নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Green_Bird of Jannah

“Surely in remembrance of Allah do hearts find rest\" [Al Quran-13:28]

আশালিনা আকীফাহ্‌

“The worldly comforts are not for me. I am like a traveler, who takes rest under a tree in the shade and then goes on his way.” –[Tirmidhi]

আশালিনা আকীফাহ্‌ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গ্লোবাল ইকোনমিক সিস্টেম : আপনাকে কিভাবে গরিব করে দিচ্ছে?

০৮ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:০৮

ধরেন, বাংলাদেশের ষোলো কোটি মানুষের কাছে থাকা সব টাকা যোগ করলে দশ হাজার কোটি টাকা হবে। তার মানে দেশের জনগণের কাছে থাকা মোট অর্থের পরিমান হল দশ হাজার কোটি টাকা।



এখন সরকার করলো কি, একটা ব্যাংক কে অনুমতি দিলো আরো এক হাজার কোটি টাকা প্রিন্ট করার এবং ঋণ দেয়ার, মোট ১০ পার্সেন্ট বাৎসরিক সুদে। [এক হাজার কোটি টাকার বাৎসরিক সুদ হল ১০০ কোটি টাকা, পাঁচ বছরে সুদ হবে ৫০০ কোটি টাকা ]



ব্যাংক এই একহাজার কোটি টাকা ১০ পার্সেন্ট বাৎসরিক সুদে ঋণ দিলো ব্যবসায়ীদের; তাহলে মার্কেটে এক্সিটিং মানি এমাউন্ট হল = দশ হাজার কোটি + এক হাজার কোটি = এগারো হাজার কোটি টাকা।



মনে করেন, ব্যবসায়ীরা সবাই ব্যবসা করে ব্যাংককে সুদ সহ সম্পূর্ণ ঋণ ৫ বছরে শোধ করলো । তাহলে ব্যাংকে পাঁচ বছর পর টাকা আসলে একহাজার পাঁচশো কোটি টাকা। এই টাকার মালিক হল ব্যাংক। ব্যাংকের সম্পদ বৃদ্ধি পেল।



কিন্তু খেয়াল করুন এই পাঁচশো কোটি টাকা কোত্থেকে আসলো? এই টাকা নিশ্চয়ই জনগনের কাছে থাকা দশ হাজার কোটি টাকা থেকেই বিয়োগ হয়েছে। কারো না কারো পকেট থেকে তো টাকা মাইনাস হয়েছে তাইনা? না হলে তো দুই পাশে আর সমান হবে না।



তার মানে জনগণের কাছে থাকা অর্থের পরিমান এখন হল :



দশ হাজার কোটি টাকা - পাঁচশো কোটি টাকা = নয় হাজার পাঁচশো কোটি টাকা।

তার মানে জনগনের হাতের টাকা কমে গেল। [কারও না কারও পকেট থেকে টাকাটা শেষমেশ ব্যাংকে গিয়ে জমা হয়।]



মানে এট দি এন্ড, টাকা র প্রকৃত মালিকানা চলে গেল ব্যাংকার দের হাতে। আর জনগণ হয়ে গেল দরিদ্র। পুরো পৃথিবীর ইকোনমিক সিস্টেম এভাবেই ধনী-গরিবের বৈষম্য তৈরী করছে।আমজনতার সম্পদ কমছে, আর ব্যাংকার দের বাড়ছে।

[ ব্যাপারটা আরো অনেক কমপ্লেক্স, কারণ একসাথে অনেক ব্যাংক ঋণ দেয়, সরকার বাজেট ডিফিসিট ফুল ফিল করার জন্য টাকা ছাপিয়ে ইনফ্লেইশন করে, অনেকে আবার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা খেলাপী করে ....... সে জন্য ক্যালকুলেশনটা এত সরল নয়। তবে মূল ব্যাপার এটাই, যে সুদের কারণে আসলে শেষমেশ সম্পদ দরিদ্র থেকে ধনীর দিকে প্রবাহিত হয়, এবং ধনী ব্যাংকাররা আরো ধনী হয়, দরিদ্র আরো দরিদ্র হয়। এখন বর্তমানে ইনফ্লেইশনের জন্য আপনার বেতন হয়ত কমে না, কিন্তু বেতন বাড়লেও জিনিসপত্রের দাম তার চেয়ে অনেক বেড়ে যায়, মানে আপনার ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়। সবসময় টানাটানি লেগে থাকে। ]





এজন্যই ০.০০১% মানুষের কাছে দুনিয়ার ৩০% সম্পদ। পরবর্তী ০.০১% মানুষের কাছে আরো ১৯% সম্পদ পৃথিবীর। পরবর্তী ০.১ % মানুষের কাছে পৃথিবীর আরো ৩২ % সম্পদ। মানে মোট ০.১১১ পার্সেন্ট মানুষের নিয়ন্ত্রণে পৃথিবীর মোট ৩০+১৯+৩২ = ৮১% সম্পদ। আর বাকি ৯৯% মানুষের কাছে আছে মাত্র ১৯% সম্পদ। অবাক হচ্ছেন ? এটাই সত্যি।

দেখুন উইকিতে : ১. Click This Link



আপনার মনে হতে পারে, যে ইউরোপ- আমেরিকায় হয়তো সম্পদ বেশী টেকনোলজিতে ওরা অনেক উন্নত। এজন্য এরকম ডিস্ট্রিবিউশন গ্লোবালী।কিছুটা সত্য হলেও মূল কারণ তা নয়। প্রতিটা ইউরোপিয়ান /আমেরিকান কান্ট্রির ভিতরেও সম্পদের ডিস্ট্রিবিউশনটা এরকম এবনরমাল।

আমেরিকার অবস্থা খুবই খারাপ, এত খারাপ যে এভারেজ আমেরিকানরা চিন্তাও করতে পারেনা। পাবলিক পার্সেপশন এর থেকে আলাদা হলেও প্রকৃত ডাটা দেখলেই বুঝবেন, আসলে আমেরিকান ওয়েলথ ডিস্ট্রিবিউশন কত খারাপ:

২. Click This Link



খেয়াল করে দেখুন , মাত্র ১ পার্সেন্ট আমেরিকান আমেরিকার মোট সম্পদের ৪২ শতাংশের মালিক। এবং মাত্র ৫% আমেরিকান, আমেরিকার মোট সম্পদের ৭২ শতাংশের মালিক। বাকি ৯৫% আমেরিকান আমেরিকার মোট সম্পদের মাত্র ২৮ শতাংশের মালিক।





এসেট ডিস্ট্রিবিউশন দেখুন :



তার মানে গ্লোবাল ইকোনমিক সিস্টেমএর সমস্যা দুটি : ১. সুদের মাধ্যমে জনগণের পকেট থেকে টাকা ব্যাংকে নিয়ে আনা।

২. ব্যাংক গুলোকে ইচ্ছেমতন টাকা প্রিন্ট করতে দেয়া, এবং সেই টাকার প্রকৃত মালিক জনগণ হলেও, এর প্রকৃত মালিকানা ব্যাংককে হস্তান্তর করা।






যে কারণে সম্পদ পুঞ্জীভূত হচ্ছে একটি ক্ষুদ্র কাল্টের মাঝেই। এবং এই পুঞ্জীভূবন দিন দিন বাড়ছেই। এমনকি বড় দেশগুলোর তৈরী ব্যাংক (ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এবং আই এম এফ) ছোট দেশগুলোকে চড়া সুদে ঋণ দিয়ে ছোট দেশগুলোকে আরও বেশী দায়বদ্ধ করে ফেলছে। সম্পদ ছোট দেশগুলো থেকে বড় দেশে প্রবাহিত হচ্ছে। এর সমাধান আছে ইসলামের মধ্যে। দুটি : ১. সুদকে উপড়ে ফেলা। ২. প্রিন্টড মানির মালিকানা জনগণকে দেয়া।



দেখুন , আমাদের প্রতি এটা আল্লাহর দয়া যে তিনি সুদকে চিরতরে হারাম করেছেন। না হলে আমরা এর থেকে বের হবার কথা চিন্তাও করতে পারতাম না। এজন্য আমাদের শুকরিয়া করা উচিত। ইনশাআল্ল-হ, ইসলাম যখন প্রতিষ্ঠিত হবে , সুদভিত্তিক অর্থনীতি সম্পুর্ণ বদলে যাবে, সম্পদের বৈষম্য দূর হবে।কিছু আয়াত ও হাদীস দেখুন, সুদ সম্পর্কিত :



ক. যারা সুদ খায় তারা সেই ব্যক্তির ন্যায় দাঁড়াবে, যাকে শয়তান স্পর্শ করেই পাগল করে দেয় । এটা এই জন্যেই যে তারা বলে বেচা-কেনা তো সুদেরই মত । (সূরা-বাকারা,আয়াত-২৭৫)



খ. আল্লাহ তায়া’লা ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন । যার নিকট তার প্রতিপালকের উপদেশ এসেছে অতঃপর যে বিরত হয়েছে, তার অতীত কার্যকলাপ তো পিছনেই পড়ে গেছে এবং তার ব্যপারে সম্পূর্ণ আল্লাহর এখতিয়ার । (সূরা-বাকারা,আয়াত-২৭৫)



গ. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লা’নত করেছেন, সুদখোরের উপর, সুদদাতার উপর, এর লেখকের উপর ও উহার সাক্ষীদ্বয়ের উপর এবং বলেছেন এরা সকলেই সমান । {মুসলিম/৩৯৪৮-জাবির (রাঃ), আবূ দাউদ/৩৩০০, তিরমীযী/১২০৯} (তার মানে সুদী ব্যাংকে যদি চাকুরী করেন, আপনি রসূল(স) এর লানতের মধ্যে আছেন)



ঘ. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ সুদ হল সত্তর প্রকার পাপের সমষ্টি । তার মাঝে সবচেয়ে নিম্নতম হল-আপন মায়ের সাথে ব্যভিচার করা । {ইবনে মাজাহ/২২৭৪-আবূ হুরাইরা (রাঃ)}





সুদকে বন্ধ করুন, প্রিন্টেড মানির মালিকানা জনগনকে দান করুন ; যাকাত,উশর,খারাজ চালু করুন : সব বৈষম্য ইনশাআল্লাহ বন্ধ হয়ে যাবে। সম্পদের সুষ্ঠ মালিকানা নিশ্চিত হবে ইসলামের মাধ্যমেই, সেই অপেক্ষায় রইলাম। ইনশাআল্লাহ।



অফটপিক ১: আওয়ামী লীগ সরকার এই টার্মে ৬ টি নতুন ব্যাংক অনুমোদন দিয়েছে কেন বুঝতে পারছেন? টাকার কন্ট্রোল বিরোধী দলে গেলেও যেন হাতে থাকে সেই জন্য। কারণ টাকা সবার শেষে ঘুরে ফিরে কিন্তু ব্যাংকেই যায়। আল্ল-হু আলম।





অফটপিক ২ : ড. ইউনুসের চড়া সুদী গ্রামীন ব্যাংক কেন কখনোই দারিদ্র বিমোচন করতে পারবে না, তা কি বুঝতে পারছেন? কারণ সুদের মাধ্যমে নেয়া ঋণ থেকে উৎপাদিত পুরো সম্পদের থেকেও বেশী টাকা গ্রামীণ ব্যাংকের একাউন্টেই জমা হবে। আর যারা সুদে টাকা নিয়েছে, তাদের কেউ কেউ টিকে থাকলেও অধিকাংশই লুটের শিকার হবে। শেষমেশ ধনী হবে গ্রামীন ব্যাংক। [অবশ্য ক্ষুদ্রঋণে আমার কোন আপত্তি নেই, ক্ষুদ্রঋণের আইডিয়াটা খুবই ভাল, যদি এতে সুদ না থাকে, বরং লাভ হলে লাভের একটি শতকরা হার দিবে এমনটি মেনে নেয়া হয়। ]



----- লেখকঃ মোঃ রেজাউল করিম ভুঁইয়া।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৩৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: চমৎকার শেয়ার !!!

১৫ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৪৮

আশালিনা আকীফাহ্‌ বলেছেন: জাযাক আল্লাহ্‌ খাইর।।

২| ০৮ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৩৮

ঢাকাবাসী বলেছেন: ভাল বিশ্লেষন।

১৫ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৪৬

আশালিনা আকীফাহ্‌ বলেছেন: ধন্যবাদ ....... @ঢাকাবাসী

৩| ১৫ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:১৯

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: বিশ্লেষণ-উদাহরণ সবই সুন্দর; কিন্তু ইসলামী অর্থনীতি কিভাবে এর সমাধান দেবে নির্দিষ্ট করে-উদাহরণ সহ নিশ্চই পরের পর্বে ব্যাখ্যা করবেন।

আশায় থাকলাম। ধন্যবাদ!

১৫ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৪৬

আশালিনা আকীফাহ্‌ বলেছেন: মহান আল্লাহ্‌ পাক যেন আমাকে সেই তাওফীক দেন, আমীন।
অনেক ধন্যবাদ .......

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.