![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এলাকার বর্ষীয়ান ইভটিজার আক্কাছ খান, সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে হিন্দি সিনেমার গান ছেরে চিংড়ি মাছের মত লাফাচ্ছে। আজ সে ঈদের চেয়ে বেশী খুশী তাই একটু পর পরই ঠোট জোরা প্রসস্থ করে দাত দেখাচ্ছে। কিছুক্ষন পরেই মোবাইল কন্যা জলি কাপুরের সাথে দেখা করার কথা। মেয়েটার সাথে মোবাইলেই পরিচয় তারপর থেকেই লাইলী-মজনুর প্রেম। এর আগে কখনই মেয়েটার সাথে সরাসরি দেখা হয় নাই তাই কয়েকদিন ধরেই উত্তেজনায় আক্কাছের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। মেয়েটাও অনেকটা আক্কাছের মতই আল্টা মর্ডান। আসল নাম জলি আক্তার, হিন্দি সিনেমা দেখে নাম হয়েছে জলি কাপুর। আক্কাছেরও ঐ একই অবস্থা ছোট বেলায় নাম ছিল আক্কাছ মিয়া হিন্দি সিনেমার প্রভাবে হয়েছে আক্কাছ খান।
অনেকেই এজন্য হিন্দি সিনেমা বা স্যাটেলাইট চ্যানেলকে দায়ী করতে পারেন। বলতে পারেন এই হিন্দি সিনেমার কারনেই তাদের সংস্কিতি আমাদের সমাজে প্রবেশ করছে এবং যুব সমাজও এর ভালর বদলে খারাপ দিকটাই লুফে নিচ্ছে যার ফলে বাঙ্গালী হারাতে বসেছে তার আপন সংস্কিতি। আমাদের সংস্কিতিতে বড়কে সম্মান করা, ছোটকে স্নেহ করা এবং মানুষে মানুষের সেই মমত্ব বোধ, নৈতিকতা এখন যেন প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে তাইতো বিশ্বজিতের মত আসহায় মানুষকে মরতে হচ্ছে বিনা কারনে।
চলচ্চিত্র একটা দেশের সংস্কিতি বিকাশের সবচেয়ে বড় মাধ্যম। অথচ আমাদের চলচ্চিত্রে ঘুরে ফিরে সেই একই কাহিনী। নায়ক গরীব, গেরেজে কাজ করে, নায়িকা বড়লোকের একমাত্র কন্যা। নায়িকা দুমধারাক্কা ঘাড়ি চালিয়ে এসে দুনিয়ার আর কোন জায়গা পায় না, নায়কের পাছায় এসে ধাক্কা মারে। প্রতিবাদী নায়ক ঝাঝালো কন্ঠে বলে “মেম সাহেব, চোখ কি হাতে নিয়ে ঘুরেন! গরীব কে কি মানুষ মনে হয় না!!” নায়িকা এবার রেগে গিয়ে বলে উঠে “ছোট লোকের বাচ্চা তুই জানিস আমি কার মেয়ে? আমি চৌদুরী সাহেবের মেয়ে। আমার ডেডি জানলে তোকে কুকুরের মত গুলি করে মারবে ,ইডিয়েট, স্টুপিড” নায়ক এবার ইংলিশে বলে উঠে “ফার্দার ডোন্ট স্পিক ইংলিশ উইথ মি!” নায়িকা এবার নরম সুরে বলে “তুমি ইংলিশ জান! তুমি আসলে কে?” নায়ক বলে “আমিতো বিয়ে পাশ! চাকরী পাই নাই তাই গেরেজে কাজ করি।” নায়িকা শুনে মনে মনে ভাবে আহারে এই এরকম একটা তাগরা যুবককেইতো এতদিন খুজছিলাম। বাসায় গিয়ে সারারাত কোলবালিশ ঝরিয়ে ধরে বিছানার এপাশ-ওপাশ করতে থাকে নায়িকা তারপার কল্পনাতে গান। এই ধরনের গাজাখরি গল্প একের পর এক দেখিয়ে নির্মাতারা মানুষের মনে বিরক্ত উৎপাদন করেছে। তাই মানুষও দেশীয় চলচ্চিত্র থেকে মুখ ফিরিয়ে ঝুকছে হিন্দি সিনেমার দিকে।
****
আক্কাছ বন্ধুকে দেখেই হাতির সমান দন্তগুলো বের করে কেলাচ্ছে। আক্কাছের এই অকারনে দন্ত প্রদর্শনী দেখে তার বন্ধুর আর বুঝতে বাকী রইল না যে আক্কাছ নতুন কোন কুবদ্ধি নিয়ে এসেছে। কতক্ষন ধরে অপেক্ষা করছিস? বলল আক্কাছের বন্ধু।
“অনেকক্ষন হল। জানিসতো আজ ঐ মেয়েটার সাথে প্রথম দেখা করার কথা। তাই কেমন জানি ভয় ভয় লাগছে।”
“হুম! দেখা করবি ভাল কথা। তুই এলাকার জাঁদরেল ইভটেজার তোর একটা দাম আছে। যেনতেন মেয়ের সাথে প্রেম পীরিতি করলেতো প্রেষ্টিজ থাকবে না! কেমন মেয়ে , কি করে কিছু জানিস?” বলল আক্কাছের বন্ধু।
“মেয়ে ভাল, সারাদিন ফার্মের মুরগীর মত ঘরে চিৎ হয়ে শুয়ে গান বাজনা শোনে এবং কাব্য চর্চা করে,কাম কাজ করে না ।কাজ করব গরীব মানুষ, বড় লোকের কিসের কাজ? তাই কেউ রান্না-বান্নার কথা জিজ্ঞেস করলে ভাব নিয়ে বলে ‘আমি রান্না জানি না।’ আর একটা মজার ঘটনা ঘটছে ,কিছুদিন আগে ভুলে রান্না ঘরে ঢুকে বাইন মাছ দেখে নাকি অজ্ঞান হয়ে গেছিল। সারা জীবন বাবুর্চি রান্না করে দিছে তাই গিলছে। হঠাত জীবন্ত মাছ দেখে এই অবস্থা। ” কিছুটা ভাব নিয়ে বলল আক্কাছ।
“ওরে আক্কাছ তুই এতদিন পর একটা কাজের মত কাজ করলি। যোগ্য একটা মেয়ে খুজে বের করছিস। শোন, যেভাবেই হোক এই মেয়েকে পটাতেই হবে তাহলে রাজ্য আর রাজকন্যা দুটোই পাবি। মেয়েটাকে কাব্য শুনিয়ে দিস যেহেতু কবি মেয়ে। কাব্য দিয়েই আক্রমন করতে হবে । বুঝলি? ”
“হুম জানি এর জন্যতো আমি কবিতা চর্চা চালিয়ে যাব চিন্তা করছি। কি নিকে লেখব সেটাই ভাবছি! ”
“তুই যেহেতু কাব্য চর্চা করবি তাহলে কবি কাজী নজরুলের ইসলাম এর নামের আদলে তোর নিক হতে পারে কাজী আক্কাছ ইসলাম অথবা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আদলে হতে পারে আক্কাছ ঠাকুর।”
আক্কাছ একটু ভেবে বলল “আমি নামকরা ইভটেজার। আমি হব ব্যাতিক্রম। আচ্ছা হাইব্রিড হলে কেমন হয় এই যেমন কাজী নজরুলের ইসলাম এর কাজী আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঠাকুর নিয়ে আমার নাম হবে কাজী আক্কাছ ঠাকুর! নামটার মধ্যে একটা ভাব আছে! ”
“কাজী আক্কাছ ঠাকুর , মারাত্বক একটা নিক হইছে। তোর প্রতিভায় আমি মুদ্ধ।”
****
আক্কাছ মেয়েটাকে দেখে ‘থ’ হয়ে দারিয়ে আছে। মেয়েটা দেখতে উচালম্বা তার উপর মারাত্বক সুন্দরী। ঠোটে লাল লিপষ্টিক, চুলগুলোও বড় বড় । পরনে জিন্স সাথে লাল রঙয়ের একটা টি শার্ট। বর্তমানে অতি আধুনিক মেয়ে বলতে যেমন বুঝায় আরকি । “আক্কাছ ভাইয়া চলুন হেটে হটে কথা বলি” বলল মেয়েটা। তারপর দুজন হাটতে থাকল সবুজ মাঠ দিয়ে। পরিবেশটাও চমৎকার, কিছুক্ষন আগে হালকা বৃষ্টি হয়েছিল তাই আকাশটাকে দেখতে দারুন লাগছে। কিছু বলছেন না কেন আক্কাছ ভাইয়া?
আক্কাছ কিছুটা বিরহী ভাব নিয়ে বলল “আমিতো তোমার উপর অভিমান করছি? কোন কথা বলব না!”
“আক্কাছ ভাইয়া আমি করছি?” বলল মেয়েটা।
“তুমি আমাকে ‘ভাইয়া’ ডাক আর ‘আপনি’ করে বল কেন? ” অভিযোগের সুরে বলল আক্কাছ।
“হি-হি, আমার সরম করে, পরে বলব তুমি করে। আচ্ছা আক্কাছ ভাইয়া আপনি গান পছন্দ করেন না? আমি কিন্তু গান অনেক পছন্দ করি ! ” বলল মেয়েটা।
আক্কাছ মেয়েটাকে ইম্প্রেস করার জন্য বলল “তাই নাকি! তোমার সাথে দেখি আমার দারুন মিল! আমার স্বপ্ন আমি গায়ক হব। সামনের মাসে গানের প্রতিযোগিতা মূলক অনুষ্টান ‘পচা আন্ডা ওয়ান’ শুরু হবার কথা। আমি সেই খানে অংশগ্রহণ করব চিন্তা করছি। ”
“ওমা আক্কাছ ভাইয়া তাই। আপনিতো বড্ড দুষ্টু আগে বলেননি কেন? ” আহ্লাদ করে বলল মেয়েটা।
“তোমাকে সারপ্রাইজ দিব ভাবছিলাম! শোন আমি গায়ক হবার পর কিন্তু আমার নাম সামান্য পাল্টাব ভাবছি। জাষ্টিন বিবাবের আদলে আমার নাম হবে জাষ্টিন আক্কাছ” কিছুটা ভাব নিয়ে বলল আক্কাছ।
“হি-হি, খুব মজা হবে!” বলল মেয়েটা।
এভাবে বিভিন্ন রকমের মিষ্টি মধুর কথা বলতে বলতে হঠাৎ আক্কাছ ঠাস করে আছার খেয়ে পরে গেল। আছার খেয়ে আক্কাছের কমরের অবস্থা বারোটা বেজে গেছে। মেয়ে বলল “কি হয়েছে আক্কাছ ভাইয়া? ব্যাথা পাননিতো?” আক্কাছ মনের দুংখ্য মনে চেপে মেয়েটাকে খুশী করার জন্য কবিতার ভাষায় বলল “বৃষ্টিযুক্ত তুলতুলা মাটিতে থপাস করে পরিয়া গিয়া কমরেতে সুখের ব্যাথা অনুভুত হইতেছে। ” আক্কাছ কবিতা শেষ করতে না করতেই মাঠায় ডান্ডা দিয়ে কে যেন পিছন দিক থেকে বারি মারল। আক্কাছ আসতে আসতে নেতিয়ে পরল, অনেক জোর করেও চোখ খুলতে পারছে না।
****
আক্কাছের মুখ বাধা একটা নির্জন ঘরে, চার পাচ জন হকি ষ্টিক দিয়ে ইচ্ছা মতন পাইকারি হারে রাম ধোলাই দিচ্ছে। মেয়েটা সামনে বসে আক্কাছের কলার চেপে ধরে বলল হারাম জাদা তরে পটাইতে অনেক কষ্ট হইছে, তুই আমাদের হাতে কিডনাপ এখন। মুক্তিপণ পাওয়ার আগ পযর্ন্ত এখানেই আটকা থাকবি। আক্কাছ কইতেও পারে না আবার সইতেও পারছে না, আক্কাছের অবস্থা হল ছেরে দেন আপু কেধে বাচি! (শেষ)
(কালেক্টেড)
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৫৯
আতিফ আসলাম বলেছেন:
২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩০
আহসান২০২০ বলেছেন: কোপাইন্না পোষ্ট।
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫০
আতিফ আসলাম বলেছেন:
৩| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৭
লিন্কিন পার্ক বলেছেন:
আহসান২০২০ বলেছেন: কোপাইন্না পোষ্ট।
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৫১
আতিফ আসলাম বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২৪
জীবন্মৃত০১ বলেছেন: খিক খিক খিকজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজজ