![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নব্য ইয়াজিদীরা তবে শোন
-আবছার তৈয়বী
দীর্ঘ একুশ বছর থেকে চাকুরিতে বা ব্যবসায় সব খানেই আমার কাজের একটি অংশ হলো- নানা দেশের নাগরিকদের ‘পাসপোর্ট’ নাড়া-চাড়া করা। এ পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ৫০ টি দেশের অগণিত মানুষের পাসপোর্ট আমার হাতে এসেছে। যে গুলোর প্রায় প্রতিটি পৃষ্ঠা আমাকে ভালো করে দেখতে হয়। এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা ও আফ্রিকার বহু দেশের পাসপোর্টের প্রথম পাতা থেকে শেষ পাতা পর্যন্ত খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছি। বিশ্বাস করুন- কোন পাসপোর্টধারীর নাম আমি ‘ইয়াজিদ’ পাইনি। কিন্তু হোসাইন? সুবহানাল্লাহ্! মোহাম্মদ হোসাইন, হোসাইন আহমদ, গোলাম হোসাইন, আবুল হোসাইন, আবদুল হোসাইন, আহমদ হোসাইন- ইত্যাদি নামে হাজার হাজার পাসপোর্ট ও ব্যক্তি পেয়েছি। বাংলাদেশের লোকেরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ‘হোসাইন’ শব্দটিকে বাংলায় ‘হোসেন’ বা ‘হোছেন’ লিখে থাকেন। ‘বাঙালি’ বলুন বা ‘বাংলাদেশী’ বলুন- আমি তাদেরকে যে সব কারণে ভালোবাসি, তার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে- বাঙালিদের মাঝে আপনি হাজারও চেষ্টা করেও একজনও ‘ইয়াজিদ’ নামের ব্যক্তি পাবেন না। আমার কথা বিশ্বাস না হলে আপনি নিজেই খুঁজে দেখতে পারেন। কিন্তু ইয়াজিদের বাবা ও দাদার নামে হাজারো লোক পাবেন। তাহলে ‘ইয়াজিদ’ এর দোষটা কী?
দোষটা আর কিছু নয়, দোষটা হলো- আহলে বায়তে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাহবিহী ওয়া সাল্লামের সাথে 'দুষমনি'। যারা কুখ্যাত ইয়াজিদ বন্দনায় বন্দী, যারা ইয়াজিদের পক্ষে প্রতিনিয়ত সাফাই গায়, ইয়াজিদকে লা’নত দিলে যাদের কলিজা কাঁপে, ইয়াজিদের প্রশংসায় যারা পঞ্চমুখ, ইয়াজিদকে যারা তাবেয়ী এবং খলিফায়ে বরহক মনে করে এবং যারা মলউন ইয়াজিদের নামের শেষে ‘লা’নাতুল্লাহি আলাইহি’ না বলে ‘রাদ্বিআল্লাহু আনহু’ বলে সেই সব নব্য ইয়াজিদ, ঘোমটা মৌ-লোভী এবং কোট-টাইধারী কথিত ইসলাম প্রচারকরাও নিজেদের সন্তানের নাম, ভাতিজা বা ভাগনের নাম, কিংবা নাতি-পুতির নাম ‘ইয়াজিদ’ রাখে না। কিন্তু কেন?
আরে ভাই! মলউন ‘ইয়াজিদ’ যদি তোমাদের কাছে এতোই ‘ভালো মানুষ’ হয়- তো তার নামে তোমাদের সন্তানদের নাম রাখো না কেনো? ইয়াজিদের নামের শেষে যদি ‘রাদ্বিআল্লাহু আনহু’ বলতে তোমাদের মন ‘বেকারার’ হয়, তো সাহস করে নিজেদের সন্তানের নাম ‘ইয়াজিদ’ রাখো। তবেই না ইয়াজিদের প্রতি তোমাদের আসল ‘মুহাব্বত’ প্রকাশ পাবে, কিন্তু সৌদি পেট্রো-ডলার খেয়ে মাথায় মেয়ে লোকের মতো ঘোমটা দিয়ে টিভি চ্যানেলের ‘চাঙ্ক’ কিনে তোমরা কুখ্যাত মলউন ইয়াজিদের পক্ষে সাফাই গাইতে শুনলে আমার খুব, হ্যাঁ খুউব খারাপ লাগে! কেন? কারণ, তোমরা প্রতারক, তোমরা ভীরু। যার নূন খেয়ে ইয়াজিদের গুণ গাইতেছো, তার হক পুরা হবে- যদি তোমাদের সন্তানদের নাম তোমাদের পেয়ারের ‘ইয়াজিদ মিয়ার’ নামে রাখো। আগামী কাল ও পরশু টিভি চ্যানেল সমূহে যখন ওসব খবিস ‘ঘোমটা মৌ-লোভী’রা ইয়াজিদ বন্দনায় মেতে উঠবে, তখন কোন দর্শক-শ্রোতা যদি সরাসরি ফোন করে এ বিষয়ে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তো খুবই খুশি হবো।
আমাদের দিকে দেখো- মুহররম মাস আসলে, ইমাম হোসাইন ও আহলে বায়তের নাম শুনলে সুন্নী মুসলমানরা কী রকম ‘পাগল’ হয়ে যায়! তার মাহফিল সাজায়, হযরত ইমাম হোসাইন (আলাইহিস সালাম ওয়া রাদ্বিআল্লাহু আনহু)’র শানে লেখালেখি করে। নিজেদের সন্তানদের নাম রাখে-মহান ইমাম ও আহলে বায়তের (রিদওয়ানিল্লাহি আলাইহিম আজমাইন) সদস্যদের নামে। নিজেদের প্রতিষ্ঠানের নাম রাখে- আহলে বায়তের নামে। কারণ সুন্নীরা যেটা বিশ্বাস করে- সেটা কাজে পরিণত করে দেখায়। এ ক্ষেত্রে সুন্নীদের মাঝে কোন কপটতা নেই।
কিন্তু তোমরা যা বিশ্বাস করো এবং মানুষকে বিশ্বাস করতে বলো- তার মাঝে প্রাণ নেই, সত্য নেই, ঈমান নেই। আছে পেট্রো-ডলারের ‘বদবুঁ’। তোমরা কেনো চিন্তা করো না- ইতিহাসে একটা নাম কলঙ্কের কতো আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হলে, ঘৃণার থুথুর সাগরের কতো গভীরে নিমজ্জিত হলে পৃথিবীর কোন মুসলমান ‘ইয়াজিদ’ নামটি তাদের মুখে নিতে চায় না! তাদের সন্তানের নাম রাখে না! তোমরা কোন ‘আক্কেলে’ এই মলউন, কমবখত, কুখ্যাত ইয়াজিদের নামে ‘ভট’ পড়ো? হারামিপনার একটা শেষ থাকা দরকার? ওরে নব্য ইয়াজিদ! কতো বড় ‘বেলাজ’ হলে তোমরা এই ‘মালাউনের’ পক্ষে সাফাই গাইতে পারো? তোমরা আর যাই করো- যতো পেট্রোডলারই খাও না কেন, কিন্তু নিজেদের সন্তানদের নাম ‘ইয়াজিদ’ রাখতে পারবে না। দেশ-বিদেশের হে নব্য ইয়াজিদগণ! আমি তোমাদেরকে ‘কিয়ামত’ পর্যন্ত সময় দিলাম। পারলে ‘গাউছের কুকুর’ আবছার তৈয়বীর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করো।
হে মহান ইমামে আকবর সাইয়িদী ওয়া মাওলায়ী হযরত ইমাম হোসাইন (আলাইকাস সালাম ওয়া রাদ্বিআল্লাহু আনকা) ! যখন আমার সব বন্ধুরা আপনার ও আপনার আহলে বায়তের শানে লেখা-লেখি করছেন, তখন আমি আপনার দুশমন মলউন ইয়াজিদ ও তার উত্তরসূরীদের নিয়ে লিখতে বাধ্য হয়েছি। হে দয়াল নবীর (দরুদ) কলিজার টুকরা! আপনি আমায় ক্ষমা করুন।
আবছার তৈয়বী: প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়ক,‘উজ্জীবন’ সাংস্কৃৃতিক সংস্থা (উসাস)।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি- প্রবাসী সাংবাদিক সমিতি (প্রসাস), দুবাই, ইউ.এ.ই।
প্রতিষ্ঠাতা: আদর্শ লিখক ফোরাম (আলিফ), চট্টগ্রাম।
নির্বাহী সদস্য: আনজুমানে খোদ্দামুল মুসলেমীন, ইউ.এ.ই কেন্দ্রীয় পরিষদ, আবুধাবি।
তারিখ: ২৩ অক্টোবর, ২০১৫
আবুধাবি, ইউএই।
©somewhere in net ltd.