নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Green_Bird of Jannah

“Surely in remembrance of Allah do hearts find rest\" [Al Quran-13:28]

আশালিনা আকীফাহ্‌

“The worldly comforts are not for me. I am like a traveler, who takes rest under a tree in the shade and then goes on his way.” –[Tirmidhi]

আশালিনা আকীফাহ্‌ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুআ-মুনাজাত : কখন ও কিভাবে- পর্ব ২

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৩৬

দুআ-মুনাজাত : কখন ও কিভাবে- পর্ব ২



১ম পর্ব- Click This Link



দুআ ও মুনাজাতের আদবঃ



আপনি দেখবেন কোনো মানুষ যখন কারো কাছে কিছু চায় তখন আদব-কায়দা বা শিষ্টাচারের সঙ্গেই তা চায়। সে নিজের কথা সুন্দর করে, উপস্থপনা পদ্ধতি আকর্ষণীয় করার চেষ্টা করে। এমনিভাবে দরখাস্ত যত গুরুত্বপূর্ণ হবে তার আদব ও উপস্থাপনা ততই সুন্দর ও মার্জিত করা হয়। এ সকল প্রচেষ্টার উদ্দেশ্য একটাই থাকে, তাহল, সে যা আবেদন করেছে তা যেন পায়।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের চেয়ে এমন বড় সত্তা কে আছে যার কাছে আদব-কায়দা ও পূর্ণ শিষ্টাচারসহ প্রার্থনা করা যেতে পারে?

অপরদিকে দুআ-মুনাজাত যখন সর্বশ্রেষ্ট ইবাদত তখন অবশ্যই এটা আদায় করতে তার যত বিধি-বিধান, শর্তাবলী, নিয়ম-কানুন, শিষ্টাচার আছে, তার সবই পালন করতে হবে। লক্ষ্য থাকবে যে, আমার এ প্রার্থনা যেন আল্লাহর কাছে কবুল হয়।

প্রার্থনার একটি শর্ত হল, এটা শুধুমাত্র আল্লাহর কাছে ও তাঁরই উদ্দেশ্যে নিবেদিত হবে। আল্লাহর সঙ্গে দুআর সময় অন্য কোনো কিছুকে অংশীদার করা যাবে না। যেমন করে থাকে খ্রিস্টান ও মুশরিকরা। তারা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে যেয়ে যিশু ও অন্যান্য দেব-দেবীকে আহ্বান করে।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন : “এবং এ মসজিদসমূহ আল্লাহর জন্য। সুতরাং আল্লাহর সঙ্গে তোমরা অন্য কাউকে ডাকবে না।“ (আল-জিন : ১৮)



আল্লাহ তাআলা আরো বলেন : “বল, তোমরা ভেবে দেখ যে, আল্লাহর শাস্তি তোমাদের ওপর আপতিত হলে অথবা তোমাদের নিকট কিয়ামত উপস্থিত হলে তোমরা কি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে ডাকবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?” (আল-আনআম: ৪০)

যখন বিপদকালে আমরা তাকে ছাড়া অন্য কাউকে ডাকি না তখন নিরাপদ সময়ে তাকে ছাড়া অন্যকে ডাকব কেন, বিপদের সময় যিনি একাই সাহায্য করতে পারেন তিনি কি অন্য সময় একা সাহায্য করতে পারেন না? তাহলে তখন কেন তার সঙ্গে অন্যকে শরীক করা হবে?



আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন : “আল্লাহ ব্যতীত তোমরা যাদের আহ্বান কর তারা তো তোমাদেরই মত বান্দা।“ (আল-আরাফ : ১৯৪)



আল্লাহ আরো বলেন : “আল্লাহ ব্যতীত তোমরা যাকে আহ্বান কর তারা তো তোমাদের সাহায্য করতে পারে না এবং নিজেদেরও নয়।“ (আল-আরাফ : ১৯৭)

এ সকল আয়াতে আল্লাহ ব্যতীত কথাটি দ্বারা ওই সকল বস্তু ও ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে যাদের কাছে প্রার্থনা করা হয়। হোক তা গাছ-পালা, পাহাড়-পর্বত, চাঁদ-সূর্য, আগুন, নবী, অলী, পীর, দেব-দেবী ও প্রতিমা ইত্যাদি।



রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর চাচাতো ভাই ইবনে আব্বাস রা. কে নছীহত করেছিলেন : “হে খোকা! আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শিক্ষা দেব : আল্লাহকে হেফাজত কর আল্লাহ তোমাকে রক্ষা করবেন। আল্লাহকে হেফাজত কর, তুমি তাকে সামনে পাবে। যখন প্রার্থনা করবে তখন আল্লাহর কাছেই প্রার্থনা করবে। যখন সাহায্য কামনা করবে তখন আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাবে। জেনে রাখ! পুরো জাতি যদি তোমাকে উপকার করতে একত্র হয় তবুও তোমার কোনো উপকার করতে পারবে না, তবে আল্লাহ তোমার জন্য যা লিখে রেখেছেন। এমনিভাবে পুরো জাতি যদি তোমার ক্ষতি করার জন্য একত্র হয় তবুও তোমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না, তবে আল্লাহ যা তোমার বিপক্ষে লিখে রেখেছেন। কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে আর দফতর শুকিয়ে গেছে।“ (তিরমিজী)

প্রার্থনাকারীকে রিয়া অর্থাৎ লোকদেখানো ভাবনা ও ছুমুআ অর্থাৎ সমাজে প্রচার ভাবনা থেকে সর্বদা মুক্ত থাকতে হবে। দুআ নিবেদন হতে হবে কেবলই আল্লাহর উদ্দেশ্যে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেই দিয়েছেন : “যে মানুষকে শুনানোর জন্য কাজ করল আল্লাহ তা মানুষকে শুনিয়ে দেবেন। আর যে মানুষকে দেখানোর জন্য কাজ করল আল্লাহ তা মানুষকে দেখিয়ে দেবেন। (ফলে সে আল্লাহর কাছে এর কোনো বিনিময় পাবে না।)” (বুখারী)



দুআ করার আদবসমূহঃ

১- দুআ করার সময় তা কবুল হওয়ার ব্যাপারে এ দৃঢ় বিশ্বাস রাখা এবং দৃঢ়তার সঙ্গে দুআ করা :

যদি আল্লাহ সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান থাকে তাঁর কুদরত, মহত্ত্ব, ওয়াদা পালনের প্রতি ঈমান থাকে তাহলে এ বিষয়টা আয়ত্ব করা সহজ হবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : “তোমাদের কেউ এ রকম বলবে না : হে আল্লাহ আপনি যদি চান তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিন। যদি আপনি চান তাহলে আমাকে অনুগ্রহ করুন। যদি আপনি চান তাহলে আমাকে জীবিকা দান করুন। বরং দৃঢ়তার সঙ্গে প্রার্থনা করবে এবং মনে রাখবে তিনি যা চান তা-ই করেন, তাকে কেউ বাধ্য করতে পারে না।“ (বুখারী)

অর্থাৎ আল্লাহ যা ইচ্ছে করেন তা-ই করে থাকেন। তাই এভাবে প্রার্থনা বা মুনাজাত করার কোনো সার্থকতা নেই যে, আপনি চাইলে করেন। ঠিক এমনিভাবে তার কাছে দৃঢ়তার সঙ্গে প্রার্থনা করলে তাকে বাধ্য করা হয় না। কেননা তাকে কেউ বাধ্য করতে পারে না। এটা প্রার্থনাকারীসহ সকলে জানে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন : “প্রার্থনা কবুল হবে এ দৃঢ় বিশ্বাস রেখে তোমরা প্রার্থনা করবে। এবং জেনে রাখ আল্লাহ কোনো উদাসীন অন্তরের প্রার্থনা কবুল করেন না।“ (তিরমিজী, হাকেম)





২- বিনয় ও একাগ্রতার সঙ্গে দুআ করা এবং আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ ও তার শাস্তি থেকে বাঁচার প্রবল আগ্রহ নিয়ে দুআ করা :



আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন : তোমরা বিনীতভাবে ও গোপনে তোমাদের প্রতিপালকের কাছে দুআ করবে। (আল-আরাফ : ৫৫)

আল্লাহ তাআলা বলেন : “তারা সৎকর্মে প্রতিযোগিতা করে ও তারা আমার কাছে প্রার্থনা করে আশা ও ভীতির সঙ্গে এবং তারা থাকে আমার নিকট বিনীত।“ (আল-আম্বীয়া : ৯০)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআর সময় বিনয়, ভীতি ও আশা নিয়ে কিভাবে দুআ করতেন তার একটি ছোট দৃষ্টান্ত এ হাদীসে দেখা যায় :

আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইবরাহীম আ. এর দুআ সম্পর্কে কুরআনের এ আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন, হে আমার প্রতিপালক! এ সকল প্রতিমা তো বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। সুতরাং যে আমার অনুসরণ করবে সে আমার দলভুক্ত।’ এবং তিনি ঈসা আ. এর দুআ সম্পর্কিত কুরআনের এ আয়াতটিও তেলাওয়াত করলেন, ‘তুমি যদি তাদের শাস্তি দাও তবে তারা তো তোমারই বান্দা, আর যদি তাদেরকে ক্ষমা কর, তবে তুমি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ তিনি দু’হাত উপরে তুললেন এবং বললেন, ‘হে আল্লাহ! আমার উম্মত! আমার উম্মত!!’ এবং তিনি কাঁদলেন। আল্লাহ বললেন, হে জিবরীল! তুমি মুহাম্মাদের কাছে যাও, জিজ্ঞেস কর-অবশ্য তোমরা প্রভু ভাল জানেন- তাকে কিসে কাঁদিয়েছে। জিবরীল আসলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন তার কাঁদার কারণ -আল্লাহ তো অবশ্যই জানেন-। আল্লাহ বললেন, হে জিবরীল, তুমি মুহাম্মদের কাছে যাও এবং বল, আমি অবশ্যই তার উম্মতের ব্যাপারে তাকে সন্তুষ্ট করব, তাকে এ ব্যাপারে অসম্মান করব না। (মুসলিম)



৩- আল্লাহর কাছে অত্যন্ত বিনীতভাবে ধর্না দেয়া এবং নিজের দুর্বলতা, অসহায়ত্ব ও বিপদের কথা আল্লাহর কাছে প্রকাশ করা :



দেখুন আইউব আ. কিভাবে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন। আল্লাহ সে সম্পর্কে বলেন: “এবং স্মরণ কর আইউবের কথা, যখন সে তার প্রতিপালকের কাছে প্রার্থনা করে বলেছিল, আমি দুঃখ-কষ্টে পড়েছি, আর তুমি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।“ (আল-আম্বীয়া: ৮৩)

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যাকারিয়া আ. এর প্রার্থনা সম্পর্কে বলেন : “সে বলেছিল, হে আমার প্রভু! আমার অস্থি দুর্বল হয়েছে, বার্ধক্যে আমার মস্তক সাদা হয়ে গেছে। হে আমার প্রতিপালক! তোমার কাছে প্রার্থনা করে আমি কখনো ব্যর্থকাম হইনি। আমি আশংকা করি আমার পর আমার সগোত্রীয়দের সম্পর্কে ; আমার স্ত্রী বন্ধ্যা। সুতরাং তুমি তোমার নিকট হতে দান কর উত্তরাধিকার।“ (মারইয়াম : ৪-৫)

ইবরাহীম আ. এর দুআ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন : “হে আমাদের রব, নিশ্চয় আমি আমার কিছু বংশধরদেরকে ফসলহীন উপত্যকায় তোমার পবিত্র ঘরের নিকট বসতি স্থাপন করালাম, হে আমাদের রব, যাতে তারা সালাত কায়েম করে। সুতরাং কিছু মানুষের হৃদয় আপনি তাদের দিকে ঝুঁকিয়ে দিন এবং তাদেরকে রিয্‌ক প্রদান করুন ফল-ফলাদি থেকে, আশা করা যায় তারা শুকরিয়া আদায় করবে।“ (ইবরাহীম : ৩৭)

কুরআন কারীমে এ ধরনের বহু আয়াত আছে যাতে তুলে ধরা হয়েছে আম্বীয়া আলাইহিমুচ্ছালাম কিভাবে কাতরতা ও বিনয়ের সঙ্গে নিজেদের করুণ অবস্থা আল্লাহর কাছে তুলে ধরেছেন। মুমিনদের কর্তব্য ঠিক এমনিভাবে আল্লাহর কাছে দুআ ও প্রার্থনা করা।



৪-দুআয় আল্লাহর হামদ ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি দরূদ পেশ করা :

দুআর শুরুতে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করা ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি দরূদ পড়া দুআ কবুলের সহায়ক বলে হাদীসে এসেছে।

“ফুযালা ইবনু উবাইদ রা. থেকে বর্ণিত যে, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখলেন এক ব্যক্তি দুআ করছে কিন্তু সে দুআতে আল্লাহর প্রশংসা ও রাসূলের প্রতি দরূদ পাঠ করেনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে লক্ষ্য করে বললেন, সে তাড়াহুড়ো করেছে। অতঃপর সে আবার প্রার্থনা করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে অথবা অন্যকে বললেন, যখন তোমাদের কেউ দুআ করে তখন সে যেন আল্লাহ তাআলার প্রশংসা ও তার গুণগান দিয়ে দুআ শুরু করে। অতঃপর রাসূলের প্রতি দরূদ পাঠ করে। এরপর যা ইচ্ছা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে।“ (আবু দাউদ ও তিরমিজী)



(৫) আল্লাহর সুন্দর নামসমূহ ও তাঁর মহৎ গুণাবলি দ্বারা দুআ করা :

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :

“আল্লাহর রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম। অতএব তোমরা তাকে সে সকল নাম দিয়ে প্রার্থনা করবে।“ (আল-আরাফ : ১৮০)



আল্লাহ তাআলার সুন্দর নাম ও মহান গুণাবলির মাধ্যমে দুআ করার কথা আল-কুরআনে ও হাদীসে বহু স্থানে এসেছে। যেমন ইবনু আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত :

“নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রাতে যখন তাহাজ্জুদ পড়তে দাঁড়াতেন তখন বলতেন, হে আল্লাহ আপনারই প্রশংসা, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীসমূহে ও তাতে যা কিছু আছে আপনি তার জ্যোতি। আপনারই প্রশংসা, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীসমূহে এবং তাতে যা কিছু আছে আপনি তার ধারক। আপনারই প্রশংসা, আপনি সত্য, আপনার ওয়াদা সত্য, আপনার কথা সত্য, আপনার সঙ্গে সাক্ষাত সত্য, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য, কিয়ামত সত্য, নবীগণ সত্য, মুহাম্মদ সত্য। হে আল্লাহ! আপনার কাছেই আত্মসমর্পন করেছি। আপনার ওপরই নির্ভর করেছি। আপনার প্রতি ঈমান এনেছি। আপনার দিকে ফিরে এসেছি। আপনার জন্য বিবাদ করেছি। আপনাকেই বিচারক মেনেছি। অতএব আপনি আমার পূর্ব ও পরের গোপন ও প্রকাশ্যের পাপগুলো ক্ষমা করে দিন। আপনি শুরু আপনি শেষ। আপনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই।“ (বুখারী ও মুসলিম)

এ হাদীসে দেখা গেল নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআয় কিভাবে আল্লাহর গুণগান করছেন। আল্লাহর সুন্দর নামগুলো উল্লেখ করেছেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন শুনলেন এক ব্যক্তি সালাতে আত্তাহিয়্যাতুর বৈঠকে এ বলে দুআ করছে : “হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি- আপনি তো এক; অদ্বিতীয়, যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাকেও কেউ জন্ম দেয়নি। কেউ নেই তাঁর সমকক্ষ- আপনি আমার পাপগুলো ক্ষমা করুন। আপনি পরম ক্ষমাশীল ও দয়াময়।

এ প্রার্থনা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে! তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে।“ (আবু দাউদ, নাসায়ী ও ইবনু খুযাইমা)


উল্লেখিত ব্যক্তি আল্লাহর সুন্দর নাম ও গুণাবলির মাধ্যমে দুআ করার কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআ কবুলের সংবাদ দিলেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরেক ব্যক্তিকে দেখলেন সালাতে তাশাহহুদে সে এ বলে দুআ করছে :

“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি- আপনি তো এক; অদ্বিতীয়, যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাকেও কেউ জন্ম দেয়নি। কেউ নেই তাঁর সমকক্ষ- আপনি আমার পাপগুলো ক্ষমা করুন। আপনি পরম ক্ষমাশীল ও দয়াময়।

এ প্রার্থনা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে! তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে।“ (আবু দাউদ, নাসায়ী ও ইবনু খুযাইমা)


উল্লেখিত ব্যক্তি আল্লাহর সুন্দর নাম ও গুণাবলির মাধ্যমে দুআ করার কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআ কবুলের সংবাদ দিলেন।



রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরেক ব্যক্তিকে দেখলেন সালাতে তাশাহহুদে সে এ বলে দুআ করছে :

“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি -এ কথার উসীলায় যে, সকল প্রশংসা আপনার, আপনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। আপনি দানশীল, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা, হে মহিমময় ও মহানুভব! হে চিরঞ্জীব ও সর্ব সত্তার ধারক!- আপনার কাছে জান্নাত চাচ্ছি এবং মুক্তি চাচ্ছি জাহান্নাম থেকে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ প্রার্থনা শুনে তার সাহাবীদের বললেন: তোমরা কি জানো, সে কি দিয়ে দুআ করেছে? তারা বললেন, আল্লাহ ও তার রাসূল ভাল জানেন। তিনি বললেন: সে আল্লাহর মহান নাম দিয়ে দুআ করেছে। যে ব্যক্তি এ নামের মাধ্যমে দুআ করবে তার দুআ তিনি কবুল করবেন। (অন্য এক বর্ণনায় এসেছে যে ইসমে আজম দিয়ে দুআ করেছে)”

বর্ণনায়: আবু দাউদ, নাসায়ী, আহমদ এবং বুখারী বর্ণনা করেছেন তার ‘আল-আদাব আল-মুফরাদ কিতাবে।


রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :

“ইউনূছ আ. এর প্রার্থনা -যখন তিনি মাছের পেটে ছিলেন- তুমি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই তুমি পবিত্র, মহান! আমি তো সীমালংঘনকারী। যে কোনো মুসলিম এ কথা দিয়ে প্রার্থনা করবে তার প্রার্থনা আল্লাহ কবুল করবেন।“ (তিরমিজী)



৬- পাপ ও গুনাহ স্বীকার করে প্রার্থনা করা :

যেমন হাদীসে এসেছে :

সাদ্দাদ বিন আউস রা. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, সেরা ইস্তেগফার (ক্ষমা প্রার্থনার বাক্য) হল তুমি এভাবে বলবে, হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া সত্যিকার কোনো মাবুদ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছে। আর আমি তোমার বান্দা। তোমার সঙ্গে কৃত ওয়াদা ও প্রতিশ্রুতির ওপর আমি আমার সাধ্যমত অটল রয়েছি। আমি যা কিছু করেছি তার অপকারিতা হতে তোমার আশ্রয় নিচ্ছি। আমার প্রতি তোমার যে নিআমত তা স্বীকার করছি। আর স্বীকার করছি তোমার কাছে আমার অপরাধ। তুমি আমাকে ক্ষমা কর। তুমি ছাড়া আর কেউ ক্ষমা করতে পারে না।

যে সকালে দৃঢ় বিশ্বাসে এটা পাঠ করবে সে যদি ওই দিনে সন্ধ্যার পূর্বে মৃত্যু বরণ করে তাহলে সে জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। আর যদি দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে সন্ধ্যায় পাঠ করে, এবং সকাল হওয়ার পূর্বে সে ইন্তেকাল করে তাহলে সে জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (বুখারী)


এ হাদীসে ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বোত্তম ইস্তেগফার শিক্ষা দিয়েছেন। তাতে প্রার্থনাকারী নিজ পাপ স্বীকার করে প্রার্থনা করছেন। এবং এ প্রার্থনা কবুল হওয়ার সুসংবাদও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দিয়েছেন।

৭- প্রার্থনাকারী নিজের কল্যাণের দুআ করবে নিজের বা কোনো মুসলিমের অনিষ্টের দুআ করবে না :

নিজের কল্যাণের জন্য দুআ করলে তা কবুল হওয়ার ওয়াদা আছে আর অকল্যাণ বা পাপ নিয়ে আসতে পারে এমন দুআ করলে তা কবুল হবে না বলে হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :



যখন কোনো মুমিন ব্যক্তি দুআ করে, যে দুআতে কোনো পাপ থাকে না ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয় থাকে না তাহলে আল্লাহ তিন পদ্ধতির কোনো এক পদ্ধতিতে তার দুআ অবশ্যই কবুল করে নেন। যে দুআ সে করেছে হুবহু সেভাবে তা কবুল করেন অথবা তার দুআর প্রতিদান আখেরাতের জন্য সংরক্ষণ করেন কিংবা এ দুআর মাধ্যমে তার দিকে আগুয়ান কোনো বিপদ তিনি দূর করে দেন। এ কথা শুনে সাহাবাগণ বললেন, আমরা তাহলে অধিক পরিমাণে দুআ করতে থাকবো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : তোমরা যত প্রার্থনাই করবে আল্লাহ তার চেয়ে অনেক বেশি কবুল করতে পারেন। (বুখারী : আল-আদাবুল মুফরাদ ও আহমদ)

তিনি আরো বলেন :

বান্দার দুআ কবুল হয় যদি তাতে পাপ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা না থাকে।’ (মুসলিম)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরেঅ বলেন :

তোমরা নিজেদের বিরুদ্ধে দুআ করবে না, নিজেদের সন্তানদের বিরুদ্ধে দুআ করবে না এবং নিজেদের সম্পদের বিরুদ্ধে দুআ করবে না। (মুসলিম)

৮-সৎকাজের অসীলা দিয়ে দুআ করা

যেমন সহীহ হাদীসে বিপদগ্রস্ত তিন ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যারা এক ঝড়-বৃষ্টির রাতে পাথর ধসে পড়ার কারণে পাহাড়ের গুহায় আটকে পড়েছিল। তারা তখন প্রত্যেকে নিজ নেক আমলের অসীলা দিয়ে প্রার্থনা করেছিল। একজন মাতা-পিতার উত্তম সেবার কথা বলেছিল। দ্বিতীয়জন ব্যভিচারের সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও এ কাজ থেকে বিরত থেকে ছিল। তৃতীয় জন এক ব্যক্তির আমানত রক্ষা ও তাকে ফেরত দিয়েছিল। এরা প্রত্যেকে বলেছিল, হে আল্লাহ আমি যদি এ কাজটি আপনাকে সন্তুষ্ট করার জন্য করে থাকি তাহলে এ কাজের অসীলায় আমাকে নিশ্চিত মৃত্যুর এ বিপদ থেকে উদ্ধার করুন। আল্লাহ তিনজনের প্রার্থনাই কবুল করে তাদের বিপদ থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। (বুখারী ও মুসলিম)

এ হাদীসে দেখা যায় যে নেক আমলের অসীলা দিয়ে দুআ করলে দুআ কবুল হয়।



৯-বেশি বেশি করে ও বার বার দুআ প্রার্থনা করা :

যেমন হাদীসে এসেছে যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :

তোমাদের কেউ যখন দুআ করে সে যেন বেশি করে দুআ করে কেননা সে তার প্রভুর কাছে প্রার্থনা করছে। (মুসলিম)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন :

বান্দার দুআ কবুল করা হয় যদি সে দুআতে পাপ অথবা আত্মীয়তার সম্পর্কের ছিন্ন করার কথা না বলে এবং তাড়াহুড়ো না করে। জিজ্ঞেস করা হল হে আল্লাহর রাসূল! তাড়াহুড়ো বলতে কি বুঝায়, তিনি বললেন, দুআতে তাড়াহুড়া হল, প্রার্থনাকারী বলে আমিতো দুআ করলাম কিন্তু কবুল হতে দেখলাম না। ফলে সে নিরাশ হয় ও দুআ করা ছেড়ে দেয়। (মুসলিম)

দুআ কবুল হতে না দেখলে নিরাশ হওয়া উচিত নয়। কারণ মুমিন ব্যক্তির দুআ কখনো বৃথা যায় না।



হাদীসে এসেছে :

যখন কোনো মুমিন ব্যক্তি দুআ করে, যে দুআতে কোনো পাপ থাকে না ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয় থাকে না তাহলে আল্লাহ তিন পদ্ধতির কোনো এক পদ্ধতিতে তার দুআ অবশ্যই কবুল করে নেন। যে দুআ সে করেছে হুবহু সেভাবে তা কবুল করেন অথবা তার দুআর প্রতিদান আখেরাতের জন্য সংরক্ষণ করেন বা এ দুআর মাধ্যমে তার ওপর আগত কোনো বিপদ তিনি দূর করে দেন। এ কথা শুনে সাহাবাগণ বললেন, আমরা তাহলে অধিক পরিমাণে দুআ করতে থাকবো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : তোমরা যত প্রার্থনাই করবে আল্লাহ তার চেয়ে অনেক বেশি কবুল করতে পারেন। (বুখারী : আল-আদাবুল মুফরাদ ও আহমদ)

এ হাদীসে যেমন দুআ কখনো বৃথা যায় না বলে উল্লেখ করা হয়েছে তেমনি বেশি করে দুআ করতে উৎসাহ দেয়া হয়েছে।



১০- সুখে দুঃখে সর্বাবস্থায় দুআ করা :

মানুষ কখনো সুখের সময় অতিবাহিত করে কখনো দুঃখের সময়। অনেক মানুষ এমন আছে যারা শুধু বিপদে পড়ে আল্লাহকে ডাকেন ও প্রার্থনা করেন। আবার অনেকে এমন আছেন যারা বিপদে পড়লে আল্লাহকে ডাকতে ভুলে যান। কিন্তু সত্যিকার মুমিন ব্যক্তি সুখে ও দুঃখে সর্বদা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে থাকেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :

যে চায়, আল্লাহ বিপদ-মুসীবতে তার প্রার্থনা কবুল করুন সে যেন সুখের সময় আল্লাহর কাছে বেশি করে প্রার্থনা করে। (তিরমিজী ও হাকেম)



১১- দুআর বাক্য তিনবার করে উচ্চারণ করা :

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর একটি পথ-নির্দেশ হল তিনি কোনো কোনো দুআর বাক্য তিনবার করে উচ্চারণ করতেন। যখন মুশরিকরা রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সালাতাবস্থায় উটের নাড়ী-ভুঁড়ি তাঁর পিঠের ওপর রাখল তখন তিনি সালাত শেষ করে দুআ করলেন এভাবে :

হে আল্লাহ কুরাইশদের তুমি পাকড়াও করো ! হে আল্লাহ কুরাইশদের তুমি পাকড়াও করো !! হে আল্লাহ কুরাইশদের তুমি পাকড়াও করো !!! অতঃপর তিনি তাদের নাম উল্লেখ করলেন : হে আল্লাহ তুমি পাকড়াও কর আমর বিন হিশামকে, উতবা বিন রাবীয়াকে, শাইবা বিন রবীয়াকে, অলীদ বিন উতবাকে, উমাইয়া বিন খালাফকে, উতবা বিন আবি মুয়ীত এবং আম্মারা বিন অলীদকে। আব্দুল্লাহ বলেন, বদর যুদ্ধের দিন এ সকল লোকদের লাশ পড়ে থাকতে দেখলাম। অতঃপর এদের লাশগুলোকে টেনে বদরের কূপে নিক্ষেপ করা হল। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: কূপবাসীর ওপর অভিশাপ অব্যাহত থাকবে। (বুখারী)

দুআর বাক্য তিনবার করে উচ্চারণ করলে প্রার্থনাকারীর মনোযোগ ও একাগ্রতা বেশি হয় যা দুআ কবুলে সহায়ক হয়।



১২- দুআয় উচ্চস্বর পরিহার করা

অনেক মানুষকে দেখা যায় তারা দুআ করার সময় স্বর উচু করেন বা চিৎকার করে দুআ করেন। এটা দুআর আদবের পরিপন্থী। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন :

তোমরা বিনীতভাবে ও গোপনে তোমাদের প্রতিপালকের কাছে দুআ কর; তিনি সীমালংঘনকারীদের পছন্দ করেন না। (আল-আরাফ : ৫৫)

এ আয়াতে গোপনে দুআ করতে বলা হয়েছে এবং দুআয় সীমালংঘন সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে।

প্রায় সকল তাফসীরবিদের অভিমত হল এ আয়াতে সীমালংঘনকারী বলতে তাদের বুঝানো হয়েছে যারা উচ্চ আওয়াযে দুআ করে।

আল্লাহ তাআলা নবী যাকারিয়া আ. এর প্রশংসায় বলেছেন :

যখন সে তার প্রতিপালকের কাছে প্রার্থনা করেছিল নিভৃতে। (মারইয়াম : ০৩)

এ আয়াতে গোপনে দুআ করতে বলা হয়েছে এবং দুআতে সীমালংঘন থেকে সতর্ক করা হয়েছে।

অপরদিকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :

হে মানবসকল! তোমরা নিজেদের ব্যাপারে মধ্যপন্থা অবলম্বন কর। তোমরা কোনো বধির বা অসুপস্থিত সত্তাকে ডাকছ না। তোমরাতো ডাকছ এমন সত্তাকে যিনি সর্বশ্রোতা ও অতি নিকটে এবং তোমাদেরই সঙ্গে। (বুখারী ও মুসলিম)

যখন একদল সাহাবী উচ্চ আওয়াযে দুআ করছিলেন তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ কথা বলেছিলেন।



১৩- দুআ- প্রার্থনার পূর্বে অযু করা :

আবু মুছা আল-আশআরী রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে :

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন দুআ করতে ইচ্ছা করলেন তখন পানি চাইলেন, অযু করলেন অতঃপর দু’হাত তুলে বললেন : ‘হে আল্লাহ! তুমি কিয়ামতে তাকে অনেক মানুষের উপরে স্থান দিও। আমি বললাম আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তিনি বললেন, হে আল্লাহ! তুমি আব্দুল্লাহ ইবনু কায়েসের পাপ ক্ষমা কর ও তাকে সম্মানিত স্থানে প্রবেশ করিও। (বুখারী ও মুসলিম)

এ হাদীসে দেখা গেল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুআ করার পূর্বে অজু করে নিলেন।

ইবনু হাজার রহ. বলেন, এ হাদীস দ্বারা আমরা জানলাম যে, দুআ করার পূর্বে অজু করে নেয়া মুস্তাহাব। (ফাতহুল বারী)





১৪- দুআয় দুহাত উত্তোলন করাঃ

যেমন হাদীসে এসেছে

ইবনু উমার রা. বলেন : নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুহাত তুললেন এবং বললেন, হে আল্লাহ! খালেদ যা করেছে আমি সে ব্যাপারে তোমার কাছে দায়িত্বমুক্ত।’ দুবার বললেন। (বুখারী)



আবু মুছা রা. বলেন, অত:পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু হাত তুললেন এবং বললেন, হে আল্লাহ! তুমি উবাইদ আবি আমেরকে ক্ষমা করে দিও। তিনি এতটা হাত তুললেন যে আমি তার বগলের শুভ্রতা দেখতে পেলাম। (বুখারী)




১৫- কিবলামুখী হওয়াঃ

দুআর সময় কিবলামুখী হওয়া মুস্তাহাব। যেমন হাদীসে এসেছে :

আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ রা. বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাবার দিকে মুখ করলেন এবং কতিপয় কুরাইশ নেতাদের বিরুদ্ধে দুআ করলেন। (বুখারী ও মুসলিম)



চলবে, ইন শা’ আল্লাহ .................................



মূল: ফায়সাল বিন আলী আল-বা’দানী

অনুবাদ: আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

---- Preaching Authentic Islam in Bangla থেকে সংগৃহীত ।।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:০৮

ডা: মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: ماشاءالله

২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:২৭

অসাম সালা বলেছেন: কিন্তু ভাই দোয়া গুলু কই? দয়া করে দুয়া গুলুর লিখে দিলে উপকৃত হতাম। খোদা আপনার ভাল করুক

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:০৫

আশালিনা আকীফাহ্‌ বলেছেন: জি ভাই , কুরআন ও হাদীস অনুসারে অনেক অনেক সুন্দর দোয়া আছে যা আমাদের দুনিয়া এবং আখিরাতে খুবই দরকার। ইন শা আল্লাহ্ আগামীতে তা পোষ্ট দেয়ার ইচ্ছা রেখেছি। আপনি কুরআন এবং হাদীস পড়লে দোয়াগুলো পেয়ে যাবেন ইন শা আল্লাহ্ । মহান আল্লাহ্ আপনাকে কল্যাণ দান করুন ॥

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.