নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যবাক

অাবছার তৈয়বী

আবছার তৈয়বী

অাবছার তৈয়বী › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'ডাক্তার! তোরা মানুষ হ\'

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:২৩

'ডাক্তার! তোরা মানুষ হ’
-আবছার তৈয়বী

ডাক্তাররা কি মানুষ! নাকি পশু বা পশুর চেয়েও অধম? আমার মনে হয় ডাক্তাররা আর মানুষ নেই। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ডাক্তারদের ‘মানুষ’ বলাটা এখন মানবিকতার দৃষ্টিকোণে 'চরম অপরাধ' বলে মনে করি । তাদের ইচ্ছার কাছে জনগণ এমনকি সরকারও জিম্মি। কী বিশ্বাস হচ্ছে না? ক’দিন আগের একটি ঘটনা বলি।

আমার এক চাচা-শশুর মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। তাঁর কাছে গেলাম চিকিৎসা নিতে। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিলেন। তিনি চিকিৎসা করলেন। ফি নিতে না চাইলেও তাঁর নির্ধারিত ফি দিলাম। তিনি বললেন, যাবার আগে যেন আরেকবার তাঁর সাথে দেখা করি। জানুয়ারির ২৫ তারিখ আমার ফ্লাইট। ২৪ তারিখ ফোন করলাম ক্লিনিকে। বলা হল- 'ক্লিনিক বন্ধ। ডাক্তাররা সব হরতালে আছেন'। বললাম কেন? ডাক্তারদের আবার হরতাল কীসের? বলল- কোন এক ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা গেছে। রোগীর পরিবার আইনের আশ্রয় নিয়েছে।তাই ডাক্তাররা সবাই একযোগ হয়ে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দিয়েছেন! খবর নিয়ে দেখলাম- লীগ, দল, জামাতি সব ডাক্তারের চেম্বার বন্ধ। সরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসক নেই। অকাতরে রোগী মারা যাচ্ছে, কষ্ট পাচ্ছে- ভাবতে পারেন??? ডাক্তাররা কি আইনের উর্ধ্বে?

ডাক্তারদের এমন গোস্বার কারণ কী? তাঁদের কারো কি ভুল হতে পারে না? চিকিৎসায় অবহেলা করতে পারেন না? কোন অপরাধ করতে পারেন না? তাঁরা শয়তান নাকি ফেরেশতা? মানুষ হলে তো ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। কোন ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে যদি কোন রোগী মারা যায় বা ক্ষতিগ্রস্থ হয়, তো তার পরিবার আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবে না কেন? পেটের ভেতর কাঁচি, গজ-ব্যান্ডেজ, সূঁই-সুতো রেখে পেট সেলাই করে দেয়ার উদাহরণ কি আমাদের দেশের ‘পাগলা ডাক্তার’দের নেই? নেই কি ভুল চিকিৎসায় রোগী মারা যাওয়া ও পঙ্গুত্ববরণ করার ঘটনা?

কয়েক বছর আগে চট্টগ্রামের উচ্চ মানের এক 'জামাতি ক্লিনিকে' এক ব্যাক্তি চিকিৎসা নেন।পাইলস্ রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে ওই জামাতি ডাক্তার রোগীর মলদ্বার বেশি কেটে ফেলে। সেই মলদ্বারের ক্ষতস্থান পূরণ করতে রোগীর নিতম্ব থেকে আস্ত এক টুকরো মাংস কেটে ফেলা হয়। সেই গর্ত পূরণ করতে কাটা হয় আরেক নিতম্ব! বেচারা রোগী দুই নিতম্ব হারিয়ে বসতে পারেন না, শুতে পারেন না। এই পরীক্ষা সেই পরীক্ষা বলে ইতোমধ্যে রোগীর পরিবার থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। তাতেও কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু রোগীর ঘা শুকায় না কেন? ব্যান্ডেজের ভেতর রোগীর নিতম্বে 'গুঁতোগুতি' করে কীসে? রোগীর চিৎকার চেঁচামেচিতে পুরো পরিবার অস্থির। তাঁরা রোগীর কষ্ট আমলে নেন না। বাধ্য হয়ে রোগীকে আবার উক্ত ক্লিনিকে নেয়া হলো। অন্য ডাক্তার দিয়ে চেকআপ করানো হলো। আল্ট্রাসানোগ্রাফি করা হলো। সব ঠিক হ্যায়। 'সব রোগীর ফাজলামো' বলে রোগীকে বিদায় দেয়া হলো। রোগীর কান্দনে আল্লাহর আরশ কাঁপে; কিন্তু পরিবারের মন গলে না। ইতোমধ্যে রোগীর নিতম্বে পচন ধরেছে। মলদ্বারের অবস্থা আরো খারাপ। বাধ্য হয়ে মধ্যবিত্ত পরিবারটি ধার-দেনা করে রোগীকে নিয়ে ইনডিয়া যায়। ব্যান্ডেস খুলে পরীক্ষা করে ইন্ডিয়ান ডাক্তার ‌থ! ডাক্তার হতভম্ব! রোগীর নিতম্বের ভেতর ইয়া মোটা আস্ত একটা সুঁই, সাথে একগাদা সূতো। রোগীর পরিবারকে একচোট বকা দিলেন, হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য। রোগীর পরিবার বললেন, বলেন কি ডাক্তার সাব! চট্টগ্রামের সবচেয়ে দামি ক্লিনিক এবং এফসিপিএস পাশ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে অপারেশন করিয়েছি! দেখুন- আপনার বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কান্ড- এই বলে রোগীর নিতম্ব থেকে সূঁই-সূতো বের করে দেখালেন! ইন্ডিয়ান ডাক্তারের মুখে মৃদু হাসি। এই হাসি ঘৃণার। রোগী ও রোগীর পারিবারের চোখে জলধারা। এ জলধারা কষ্টের, অভিশাপের! চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে রোগী ও পরিবার দেশে ফিরেই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের রিরুদ্ধে মামলা করে। আর যায় কোথায়? সব ডাক্তার একজোট হয়ে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেন। ডাক্তারদের সংগঠন আওয়ামী মার্কা স্বাচিপ, বিএনপি মার্কা ড্যাব ও জামাতি মার্কা পরিষদ সব একজোট। যাঁরা কোন সংগঠনে নেই, তাঁরাও তাঁদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। পুরো চট্টগ্রাম জুড়ে কান্নার রোল। অকাতরে রোগী মারা যাচ্ছে, কষ্ট পাচ্ছে। কিন্তু ডাক্তাররা অনড়। অবশেষে নরাধম ডাক্তারদের কাছে সরকারের নতি স্বীকার!

শুধু ডাক্তারদের বেলায় নয়, প্যাথলজিতেও একই অবস্থা। কয়েক বছর আগে এক লোক রক্ত পরীক্ষা করায়। লোকটির সময় না থাকায় তার স্ত্রী যায় রিপোর্ট আনতে। তার স্ত্রী জানতে চায়- কী রিপোর্ট এসেছে? ডাক্তার বললেন, ‌'আপনার স্বামী ছয় মাসের প্রেগন্যান্ট’। লও ঠেলা! স্ত্রী বিস্ফোরিত নয়নে বললেন, এটা কীভাবে সম্ভব!? ডাক্তারের তড়িৎ জবাব- ‘ম্যাডাম! এখন দুনিয়াতে অসম্ভব বলে কিছু নেই! রিপোর্ট তো আর মিথ্যা বলতে পারে না, তাই না?’ ডাক্তারের উত্তর শুনে পতিপরায়না স্ত্রী 'ধপাস'। হুঁশ ফিরে আসার পর বাড়িতে এসে স্বামীর কলার ধরে জিগায়- 'কী আকাম করছো কও? তুমি ব্যাটা ছেলে হয়ে কীভাবে ছয় মাসের গভবর্তী হইলা'? তোমার মাথা ঠিক আছে? ‘আগে ঠিক ছিল, রিপোর্ট দেখার পর আর ঠিক নেই। তোমার পেট দিন দিন বড় হচ্ছে কেন এবার বুঝতে পারছি’-এই বলে স্ত্রী রিপোর্টটি স্বামীর হাতে ধরিয়ে দিলেন।স্বামী লাফ মেরে ওঠে দেখলো, হাছাই তো! তিনি কাল-বিলম্ব না করে রক্ত পরীক্ষাসহ আরো বড় বড় পরীক্ষা করালেন। নাহ্, কোন পরীক্ষাতেই প্রাগন্যান্সি ধরা পড়েনি। কীসের প্রাগন্যান্ট? পবরর্তীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেলো- একজন গর্ভবতী মহিলার ব্লাডের শিশিতে ওই লোকের নামের লেবেলটি লাগিয়ে দেয়া হয়েছিল! এই হলো আমাদের দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা!

এই অবস্থায় মানুষ যাবেটা কোথায়? হোমিওপ্যাথি, কবিরাজ ও ঝাড়-ফুঁক ওয়ালাদের কাছে? কিন্তু ওখানেও মানুষ সমানে প্রতারিত হচ্ছে। বিশ্রি রকমের কাণ্ড-কারখানা ঘটছে। সে কাহিনী অারেকদিন বলবো। অামার এক সিলেটী পাঠিকা ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে পঙ্গু হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাঁর ঘটনা শুনলে পাষানের হৃদয়েও রক্তক্ষরণ হবে। তাঁকে সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করার পরামর্শ দিলে তিনি জানালেন, তাঁর চিকিৎসা ব্যয় করতে গিয়ে ইতোমধ্যে তাঁর বাবা ফতুর হয়ে গেছেন। ডাক্তারদের প্রভাব-প্রতিপত্তি ও জোটবদ্ধতা দেখে ওই পরিবারটি অাইনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে গেছে। কয়েক বছর যাবৎ তিনি শুয়ে-বসে দিন গুজরান করছেন। তাঁর দুনিয়া বলতে তাঁর 'রুম আর এক চিলতে উঠোন'। যে তন্বী মেয়েটি বাড়ির সবাইকে দেখভাল করতো, সে নিজেই আজ অন্যের সাহায্য ছাড়া নড়তে চড়তে পারে না! ভাবুন তো একবার! মুমূর্ষু ও পীড়িতদের প্রতি পশুরও মায়া হয়, কিন্তু 'পশুর চেয়েও অধম' ডাক্তারদের মায়া হয় না। ডাক্তাররা মানুষ হবে কবে? বাবাজীরা! তোমরা ফি ও পরীক্ষা দিয়ে মানুষের গলা ও তলা সমানেই কাটছো- কোন অসুবিধা নেই। পেট ও নিতম্ব কাটার পর কাঁচি, সুঁই, সূতো, গজ ও ব্যান্ডেজগুলো পেট ও নিতম্বের ভেতর না রাখলে হয় না? তোমরা নিজেদের যতোই নিরপরাধ ভাবো, কিন্তু মনে রেখো- খোদার দুনিয়ায় তোমাদের চেয়ে অপরাধী 'জীব' আর কেউ নেই। মনে রেখো- অপরাধীর পক্ষে জোটবদ্ধ হওয়া অপরাধের চেয়েও বড়ো অপরাধ! যতো জোটবদ্ধই হও, মানুষের চোখের পানিতে তোমরা খড়-খুঁটোর মতো ভেসে যাবে, তলিয়ে যাবে। তাই বলি- ‌ডাক্তার! তোরা মানুষ হ’।

বি দ্র: এই লেখাটি ভালো লাগলে কপি, পেইস্ট করে নিজেদের ওয়াল এবং ডাক্তারদের মাঝে শেয়ার করুন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.