নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পড়াশোনা করি। লেখালেখি করি। চাকরি করি। লেখালেখি করে পেয়েছি ৩টি পুরস্কার। জাতিসংঘের (ইউনিসেফ) মীনা মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড ২০১১ ও ২০১৬ প্রথম পুরস্কার। জাদুর ঘুড়ি ও আকাশ ছোঁয়ার গল্পগ্রন্থের জন্য অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৬।

বিএম বরকতউল্লাহ

জানতে চাই।

বিএম বরকতউল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুঃসাহসী হাঁসের ছানা

১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩১


হাঁসের ছানাটি বাড়ি থেকে বেরিয়ে সোজা সড়কে গিয়ে উঠল। সে এত জোরে হাঁটছে যে ওর পা দুটো দেখাই যাচ্ছে না।
একটি শেয়াল ছানাটিকে দেখে মনের আনন্দে বলে উঠল, বাহ্ আজকের সকালটা দারুন। খিদের পেটে হাঁসের ছানার দেখা পেয়ে গেলাম।
হাঁসের ছানাটি বলে উঠল, আমার যাত্রাটাও শুভ। কারণ আমাকে এগিয়ে দেওয়ার জন্য একটি শেয়াল সড়কের আড়ালে হাঁটছে।
শেয়াল বলল, তুমি হন হন করে কোথায় যাচ্ছ শুনি?
সাগরে। বলে ছানাটি আরও জোরে হাঁটতে লাগল।
কলপাড়ের গর্ত আর ডোবা থাকতে সাগরে কেন? বলল শেয়াল।
হাঁসের ছানা বলল, আমি এত ছোট গর্তের মধ্যে পড়ে থাকব কেন? আমি সাগরের বিশাল ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করে বড় হব।
সাহস তো কম না তোমার, বলল শেয়াল। দাঁড়াও, আমার একটি কথা শোনো।
দাঁড়াবার সময় নেই আমার। চলো হাঁটতে হাঁটতে কথা বলা যাক।
শেয়াল অবাক হয়ে দেখল, ছানাটির মধ্যে ভয় বলতে কিছু নেই। ছানাটি যেমন চটপটে তেমনি সাহসী। ছানার কথা শুনে শেয়াল খুব মজা পেল। সে ছানাটির সঙ্গে হাঁটতে লাগল।
কিছু দূর যাওয়ার পর শেয়াল হঠাৎ পেছনের দিকে দৌড়তে লাগল।
কে রে তুই, দাঁড়া, গর্জন করে বলল সামনে দাঁড়িয়ে এক সিংহ।
ছানাটি বিরক্ত হয়ে বলল, উফ্ তুমি আবার কে?
আমি সিংহ। আমাকে দেখে তুমি যে সালাম দিলে না!
তোমাকে সালাম দিব কেন? বলল ছানাটি।
কারণ আমি হলাম পশু রাজা, বলল সিংহ।
পশু রাজা! আপনমনে বলল ছানাটি। তারপর সে দাঁড়াল এবং রাজাকে সালাম করল। আর বলল, ভ্রমণে বের না হলে অনেক কিছুই আমার দেখা জানা হতো না। এখন রাজার দেখাও পেয়ে গেলাম।
আমার মায়ের মুখে পশুরাজার অনেক গল্প শুনেছি। সে কি দারুন মজার গল্প!
সিংহ বলল, তুমি বেশ চটপটে আর সাহসী। দারুন কথা বলতে পার তুমি। পশু রাজা সম্পর্কে কী গল্প শুনেছ তা আমাকে শোনাও তো দেখি।

দুই.
ছানা আর রাজা পাশাপাশি হেঁটে যাচ্ছে আর গল্প করছে। ওরা চলে গেল একটি খালের পাড়ে। খালটি পার হয়ে একটু সামনে গেলেই সাগরের দেখা মিলবে। খালের পাড়ে গিয়ে সিংহটি থেমে গেল। ছানাটি অবাক হয়ে বলল, খালের পানিতে খেজুর গাছের মতো এগুলো কী ভাসছে?
এগুলো ভয়ংকর কুমির। পানিতে নামলেই ঝাপিয়ে পড়বে ওরা। চলো ফিরে যাই আমরা।
ছানাটি বলল, না, আপনি চলে যান, আমি খাল পাড়ি দিয়ে সাগরে যাব।
রাজা বলল, তোমাকে বিপদের মুখে ফেলে আমি চলে যাব না। দেখি তুমি কীভাবে এই খাল পার হও।
ছানাটি এক লাফে নেমে পড়ল খালের পানিতে। দুই দিক থেকে হা করে ছুটে আসছে কুমির। কাছে আসতেই ছানাটি টুপ করে ডুব দিল। কুমিরেরা ছানাটিকে খুঁজতে লাগল। কুমিরের ধাপাধাপিতে খালের পানি ঘোলা হয়ে গেল। কিন্তু ধরতে পারল না।
অনেকটা দূরে ছানাটি ভেসে উঠে ডানে বামে তাকাচ্ছে। এই দেখে সিংহ রাজা খুশিতে লাফিয়ে উঠল। হঠাৎ হাঁসের ছানাটি এক লাফে খালের পাড়ে উঠে পড়ল। এবং বলল, কুমির বন্ধুরা, তোমাদের সঙ্গে হাবুডুবু খেলাটা আবার খেলতে আসব। চমৎকার ছুটতে পার তোমরা। এসব বলে হেলে দুলে ছানাটি সাগরের দিকে ছুটে চলেছে।

চার
বিশাল সাগর। বড় বড় ঢেউ ছুটে আসছে শব্দ করে। নীল আকাশে মেঘেরা ছোটাছুটি করছে। ছানাটি লাফিয়ে সাগরের পানিতে নেমে পড়ল। ওমনি সে ঢেউয়ের কোলে হারিয়ে গেল। খানিক পরে ভেসে উঠল সে। সে নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও ঝাপিয়ে পড়ল সাগরের জলে। শুকনো পাতার মতো সে ভেসে বেড়ায় ঢেউয়ের বুকে। আনন্দই আনন্দ।
একদিন একটি অঘটন ঘটে গেল। একটা ঈগল এসে ছানাটিকে ছোঁ মেরে নিয়ে উড়ে গেল।
ঈগলটি উঁচু পাহাড়ের মাথায় তার বাসায় গিয়ে বসল যেখানে দুটি ছানা হা করে বসে আছে খাবারের অপেক্ষায়।
শিকারটি বেশ ছোট কিন্তু দেখতে চমৎকার, বলে আরেকটা শিকার ধরার জন্যে মা-ঈগল চলে গেল।
ঈগলছানারা হাঁসের ছানার গায়ে ঠোকর দিতেই হাঁসের ছানাটি খলখলিয়ে হাসতে থাকে। আরে তোমরা আমাকে ঠোকর দিচ্ছ কেন? আমার পেটভর্তি গল্প আর গল্প। তোমরা ঠোকর দিলেই মজার গল্পগুলো হাসির সঙ্গে বেরিয়ে যায়। আর আমার গল্পগুলো শুনলে পরে তোমাদের আর খিদেই থাকবে না। এখন তোমরাই বলো গল্প শুনবে নাকি গল্পসুদ্ধ আমাকে খেয়ে ফেলবে।
ঈগলছানারা একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে বলল, মা যখন খাবার আনতে যায় তখন আমরা খুব একা থাকি। তখন আমাদের মন খুব খারাপ হয়ে থাকে। তুমি গল্প শোনালে আমাদের কোনো দুঃখই থাকবে না।
হাঁসের ছানার মুখে গল্প শুনে ঈসলছানারা খুব খুশি হয়ে গেল। ওরা বলল, ভয় পেয়ো না। আমরা তোমাকে মোটেও খেয়ে ফেলব না।
দিনে দিনে হাঁসের ছানা হয়ে উঠল ওদের প্রিয় বন্ধু।
ঈগলের ছানারা পাখা ঝাপটিয়ে উড়ো উড়ো ভাব দেখায়। ওদের আকাশে ওড়ার সময় হচ্ছে। ওদের সঙ্গে হাঁসের ছানাটিও আকাশে ওড়ার স্বপ্œ দেখে। সেও পাখা ঝাপটায়।
একদিন ঈগলের ছানারা পাখা মেলল আকাশে। হাঁসের ছানাটিও মেলল পাখা। ওরা আকাশের ওড়ার আনন্দে ছটফট করতে লাগল।
হাঁসের ছানাটি উড়তে উড়তে পাহাড়, সাগর, নদী বন পেরিয়ে অনেক দূরে চলে গেল। তারপর সে মেঘেদের সঙ্গে খেলা করতে করতে চলে গেল বাড়ির উপরে। সে সোজা নেমে এলো মাটিতে। একেবারে ওর মা ও ভাইবোনের কাছে।
ছানাটি কীভাবে পথের বাধা সরিয়ে সাগরে গেল এবং কীভাবে ভয়ংকর ঈগলের বাসায় থেকে বড় হয়েছে সব কথা খুলে বলল। ওর কথা শুনে একটি রাজহাঁস বলল, তোমাকে একজন বীর ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারছি না। তবে দুঃসাহস অনেক সময় ভয়ংকর বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ছানাটি বলল, দুঃসাহসই এনে দিতে পারে বীরের মর্যাদা। সবাই এই দুঃসাহসী হাঁসের ছানাকে নিয়ে আনন্দে মেতে উঠল।


মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: ওরে বাবারে----------

১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৪

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: ওরে বাবারে কেন?

২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৩

আহসানের ব্লগ বলেছেন: লেখাটি পড়ে কি মন্তব্য করবো বুঝতে পারছি না।

১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৫

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: স্বাগত।
কেন বুঝতে পারেছন না? ভাল লাগেনি বুঝি!

৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৩০

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সাহস করলে অনেক কিছুই করা যায় ।ভীতুরা কিছুই পারে না।
তার জ্বলন্ত উদাহরণ আমি।আমার সাথের বন্ধু আজ কত টাকার মালিক তারা নিজেরাই জানে না,আমার নাই এক টাকাও।

১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:১৫

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: স্বাগত।
আপনার মন্তব্য ভাবনার দুয়ার খুলে দিল!
শুভেচ্ছা নিন।

৪| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩১

তৃণাঙ্কুর আহমেদ বলেছেন: সামুতে ইদানিং বাচ্চারা ব্লগ পড়তে আসে বোধহয়।

১৯ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:১৬

বিএম বরকতউল্লাহ বলেছেন: স্বাগত।
ঠিকই বলেছেন। প্রতিটি মানুষের ভেতরেই একটি শিশু বাস করে।
আমার প্রীতি রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.