![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“The worldly comforts are not for me. I am like a traveler, who takes rest under a tree in the shade and then goes on his way.” –[Tirmidhi]
১) পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে, কাউকে দেখে মোহিত হই কাউকে দেখে বিরক্ত হই, কেউ যন্ত্রণা দেয়, কেউ অযাচিত ভালোবাসায় সিক্ত করে। আমি কিন্তু আমার জায়গাতেই থাকি, আমার সম্পদ আমার হৃদয়, অনুভূতি, বুদ্ধি, চিন্তাশক্তি এবং কাজগুলো। এই আমার সাথে অন্যদের বিস্তর ফারাক থাকতে পারে, কেউ আমাকে উপহাস করতে পারে। তাতে কী?
আল্লাহর সাথে আমার সম্পর্ক সঠিক
থাকলে পৃথিবীর আর কোন কিছুতেই
আঁটকে যাবার, দুঃখ পাবার কিছু নেই। হৃদয়
যেন অকারনে যার-তার কারণে না ভাঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে।
২) আপনি যখন ভালোবাসার জন্য আহাজারি করছেন। ডানে-বামে তাকিয়ে দেখেন কেউ খাবারের জন্য কাঁদছে, মরেও যাচ্ছ। আবার অসুস্থতায় ও চিকিৎসাহীনতায় মারা যাচ্ছে।
৩) দুনিয়া আছেই আমাদের হৃদয়কে ভেঙ্গে খানখান
করে দেবে বলে। পাহাড়ের গুহায়, গর্তে, ঘরের কোণায় বসে থাকলেও এই ভাঙ্গন থেকে রক্ষা নেই।
৪) নির্বিঘ্নে নিশ্চিন্তে শ্বাস নিতে পারা এই
মূহুর্তটা কতই না সুন্দর ! পার্থিব কতরকমের
যন্ত্রণা আর প্যাঁচে পড়ে হয়ত অনেক মানুষ
নিশ্চিন্তে থাকতেই ভুলে গেছে। আজ যখন রাস্তার পাশে মোটা কাগজের উপরে শুয়ে থাকা শিশুটিকে গভীর প্রশান্তির ঘুমে দেখলাম তখন মনে হলো, মানুষ নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেনা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত
ঘরে শুয়েও। খুব বেশি কিছু লাগে কি? আমরাই আমাদের অভাবকে লাগামছাড়া করি, এরপর সেই অভাবের শোকে অশান্তিতে পুড়ি। সীমানা তো আমাদেরই মাঝে, সুখ সে তো আমাদেরই মনে।
৫) একদিন আপনি কিছু মানুষের কাছে কেবলই
স্মৃতি হয়ে যাবেন। প্রাণপন চেষ্টা করুন যেন
তা ভালো স্মৃতি হয়...
৬) সুখী হতে হলে ছোট ছোট বিষয়ে আনন্দিত
হওয়া শিখতে হয়।
৭) দু'আ করার সময় তাদেরকে স্মরণ রাখুন
যারা আপনাকে একজন উন্নত মুসলিম হবার
পথে সাহায্য করেছেন, করছেন।
৮) যতবার মানুষকে বেশি মূল্য দিয়েছি, মানুষের
কাছে প্রত্যাশা করেছি; ততবার কষ্ট পেয়েছি,
ততবার যন্ত্রণাদগ্ধ হয়েছি। প্রত্যাশা করার
প্রয়োজন কেবলই আল্লাহর কাছে। শুধুই তিনি, কেবলই তিনি। সমস্ত ক্ষমতা তো কেবলই তাঁর।
৯) নিজেকে নিজের কাছেই প্রমাণ করার
চেষ্টা করুন, অন্যদের কাছে নয়।
১০) যদি কখনো এমন কোন পরিস্থিতিতে পড়ে থাকেন যখন কেউ ছিলোনা সাহায্য করার, সেই দিনটির সেই মূহুর্তটির কথা ভাবুন, মৃত্যুর কথা ভাবুন -- এমনিতেই বুঝবেন এই জীবন
আসলে কারো জন্য না। চারপাশের বন্ধন,
ভালোবাসা, ভালোবাসার মানুষ, সুখ, সুখের
হাতছানি, প্রিয় বস্তু -- সবাইকে বিদায়
দিতে হবে। একলা আমরা বড়ই দুর্বল, খুবই
দুর্বল। একলা আমাদের কেউ গুণেও দেখে না,
কেউ যদি পরিচিতি না জানে, কেউ অধিকার
দিতেও চায় না। সেই একলা আমাদেরই গন্তব্য মাটির নিচে। সেই আমরাই মহান আল্লাহর বান্দা। তার জন্যই এ জীবন, এই বোধটা প্রতিদিনই অনেকবার করে স্মরণ করা, করিয়ে দেয়া উচিৎ। যেতেই হবে সবাইকে, যাবার সময় কবে, কেউ জানেনা,
কীভাবে হবে বিদায় সেটাও কেউ জানেনা।
১১) অতীতের কোন ঘটনা যে কষ্ট দিয়েছে তা হয়ত আপনি ভুলতে পারবেন না, কিন্তু তা আপনাকে যা শিখিয়েছে তা যেন কখনো ভুলে না যান।
১২) ঠিক আপনার মতই জীবন আর কারো নেই।
মানুষের সাথে মিশে দেখবেন তাদের শৈশব, কৈশোর অথবা বাল্যকাল আপনার চাইতে অন্যরকম, কিংবা তাদের পারিবারিক জীবন আলাদা। অথবা তাদের শারীরিক কোন অসহ্যকর কষ্ট আছে যা আপনার নেই। নিজের কষ্টগুলো নিয়ে যখন ভার মনে হবে,
আশেপাশে মিশবেন। আল্লাহর সৃষ্টির মাঝে নিজেকে ছড়িয়ে দিবেন। একজন অথবা দু'জন মানুষ খুঁজলে হয়ত মনে হবে সবাই আপনার চেয়ে সুখী। তখন সেই
ভ্রান্তি কেটে উঠবে না। একটু বেশি করে নানান রকম মানুষের সাথে মিশতে হবে। আপনার
গন্ডি ছাড়িয়ে অন্যদের জীবনকে জানলে দেখবেন আপনি হয়ত কারো জীবনের কথা ভেবে কাঁদতে শুরু করবেন
১৩) যখন খুব কষ্ট লাগে, তখন জানি, এই কষ্টের
দুনিয়া খুব বেশিদিনের জন্য না। আর একটুই তো। কাটিয়ে দেয়াই কাজ... যখন সুন্দর প্রকৃতিতে নিঃশ্বাস নিই আনন্দে, তখন জানি এই পৃথিবী ছেড়ে যাবার পর যা পাওয়া যায় তা এর চাইতেও অনেক সুন্দর। সেটা চাই, হে দয়াময়...
১৪) আপনি খারাপ থাকলে কারো কিছু আসে যায়
না। কারো কাছে খারাপ থাকা বর্ণনা করলেও
আসলে কেউ কিছু করবে না। মূলত মানুষ নিজেরাই খুব অসহায়। নিজেকে যেভাবেই হোক ভালো রাখাই উচিত, আল্লাহর কাছেই কেবল সাহায্য চাওয়া উচিত।
১৫) জীবনের পরতে পরতে খুশি-আনন্দ-কষ্টের
মাঝে আল্লাহ আপনাকে মেসেজ দিয়ে চলেছেন... তার আরো কাছে যেতে, তার দিকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বলছেন। খেয়াল করে পড়ে দেখুন...
১৫) একজন বললো, স্বপ্ন দেখে কী হয়?
স্বপ্নেরা কখনো সত্যি হয় না। কথা সত্যি।
সব স্বপ্ন সত্য হয় না। কিন্তু এটাও সত্য,
স্বপ্ন ছাড়া কিছুই হয় না। কিছু পেতে হলে স্বপ্ন দেখতে হয়, মানুষের মন কোন অবস্থাতেই আশা ছাড়া থাকে না। উচ্চাশা করা সঠিক নয়, কিন্তু স্বপ্ন
দেখতে হয়। ছোট ছোট স্বপ্ন, স্বপ্নেরা শিশির বিন্দুর মতন, ঘাসের উপরে চকচকে হীরার কণার মতন ঝলক দেয় কষ্টের মাঝে, দুঃখের মাঝে। কঠিন সময়ে তাই স্বপ্ন বেশি করে দেখতে হয়, কারণ, একদিন খারাপ সময় কেটে যাবে।
১৬) আমরা কেউ অন্য কারো মতন না, অন্য কেউ
আমাদের মতন না। অন্যদের স্কেলে নিজেদের
বিচার করা বোকামি, অন্যদের সাথে তুলনা করাও নির্বুদ্ধিতা। লক্ষ্য একটাই, মৃত্যুর পরের সফলতা, পৃথিবীটা শুধু পেরিয়ে যাওয়ার। কোন পূর্ণতা প্রাপ্তি এই জগতে হয় না, হতে পারে না...
১৭) অপেক্ষার পর, পরিশ্রমের পর যখন ঈপ্সিত
জিনিসটি পাওয়া যায়, সেই আনন্দ, সেই উদ্বেলিত হৃদয়ের অনুভূতি কি কখনো ভাষায় প্রকাশ করা যায়? যারা অমন করে অপেক্ষা করেনি তারা কীভাবে বুঝবে অপেক্ষার পরে প্রাপ্তির মাঝে ভালোবাসা কত তীব্র থাকে, তাতে কত গভীরতা থাকে, হৃদয়ে কত গভীর আনন্দের ধারা বয়ে যায়...
১৮) আপনি যে জীবনে সত্যিকারের কল্যাণময়
পরিবর্তন চান তার সম্ভবত প্রথম প্রকাশ
হচ্ছে আপনি নিজের বিষয়ে ভালো কথা বলতে না পারলেও, খারাপ কথা বলবেন না। আশাবাদী কিছু
শোনাতে না পারলেও নৈরাশ্য ও হতাশার কথা বলবেন না। যতদিন নিরাশা বা হতাশার সাথে থাকবেন, আপনি অবশ্যই কোন সত্যিকারের উন্নতি বা পরিবর্তন আনতে পারবেন না। উন্নতির মূল শর্ত
হলো -- হয় ভালো কথা বলো নয়ত চুপ থাকো।
১৯) আমাদের সবার অজস্র সীমাবদ্ধতা, ভুল,
নীচতা, হীনতা, খুঁত আছে। এটা সত্যি। হয়ত অনেক ক্ষেত্রে ভালোগুলোর পরিমাণ খারাপগুলোর চেয়ে কম, এরকমটাও হতে পারে। কিন্তু তাতে কোন ক্ষতি নেই। বিষয়টা হচ্ছে, একজন মানুষ তার কোন
সত্ত্বাকে মূল্য দিচ্ছে, কোন গুণাবলীকে ফুটিয়ে তুলতে চাইছে।
২০) অন্যদের সাথে আমাদের তুলনা করার কিছু
নেই। আমরা সবাই আল্লাহর স্বতন্ত্র সৃষ্টি।
আমাদের যা দেয়া হয়েছে, আমরা যতটুকু জেনেছি ও বুঝেছি -- তার সঠিক ব্যবহারের উপরেই আমাদের তিনি হিসেব করবেন। কাজগুলোতে তিনি প্রসন্ন হলে পুরষ্কার দিবেন, আর অপ্রসন্ন
হলে আমরা হবো ক্ষতিগ্রস্ত।
২১) কিছু মানুষ আছে যারা একটা সুন্দর জায়গা খুঁজে বেড়ায়, কিছু মানুষ আছে যারা একটা জায়গাকে নিজেরাই সুন্দর করে।
২২) খুব অসাধারণ হতে চাওয়া মানুষদের ভীড়ে তাদের দেখতে দেখতে আমরা অনেক সময় খুব সাধারণ হতেই ভুলে যাই। অথচ ব্যক্তি জীবনে আমরা ভালোবাসি সাধারণ যারা, তাদেরকেই। অসাধারণদের
আমরা হাততালি দেই, মুগ্ধ হই। একটু দূরে থেকেই তাদের ভালো লাগে, কাছে এলে নয়।
২৩) অদ্ভুত এক ইগোসম্পন্ন লোকের সমাজ
এটা। এখানে ছেলেরা ব্যক্তিত্ব মনে করছে ড্যাম কেয়ার হওয়াতে, মেয়েরা পণ্যের আঙ্গিকে কেয়ারলেস
হয়ে অন্যদের কাছে "অ্যাপ্রিশিয়েটেড" হবার মাঝে স্মার্টনেস খুঁজে পাচ্ছে। এখানে তেমন কেউ কোমল না, এখানে তেমন কেউ বিনয়ী না।
এখানে কেউ পারস্পারিক সহানুভূতি আর
কোমল কথায় সৌন্দর্য খুঁজে পায় না।
যদি পারতাম, অনেকের পায়ে ধরে অনুরোধ
করতাম, ভাই একটু কোমল হও, বিনয়ী হও।
এভাবে যাচ্ছেতাইভাবে চলে নিজেদের আখিরাত
তো বটেই, দুনিয়াটাও অন্য সবার জন্য ধ্বংসের আর অশান্তিতে ভরে দিচ্ছ।
২৪) সুন্দর হলো সত্য। সত্যই সুন্দর। সুন্দর সংখ্যায় কম হবেই, তাও সত্য। তাতে ভড়কে যাবার কিছু নেই। সুন্দরকে যারা পছন্দ করেন, যারা মূল্য দেন -- তারা খুঁজে নিবেন নিজ দায়িত্বে। আলো জ্বালিয়ে রাখলে, আলোর যাদের প্রয়োজন, তারা সেখানে ছুটে আসবে।
২৫) কখনো কখনো আমাদের জীবনে কিছু
মানুষকে পেয়ে যাই, পরিস্থিতি আর সময়ের
কারণে যাদের জন্য নিঃশব্দ অশ্রু ছাড়া আর
কিছু দেয়ার থাকে না।
(২৬) নিঃসন্দেহে আল্লাহ সুবহানাহু
ওয়া তা'আলা আমাদের নিঃশব্দ, নিঃসঙ্গ
সময়ের দু'আ শোনেন, আমাদের মনের
কথা জানেন। একদিন আমরা সবাই তার
সামনে হাজির হব, তার সান্নিধ্যে পূর্ণ হবো।
সেদিন যারা হাসিমুখে থাকবে, তাদের
মাঝে প্রিয়জনদের খুঁজে পাওয়ার আনন্দ হয়ত
কল্পনাও করতে পারিনা। আল্লাহ যেন
সেইদিন সকল মুসলিম ভাই-বোনদের
হাসিমুখে থাকার তাওফিক দেন।
(২৭) কোন কিছু দিতে হলে নিজের কাছে যথেষ্ট
থাকতে হয়। যে রিক্ত, শূণ্য সে কখনো অনেকজনকে দান করতে পারে না। সূর্যের আলো থাকে তাই সে আলো বিলায়।
জ্ঞান এবং প্রাণের শক্তি বা অনুপ্রেরণার
ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা এমন। যারা জ্ঞানী,
তাদের অনেক থাকে বলেই তারা যেখানে যান
জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে পারেন।
যিনি অনুপ্রেরণা দিবেন, তার ভেতরেও যথেষ্ট
উৎসাহ, অনুপ্রেরণা আর মনের শক্তি না থাকলে তিনি দিতে পারেন না, পারবেন না। আমরাও তাই যেন ভুল কারো কাছে আশা না করি।। যার-তার
কাছে উদ্দীপনা আর আশার কথা শুনতে চাইলে কি আর হয়? তাদের সামর্থ্য আর যোগ্যতার কথাও মাথায় রাখা জরুরী বটে!
২৮) কেন শুধু বেশি বেশি দুশ্চিন্তা মানুষের? এই
পৃথিবীর কিছুই তো কারও নয়, ছিলো না,
হবেও না। সাময়িক এই ভ্রমণে এত চাপ
নেবার কিছু নেই। যিনি অনাদি-অনন্ত তার
কথা ভাবুন, দুঃচিন্তা-দুর্ভাবনা চলে যাবে।
২৯) প্রতিটা মানুষই একেকজন যোদ্ধা।
প্রত্যেকের জীবনেই রয়েছে বেদনা-যন্ত্রণা-
কষ্টের মহাকাব্য। প্রতিটি সফল মানুষের
রয়েছে খুবই কষ্টকর অতীত। সফলতার পাওয়ার স্বপ্নে বিভোর থেকে আমরা ভুলে যাই কষ্ট
করা যে অবধারিত। কষ্ট তাই স্বাভাবিক।
বিষয় হলো, কষ্টটা কার জন্য করছি।
যদি জীবনের ঘটনাগুলোকে আল্লাহর
দেয়া পরীক্ষা, আমাদের জন্য আল্লাহর
পছন্দ হিসেবে মেনে নিই, তাহলে জীবনটা সরল হয়ে যায়। দিনশেষে মোটা দাগে কষ্টের আলাপ একটাই
--কষ্ট সবাই করে। কেউ করে আল্লাহর
জন্য, কেউ করে দুনিয়ার জীবনের সাময়িক
কিছু সফলতার আশায়।
৩০) অনেক সময় কিছু যখন প্রকট দুনিয়াবী এবং আজেবাজে ফালতু কথা শুনতে না চাইলেও শুনতে হয় তখন সেসব কথার প্রত্যুত্তরে মনে মনে অনেকে যেসব কথা বলেন, বক্তারা সেসব শুনতে পেলে কেমন
খেপতো ভাবলে চেপে রাখা হাসি প্রকাশ
হয়ে যেতে পারে।
সামনে বসেও সম্মান/সমীহ বজায়
রেখে বিরক্তিকর কথার উত্তর
মনে মনে দেয়ার বিষয়টা বেশ দারুণ!!
--- "সুন্দর জীবনের স্বপ্ন"
©somewhere in net ltd.