নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ নই, আমি আমার নই, আমি তোমার নই, আমি তুমিও নই

বেচারা

Walid

বেচারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোদ চশমায় স্বর্গ নরক দর্শন

২৯ শে মে, ২০১৬ সকাল ৯:৫৮

জনৈক আধুনিকা ভদ্রমহিলা(যিনি এই পৃথিবীতে শুধু জিপিএ-৫ চেনেন, চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে ফ্রি পেতে জিনিস কেনেন আর শুধু ইন্ডিয়ান সিরিয়াল দেখেন)। তিনি মারা যাবার পর বিধাতা তাকে জিজ্ঞেস করলেন যে তিনি স্বর্গে যেতে চান নাকি নরকে। আধুনিকা বললেন যে তিনি একবার ঘুরে দেখে আসতে চান বাস্তব অবস্থা, তারপর সিদ্ধান্ত নেবেন। তো তাকে প্রথমে স্বর্গে পাঠানো হল। তিনি গিয়ে দেখেন স্বর্গে শুধু বৃদ্ধ লোকেরা বসে আছে। কোনো গান নেই, সিনেমা নেই, টি-২০ নেই, হিন্দি সিরিয়াল নেই, শপিং মল নেই। শুধু খালাম্মা বয়সী কিছু মানুষ আর দাদু-দিদারা সেখানে বেতের চেয়ারে বসে আদা চা খাচ্ছে। কেউ বাতের ব্যাথায় কাতরাচ্ছে। কেউ কেউ উলের সোয়েটার বুনছে। ভিতরটা বেশ গরম। দুই আনা দরে হাত পাখা বিক্রি করছ ঢাকার হকাররা। আধুনিকার এই ম্যাড়মেড়ে সাধারন স্বর্গ পছন্দ হলনা। তিনি এবার গেলেন নরক দর্শন করতে। সেখানে গিয়ে দেখেন দুর হতে ব্যাপক হই-হুল্লোর, সিডিতে হিপহপ মিউজিক বাজছে। ঐশ্বরিয়া, সুস্মিতা, দিপিকা, সালমান, আমির, নায়ক রাজ্জাক হতে মায় আমাদের ময়ুরী তক সেখানে লাইভ অনুষ্ঠান করছে। জায়গায় জায়গায় পাব, বার, ক্যাসিনো। ক্রিকেট ম্যাচ চলছে। বিনা পয়সায় তরুন-তরুনীরা দল বেধে দেখছে। ঝা-চকচকে স্পোর্টস কারে করে মানুষজন ছুটে বেড়াচ্ছে। বিনা পয়সায় ফুসকা খাওয়ানোর জন্য বিক্রেতারা হাত ধরে অনুরোধ করছে। সর্বোত্র সেন্ট্রাল এসি’র মৃদু ঠান্ডা বাতাস। আমাদের আধুনিকা অভিভুত হয়ে গেলেন। তিনি ভাবলেন এমন এন্টারটেইনিং নরক ছেড়ে ম্যাড়মেড়ে স্বর্গে যাবার প্রশ্নই ওঠেনা। তিনি গেলেন ঈশ্বরের কাছে। কোনো দ্বিধা না করে ঈশ্বরকে বললেন তাকে নরকে পাঠাতে। ঈশ্বরের আদেশে দেবদূতরা তাকে নরকে নিয়ে তার দরজা খুললেন। দরজা খোলামাত্র ২০০ ডিগ্রি আগুনের আঁচে তার মূখ ঝলসে যাবার জোগাড় হল। কোনোমতে ভিতরে ঢুকে দেখেন সেখানে শুধু আগুন আর আগুন। চারিদিকে চিৎকার আহাজারি। কোথায় সেই সেন্ট্রাল এসি, কোথায় ঐশ্বরিয়া আর সালমান। যতদুর চোখ যায় খালি বাংলাদেশের পলিটিশিয়ান, চোর বাটপার, ঘুষখোররা লাঠিপেটা হচ্ছে পেটোয়া জল্লাদের হাতে। পানির বদলে আছে ঢাকার সুয়ারেজের ময়লা জল। হিপহপ মিউজিকের বদলে মানুষের আর্তনাদ। বিনা পয়সার ফুসকা তো নেইই উপরোন্ত সেই সুয়ারেজের পানিও ১ লাখ টাকা প্রতি বোতল হারে বিক্রি করছে ঢাকার ব্যবসায়ীরা। রাস্তাঘাটে কাদায় পথচলা দায়, গান নেই, সিনেমা নেই। তার দেখা সেই স্বর্গের কোনো নামগন্ধ নেই। তিনি ছুটে গেলেন দেবদূতদের কাছে। চিৎকার করে বললেন, আমাকে এখানে কেন এনেছ? আমাকে তো এই নরক দেখানো হয়নি। নরক তো অনেক সুন্দর ছিল। সেসব আরাম আয়েশ কই? দেবদূত হাসতে হাসতে বললেন, “ম্যাডাম ওটাতো ছিল নরকের বিজ্ঞাপন, এখন আপনাকে আসল জিনিস দেয়া হয়েছে।”
এই লম্বা গল্পটা বলার উদ্দেশ্য হল চটকদার কোনো কিছুতেই বিভ্রান্ত হবেন না। বিজ্ঞাপনে বিভ্রান্ত হবেন না। কোনো কিছুর জন্য হুমড়ী খেয়ে পড়বেন না। যাচাই করুন, বিবেচনা করুন, বিশ্লেষণ করুন। তারপর সিদ্ধান্ত নিন। বিজ্ঞাপন মানুষের মাথায় ভুত হিসেবে ঢুকছে। আপনার বিবেচনা ও বিবেককে নষ্ট করে দিচ্ছে। সচেতন হোন নিজের জন্য ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.