নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের সম্পর্কে আর কি লিখবো, অন্যেরা যা ভাবছে তা-ই শেয়ার করবো...
-হাহাহাহাহা...(নেপথ্য থেকে হাসির আওয়াজ ভেসে আসছে)
-কে, কে হাসে?
-হাহাহাহা...আমি হাসি...আমার নামও হাসি...হিহিহিহি
-এত হাসির কি হলো? এত হাসছ কেন?
-হাসব না? একশ বার হাসব। হাজার বার হাসব। এখন আমি আঙুলে 'ভি' চিহ্ন দেখিয়ে হাসব...হাহাহা...
-'ভি' চিহ্ন দেখিয়ে হাসতে হবে কেন?
-রাজাকার কসাই কাদের মোল্লার ফাঁসির আগে দুই আঙুলের 'ভি' চিহ্ন দেখিয়ে হাসতে পারলে আমি পারব না কেন?
-ঠিক আছে, ইচ্ছামত হাস, কিন্তু কাদের মোল্লার সাথে তোমার হাসির কি সম্পর্ক। আর নামটাও হাসি রেখেছ কেন?
-আরে বাংলাদেশ তো হাসিরই দেশ। হাসতে হাসতে জান শেষ। পেটে ভাত নাই, তাও বাঙালি হেসে কুটি কুটি। ফাঁসি কাষ্ঠে ঝুলেও বাঙালি হাসে। ৭১ সালে বেয়নেটের খোঁচা খেয়েও বাঙালি হাসতে হাসতে বলেছে 'জয় বাংলা' আর হাসতে হাসতেই মরেছে। কাদের মোল্লারা তখন 'জিয়ো পাকিস্তান' বলে হাসতে হাসতে বাঙালি মেরেছে। এই অপরাধের সাজা এতদিনে পেয়েছে...তাই আমারও প্রবল হাসি পেয়েছে।
-তোমার 'হাসি' নামকরণের সার্থকতা কি?
-আরে, আমি তো হাসি না। ৪২ বছর দম বন্ধ করে ছিলাম। হাসতেই ভুলে গেছিলাম। স্বাধীনতার শত্রুরা এদেশে জাঁকিয়ে বসবে ভাবতেই পারি না। ত্রিশ লাখ মানুষ মেরে, শত মা বোনের ইজ্জত লুটে, বুদ্ধজীবীদের হত্যা করে দেশকে পঙ্গু করে পতাকাওয়ালা গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াবে তা মেনে নেওয়া যায় না।
-কিন্তু নামটা তো বলেছ হাসি...তাহলে হাস না বললে কেন?
-হাসব কিভাবে? জাতির জনকের সপরিবারে হত্যার বিচার হয়েছে...সবাইকে ফাঁসি দেওয়া যায়নি। অনেকে পলাতক। তারা বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করছে। স্বাধীনতার সময় লক্ষ লক্ষ লোকের হত্যাকারীদের বিচার এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। মানবতা বিরোধী অপরাধীরা ষড়যন্ত্র করছে। জঙ্গীবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠছে।
-এত ষড়যন্ত্রের পরেও তুমি এখন হাসছ যে...
-আজ আমি হাসছি লক্ষ লক্ষ শহীদ আত্মার পরিবারের সাথে। ৭১ সালে হারানো স্বজনদের বাবা-মা-ভাই-বোনেরা কাদের মোল্লার ফাঁসির পর প্রাণ খুলে হেসেছে...তাই আমিও হাসছি। আরও যতজনের বিচার হবে...প্রতিবারই আমি হাসব।
-ঠিক আছে তুমি যত ইচ্ছা হাস, কিন্তু দেশের পরিস্থিতি তো খুব একটা ভালো ঠেকছে না। সাধারণ মানুষের মুখে হাসি নেই।
-সাধারণ মানুষ চায় যুদ্ধাপরাধীর বিচার হোক, সাধারণ মানুষ চায় দেশে শান্তি বিরাজ করুক। কিন্তু বিরোধীরা তা চায় না। তারা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করেই যাচ্ছে। স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে হাত মিলিয়ে তারা ষড়যন্ত্র করছে। তাইতো সাধারণ মানুষের মুখে হাসি নেই।
-কাজে কর্মে বেরিয়ে নিরীহ মানুষগুলো পেট্রোল বোমায় জীবন্ত দগ্ধ হচ্ছে। বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পত্র পত্রিকা, টেলিভিশনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোর আহাজারি আর কান্নার মুখ। শরীরে পোড়া ক্ষত নিয়ে শ'খানেক মানুষ হাসপাতালের শয্যায়। দুরু দুরু বুকে মানুষগুলো কাজে কর্মে বের হয়। কেউ লাশ হয়ে ফেরে, কেউ বা ককটেলে আহত হয়। কোথাও হাসির চিহ্ন নেই। তাহলে বাঙালি কি হাসতে ভুলে গেল?
-বাঙালি খুব সুখী একটা জাতি। শত দুঃখ দুর্দশায়ও তারা সুখেই থাকে। ভোট আর ভাতের অধিকার নিশ্চিত করতে পারলেই তারা সুখী হয়ে যাবে আর প্রাণ খুলে হাসবে।
-৪২ বছরেও বাঙালি এ অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি। আর কবেই বা পারবে তারও নিশ্চয়তা নেই। বিদেশী কোনো ষড়যন্ত্র বাঙালির হাসি মুছে দিচ্ছে নাতো!
-হাহাহা...বিদেশী ষড়যন্ত্র! হাহাহা...(হাসির প্রস্থান)
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০৬
পাঠক১৯৭১ বলেছেন: প্রেজেন্টেশন নাটকীয় করতে গিয়ে বিশ্রী করে ফেলেছেন!