালের প্রভূর আনুগত্য স্বীকার করার আগেই দালালের আনুগত্য স্বীকার করে নিতে হবে। অন্যথায় আপনাকে ফাঁসাবে কোনো গ্যাঁড়াকলে।
স্থানীয় থেকে জাতীয়। এই ভূইফোঁড় দালালেরা সৃষ্টিশীলতাকে ঘৃণা করে। অগ্রগতির বাধা হয়। আর মানুষের বাঁক স্বাধীনতা রুদ্ধ করে দিতে চায়।
আর, আজ এইদেশে, রাজনীতি, ব্যবসা, সংস্কৃতি, শিক্ষা, চিকিৎসা কিংবা সাংবাদিকতা দালালের দখলে। মুক্তচিন্তা,প্রতিবাদ আর এগিয়ে যাবার চেষ্টা হলেই সমূহ আক্রমণ অবশ্যম্ভাবী। এইভাবে চলতে থাকলে কালক্রমে মানসিক বিকলাংগ জাতিতে পরিণত হবো আমরা।
কতো গর্ব করে আমরা আমাদের জাতীয় অর্জনগুলো উল্লেখ করি। আমাদের এক একটি প্রতিবাদ সহস্র সৃষ্টিশীলতা আর সহস্র সৃষ্টিশীল মানুষ তৈরী করেছিলো। অথচ আজ আমাদের সাবলীল চিন্তা আর প্রতিবাদ রুখে দিয়ে বাঁক প্রতিবন্ধি জাতিতে পরিণত করার পরিণাম হবে আত্মঘাতি। মনে রাখতে হবে, একটা শিশুরও প্রতিবাদ করার, তার অপছন্দ প্রকাশ করার অধিকার রয়েছে। আপনার ভালো লাগুক বা না লাগুক, আমাকে বলতে দিন। আমাকে দালাল হতে প্ররোচিত করবেন না।
শেষকথা:ফরাসী দার্শনিক ভল্টেয়ার বলেছিলেন,আমি একজন শত্রুর সৎ আন্তরিক বিশ্বাস ও বাক্যের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য প্রাণ দিতে প্রস্তুত। কিন্তু একজন মিত্রের অসৎ এবং জনগণের ক্ষতি মিথ্যা প্রচারণাকে সমর্থন জানাতে রাজি নই।
লেখকঃ
মঈনুল হাসান পলাশ,
সম্পাদক ও প্রকাশক-দৈনিক সমুদ্রকন্ঠ।
২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:১৭
আখেনাটেন বলেছেন: তেলাপোকারা মাঝে মাঝে উড়তেও পারে। দালালেরা যদি তেলাপোকার এই বদগুণটা পেত । ভালো লিখেছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৭
মোহাম্মদ শফিউল্লাহ বলেছেন: দালালদের সম্পর্কে কুরান কি বলে?