![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
A student of BUTex(Bangladesh University of Textiles)love very much for net surfing and blogging.
রাত পার হলেই পহেলা বৈশাখ।বাংলা বছরের প্রথম দিন।স্বভাবতই ধর্ম,বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে সকল বাঙালির জন্য অন্যতম একটা উৎসবের দিন।বিশেষ করে তরুন প্রজন্মের জন্য সবচেয়ে বেশি আনন্দ আর উৎসবের দিন।বছরের প্রথম দিনটিকে বরন করে নিতে সবাই যেন এদিন প্রকৃত বাঙালি সাজ ধারন করে,গ্রাম বাঙলার অপরুপ বৈচিত্রকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করে বিভিন্ন সাজসজ্জার মধ্য দিয়ে।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে মানুষের কেনা কাটার যেন একটা ধুম পড়ে যায়। কয়েকদিন বিশেষ করে গত ২ দিন থেকে দেশের সব মার্কেট আর বিপনী বিতানগুলো তে কেনাকাটার একটা উৎসব শুরু হয়েছে।পাঞ্জাবি,ফতুয়া,শাড়ি,থ্রি পিস সহ রকমারির দেশীয় ডিজাইন আর সংস্কৃতির জিনিস কেনা বেচা চলছে মার্কেটগুলোতে।সারাজীবন যারা দেশীয় ফ্যশন বা সংস্কৃতির জিনিস ব্যবহার করে না,তারা ও এখন এসব কেনাকাটায় ব্যস্ত।খুবই ভাল কথা।
কিন্তু এই পহেলা বৈশাখ শেষ হলেই তো অনেক একদিনের বাঙালি সব কিছু যাবে ভুলে।বৈশাখের এসব দেশীয় শাড়ি বা থ্রি পিছ ব্যবহার হবে ঘর মোছার কাপড় হিসেবে,আর পড়ে থাকবে ডাস্টবিনে। দেশীয় গান আর নাচ বাদ দিয়ে শুরু হয়ে যাবে হিন্দি গানের তালে তালে ব্রেক ড্যান্স আর ব্যলি ড্যান্সের অশ্লীলতা।তখন দেশীয় এসব গান,নাচ,পুতুল নাচকে মনে হবে খ্যাত আর গেঁয়ো ভুত।কারোর মাথায় মাথাল,পরনে লুঙ্গি থাকলে মনে হবে ' চাষা '। তখন আর বৈশাখের এত কিছু,গ্রাম বাংলা অর্থাৎ আমাদের নিজের সংস্কৃতির কথা মনে থাকবে না।কারন আমরা হলাম একদিনের বাঙালি!!
অনেক মানুষ বিশেষ করে ধনী ফ্যমিলির লোকজন আছে যারা বছরের বাকি ৩৬৪ দিন পান্তা ছুয়ে ও দেখে না।তারপর ও তারা কাল পান্তা ইলিশের স্বাদে মেতে উঠবে।যাক,তবু ও তো একটাদিন খাবে, তবু ও তো একটাদিন অন্তত বাঙালি সংস্কৃতি পালন করবে,এটাই অনেক কিছু!!
আমরা আজ অনেক আধুনিক।বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আমরা আজ অনেক আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছি।টিভি,কম্পিউটার, ইন্টারনেট,মোবাইল,গিটার,ড্রাম, বিনোদনের ইত্যাদির আধুনিক যন্ত্রপাতির আগমনের ফলে আমরা পুতুলনাচ,বায়োস্কোপ,যাত্রা, জারিগান,সারিগান,নাগরদোলা,নৌকাবাইচ ইত্যাদি প্রাচীন ঐতিহ্য আর বিনোদনের মাধ্যমকে ভুলতে শুরু করেছি। আসলে এটা একা কাওকে দোষারোপ করাটা ঠিক হবে না।এটা আধুনিকায়নের একটা ফলাফল।
মানুষ সাধারনত প্রয়োজন থেকেই শিক্ষা লাভ করে,নতুন কিছু জানে।আজ আমাদের সকল প্রয়োজন চাহিদা মেটাচ্ছে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি।তাই হয়তোবা প্রাচীন সেসব জিনিসগুলো আর দরকার পরে না।কিন্তু তার মানে এই নয় যে প্রাচীন ঐতিহ্য গুলো আমাদের মাঝে থেকে হারিয়ে যাবে।বাঙালির প্রাচীন ঐতিহ্য আর জীবন যাপনের সাথে প্রতিটি বাঙালির যোগসূত্র থাকা দরকার।নাড়ির টানে,মাটির টানে কখনোই সেগুলোকে বর্জন করা যায়না।নিজেদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখা এবং বাঁচিয়ে রাখা শুধু দায়িত্ব নয় বরং কর্তব্য;- আপনার,আমার এবং প্রতিটি বাঙালির।
সবাইকে অগ্রিম শুভ নববর্ষ ...
©somewhere in net ltd.