![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কওমী সনদের স্বীকৃতি: লাভ কি এবং ক্ষতি কী? (পর্ব: ০২)
-আবছার তৈয়বী
কওমী সনদের স্বীকৃতি: লাভ কি এবং ক্ষতি কী? (পর্ব: ০১) প্রকাশিত হবার পর পাঠক মহলে ব্যাপক সাড়া পড়েছে- আলহামদু লিল্লাহ! প্রকাশ্যে যারা কমেন্ট করেছেন, লাইক দিয়েছেন, শেয়ার করেছেন এবং লেখাটি কপি করে যারা অবিকৃতভাবে বিভিন্ন পেইজে, গ্রুপে এবং নিজেদের টাইমলাইনে পোস্ট করেছেন- সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। ধন্যবাদ জানাই- যারা অপ্রকাশ্যে কমেন্ট করেছেন, উৎসাহ দিয়েছেন এবং নানা রকম পরামর্শ দিয়েছেন- (তাদের সংখ্যা কমসে কম ১০ গুণ বেশি) তাদেরকেও। তারা ঠিক কী কারণে প্রকাশ্যে কমেন্ট করেন না- তা আমি জানি না। তবে আমি মনে করি- প্রকাশ্যে কমেন্ট না করলে জনসচেতনতা বাড়ে না। আর সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরও টনক নড়ে না। সেই অপ্রকাশ্য বন্ধুদের বলবো- আপনারাও শালীন ভাষায় প্রকাশ্যে কমেন্ট করুন। সকলেই সুচিন্তিত মতামত দিয়ে আমার অতি কষ্টের লেখাগুলোকে সমৃদ্ধ করে তুলুন।
আমাদের সকলকেই মনে রাখতে হবে যে, সত্য ও সুন্দর, শান্তি ও কল্যাণ, ন্যায় ও মানবাধিকার, দেশপ্রেম ও অসাম্প্রদায়িকতা এবং সর্বোপরি মানবতার ধর্ম ইসলামের পক্ষে 'কলম চালনা' একটি জিহাদ এবং অবশ্যই ইবাদাত। সেই জিহাদ এবং ইবাদাত থেকে কেউই পিছপা হবেন না। এখন সময় এসেছে- কওমী সনদের স্বীকৃতির ব্যাপারে সকল কড়া সুন্নী, মিঠা সুন্নী, গোলাপী সুন্নী, ঢোলক সুন্নী, গোলক সুন্নী, মাইকওয়ালা সুন্নী, মাইকবিরোধী সুন্নী, কালোটুপি সুন্নী, সাদাটুপি সুন্নী, গোলটুপি সুন্নী, লম্বাটুপি সুন্নী, পাঁচকল্লি সুন্নী, কিস্তি টুপি সুন্নী, ওরুইশ্যা সুন্নী- সব সুন্নী একাট্টা হয়ে এক আওয়াজে এই কথা বলার যে, "এই ওহাবী তথাকথিত কওমীদের মাদ্রাসার ও সনদের স্বীকৃতি অবশ্যই দিতে হবে। তবে তা- ওহাবী কওমীরা যেভাবে চায়- সেভাবে নয়, সরকার যেভাবে চায়- সেভাবেও নয়।" তো কীভাবে? বলছি- শুনুন।
কওমী মাদ্রাসা ও সনদের স্বীকৃতি দিতে হবে- 'দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব, ঐক্য ও সংহতি এবং সংবিধান সমুন্নত রেখে'। স্বীকৃতি দিতে হবে- মানবাধিকার, নাগরিক অধিকার ও শিক্ষা অধিকারকে সামনে রেখে। স্বীকৃতি দিতে হবে- টপ লেবেল থেকে নয়, একেবারে প্রাইমারি লেবেল থেকে। স্বীকৃতি দিতে হবে- যথাযথ মানের সিলেবাস ও পাঠ্যসূচি পড়িয়ে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মানসম্মত পরীক্ষা নেয়ার পর। স্বীকৃতি দিতে হবে- দেশ ও জনগণের স্বার্থে, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য নয়। স্বীকৃতি দিতে হবে- অসম্প্রদায়িক, শান্তিবাদী ও সুফীবাদী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে। সাম্প্রদায়িক, অশান্ত ও জঙ্গিবাদী বাংলাদেশ গড়ার জন্য নয়। স্বীকৃতি দিতে হবে- একীভূত ইসলামী শিক্ষার জন্য, বৈষম্যমূলক বিভক্ত শিক্ষার জন্য নয়। এক কথায়, স্বীকৃতি দিতে হবে- দেশ ও জনগণের স্বার্থে, সরকার বা তথাকথিত কওমীদের স্বার্থে নয়। স্বীকৃতি দিতে হবে- সংবিধানের আলোকে, সংবিধানকে পদদলিত করে নয়। এই কথাগুলো সর্বত্র একযোগে প্রচার করতে হবে। এই বিষয়ে জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। তবেই সরকারের টনক নড়বে এবং 'সরকার আত্মঘাতী, বৈষম্যমূলক এবং সংবিধান পরিপন্থী' সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে। নচেৎ ঘৃণ্য ওহাবী ও সালাফীবাদের উগ্র তৎপরতা থেকে কেউ বাঁচতে পারবেন না। আমিও না, আপনিও না এবং সরকারও না।
মনে রাখবেন- কোন উম্মাদের হাতে যদি আপনি অস্ত্র তুলে দেন, সে অস্ত্রটি প্রথমে আপনার বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হবে। কোন অযোগ্য লোককে যদি আপনি 'যোগ্যতার সনদ' দেন, তাহলে যোগ্য লোকদের অপমান করা হয়। আর এটাই সবচেয়ে বড় জুলুম। কোন জহরিলা সাপের উদ্ধত ফনাটি ভেঙে না দিয়ে যদি আপনি তাকে রাস্তায় ছেড়ে দেন- তো আপনি তার প্রতি দয়া দেখালেন না; বরং আপনি জনমানুষের ক্ষতিই করলেন। একটি সাপকে আপনি দুধ-কলা দিয়ে যতো আদর-আহলাদেই পোষেন না কেন? সময় আসলে এবং সুযোগ পেলে সে সর্বপ্রথম আপনাকেই দংশন করবে, অন্যদের করবে আরো পরে। অতএব, সাধু সাবধান! (চলবে- ইনশাআল্লাহ)
(বি.দ্র.: জনসচেতনতা এবং সরকারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের লক্ষ্যে লেখাটি বেশি বেশি শেয়ার করুন। কপি করে অবিকৃতভাবে নিজেদের টাইমলাইন থেকে একযোগে পোস্ট করুন। মনে রাখবেন- আপনার একটি পোস্টেই দেশ ও জাতির প্রভূত কল্যাণ হতে পারে। সকলকেই ধন্যবাদ।)
তারিখ: ১৩ এপ্রিল, ২০১৭ খৃ.
আবুধাবি, ইউ.এ.ই।
©somewhere in net ltd.