নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যবাক

অাবছার তৈয়বী

আবছার তৈয়বী

অাবছার তৈয়বী › বিস্তারিত পোস্টঃ

মিনহাজুল কোরআন নিয়ে ষড়যন্ত্রের শেষ কোথায়?

০২ রা মে, ২০১৭ দুপুর ১:১৮

মিনহাজুল কোরআন নিয়ে ষড়যন্ত্রের শেষ কোথায়? (পর্ব: ০১)
-আবছার তৈয়বী
রাত পোহালেই ঢাকা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে- মিনহাজুল কোরআনের 'আন্তর্জাতিক সংলাপ'। International Dialogue on Islam for Peace: In light of Sufism শিরোনামে। শিরোনামেই বুঝা যাচ্ছে- সংলাপটি কতো গুরুত্ববহ। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বাইরের দু'জন সম্মানিত মেহমান ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। একজন এসেছেন আমেরিকা-সৌদি আরব হয়ে ঢাকায়। আরেকজন এসেছেন সরাসরি লন্ডন থেকে। দু'জনই 'মিনহাজিয়ান'। আমরা শায়খুল ইসলাম প্রফেসর ড. মুহাম্মদ তাহিরুল কাদেরীর ভক্ত, অনুরক্ত ও গুণগ্রাহীদের পক্ষ থেকে এই দু'জন মেহমানকে আন্তরিক অভিবাদন ও শুভেচ্ছা জানাই। আমার সম্মানিত পাঠক/পাঠিকাগণ ইতোমধ্যে জেনেছেন- আগামী ৪ মে, ২০১৬ চট্টগ্রামেও একটি সেমিনার হবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই দু'টি অনুষ্ঠান মিনহাজুল কোরআনের আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান। এর আগে মিনহাজুল কোরআনের অসংখ্য ঘরোয়া অনুষ্ঠান হয়েছে- পিএইচপি শিল্প পরিবারের প্রধান, আমার শ্রদ্ধেয় চাচাজান, আলহাজ্ব সুফী মিজানুর রহমানের বাসায় এবং ইউআইটিএস অফিসে। ২০০৮ সালের দিকে তিনি ইউআইটিএস এর আওতাধীন মিনহাজুল কোরআনের একটি গবেষণা কেন্দ্রও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। খতীবে বাঙাল অধ্যক্ষ আল্লামা জালাল উদ্দীন আলকাদেরী (রহ.)'র নেতৃত্বে কয়েকজন প্রতিথযশা গবেষকের সাথে এই অধমও ছিলাম।

বাংলাদেশে মিনহাজুল কোরআনকে সর্বপ্রথম নিয়ে আসেন- আমার দাদা মাওলানা আবুল কালাম সাহেব। তিনি বড়ই সরল মানুষ। খুবই নিরহঙ্কার ও নিরীহ প্রকৃতির লোক। বিভিন্ন সমাবেশে তিনি নিজেই মিনহাজুল কোরআনের বিভিন্ন প্রচারপত্র নিজ হাতেই প্রচার করতেন। পরবর্তীতে তাঁর প্রচেষ্টায় ড. এরশাদ সাঈদ সাহেব (পুরো নামটি মনে পড়ছে না) শায়খুল ইসলামের প্রতিনিধি হয়ে বাংলাদেশে আসেন। তিনি থাকতেন শ্রদ্ধেয় চাচাজান আলহাজ্ব সূফি মিজানুর রহমান সাহেবের বাসায়। তিনি আসার সময় মিনহাজুল কোরআন ইন্টারন্যাশনাল এর নানা প্রকাশনার সাথে 'মিনহাজুল কোরআন ইউথ ফোরাম'র সদস্য ফরমও নিয়ে আসেন। আমি নিজেই সূফি সাহেবের বাসায় সূফি সাহেব ও ড. এরশাদ সাহেবের সামনে সেই ইউথ ফোরামের সদস্য ফরম পুরণ করি এবং সুফি সাহেবের হাতে দেই। তিনি তা ড. এরশাদ সাহেবের হাতে দেন। তখন আজকের হর্তাকর্তাদের দেখা দূরে থাক 'বোঁ-বাঁস' ছিলো না। তারও আগে ১৯৯১ কি ৯২ সালে আমি জামেয়ার বর্তমান অধ্যক্ষ, বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস, বাহরুল উলূম, হাজার হাজার আলেমের প্রিয় উস্তাদ, আমার পরম শ্রদ্ধেয় প্রিয় শিক্ষাগুরু, হযরতুলহাজ্ব আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ সোলাইমান আনসারী (ম.জি.আ) হুজুরের কাছে শায়খুল ইসলাম প্রফেসর ড. মুহাম্মদ তাহিরুল কাদেরীর (ম.জি.আ) কথা জীবনে প্রথম শুনি। তিনি তখন থাকতেন- জামেয়ার পুরনো হিফজখানা সংলগ্ন মাদ্রাসা কোয়ার্টারে। পায়ের দিক ছাড়া হুজুরের তিন দিকেই শুধু কিতাব আর কিতাব। বাপরে! আমার জীবনে এমন 'কিতাব পোকা' (কিতাব অধ্যয়ন অর্থে) আমি আর দেখিনি।

একদিন বাদে আসর তাঁর রূমে গেলে কিতাব থেকে চোখ তুলে (সম্ভবতঃ সেটা শায়খুল ইসলাম রচিত অনবদ্য হাদিসের কিতাব- 'মিনহাজুস সাভী';) আমায় একটি কিতাব দিলেন। উর্দূতে লেখা। (কিতাবটি সম্ভবতঃ 'জিবহে আজীম' বা শাহাদাতে কারবালা সংক্রান্ত অন্য কোন কিতাব) বললেন- এটা পড়ো। আমি কিতাব খুলে পড়তে লাগলাম। সুবহানাল্লাহ্! যতোই পড়ি- ততোই মজা লাগে। উস্তাদ শাগরিদ দু'জনই কিতাবে মশগুল। প্রায় ৩০ মিনিট পর তিনি চোখ তুললেন এবং মুখ খুললেন। 'কেমন দেখলে- আবছার তৈয়বী'? বললাম- সুবহানাল্লাহ! এমন সুন্দর ব্যাখ্যা সম্বলিত লেখা আমি আমার জীবনে দেখিনি। হুজুর বললেন- 'এটা রুমে নিয়ে যাও- পড়ো'। তার টেবিলে পাকিস্তানের উর্দূ দৈনিক 'জঙ্গ' ছিল কয়েকটি। আমি হুজুরের অনুমতি নিয়ে সেই পত্রিকাগুলোও নিয়ে আসি। পরে হুজুরের কিতাবটি ফেরত দিলেও পত্রিকাগুলো আর ফেরত দেইনি। সেই পত্রিকাগুলোতে 'ইয়াউমের রেযা' (আ'লা হযরত দিবস) ও' ইয়াউমে খাজা' (খাজা দিবস) উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র ছিল। পরবর্তীতে সেই ক্রোড়পত্রের আর্টিক্যালগুলো আমি বাংলায় অনুবাদ করে বিভিন্ন পত্রিকায় দেই। 'সেদিন আনসারী সাহেব হুজুর শায়খুল ইসলামের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন'। একপর্যায়ে তিনি বললেন- 'আল্লামা ড. তাহিরুল কাদেরীর সাহস দেখে আমি তো আবাক'! বললাম- কেন- হুজুর- কী হয়েছে? তিনি বললেন- তার সাথে দেখা করার এক পর্যায়ে তিনি বললেন 'আলা হযরতের (রা.) আউলাদগণ সৈয়দী আলা হযরতের (রা.) ওপর যতোটা জুলুম করেছেন, পৃথিবীর আর কেউ ততোটা জুলুম করেন নি। (হুজুর বললেন) আমি বললাম- কিভাবে? শায়খুল ইসলাম বললেন- 'দেখুন, সৈয়দী আলা হযরত (রা.) বুখারীর শরাহ লিখেছেন- সেই কবে। এখনো তা ছাপানোর ব্যবস্থা করেন নি! কিন্তু মোল্লারা আলা হযরতের (রা.) নামে তাবিজের কিতাব লিখে বাজারে ছেড়ে দিয়েছে!" আনসারী সাহেব হুজুরের মুখে শোনা কথাটি আমি নিজেই শায়খুল ইসলামের মুখেও তাঁর কোন এক লেকচারে শুনেছি বলে আমার মনে হচ্ছে।

আমার ধারণা যদি সত্য হয়- সৈয়দী 'আলা হযরতের (রা.) ইলমী ওয়ারিস' শায়খুল ইসলাম ড. তাহিরুল কাদেরীর সাথে ভারত-পাকিস্তানের 'তাবিজী মোল্লা'দের দ্বন্দ্বের শুরুটা এখানেই। এর পর থেকে ভারত-পাকিস্তানের আলেমরা শায়খুল ইসলামের ওপর এমন কোন 'তোহমত' বাকি নেই যে- দেননি। শতধা বিভক্ত এবং নিজ নিজ খানকাহ বা এদারাতে ভক্ত পরিবেষ্টিত সুন্নী আলেম সমাজ শায়খুল ইসলাম ড. মুহাম্মদ তাহিরুল কাদেরী সম্পর্কে 'আগ বগোলা' হয়ে গেলেন! গাউছের (রা.) এক আদনা গোলামের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেন- ভক্তের দৃষ্টিতে বাঘা বাঘা আলেমগুলো। যারা সব সময় আসমানের ওপরে আর জমিনের নিচের ওয়াজ ও লেখনি ছাড়া আর কিছুই লিখতে বা বলতে পারেন নি। ইসলামের অনিন্দ্য সুন্দর রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, বিচারনীতি, ইসলামী ঐক্য ও সংহতি, এবং 'মুসলিম ও অমুসলিমদের সাথে পারষ্পরিক সম্পর্ক', আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, অপরাধ ও শাস্তির ইসলামী বিধান ইত্যাদি জীবন ঘনিষ্ট বিষয়ে সম্পূর্ণই অজ্ঞ। তিনি সব বিষয়েরই ইসলামের আলোকে অভিনব ব্যাখ্যা দিয়ে প্রচুর লিখলেন এবং পৃথিবীর সর্বাধিক লেকচার দিলেন। তারপর কূপমণ্ডুক, হামবড়া ও হাসদী সেই অজ্ঞদের চক্ষুশূল হলেন। কিন্তু খোদার এই কারিশমা, মুস্তাফার (দরুদ) এই মুজিযা, মওলা আলীর ইলমের দরোজার এই ভিক্ষুক, গাউছ (রা.) ও খাজার (রা.) মারিফাত সাগরের এই 'বিন্দুজল' এবং সৈয়দী আলা হযরতের (রা.) এই 'ইলমী ওয়ারিস'কে রুখার সাধ্য কার? (বাকি লেখাটি পড়ুন- আগামী পর্বে)

বি.দ্র.: মিনহাজুল কোরআন নিয়ে ষড়যন্ত্র নস্যাত করতে এবং কূপমণ্ডুকদের চৈতন্য ফিরিয়ে আনতে লেখাটি বেশি বেশি শেয়ার করুন। কপি করে অবিকৃতভাবে নিজদের টাইমলাইন থেকে একযোগে পোস্ট করুন। বিভিন্ন পেইজ ও গ্রুপে দিন। লেখাটি ব্লগে পড়তে ক্লিক করুন-

ছবি পরিচিতি:
১. মুহতারাম সায়্যিদ আলী আব্বাস বুখারী, প্রেসিডেন্ট, মিনহাজুল কোরআন ইন্টারন্যাশনাল, ইউ.কে।
২. মুহতারাম প্রকৌশলী মকসুদ মুহাম্মদ নাসির, মিনহাজিয়ান, ফ্লোরিডা, ইউ.এস.এ।

তারিখ: ০২ মে, ২০১৭ খৃ.
আবুধাবি, ইউ.এ.ই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.