নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

You are the light of lights, while I wait blind in darkness, You are great and unfettered, while I am enclosed by seas.

তানজিল মোহাম্মাদীন

হিলিয়াম এইচই

আমি জানি আমি একজন মানুষ। এছাড়া আমি নিজে কি, তা আমি জানি না। আমি নিজেকে প্রতিনিয়ত আবিষ্কার করছি এবং করেই যাচ্ছি। মানুষ মানেই রহস্য।

হিলিয়াম এইচই › বিস্তারিত পোস্টঃ

ICC: International Cricket Council আর Indian Cricket Council দুটোই কি এক হবে?

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:০১

বর্তমানে ক্রিকেট খুবই জনপ্রিয় খেলা। প্রায় সব দেশেই ক্রিকেট চলে। তো, এতদিন আইসিসির টপ টেন সদস্যরা বেশ সুখে শান্তিতে দিন কাটাইতেসিল। কিন্তু হঠাৎ অঘটন ঘটে গেল ভারতের দাবীর জন্য। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান শ্রীনিবাসন যে দাবী গুলো উত্থাপন করেছেন তা অনেকটা এইরকম :



ভারতীয় বোর্ডের দাবি মূলত চারটি।

১. আইসিসি’র আয়ের যতোটুকু অংশ ভারত পায়, তা আরো বাড়াতে হবে।

২. প্রেসিডেন্ট পদের পাশাপাশি চেয়ারম্যান পদ বানাতে আইসিসিতে। আর প্রথম চেয়ারম্যান হবেন ভারতীয় বোর্ডের প্রধান এন শ্রীনিবাসন।

৩. তিন বছর পর পর ভারতে দিতে হবে আইসিসির কোনো না কোনো আসর।

৪. ভারত- অস্ট্রেলিয়া- ইংল্যান্ডকে দিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা।



এছাড়াও আছে পজিশনে ৯ এবং ১০ নাম্বার দলগুলো আইসিসি ১১ থেকে ১৪ নাম্বার দলগুলোর সাথে প্রতি ৪ বছর পরে চার দিনের কন্টিনেন্টাল কাপ খেলতে হবে। পরে চ্যাম্পিয়ন হলে বড় দলগুলোর সাথে খেলতে পারবে তবে এটা বড় দলের ইচ্ছানুযায়ী।



আসেন একটু কাটাছেঁড়া করি।

১. আইসিসি '১৪ সালে ভারতের জন্য বরাদ্দ রেখেছে ৭৬৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। মোবাইলের ক্যালকুলেটর টাকায় এই হিসাব টা দেখাচ্ছে না। আর অপরদিকে পাকিস্তান পাবে ৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর বাংলাদেশ পাবে মাত্র ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারতের প্রাপ্ত অর্থের ৭ এর পিছনে ৬,৮ সংখ্যারা গায়েব। তারপর ও কি ভারতের আরোও ডলারের প্রয়োজন? এতেও তাদের শান্তি হয় না। রাজার হস্ত হতে সমগ্র কাঙ্গালের ধন চুরির মতো একটা অবস্থা। ভারতের প্লেয়ারের দাম আছে। সবার আগ্রহ থাকে কিন্তু বাজেটে বাকী দেশগুলোর তুলনায় ভারত অনেক বেশীই টাকা পাচ্ছে।



২. প্রেসিডেন্ট পদের পাশাপাশি চেয়ারম্যান পদের দাবী করেছে। আবার প্রথম চেয়ারম্যান শ্রীনিবাসন নিজেই হতে চান। মানে নিজেই নিজের পদ চাইছেন আন্তর্জাতিক মহলে তাও জোর করে। অনেক টা ছিনতাইকারীর মতো। কিন্তু তিনি চেয়ারম্যান পদের মেয়াদ সম্পর্কে কিছুই বলেন নি। তার মানে এটাও হতে পারে দাবী গৃহীত হবার পর নিজ ইচ্ছায় মেয়াদকাল নির্ধারণ করতে পারেন। তিনি বলেছেন, এর ক্ষমতা ভারতীয় প্রেসিডেন্ট এর মতো হতে হবে। তিনি ওইপদে বসা মানে আইসিসিতে ভারতের একক আধিপত্য স্থাপন করা। আবার, ভবিষ্যতে কে কিভাবে চেয়ারম্যান হবেন তা সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু বলেন নি। এটা যেহেতু তার দাবী তাই এতে আরোও স্পষ্ট তার প্রয়োজন ছিল।



৩. তিন বছর পরপর ভারতে দিতে হবে আইসিসির কোন না কোন আসর। খুবই হাস্যকর। গত কয়েক দিনের খেলাগুলো আপনি হিসাব করেন। ভারত অস্ট্রেলিয়া সিরিজ অস্ট্রেলিয়া জিতলো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথেও ভারত জিতলো। এগুলো ছিল ভারতের নিজ মাঠে। তাদের প্লেয়াররা যার্কে এগিয়ে এলো। রোহিত ২০০ করলো। আশউইন সেরা অলরাউন্ডার হইলো। দাবী ছিল স্যার (!!) জাদেজা সেরা প্লেয়ার। কিন্তু যেই না ভারত দেশ থিকা বের হয়ে সাউথ আফ্রিকা গেল। টেস্ট তো হারলোই বরং একটা ওয়ানডেও জিততে পারলো না। আশউইনের বাইরের মাটিতে বোলিং একদম দেখার মত। ব্যাট হাতে রানও খুব নিতে পারে নাই। তাই ওর ১ নাম্বার পজিশন চলে যেতে পারে এই বয়ে বেঞ্চে বসাইয়া রাখলো। আর স্যার জাদেজাও সুবিধা করতে পারেন নাই। আবার নিউজিল্যান্ডে ধোলাই খাইতাসে। তাই এরা নিজের দেশেই কেবল খেলতে পারে আর ১ নম্বর পজিশনে থাকতে পারে। নইলে নিউজিল্যান্ড এর সাথে হারে কিভাবে?? তাদের পজিশন ত আরোও নিচে। তাই যদি ৩ বছর পরপর আইসিসির আসর হয় তাইলে, ভারত ১ নাম্বারে তো থাকবেই আর তাদের প্লেয়াররাও ১ নাম্বারে থাকলো। অপরদিকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এক্সটা কিছু অর্থও পাবে। বাহ, খুবই সুন্দর বুদ্ধি।



৪. তাদেরকে কেন বেশী ক্ষমতা দিতে হবে। তাদেরকে কি কেও টিজ করসে?? -_- একটা আন্তর্জাতিক সংঘটন হিসাবে সদস্যরা সকলের ক্ষমতা এক থাকার দরকার। আর সবচেয়ে বেশী থাকার উচিৎ সংঘটনের। এটা আমার মত। তবে তাদের ক্ষমতা যদি বাড়ানো হয় তাহলে একটা বৈষম্যের সৃষ্টি হবে। ওরা যা চাইবে তাই পাবে। এখানেও আধিপত্য বিস্তার করতে চাচ্ছে। ক্ষমতা বাড়ানো হলে এমনটা হতে পারে, ": হুজুর, আমরা আপনার সাথে খেলতে চাই। অনুমতি দিবেন?

: ও তোমরা!!! ঠিক আছে আসো।

: ভেন্যু টা যদি বলতেন?

: মুম্বাই আর চেন্নাই তে হবে।

: স্পন্সরশিপ টা?

: কেন স্টার হবে। আর টাইটেল টা সাহারাকে দাও।

: জ্বি হুজুর!!! "



তো যাই হোক বাংলাদেশ এখনই স্পষ্ট ভাবে কিছু বলে নি। কারণ, বিপদে আপদে ভারত ক্রিকেট বোর্ড আমাদের সাথেই ছিল। এশিয়া কাপ আর টি ২০ ওয়ার্ল্ড কাপ যখন কুয়াশায় আচ্ছন্ন ছিল, তখন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড আমাদের সাথে ছিল। শ্রীলংকায় এশিয়া কাপের জন্য বাংলাদেশ কে ভোট দিয়েছে ভারত। এতে করে যে বন্ধুত্বের সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য কিছু টা চুপ বাংলাদেশ। অপরদিকে চরম বিরোধিতার পর যদি বাংলাদেশ হেরে যায় তাহলে বাকি টিম গুলার কাছেও দলটা ছোট হবে। বিল পাশ হলে সকলের দয়ার উপরে থাকতে হবে। বিরুদ্ধে গেলে সেই দয়াটাও যাবে। অপরদিকে আমার মতে, বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেটে আগ্রহ কমে যাবে। কেননা খেলায় উপযুক্ত স্পন্সরশিপ পাবে না, টাইটেল পাবে না, ভালো টেলিকাস্ট পাবে না। ফলে লাভ ত হবেই না উল্টা ক্ষতির মুখ দেখতে হবে বিসিবি কে। যদিও বিসিবি বলছে এতে করে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হবে। কিন্তু আমাদের টাকার কি প্রয়োজন? আমরা চাই খেলা। বাংলাদেশ বাংলাদেশ বাঘা বাঘা টিমের সাথে খেলবে, আমরা আগ্রহ নিয়ে তা দেখবো। আমরা কথায় কথায় ২ ৩ টা পদ্মা সেতু বানিয়ে ফেলি আর বিসিবি কে চালাতে পারবো না? বিসিবি এখন যা আছে পরেও তাই থাকুক। একজন রিক্সাওয়ালা ঘাম ঝরিয়ে টাকা আয় করে। সেই টাকা দিয়ে একটা সিগারেট খেল। আর সেখান থেকে তার অজান্তেই কয়েক পয়সা ট্যাক্স হিসেবে চলে যাবে রাষ্ট্রের কোষাগারে, আর এসব টাকা দিয়েই ত চলে বিসিবির মতো হাজার প্রতিষ্ঠান। তাহলে তারা কোনভাবেই নিজেরা ডিসিশন নিতে পারেন না। এখন যদি গণভোট হয় তাহলে শতকরা ৯৯ জন মানুষ এর বিপক্ষে ভোট দিবে। অথচ কাল ২০ - ৩ ভোটে বিসিবি অনেকটাই এই বিলের পক্ষে চলে গেসে।



যে তিন জন এর বিপক্ষে তারা হলেন, আহমেদ সাজ্জাদুল আলম, শওকত আজিজ ও তানজিল চৌধুরী। সালাম করি এই তিন

জন কে। আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ওয়াক আউট করেছেন এই সভা থেকে। তিনি সুইসাইডাল এই পা চাটাচাটি দেখে বের হয়ে গেছেন রুম থেকে। তারাই চান বিসিবি কিংবা টেস্ট ক্রিকেট যেমনটা আছে, তেমনটাই থাক।



সর্বোপরি এখানে ভারতের বিশাল বড় একটা চাল আছে বলে ধরা যায়। কেননা ভাল প্লেয়ার থাকবে তো সবার নজর সেদিকেই থাকবে। শচীন টেন্ডুলকার, অজিত আগারকার, রাহুল দ্রাবিড়, ভিভিএস লক্ষণের মতো প্লেয়াররা অবসর নেয়ায় অনেকেই ভারতের টেস্ট ক্রিকেট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ইদানীং ভারত তাদের স্পন্সরশিপ ৫০% এরও কম দামে বিক্রি করেছে। যা এর আগে কখনোই হয় নি। তাই আসন্ন ক্ষতির দিক বিবেচনা করে বোর্ড এই বিল উত্থাপন করেছে যাতে চুক্তির অর্থগুলো দিতে কোন সমস্যা না থাকে আর স্পন্সরশিপ পাওয়া যায়।



তবে এখন বিশ্ব ক্রিকেট আমাদের দিকেই তাকিয়ে। জিম্বাবুয়ে তেমন কিছু বলে নি। পাকিস্তান, শ্রীলংকা, সাউথ আফ্রিকা আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই বিলের বিপক্ষে। আর তারাও আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। কারণ পানিটা ঘোলা হচ্ছে অনেকটা আমাদের নিয়েই। আমরা যদি পক্ষ নেই তাহলে অন্যান্যরা হতাশ হতে পারেন। তখন ভারত বলবে, যার গালে থাপ্পড় মারি ওয় কিছু কয় না তোমাদের এতো মাথা ব্যথা ক্যেরে? ICC র ক্ষমতা যদি FIFA র মতো হতো, তাহলে ভারত কখনোই এমনটা করতে পারতো না। তবে আমদের উচিৎ মাথা নত না করা। আমরা আমাদের দেশ নিয়ে গর্ব বোধ করি, আমরা আমাদের ক্রিকেট নিয়ে গর্ব বোধ করি। আমাদের দল অন্য সবার থেকে অনেক আগেই টেস্টে জয়ের মুখ দেখেছে। আমাদের দল ওয়ানডেতে সব দলকেই হারিয়েছে। আমরা নিজেদের মাঠে যেমন বাইরের মাঠেও তেমন বাঘ। আমরা কখনো মাথা নোয়াইনি এখনও নোয়াবো না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.