নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Green_Bird of Jannah

“Surely in remembrance of Allah do hearts find rest\" [Al Quran-13:28]

আশালিনা আকীফাহ্‌

“The worldly comforts are not for me. I am like a traveler, who takes rest under a tree in the shade and then goes on his way.” –[Tirmidhi]

আশালিনা আকীফাহ্‌ › বিস্তারিত পোস্টঃ

“ভ্যালেন্টাইন'স ডে” মুসলিম উম্মাহর জন্য নয়

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৭

“ভ্যালেন্টাইন'স ডে” মুসলিম উম্মাহর জন্য নয়





বর্তমানে মুসলিম সমাজে “ভ্যালেন্টাইন'স ডে” পালন করতে দেখে একটি হাদীসের কথা খুব বেশি মনে পড়ছে, তা হলোঃ আবু সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) বর্ণনা মতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমরা প্রতি পদে পদে তোমাদের আগে যারা এসেছে তাদের পদক্ষেপ অনুসরণ করবে, এমনকি যদি তারা গুইসাপের গর্তেও ঢোকে তবুও তোমরা তাই করবে।”

সাহাবিরা (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি কি ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের কথা বোঝাচ্ছেন?”

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তারা নয়তো কারা?” (বুখারী)


আজ আমরা এই হাদীসের বাস্তবরূপ দেখতে পাচ্ছি। মুসলিমরা কত নির্বোধের মত আজ নিজেদের সন্মান ধুলায় মিশিয়ে দিয়ে অন্য জাতির অপসংস্কৃতি অনুসরণ করছে।

মুসলিম ভাই ও বোনেরা - “ভ্যালেন্টাইন ডে” মুসলিম উম্মাহর জন্য নয়। মুসলিম জাতি হলো সন্মানিত জাতি, যারা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” এই কলেমা হৃদয়ে ধারন করে। মুসলিম উম্মাহ হলো সেই জাতি যাদের জন্যই শুধু জান্নাতের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। তাহলে “ভ্যালেন্টাইন ডে” এর মত নোংরা ও অপবিত্র সংস্কৃতি পালন করে কেন আপনারা জাহান্নাম কিনে নিবেন?

আজকের দিনে “ভ্যালেন্টাইন ডে” অবিবাহিত তরুন-তরুণীর কাছেই বেশি প্রিয়, তারা এই দিনে বিবাহ বহির্ভূত প্রেমে মগ্ন থাকে যা ইসলামে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। তাদের অনেকেই ব্যাভিচারের মতো জঘন্য কাজেও লিপ্ত হয়।

ব্যাভিচারের শাস্তি খুব ভয়াবহ। মহান আল্লাহর বাণী; “জাহান্নামের সাতটি দরজা থাকবে” – এ আয়াতের তাফসীরে হযরত আতা (রহ) বলেন,

“এ সাতটি দরজার মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত, সবচেয়ে বেশি দুঃখে পরিপূর্ণ ও সবচেয়ে ভয়ংকর দরজা হবে যারা জেনে-শুনে ব্যভিচারে লিপ্ত হয় তাদের দরজা”

অন্য এক হাদীসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “হে মুসলমানগণ ! তোমরা ব্যভিচার পরিত্যাগ কর। কেননা এর ছয়টি শাস্তি রয়েছে। মন্দ পরিণতি এর মধ্যে তিনটি দুনিয়াতে ও তিনটি আখেরাতে প্রকাশ পাবে। যে তিনটি শাস্তি দুনিয়াতে হয় তা হচ্ছে, তার চেহারার ঔজ্জ্বল্য বিনষ্ট হয়ে যাবে, তার আয়ুষ্কাল সংকীর্ণ হয়ে যাবে এবং তার দারিদ্রতা চিরস্থায়ী হবে। আর যে তিনটি শাস্তি আখেরাতে প্রকাশ পাবে তা হচ্ছে, সে আল্লাহর অসন্তোষ, কঠিন হিসাব ও জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে”। ]বায়হাকী[

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, “আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করার পর অবৈধভাবে কোন মহিলার সাথে সহবাস করার মত বড় পাপ আর নাই” [আহমদ, তাবারানী[

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, “কোন ব্যক্তি যখন ব্যভিচার করে তখন তার ভেতর থেকে ঈমান বেরিয়ে যায়, এরপর তা তার মাথার উপর ছায়ার মত অবস্থান করতে থাকে। এরপর সে যখন তা থেকে তওবা করে তখন তার ঈমান পুনরায় তার কাছে ফিরে আসে”। [আবু দাউদ]

অনেক মুসলিম ভাই – বোনেরা না বুঝে বলেন, এই দিনে আমরাতো খারাপ কিছু করছিনা। আমরা ভালোবাসা প্রকাশ করছি, বিনিময় করছি।

তাহলে জিজ্ঞেস করি আপনারা কি জানেন, “ভ্যালেন্টাইন'স ডে” কি?

আপনারা কি জানেন যে, পশ্চিমা দেশগুলোতে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ বলা হয়। ‘লাভ ডে’ অথবা ‘লার্ভাস ফেস্টিভ্যাল’ বলা হয় না। অথচ আমাদের দেশে ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন্স ডে’ -কে বলা হচ্ছে ‘ভালবাসা দিবস’ যা একপ্রকার শয়তানি ধোঁকা মুসলমানের ঈমান নষ্ট করার জন্য।

আজ অনেকেই ভ্যালেন্টাইন্স ডে-এর সাথে রোমান্টিক ভালোবাসার যে সম্পর্ক দাবী করেন তার কোনো প্রমাণ ইতিহাসে নেই।



২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেইটাইন'স নামে একজন খৃষ্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ছিলেন। ধর্ম প্রচার-অভিযোগে তৎকালীন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস তাঁকে বন্দী করেন। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্যে খৃষ্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। বন্দী অবস্থায় তিনি জনৈক কারারক্ষীর দৃষ্টহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এতে সেন্ট ভ্যালেইটাইনের জনপ্রিয়তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই দিন ১৪ই ফেব্রুয়ারি ছিল। অতঃপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেইটাইন'স স্মরণে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন' দিবস ঘোষণা করেন। খৃষ্টানজগতে পাদ্রী-সাধু সন্তানদের স্মরণ ও কর্মের জন্য এ ধরনের অনেক দিবস রয়েছে। যেমন: ২৩ এপ্রিল - সেন্ট জজ ডে, ১১ নভেম্বর - সেন্ট মার্টিন ডে, ২৪ আগস্ট - সেন্ট বার্থোলোমিজম ডে, ১ নভেম্বর - আল সেইন্টম ডে, ৩০ নভেম্বর - সেন্ট এন্ড্রু ডে, ১৭ মার্চ - সেন্ট প‌যাট্রিক ডে। পাশ্চাত্যের ক্ষেত্রে জন্মদিনের উৎসব, ধর্মোৎসব সবক্ষেত্রেই ভোগের বিষয়টি মুখ্য। তাই গির্জা অভ্যন্তরেও মদ্যপানে তারা কসুর করে না। -(উইকিপিডিয়া)



‘ভালবাসা’ র মতো একটি পবিত্র শব্দকে পুঁজি করে “ভ্যালেন্টাইন্স ডে” –কে ‘ভালবাসা দিবস’ বানিয়ে একটি নোংরা সংস্কৃতিকে আজ আমাদের সমাজে প্রচলন করা হয়েছে যার পাল্লায় পড়ে তরুন সমাজের চরিত্র ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে, অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপকতা বাড়ছে। যার বিরূপ ফল পরিবার, সমাজ ও দেশকে নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।



সালাউদ্দিন আইয়ুব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছিলেন, "তুমি যদি একটি জাতিকে যুদ্ধ ছাড়া ধ্বংস করে দিতে চাও, তাহলে সে জাতির তরুনদের মধ্যে ব্যাভিচার আর নগ্নতা ছড়িয়ে দাও।" মুসলিম ভাই-বোনেরা, ভেবে দেখুন কেমন ধ্বংসাত্মক সংস্কৃতি আপনাদের গ্রাস করছে।

আজ যে আপনি এই ধরনের সংস্কৃতি পালন করছেন, পরবর্তীতে আপনার ছেলে-মেয়েও তা অনুসরণ করবে আর তখন আপনার কেমন লাগবে?



শ্রদ্ধেয় শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল -উসাইমীন (হাফেযাহুল্লাহ) কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ

কয়েকটি কারণে ‘ভালবাসা দিবস’ উদযাপন জায়েয নয়:—



প্রথমত : এটি একটি নব-উদ্ভাবিত বিদ‘আতী দিবস, শরীয়তে যার কোনো ভিত্তি নেই।



দ্বিতীয়ত: এটি অনৈতিক-প্রেম পরিণতির দিকে মানুষকে ধাবিত করে।



তৃতীয়ত: এর কারণে সালাফে সালেহীনের পথ-পদ্ধতির বিরোধী এরূপ অর্থহীন বাজে কাজে মানুষের মন-মগজ ব্যস্ত করার প্রবণতা তৈরি হয়।



তাই এ-দিনে দিবস উদযাপনের কোনো কিছু প্রকাশ করা কখনও বৈধ নয়; চাই তা খাদ্য-পানীয় গ্রহণ, পোশাক-আশাক পরিধান, পরস্পর উপহার বিনিময় কিংবা অন্য কিছুর মাধ্যমেই হোক না কেন।

আর প্রত্যেক মুসলিমের উচিত নিজ দীন নিয়ে গর্বিত হওয়া এবং অনুকরণপ্রিয় না হওয়া: কেউ করতে দেখলেই সেও করবে, কেউ আহ্বান করলেই তাতে সাড়া দিবে, এমনটি যেন না হয়।

আল্লাহ্‌র নিকট দু‘আ করি, তিনি যেন প্রত্যেক মুসলিমকে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য যাবতীয় ফিতনা থেকে হেফাযত করেন; আর আমাদেরকে তিনি তাঁর অভিভাবকত্ব ও তাওফিক প্রদান করে ধন্য করেন। -- ৫/১১/১৪২০হি.(Islamqa)



মুসলিম ভাই ও বোনেরা, মুসলিম হিসেবে আপনারা অবশ্যই জানেন, মহান আল্লাহ্‌ পাক যা আমাদের জন্য অকল্যাণকর তা করতে নিষেধ করেছেন এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সকল বিধি-নিষেধ সম্পর্কে অবগত করেছেন। ইসলামে যা নিষেধ তা পালন করে কখনই কেউ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যতীত উপকৃত হয়নি।

হাদীসে এসেছে- “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে, সে তাদের দলভুক্ত এবং তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে।” (মুসনদে আহমদ, সুনানে আবূ দাউদ)



“সমস্ত জীবের মাঝে আল্লাহর নিকট তারাই সবচেয়ে নিকৃষ্ট, যারা অস্বীকারকারী হয়েছে অতঃপর আর ঈমান আনেনি।“ (সূরা আনফাল : আয়াত ৫৫)




তাই যারা মহান আল্লাহ্‌ পাকের নিকট নিকৃষ্ট তাঁদের ধর্মীয় রীতি-নীতি পালন করা আমাদের মুসলিমদের নিকট ঘৃণ্য ও লজ্জার হওয়া উচিত। হাশরের দিন আমরা নিকৃষ্টদের সাথে শামিল হতে চাই না এবং জাহান্নামবাসী হতে চাই না। মহান আল্লাহ্‌ পাক আমাদের সকলকে হেদায়াত দান করুন, সকল পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দিন, আমীন।।



মুসলিম ভাই ও বোনেরা, সব কিছু জেনেও যদি আপনারা ভাবেন যে এই দিনটি পালন করবেন, আপনার প্রেমিক বা প্রেমিকের সাথে প্রেম খেলায় মেতে উঠবেন, তাহলে ধরে নিন আপনার ঈমান দুর্বল আর এর জন্য তওবা না করলে রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে ভয়ানক শাস্তি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৪

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: জাজাকাল্লাহ খায়র, আল্লাহ আমাদের বোঝার এবং আ'মাল করার তৌফিক দান করুন, আমিন।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:১১

আশালিনা আকীফাহ্‌ বলেছেন: আমীন।।

২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৩

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: আগে এই বিষয়টা জানতাম না। মনে করতাম কিছু অল্পশিক্ষিত সেকেলে হুজুরদের ফতোয়া কিন্তু ইদানিং কিছু লেখায় এৃই দিনটা পালন কেন নিষিদ্ধ হওয়া উচিত সুন্দর ভাবে বলা হচ্ছে। যে জিনিস সাধারনভাবে মানুষকে অশ্লীল কাজর দিকে ডাকে সেটা কখনো হালাল হতে পারে না।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৯

আশালিনা আকীফাহ্‌ বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ্‌ , মহান আল্লাহ্‌ পাক আপনাকে কল্যাণ দান করুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.