নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ নই, আমি আমার নই, আমি তোমার নই, আমি তুমিও নই

বেচারা

Walid

বেচারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্রাশ-ফলো-মোটিভেশন-গ্রূমিং নিয়ে সাম্প্রতিক ধুন্দুমার কান্ড: আমার বোধোদয়

২২ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৯:৫৬

চারদিকে বেশ হই হই চলছে এই বিষয়গুলো নিয়ে। আমি সাহস করে গা ভাসাতে পারলাম না চলমান স্রোতটাতে। আবার পুরো বিষয়টার বিপরীতেও যেতে পারিনি চোখ বুঁজে। কারন দু’পাশেই দেবার মতো প্রচুর যুক্তি আছে। পাশাপাশি আরেকটা ক্রেইজ চলছে বাংলাদেশে-ইমিটেট করার ক্রেইজ যার আবার পোষাকি নাম ভাইরাল। কেউ একটা কিছু করল বা কিছু একটা জনপ্রিয় হল, ব্যাস, সবাই ওটার পিছনে লাগলাম। নিজে হয়তো ভাল গান গাইতাম, দু’চারজন বোদ্ধা শ্রোতাও ছিল। যেই দেখলাম দেশে এখন মডেলিং করার ক্রেজ শুরু হয়েছে, অমনি নেমে পড়লাম মডেল হবার চেষ্টায়ও। মৌলিক কোনো সৃষ্টি খুব বিষয় না, যেটা মার্কেট পাচ্ছে সেটার অন্ধ অনুসরন। বিষয়ের গভীরতা জরুরী না।

ক্রেজ ফলো করার এই উন্মাদনা আমাকে বিভ্রান্ত করছে। ভাবলাম নিজের ভাবনাটাকে মেটাফোর বা রূপক দিয়ে বোঝাই। বোদ্ধা যারা তারা বুঝে নেবে। আর যারা মেটাফোর বুঝবে না, তারা ব্লেম করতে পারবেনা। আর তাছাড়া যারা ধরতে পারবে না, তাদের ক্ষেত্রে আমিও বুঝব, তাদের বোঝানোর চেষ্টা করাটাও হত ভুল। ছোট্ট ৫টা গল্প বলি। মন দিয়ে পড়ুন। ভাবুন। বুঝুন।
।।
গপ্প-১: একবার এক ওস্তাদের ক্লাসে শাগরেদ কিছুতেই সুর করে আরবী পড়ার কথা মনে রাখতে পারেনা। ওস্তাদ তার সাগরেদকে শিখিয়ে দিলেন, যখনি যা বলবি সুর করি বলবি যাতে সুর করাটা মনে থাকে। তো একদিন তার সাগরেদকে নিয়ে তিনি কোথাও রওনা দিলেন। সাথে তার বউ আর শাগরেদ। পথে একটা খালের উপর দিয়ে সাঁকো পার হতে হবে। ওস্তাদ আগে আগে উঠলেন সাঁকোতে। পিছনে তার বউ আর সাগরেদ। মাঝখানে যেতেই পা পিছলে তার বউ খালে পড়ে গেল। শাগরেদ পেছন হতে চিৎকার করে বলতে লাগল, “ওওওওওওও...........ওস্তাআআআআআআআআদ...............আপনা............র মাসুউউউউম ইশতিরিইইইইই..........খালেএএএএএ......র ভিতর পড়িয়া, হাবুডুবু.........উউউউ খাইয়া মরিতেছেেএএএএএ........। এতক্ষণে পুরা বাক্য শুনে ওস্তাদ পেছনে ফিরে দেখেন বউ তার পানিতে ডুবে সলিল সমাধি। ওস্তাদতো পারলে শাগরেদকে খুন করে। শাগরেদ বলল, কেন আপনি না আমায় বলেছেন সবকিছু সুর করে বলতে। সবসময় পরের শেখানো বুুলি অন্ধের মতো অনুকরন করলে তার পরিণতি এমনই হয়। একটু ক্রিয়েটিভ হোন, নিজের আইডিয়া কাজে লাগান।
।।
গপ্প-২: নাটকের রিহার্সাল চলছে। পান্ডূলিপীতে নায়কের ডায়লগ ছিল এমন, “খামোশ বেয়াদব, তোমার গর্দান নিতে পারি, তুমি জানো?” [সজোরে পদাঘাত]। অর্থাৎ “খামোশ বেয়াদব, তোমার গর্দান নিতে পারি, তুমি জানো.....বলা হলে নায়ক ভিলেনকে পা দিয়ে লাত্থি দিবে। তো নায়ক আবার সেইরাম বুদ্ধিমান, শিক্ষিত ও ক্রিয়েটিভ। সে মঞ্চে উঠে ডায়লগ দিল, “খামোশ বেয়াদব! তোমার গর্দান নিতে পারি, তুমি জানো? ব্রাকেটে সজোরে পদাঘাত?” অন্ধের মতো অন্যের অনুকরন বন্ধ করুন। নিজস্বতা সৃষ্টি করুন।
।।
গপ্প-৩: একবার স্কুলে ইন্সপেক্টর এসেছেন। তিনি সব ক্লাসে গিয়ে নানা প্রশ্ন করছেন। তো ক্লাস সেভেনে গেলেন। ভূগোল পড়ানো হচ্ছিল। ইন্সপেক্টর প্রশ্ন করলেন, বলতো, পৃথিবীর আকার কেমন?” ক্লাসে কেউ পারছে না। ভূগোলের স্যারের তো ঘাম ছুটে যাচ্ছে। হেডমাস্টারের লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে। তিনি একটু পিছিযে গিয়ে পকেট হতে তার নস্যির কৌটা বের করে তার মুখটা হাতের তালুতে রেখে আলগোছে ছাত্রদের দেখিয়ে ইঙ্গিত করতে লাগলেন। কেউ তার ইঙ্গিত ধরতে পারছে না। হঠাৎ বল্টু ধরে ফেলল তার ইন্ডিকেশন। সে লাফ দিয়ে উঠল। স্যার আমি বলি? ইন্সপেক্টর তো মহাখুশি। হ্যা বাবা বলো, পৃথিবীর আকার কেমন? ”স্যার পৃথিবীর আকার হেড মাষ্টার স্যারের নষ্যির কৌটার মতো।” সেই একই কাহিনী। অন্ধের মতো অনুকরন ও জেনারেলাইজেশন।
।।
গপ্প-৪: এই গপ্পটা ধার করেছি বন্ধুপ্রতীম Rumen Ahmed এর ওয়াল হতে। আরব দেশ ঘুরে বাড়ি ফিরে আসার পর এক ব্যাক্তি সবকিছু আরবিতে বলা শুরু করলো। বাংলায় বললে নাকি সহীহ হবেনা। এতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা পড়লো মহা ঝামেলায়। কোনভাবেই এই রোগ সারানো যায়না। শেষমেশ বাড়ির ছোট বউ একটা উপায় বের করলো। রাতে খেতে বসার পর উক্ত ব্যাক্তিকে ভাতের পরিবর্তে খেজুর পরিবেশন করা হলো। পরদিন সকালেও সেম। দুপুরেও সেম। রাতের বেলাও যখন একই অবস্থা দেখতে পেলো তখন ভদ্রলোক নিজে থেকেই আত্নসমর্পন করলেন।
।।
গপ্প-৫: পরীক্ষার হলে ভাবীর বোন আর ভাবীর দেবর মানে যারা দুই বেয়ান-বেয়াই পাশাপাশি বেঞ্চে ইতিহাস পরীক্ষা দিচ্ছেন। বাহির হতে তাদের জন্য পরীক্ষার মাঝখানে দূত মারফত নকলের চিরকূট পাঠালেন প্রথমে বেয়াই মানে দেবরের কাছে। চিরকূটের পিছনে ছোট্ট করে লিখে দিয়েছে, “তোমার দেখে লেখা শেষ হলে নকলটা বেয়ানকেও দিও। ”বেয়াই মানে দেবর তার পরীক্ষার খাতায় লিখে আসল, “সিরাজ যুদ্ধে পরাজিত হলেন।.................. তোমার দেখে লেখা শেষ হলে নকলটা বেয়ানকেও দিও।” তারপর বাকিটা ইতিহাস।

অন্যের জিনিস নিয়ে মাতামাতি করে অন্ধ অনুকরণ করলে তার ফল ভালো হয়না। বি ইয়োরসেলফ।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:৪২

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: সুন্দর কথা, যুক্তি, উপদেশ ভাল লেগেছে। ভাল থাকবেন।

২২ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৯

বেচারা বলেছেন: ভাল থাকার চেষ্টা করছি। ভাল রাখারও। ধন্যবাদ।

২| ২২ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লাগেনি।

২২ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৯

বেচারা বলেছেন: আমারও।

৩| ২২ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৬

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আমাদের শর্টকাট প্রজন্মই এমন। কেউ ভালো কিছু একটা করলে, সেটারে নকল আর কপি করে না পচানো পর্যন্ত থামবে না...

২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৯:৪৩

বেচারা বলেছেন: ওইযে, তালগাছটা সবাই চায় যে। তালগাছ যেখানে আমরা সেখানে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.