![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“The worldly comforts are not for me. I am like a traveler, who takes rest under a tree in the shade and then goes on his way.” –[Tirmidhi]
আমাদের দেশে মৃত বা শহীদ ব্যক্তির জন্য পালন করা হয় এমন কিছু প্রচলিত ভ্রান্ত পদ্ধতি:
১-কুলখানি
২-ফাতেহা পাঠ
৩-চেহলাম
৪-মাটিয়াল
৫-মীলাদ
৬-খতমে তাহলীল
৭-কুরআন খতম বা কুরআনখানি
৮-কাঙ্গালীভোজ
৯-ওরস
১০-ইছালে ছাওয়াব মাহফিল
১১-উরসে-কুল
১২-কবরে ও কফিনে ফুল দেয়া বা পুষ্পস্তবক অর্পণ
১৩-এক মিনিট নীরবতা পালন
১৪-মৃত ব্যক্তির জায়নামাজ ও পোশাক দান
১৫-লাশ ও কবরের কাছে কুরআন তিলাওয়াত
১৬-জানাযা নামাজ শেষে সম্মিলিতভাবে দুআ- মুনাজাত
১৭-মৃত্যু-দিবস পালন
প্রচলিত এই পদ্ধতিগুলো কি ইসলামী শরীয়ত অনুমোদিত?
না-কি মানুষের আবিষ্কার করা কুসংস্কার বা বিদআত? এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
আল্লাহর কাছে যে কোন আমল বা নেক কাজ গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য দুটি শর্তের উপস্থিতি জরুরি। যদি এ দুটো শর্তের কোন একটি অনুপস্থিত থাকে, তবে আমলটি আল্লাহর কাছে অগ্রাহ্য হবে।
আল্লাহর কাছে কবুল না হলে তা মৃতের কোন উপকারে আসবে না।
শর্ত দুটো হল :
ইখলাস ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নির্দেশিত
পদ্ধতির অনুসরণ।[ আ’লাম আস-সুন্নাহ আল-মানশুরাহ]
প্রথম শর্ত ইখলাস ; অর্থাৎ কৃত সৎকর্মটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়তে করতে হবে। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়ত ব্যতীত অন্য কোন নিয়তে করা হলে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। এ ব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই।
দ্বিতীয় শর্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আনুগত্য। কাজটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করা হল ঠিকই, কিন্তু আল্লাহর রাসূল কর্তৃক কাজটি অনুমোদিত হয়নি, তাহলে এ কাজও আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন :
যে কেউ এমন আমল করবে যা করতে আমরা (ধর্মীয়ভাবে) নির্দেশ দেইনি তা প্রত্যাখ্যাত।[ মুসলিম (১২/১৬)]
কুরআন ও হাদীসে মৃত ব্যক্তির কল্যাণে কোন কিছু করার জন্য দিক- নির্দেশনা আছে তাই এ ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তির মতামতের ভিত্তিতে কোন কিছু গ্রহণযোগ্য হবে না। কোন সমাজ বা ধর্মের প্রথা কখনো এ ক্ষেত্রে অনুসরণ করা যাবে না। সকল মানুষ জানে এবং স্বীকার করবে যে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবদ্দশায় তাঁর অনেক প্রিয়জন, আপনজন ইন্তেকাল করেছেন।
ইন্তেকাল করেছেন প্রিয়তমা সহধর্মিণী খাদিজা রা., মেয়ে রুকাইয়া রা., ছেলে কাসেম, তাইয়েব, ইবরাহীম। প্রিয়তম চাচা হামযা রা. তাঁর প্রিয় আরো বহু সহচর। কিন্তু তিনি কখনো তাদের কারো জন্য এ ধরনের অনুষ্ঠান করেননি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ইন্তেকাল হল।
তাঁর সাহাবায়ে কেরাম শোকে দিশেহারা হলেন। ব্যথিত ও মর্মাহত হলেন। কিন্তু তারা কি কেউ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইছালে ছাওয়াবের জন্য কোন অনুষ্ঠান করেছেন? সাহাবায়ে কেরাম রা.-এর যুগে খলীফাতুল মুসলিমীন আবু বকর রা. ইন্তেকাল করলেন।
উমর রা. উসমান রা. আলী রা. শহীদ হলেন।
তারা কি তাদের জন্য এ ধরনের কোন অনুষ্ঠান করেছেন? করেননি কখনো। তাই কোন রকম দ্বিধা ছাড়া বলা যায় যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবায়ে কেরাম, তাদের পরবর্তীকালের তাবেইন ও ইমামগণ কেউই কারো জন্যে কুলখানী, ফাতেহা পাঠ, চেহলাম,মাটিয়ালভোজ, মীলাদ, খতমে তাহলীল, কুরআন খতম, কাঙ্গালী ভোজ, ওরস, ইছালে ছাওয়াব মাহফিল, উরসে কুল, কবরের কাছে কুরআন পাঠ, মৃত্যু-দিবস পালন, কবরে ও কফিনে ফুল দেয়া, এক মিনিট নীরবতা পালন, জানাযার নামাজের পর মুনাজাত—কোনটিই করেননি। তিনি বহুবার তার প্রিয়জনদের কবর যিয়ারত করেছেন। কবর যিয়ারত করতে গিয়ে তিনি কি বলেছেন, কি কী দুআ পড়েছেন তা হাদীসের কিতাবে সংরক্ষিত আছে। তিনি তো কখনো কবরের কাছে কুরআন তিলাওয়াত করেননি। কাউকে করতেও নির্দেশ দেননি। তারপর তার সাহাবায়ে কেরাম ছিলেন। তারা কারো কবর যিয়ারত করতে গিয়ে কবরের কাছে কুরআন পাঠ করেছেন এমন কোন প্রমাণ নেই। এগুলো বিদআত। এর মাঝে কিছু কিছু কাফেরদের আচার হওয়ার কারণে প্রত্যাখ্যাত। আবার কোনটি কাফেরদের ধর্মীয় আচার থেকে মুসলমানরা কিছুটা সংশোধিত আকারে চালু করেছে। কাজেই এগুলো কিছুই করা যাবে না। করলে সওয়াব হবে না ; বরং গুনাহ হবে। মৃত ব্যক্তির কাছে কিছুই পৌঁছোবে না। সবই বৃথা যাবে। অনেকে মৃত ব্যক্তির জন্য দুআ-মাগফিরাতের উদ্দেশ্যে তার ঘরে একত্রিত হয়ে দুআ- অনুষ্ঠান করে থাকেন। মনে করেন এতে অসুবিধা নেই, আমরা তো মীলাদ পড়ছিনা। কিন্তু ইসলামী শরীয়তে এর বৈধতা কতটুকু তা কি ভেবে দেখেছেন?
হাদীসে এসেছে -
"সাহাবী জরীর ইবনে আব্দুল্লাহ রা. বলেন, মৃত ব্যক্তির দাফন করার পর তার পরিবারের কাছে জমায়েত হওয়া ও খানা-পিনার ব্যবস্থা করাকে আমরা জাহেলী যুগের নিয়াহা হিসেবে গণ্য করতাম। (বর্ণনায় : ইমাম আহমদ )
যেহেতু এই প্রচলিত পদ্ধতি গুলো আল্লাহর রাসূল করেননি, তাঁর সাহাবাগণের কেউ করেননি বা করার জন্য বলেননি, তাই এগুলো বিদআত।
" সকল বিদআতই পথভ্রষ্টতা।" (মুসলিম,ইবনে মাজাহ)
কুরআন ও হাদীসের নির্দেশনা অনুযায়ী মৃত ব্যক্তিদের জন্য করণীয় :
১) মৃত ব্যক্তিদের জন্য দুআ ও ক্ষমা প্রার্থনা করা
২) মৃত ব্যক্তির জন্য দান-সদকাহ করা ও জনকল্যাণ মূলক কাজ করা
৩) কুরবানী করা
৪) মৃতদের পক্ষ থেকে তাদের অনাদায়ি হজ উমরা, রোযা আদায় করা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে তার সাহাবায়ে কেরাম এ বিষয়টি বার বার জিজ্ঞাসা করেছেন যে, মৃত আপনজনের জন্য
আমরা কি করতে পারি? মৃত মাতা পিতার জন্য কি করা যেতে পারে? তিনি এর উত্তরে দিক- নির্দেশনা দিয়েছেন। কোথাও তো বললেন না মীলাদ পড়াও, কুরআন খতম কর, খতমে তাহলীল আদায় কর, চেহলাম ও কুলখানি কর, ফাতেহা পাঠ কর, কবরে ফুল দাও, ইছালে ছাওয়াব মাহফিল কর, ওরস কর, প্রতি বছর মৃত্যুবার্ষিকী পালন কর, তার কবরের কাছে যেয়ে কুরআন পাঠ কর...।
রহমাতুল লিল আলামীন দয়ার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কী করলে চির বিদায় হয়ে যাওয়া মানুষটির উপকার হবে সে ব্যাপারে নিশ্চয়ই আদর্শ রেখে গেছেন !
আমরা কি তাঁর চেয়ে অনেক বেশি বুঝে গেছি যে নতুন নতুন পদ্ধতি আবিস্কার করে মৃত ব্যক্তির উপকার সাধনের ব্যর্থ প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি ?
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৪
আশালিনা আকীফাহ্ বলেছেন: ওয়া আনতুম ফা জাযাকুম আল্লাহু খাইরান ॥
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫১
নূসরাত তানজীন লুবনা বলেছেন: জাযাকিল্লাহু খাইরান আপু