নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গান শুনতে ভালবাসি কিন্তু গান গাইলে সবাই পালায়। প্রেম করি কিন্তু প্রেমিকা নাই। লেখালেখি করি কিন্তু পাঠক নাই। আমি আছি কিন্তু কেউ নাই...

আসিফ বিন হোসেন

পনেরো হাজার পৃষ্ঠার একটা উপন্যাস লিখব! সেই উপন্যাসে তার নাম কোটিবার থাকবে! সেই উপন্যাসের নায়ক আমি আর নায়িকা সে!

আসিফ বিন হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

লিফলেট

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২৭

হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়ার পরে কেউ হাত বাড়িয়ে টেনে তুলে ধরল। বাংলাদেশে এমনটা সাধারণত হয় না। নিজেদের নিয়ে নিজেরা ব্যস্ত সবাই। কার কি হল, ওতে কারও মাথা ব্যথা নেই। দুই ক্ষেত্রে কেউ সাহায্য করতে ভুলে না, "ভাই আপনার ব্যাগের চেইন খোলা!", "আপু আপনার ওড়না সরিয়ে নিন! রিকশার চাকার সঙ্গে লেগে যাচ্ছে!"

আমি উঠে মধ্যবয়সী লোকটাকে, "ধন্যবাদ" বলে প্যান্ট ঝাড়তে লাগলাম। আমার দিকে অবাক হয়ে লোকটা তাকিয়ে আছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম,-"কিছু বলবেন চাচা?"
তিনি আরও অবাক হয়ে সংকীর্ণ স্বরে বললেন,-"বাবা, তুমি দেখতে পুরো আমার বড় ছেলের মতো। কন্ঠটাও আমার বড় ছেলের মতো!"

একথা শুনে আমি অবাক হইনি! এমন বহু পাগল আছে! সুযোগ পেলেই অপরিচিতদের সাথে গল্প জুড়ে দিবে। একবার এক পাঞ্জাবি পরা বুড়োকে বড় দাঁড়ি থাকার কারণে সালাম দিয়েছিলাম। লোকটা উড়ে এসে জুড়ে বসে গল্প জুড়ে দিল যে সৌদিতে আট বছর ছিল, কুয়েতে বার বছর, এক সময় প্রচুর টাকা কামিয়েছেন, ছেলেপুলে নাই। আমাকে আবার বললেন উনার বাসায় দাওয়াত দিলেন। ঠিকানাও দিলেন। যাওয়ার আগে এক টাকার দুইটা চকলেট দিয়ে ছিলেন। সেই চকলেট খাওয়ার পরে আমার পেটের কি যে অবস্থা হল...

আমি হাসলাম। লোকটা আবার বলল,-"তুমি দেখি আমার বড় ছেলের মতোই হাসো!"
এবার কিছুটা বিরক্ত হলাম। তবে প্রকাশ না করে হেসে হেসে জিজ্ঞাসা করলাম,-"কি করে আপনার বড় ছেলে?"

লোকটা গম্ভীর হয়ে গেল। "ছেলে বোকসোকা। তিন বছর আগে পরীক্ষা খারাপ হওয়ার কারণে ঘর থেকে বের করে দিয়েছিলাম। আর ফেরেনি..."-এই বলে লোকটা আমার হাতে একটা লিফলেট ধরিয়ে দিয়ে হড়হড় করে চলে গেল।

এক মুহূর্ত আমি বুঝতে পারিনি কি হল। আমি লিফলেটের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখলাম। "নিখোঁজ" বড় করে লেখা। আর একটা ছেলের ছবি দেওয়া আছে। ছেলেটার চেহারা মোটেই আমার চেহারার মতো না। লিফলেটের নিচে একটা নম্বর দেওয়া আছে। সাথে লেখা "পাইলে যোগাযোগ করিবেন"

আমি লিফলেটটাতে চোখ বুলিয়ে এদিক ওদিক তাকালাম লোকটার খোঁজে। বহু দূরে চলে গেছে। লোকটা সম্ভবত পুত্রশোকে মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে গিয়েছ। আমি লিফলেটটা পকেটে গুঁজে বাসায় চলে আসি...

.

বহুদিন পরে একদিন সলিমুল্লাহ হলের পাশ দিয়ে রিকশা করে যাচ্ছিলাম। হঠাত্ ফুটপাতের মধ্যে একটা পাগলকে দেখি! এমন ফুটপাতে থাকা বহু পাগল আছে। এদের চুল অনেক বড়। বহুদিন গোসল না করায় সব জট ধরে থাকে। গায়ে ছেঁড়া নোংরা জামা। হাতের কাছে যেটাই পায়, ওটা দিয়ে নেশা করে।

অমনই একটা পাগল। কিন্তু এই পাগলটার ময়লা আচ্ছন চেহারায় দিকে তাকিয়ে সেই লিফলেটের ছেলেটার কথা মনে পড়ল!

কাজ শেষে আমি বাসায় এসে লিফলেটটা অনেক খুঁজেছি নম্বরটার জন্য। কিন্তু পাইনি। মাকে জিজ্ঞাসা করলাম। বলল সেদিনের প্যান্টটা ধোয়ার সময় পকেটে থাকা কাগজটা ফেলে দিয়েছেন....

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৩৪

হাতুড়ে লেখক বলেছেন: ভাল লেগেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.