![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পনেরো হাজার পৃষ্ঠার একটা উপন্যাস লিখব! সেই উপন্যাসে তার নাম কোটিবার থাকবে! সেই উপন্যাসের নায়ক আমি আর নায়িকা সে!
1
চিটাগাং থেকে নারায়ণগঞ্জে সাড়ে সাত ঘন্টা জার্নি করে এসে, আমি রীতিমতো মতো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে দাঁড়িয়ে আছি বাসস্যান্ডে! কেউ আসার কথা না। প্রথমত, আমি নীলিমার বাসা চিনি না। দ্বিতীয়ত, আমি নারায়ণগঞ্জে এই প্রথম এলাম।
ভীষণ খিদে পেয়েছে। ভোরে বাসে উঠেছি। মাঝখানে বাস কোথায় যেন থেমেছিল, ভয়ে কিছু খেতে পারিনি। যদি, হোটেল থেকে বেরিয়ে দেখি, বাস নাই!
একটা টং দোকানে গিয়ে চা আর একটা বাটার বান খেয়ে সিগারেট ধরিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। বুঝতে পারছি না কি করবো। এদিকে যাব না, ওদিকে যাব।
শেষমেশ নীলিমাকে ফোন দিলাম। নীলিমা একটা জায়গার নাম বলল। আমাকে সাবধান করে দিল, বাস স্ট্যান্ড থেকে ওদের বাসা পর্যন্ত ভাড়া বিশ টাকা, কিন্তু রিকশা ওয়ালারা চাইবে পঞ্চাশ টাকা। আমাকে রীতিমতো মতো হুমকি দিয়ে বলল, আমি যেন কোনও মতেই পঁচিশ টাকার বেশি ভাড়া না দেই!
এত কাহিনী করার সময়-ইচ্ছে, দুটোর একটাও নেই আমার। প্রথম রিকশা থামিয়েই উঠে পড়লাম। জায়গায় গিয়ে নেই, তারপরে ভাড়া দিব নে...
.
দেড় মাস আগে ধরা খাওয়ার পরে নীলিমার জীবন যেন থেমে গিয়েছিল! ওর বড় ভাই ভীষণ বকাবকি করেছে। ওই বকা গুলো শুনতে শুনতে ওর কাছে, ভালোবাসাকে অভিশাপ ছাড়া আর কিছুই মনে হয়নি। প্রায় প্রতিটা দিন আমাকে ফোন দিয়ে ভীষণ কান্নাকাটি করেছে।
যেকোনো মেয়ের ভাই থাকলে একটাই সমস্যা! নিজে প্রেম করবে ঠিকই! কিন্তু বোন প্রেম করলেই দুনিয়ার যত সমস্যা! ভাইয়েরা তাদের বোনের "প্রেম" জীবনে আজীবন যেন ভিলেন হয়েই থাকে। তবে একটা ভাই তার বোনের সাথে অবশ্যই পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো ছেলেটার বিয়ে দিতে চাইবে।
আমার আসার প্লানটা নীলিমারই! আমাদের দেশে মেয়েরা কুড়িতেই বুড়ি হয়ে যায়। এখানে আবার নীলিমার বিবিএ কমপ্লিট! আমারও ইচ্ছে বিয়েটা সেরে ফেলাই উচিত। ধরা যখন খেয়েই গিয়েছি, আর লুকানোর দরকার নেই। নীলিমা তার আম্মাকে সব খুলে বলল। যে, আমি ভীষণ ভালো ছেলে, ফ্যামিলি ভালো, একটা সফটওয়্যার ফার্মে কাজ করি, ভালো মাইনে পাই ইত্যাদি ইত্যাদি আমার সম্পর্কে দুনিয়ার যত ভালো ভালো কথা।
নীলিমার মা এবং ওর ভাইয়ের আমার সম্পর্কে সবকিছু ভালো লাগলেও, কেবল একটা জিনিস ভালো লাগেনি। সেটা হল, আমি চিটাগাং এর। চিটাগাং এর মানুষ সম্পর্কে তাঁদের ইমেজ ভালো না। সত্যি বলতে ভীষণ খারাপ...
যাই হোক শেষমেশ বহু বকাবকির পরে বিবিএ কমপ্লিট করা মেয়ের পছন্দই তাঁদের কাছে প্রাধান্য পেয়েছে।
নীলিমার কথাতেই তো আর ওদের বাসায় হুট করে চলে যেতে পারি না। শেষমেশ গত সোমবারে ওর ভাই আমাকে ফোন দেয়।
-"হ্যালো, তুমি আসিফ?"
নীলিমা আমাকে বলে রেখেছিলেন। তাদের বাসা থেকে ফোন আসবে আমার কাছে। আমি যেন ভালো ভাবে সব কথার উত্তর দেই।
আমি সালাম দিলাম। "জ্বী"...
আমাকে আর কথা বলার সুযোগ দেওয়া হল না। দুই বাক্যে কথা শেষ করে ফোনটা কেটে দেওয়া হল, "সামনের শুক্রবারে আমাদের বাসায় আসবে। তোমার সাথে জরুরি আলাপ আছে..."
.
নীলিমা সকাল থেকে ঘর গোছগাছ করছে। প্রথমবারের মতো আসিফ তাদের বাসায় আসছে। গত দেঢ়টা মাস কি ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে তার জীবনটা কেটেছে শুধু মাত্র এই দিনটার জন্য! মনের ভেতর ভীষণ আনন্দের সাথে সাথে একটা চাপা ভয় কাজ করেছে তার...
আগের দিন, নীলিমা হাতে একটু মেহেদি দিয়ে ছিল। তার হাতে মেহেদি, আসিফ ভীষণ পছন্দ করে। ভয়ে আতঙ্কে রাখতে পারেনি। শেষমেশ উঠিয়ে ফেলে। রঙ গাঢ় হয়নি। হালকা বিবর্ণ হয়ে আছে। আর দশটা মিনিট রাখলেই দারুণ রঙ হতো!
.
রিকশা থেকে নেমে রিকশা ওয়ালকে দশ টাকার তিনটা নোট দিলাম। ওতেই রিকশা ওয়ালা খুশিতে গদ গদ হয়ে চলে গেল।
কিছুক্ষণ খোঁজার পরেই নীলিমার ব্রিটিশ আমলের বাসাটা খুঁজে পেল! নীলিমা ছবি পাঠিয়েছিল। তাই অসুবিধা হয়নি।
মেইন গেটে কেউ নেই।
নীলিমাকে কি ফোন দিব? না দিব ওই ভাবতে ভাবতে ওদের দরজার কাছে চলে গেলাম। ঘরটা অনেকটা মোডিফাইড গাড়ির মতো! বাড়িটা দেখতেই কেবল ব্রিটিশ আমালের বাড়ির মতো। বাকি সব চেঞ্জ! দরজা থেকে শুরু করে কলিং বেল পর্যন্ত!
আমি কলিং বেল একবার চাপ দিলাম। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে দরজা খোলা হল! নীলিমা যেন আমার কলিং বেল চাপ দেওয়ার অপেক্ষা করছিল!
আমার হাত ধরে টেনে ড্রইং রুমে নিয়ে সোফায় বসিয়ে দিয়ে কোথায় যেন উধাও হয়ে গেল।
আমি আবার ভ্যাবাচ্যাকা হয়ে বসে আছি। আমি তো নড়তে চড়তেও ভয় পাচ্ছি! প্রায় দশ মিনিট পরে, আর্মিদের মতো একের পর এক করে সবাই আসতে লাগল। প্রথমে নীলিমার ভাই, তারপরে তার মা, এবং সবশেষে তার নানী! শুধু মাত্র আর্মিদের গার্ড অব অনারের ব্যান্ডটা বাজালেই হতো। আমি দাঁড়িয়ে গেলাম। ওর ভাই বলে উঠল, "আরেহ বসো বসো! এত সম্মান দেখাতে হবে না। নিজের ঘরই ভাবো...
. 2
সবাই হাসছে। আমি এমনটা আশা করিনি। নীলিমা থেকে তার বাসার লোকজনের সম্পর্কে যে বর্ণনা শুনছি, ওই বর্ণনার সাথে এনাদের কারও সঙ্গেই মেলাতে পারছি না! নীলিমার বর্ণনা অনুসারে, তার ভাই ভীষণ রাগী! মাথা একবার গরম হয়ে গেলে খুনও পর্যন্ত করে ফেলতে পারে! কিন্তু আমি এখন পর্যন্ত নীলিমার ভাইকে যতটুকু দেখলাম, ভীষণ ভালো সেন্স অব হিউমার ওয়ালা "জেন্টেলম্যান" মনে হল। ওর আম্মা আর নানীও ভীষণ ভালো!
মাঝখানে নীলিমার আম্মা উঠে গিয়ে আমার জন্য চা নাশতা নিয়ে আসলেন। সিঙাড়ার মতো দেখতে খুব ছোট ছোট সিঙাড়া, বিস্কুট ছিল, আর বেশ কয়েকটা পুলি পিঠা।
তবে গলা দিয়ে কিছু নামল না। আমি চা খেয়েই থেমে গেলাম।
সবাই আমাকে আদরের উপর ভাসিয়ে দিচ্ছে!
তেমন জটিল কোনও প্রশ্ন করা হয়নি। বাসার সবাই কেমন আছে, অফিস কেমন চলছে, ঢাকায় থাকার কোনও প্লান আছে কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি।
সবাই হেসে সময়টা পার করে দিচ্ছি। ওনাদের কথা বার্তার একটা ইঙ্গিত পেলাম। শীঘ্রই যেন, আমি আমার বাসার বড় কাউকে দিয়ে প্রস্তাব পাঠই।
এই ইঙ্গিতটা পাই কিভাবে তা বলি, নীলিমার নানী তাঁর বিয়ের গল্প বলছিলেন। কিভাবে নীলিমার নানা তাঁকে পছন্দ করেছে। কিভাবে স্কুল ফাঁকি দিয়ে মেলায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। কিভাবে ছাদে চিঠি ঢিল মারতে গিয়ে ধরা খান তাঁরা! আর সবশেষে নানা তাঁর বাবা-মাকে নিয়ে ওনাদের বাসায় প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিল!
আমি নীলিমাকে কোথাও দেখতে পাচ্ছি না। এতক্ষণ হয়ে গেল, একনজর ভালো মতো তাকিয়ে দেখতে পর্যন্ত পেলাম না। এতদূর জার্নি করে আসলাম, ওকে তো একটিবার দেখা উচিত! ওনাদের কাছে নীলিমার কথা জিজ্ঞাসা করতেও লজ্জা লাগছে।
আমার পাশে নানী বসেছিলেন। তাঁর কানের কাছে গিয়ে বললাম,-"নানী, নীলিমা কোথায়? কোথাও দেখছি না..."
একটা দুষ্টু দৃষ্টিতে তিনি আমার দিকে তাকিয়ে হেসে দিলেন। "এত উতলা হলে চলে? তোমার জন্য সাজছে!"
এমন সিচুয়েশনে নীলিমার মোটেই সাজুগুজু করার কথা না। আসলাম মাত্র প্রথমবার! আমার সঙ্গে নীলিমার বিয়ে হবে কিনা ওটার কোনও নিশ্চয়তা নেই, সেখানে ও গিয়ে সাজগোজ করেছে! অদ্ভুত!
পরে নানীর চেহারার দিকে তাকিয়ে দেখলাম, নাহ তিনি মজা করছেন। আবার হেসে তিনি বললেন, "তোমার জন্য রান্না করেছে বাবা! রান্না করেছে!"
সবাই কথা শুনল এবং হেসে দিল! ভীষণ লজ্জা লাগছিল..
.
আমাকে সবাইকে আলাদা ভাবে মুগ্ধ করতে হয়নি। নীলিমার পরিবারের কারও থেকে নিজের প্রতি কোনও রকম বিরক্তি, ক্ষোভ দেখতে পেলাম না।
তবে এটা বাঙালি যেকোনো পরিবারের একটা কমন ব্যাপার! ঘরে মেহমান এলে, সবাই এমন অভিনয় করার চেষ্টা করে যে সব ঠিকঠাক আছে।
তবে আরেকটা সত্যি কথা হল, বাঙালি পরিবার গুলো যখন সব ঠিকঠাক আছে, এমন অভিনয় করে। তখন সেই মেহমান ঠিকই ধরে ফেলে, কিছু একটা গোলমাল আছে। কারণ, অভিনয় এর সাথে বাস্তবতার রাতে দিনে তফাত্ রয়েছে। আমি সবাইকেই বিচক্ষণতার সাথে পর্যবেক্ষণ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু কোনও অভিনয়ের ছাপ পাচ্ছি না। তার মানে, এনারা সত্যিকারেই আমাকে কাছে পেয়ে ভীষণ খুশি!
তবে এতক্ষণে আমার হৃদয় সইছে না নীলিমাকে দেখার জন্য! আমাকে যখন হাত টান দিয়ে ড্রইং রুমে নিয়ে এসেছেন, তখন একটা হলুদ জামা পরা ছিল। ঠিকমতো চেহারাটাও দেখতে পারিনি। মন শুধু আনচান করছে।
.
নীলিমার বাসায় এসে সেই এক ঝলকের জন্য দেখার পর শেষমেশ প্রায় তিন ঘন্টা পর উনার দেখা পেলাম। তিন ঘন্টায় একটা সিনেমাও শেষ হয়ে যায়! ড্রইং রুমের এক কোণে খাবার টেবিল। খাবার নিয়ে মাতাব্বরি করছে নীলিমা। একটা নীল শাড়ী পরেছে। কোথাও ঘুরতে গেলে হয়তো আমি কেবল ওর দিকেই তাকিয়ে থাকতাম..
খাবার টেবিলে বসার আগে, আমাকে গেস্ট রুম দেখিয়েছিল নীলিমার ভাই। ফ্রেস হয়ে নিতে বললেন। জুমার নামাজে যাব কিনা জিজ্ঞাসা করেছিলেন।
রুমে ঢুকে বেশ একটা অবাক হইনি। খাটে তোয়ালে আছে। সাথে একটা চিরকুট,
"আমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে? ইচ্ছে করেই তোমার সামনে যাইনি। রাগ করো না বাবু। তুমিই তো সবসময় ধৈর্য ধরতে বলো! আমাকে দেখার জন্য একটু ধৈর্য ধর। আর হ্যাঁ, গোসল ওজূ করে ভাইয়ার সাথে নামাজ পড়তে যাও!
নীলু"
এই জন্যই হয়তো মেয়েটাকে এত ভালোবাসি। চিরকুটটা ব্যাগপ্যাকে ভরে নিয়েছি।
ভাইয়ার সাথে একসঙ্গে জুমার নামাজ পড়ে, এই খেতে বসলাম। লজ্জায় নীলিমার দিকে তাকাতেই পারছি না। চোখ যাতে এদিক ওদিক না যায়, এজন্য ভাজা চিংড়ী বাটির দিকে তাকিয়ে আছি।
হঠাত্ নানী নীলিমাকে উদ্দশ্য করে বলল,"নীলু! ছেলে মনে হয় চিংড়ী খেতে চাচ্ছে। বেড়ে দে!"
নীলিমাও যেন রোবটের মতো আমার কাছে এসে, কয়েকটা চিংড়ী বেড়ে দিল। আমার তখনও নীলিমার দিকে তাকাতে পারিনি। তবে দারুণ একটা ঘ্রাণ নীলিমার গা থেকে আসছে, সেটা টের পেলাম।
কোনও মতে খেয়ে আমি উঠে গিয়ে গেস্টরুমে শুয়ে রইলাম। কতক্ষণে চোখ লেগে আসল বুঝতেই পেলাম না।
বিকালে নীলিমা জাগিয়ে দিয়ে গেল। মানুষ যখন কোনও নতুন জায়গায় যায়, তখন ওই জায়গায় তার ভীষণ ভয় লাগে এই বুঝি কিছু নষ্ট হয়ে গেল, এই বুঝি কেউ কিছু বলে ফেলল। কিন্তু একটু সময় পারে হলেই সে ভীষণ সাহসী হয়ে যায়!
.
3
আমার সঙ্গেও এরকম কিছু একটা ঘটেছে। যেখানে আমি ড্রইং রুমে বসে থাকতেই ভয় পাচ্ছিলাম, সোফায় বেশি জোর দিচ্ছিলাম না। সেখানে আমি গেস্ট রুমে গিয়ে ঘুমিয়েছি। সাহসের ব্যাপার বটেই।
গেস্টরুমে চা আর বিস্কুট দিয়ে গেল নীলিমা। বেচারি এক মুহূর্তের জন্যও বসে নেই। সবাইকে খুশি রাখার চেষ্টা করছে যাতে, কেউ আমাকে কিছু না বলে। ঠিকমতো এখনও তার সাথে কথা বলতে পারিনি। চা খেয়ে নানীর রুমে গিয়ে নানীর সঙ্গে কতক্ষণ গল্প করে এলাম। গল্পের টপিক ছিল "নীলিমা"!
একটা মেয়ে সম্পর্কে তার পরিবার যতটুকু জানে, ততটুকু সেই মেয়ের প্রেমিক কখনওই জানতে পারে না। কিছু অদ্ভুত কিছু জানলাম নীলিমার সম্পর্কে, নীলিমা ছোট বেলায় ভারতনাট্যম শিখত! রাগ করে বহু দিন কথা না বলে থাকত পারে (এটা আসলেই জানতাম না। আমার সঙ্গে ও রাগ করে কখনও থাকতে পারেনি), একজোড়া কবুতর ছিল ওর। ওই কবুতর দুইটা হঠাত্ কোথায় যেন চলে যায়। এজন্য ভীষণ কেঁদেছিল..
আমি শুধু এই অল্প সময়ের মধ্যে নীলিমার সম্পর্কে বহু কিছু জানতে চেয়েছি!
.
আমি গেস্ট রুমে ছিলাম।
রাত সাড়ে আটটা কি নয়টা হবে,
নীলিমা রুমে এসে বলল,-"ছাদে চলো..."
এই ব্রিটিশ আমলার এই বাড়িতে ছাদ আছে জেনে ভীষণ আবাক হলাম। ওর পিছু পিছু যেতে লাগলাম।
ছাদটা বেশ সুন্দর। এই ছাদে নীলিমা অনেক সময় কাটায়, দেখেই বুঝতে পারলাম। একটা দোলনা আছে, অনেক গুলো ফুলের গাছের টব আছে। কিছু কিছু ফুলে ফুলও আছে। চাঁদের আলোয় স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। ফুলের সুবাস টের পাচ্ছি...
আমি ছাদের কিনারায় গিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি। নীলিমা আমার পাশে এসে দাঁড়ালো। আমি আবার ওর গায়ের মিষ্টি গন্ধটা পাচ্ছি। ও বলে উঠল,-"কালকে চলে যাবে?"
"এটা বলা লাগে? চলেই তো যেতে হবে কালকে.. সকালের টিকিট করা আছে.. "
ও আমার গা ঘেঁষাঘেষি করে দাঁড়ালো। আমি এবার ওর দিকে তাকালাম। ওর চোখে যেন একটা কষ্ট! আমার চলে যাওয়ার! আমি বললাম,-"চিন্তা করো না। আমি পরের বার আমার আব্বু আম্মুকে নিয়ে আসব...পরে তো আমরা একসঙ্গে থাকবোই!"
নীলিমা নিচের দিকে তাকিয়ে "উ" একটা শব্দ করল। ওর গলা ভারী হয়ে আসছে। ভীষণ মন খারাপ করছে। আমি ওর হাতটা ধরে বললাম,-"তোমার আম্মু, ভাইয়া, নানী হয়তো আমাকে পছন্দ করেছে। কিছুদিন পরেই তো আমরা একসঙ্গে থাকবো! তখন কেউ আমাদের আলাদা করতে পারবে না। কেউ না!"
চাঁদের আলো, হালকা শীতল বাতাস পরিবেশটাকে অদ্ভুত সুন্দর করে দিল। আমরা দুইজনে শিউরে উঠলাম। ভয়ে না, এক অদ্ভুত অজানা আনন্দে!
২| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৫১
মো: হাসানূর রহমান রিজভী বলেছেন: আপনার লেখার হাত ভাল।গল্প ভাল হয়েছে।
৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৫৭
সাহসী সন্তান বলেছেন: চমৎকার ঝরঝরে বর্ননা! প্রথম থেকে একদম বিরতিহীন ভাবে পড়ে গেলাম। সত্যি বলতে ভীষণ ভীষণ ভাল লেগেছে!
শুভ কামনা জানবেন!
৪| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২৮
জিএমফাহিম বলেছেন: খুবই ভাল লাগলো। বেস্ট উইশেস ফ্রম নারায়নগঞ্জ
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:১১
মুহাম্মদ তারেক্ব আব্দুল্লাহ বলেছেন: সাধারণ ভাষায় সুন্দর গল্প... ভালো লেগেছে!