নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ- ই থাকতে চাই - বিদ্যুৎ; কবি, লেখক, কলামিস্ট আর ব্লগিং তো করিই সব সময়।

বিদ্যুৎ

আমি মানুষ-ই থাকতে চাই - বিদ্যুৎ

বিদ্যুৎ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গোটহার্ড টানেল হতে পারে ঢাকা মেট্রো রেলের জন্য অনুপ্রেরণা।

১১ ই মে, ২০১৭ সকাল ৮:০৫

জুরিখ শহর সুইজারল্যান্ড।

দক্ষিণ-মধ্য ইউরোপে ভূমধ্যসাগরের কোল ঘেঁষে আল্পস পর্বতমালা অবস্থিত। এটি দক্ষিণ ফ্রান্সের সমুদ্র সৈকত (মোনাকো কাছাকাছি) সুইজারল্যান্ড থেকে উত্তর ইতালি এবং অস্ট্রিয়ার মধ্যে এবং স্লোভেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, বসনিয়া ও হারজেগোভিনা, সার্বিয়া এবং মন্টেনিগ্রো-এর মধ্যবর্তী আকারের প্রায় ৭০০ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত - তারপর আলবেনিয়াতে শেষ হয় অ্যাডরিয়াইট সাগর এর উপকূলে । তবে এর মূল বিস্তর ভূস্বর্গ বলে খ্যাত অপূর্ব সুন্দর দেশ সুইজারল্যান্ডে। আমরা এই সুন্দর দেশ বলেই নয় শুধু আমরা সুইজারল্যান্ডকে জানি আরেকটি নামে বিশ্বের সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্থ অথবা দুর্নীতিমুক্ত দেশ হিসেবে।

উদ্বোধন এর সময় গোটহার্ড টানেল

সৎ মানুষ আর সুন্দর প্রকৃতির দেশ এই ভূপৃষ্ঠে মহান সৃষ্টিকর্তার এক সুন্দর নিদর্শন। সুইজারল্যান্ডের মানুষ যে শুধু সৎ তাই নয়, তাঁরা সভ্য আর কঠোর পরিশ্রমী সেই সাথে মেনে চলে ভয়ানক নিয়মানুবর্তিতা। ৪৮০৭ মিটার উঁচু এই পর্বত সুইজারল্যান্ডের জন্য এক অপার সৌন্দর্য যেমন, তেমনি দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য মারাত্মক প্রতিবন্ধকও বটে। তবে সেই প্রতিবন্ধকতা তাঁরা দূর করেছে এক অবিশ্বাস্য স্থাপনা তৈরি করে। আর সেটি হল গোটহার্ড টানেল। ৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ২ দশমিক ৩ কিলোমিটার গভীরে এই টানেল জাপানের সেইকান এবং ফ্রান্স ও ব্রিটেন এর মধ্য সংযোগকারী ইউরো টানেল বা চ্যানেল টানেল এর চেয়ে অনেক বড়। গোটহার্ড টানেল এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ট্রেন চলাচল টানেল।

গোটহার্ড টানেল ২.৩ কিলোমিটার গভীরে টানেলের একাংশ।

দীর্ঘ ১৭ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে ১২ দশমিক ২ বিলিয়ন সুইস ফ্রাঙ্ক ব্যয় করে এই দীর্ঘ টানেল শেষ করে। আমরা বাঙ্গালীদের জন্য বিস্ময়কর ব্যাপার হল নিদিষ্ট পরিকল্পনা মাফিক নির্ধারিত সময়ে এই টানেলের দুরূহ কাজ শেষ করেছেন। আরও অবাক হবেন জেনে যে দীর্ঘ ১৭ বছর কাজ করেছে, একাধিকবার সরকার পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু প্রকল্পের ব্যয় কিন্তু এক পয়সাও বাড়েনি। নির্ধারিত প্রকল্প ব্যয়ের মধ্য এবং নির্ধারিত সমায়ের মধ্যে তাঁরা এই বৃহৎ কর্মযজ্ঞ শেষ করেছেন গত বছর। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, পদ্মা সেতুর প্রকল্প ব্যয় ১০ হাজার ৮শ কোটি থেকে তিন দফায় প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে এখন ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকায় নেওয়া হয়েছে অথচ বলতে গেলে এখনও কাজ সেভাবে শুরুই হয়নি। কে জানে কোথায় গিয়ে থামবে!

আল্পস পর্বতমালার কিছু অংশ।

এই টানেল দ্রুতগামী ট্রেন চলাচলের জন্য ডিজাইন করে নির্মাণ করা হয়েছে। ২৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় ট্রেন চলতে পারবে। প্রতিদিন গড়ে ৩২৫ টি যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলতে পারবে। মিনাল থেকে জুরিখ এই দুই গন্তব্যের মধ্যে সময় কমবে এক ঘণ্টার বেশি। সেই হতদরিদ্র কৃষকের মত বলতে হয়, আমাদের ফসলের (টমেটো) দাম নেই, শহরে পণ্য গেলেই ৬০ টাকা কেজি। তো আমাদের সময়ের দাম নেই, পশ্চিমে গেলেই সময়ের অনেক দাম। হ্যাঁ এখানে সময়ের দাম অনেক বেশি। তাই তাঁরা সময় কাজে লাগাতে অসাধ্য সাধন করে। আমাদের অচল ঢাকা শহরে শুধু যানজটে পরে মানুষ কত সময় নষ্ট করছে একবার চিন্তা করা যায়।

গোটহার্ড টানেলের নক্ষশা

ইচ্ছা করলে ঢাকা শহরে পাতাল ট্রেন ব্যবস্থা চালু করতে পারে। টানেল ব্যবস্থার মাধ্যমে এই কাজ করা যেতে পারে। হয়ত অনেকে বলবেন এত টাকা কোথায় পাবে? ১৯৭২-৭৪ পর্যন্ত যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল সেখানেও কিন্তু টাকার অভাব ছিল না। ছিল চরম অব্যবস্থাপনা। রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়েছিল সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে। সেখ মুজিব ব্যর্থ হয়েছি তাঁর সোনার খনিকে চোরের খনি হতে বন্ধ করেতে। অর্থাৎ সেই সময়ও টাকার কোন অভাব ছিল না। এখন তো অবশ্যই না। আমাদের প্রায় ৩০ বিলিয়ন বৈদেশিক মুদ্রা রিসার্ভ আছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি। আমেরিকা রিজার্ভ ব্যাংক থেকে টাকা চুরি যায় অথচ এই টাকা অলস ফেলে না রেখে আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারে।


এই সুন্দর আল্পস পর্বতমালার ২.৩ কিলোমিটার নিচ দিয়ে গোটহার্ড টানেল।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মে, ২০১৭ সকাল ৮:২৮

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: দীর্ঘ ১৭ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে ১২ দশমিক ২ বিলিয়ন সুইস ফ্রাঙ্ক ব্যয় করে এই দীর্ঘ টানেল শেষ করে.......আমাদের দেশে যদি ১৬ বছর একই সরকার থাকে এবং এই কাজের প্রায় সবটাই শেষ করে শুধু ফিনিশিং এর কাজটাও বাকী থাকে অন্য সরকার এলে সেটা হবে পরিত্যক্ত হিরোইন সেবীদের আখড়া, আমরা আমাদের দেশের রাজনীতিকদের কাছ থেকে খুব ভালো কিছু আশা করতে সাহস পাইনা।

১১ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৩:১২

বিদ্যুৎ বলেছেন: ধন্যবাদ সাদা মনের মানুষ আপনাকে। আমরা কোন ক্ষেত্রেই অভাবী নয় শুধু ভাল রাজনৈতিক ক্ষেত্র ছাড়া। আমাদের সাধারণেরও অনেক দোষ আছে, আমরা ভাল মানুষ কে সাপোর্ট করিনা। কি রাজনৈতিক,সামাজিক এমন কি পারিবারিক কোন ক্ষেত্রেই না। কথায় আছে যেখানে গুণীজনের করদর নেই সেখানে গুণীজন জন্মায় না। আমাদের সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে রাজনৈতিক সহ সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভাল মানুষদের সহযোগিতার জন্য। আপনার এবং বই এর জন্য রইল শুভকামনা।

২| ১১ ই মে, ২০১৭ সকাল ১১:৩৫

মানবী বলেছেন: অপরূপা সুইজারল্যান্ডের মনোরম ছবি!

"আমাদের অচল ঢাকা শহরে শুধু যানজটে পরে মানুষ কত সময় নষ্ট করছে একবার চিন্তা করা যায়।"
- যতো টানেল আর যা কিছুই হোক ঢাকার জানযট সমস্যা দূরীকরণ খুব সহজ হবেনা। রাস্তা যতো প্রশস্ত আর ভীড়ের উপদ্রব যতো কম হবে সেখানে তথকথিত ভিআইপিদের জন্য যানবাহন চলাচল রুদ্ধ করা আর মিছিল মিটিং এর জন্য ততোটাই সুবিধা :-)

সুন্দর পোস্টের জন্য ধন্যবাদ বিদ্যুৎ।

১১ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৩:২৪

বিদ্যুৎ বলেছেন: অসংখ্যবার আপনাকে ধন্যবাদ। পোস্টটি আপনার ভাল লেগেছে জেনে আমিও খুশি হলাম। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে রাষ্ট্র রীতিমত ব্যর্থ। সকলের সম্মতিক্রমে আইন করতে হবে একমাত্র একটি বা দুইটি নির্দিষ্ট স্থানেই কেবল মিছিল মিটিং সভা সমাবেশ করতে পারবে। কোন অবস্থাতেই রাস্তায় মিছিল মিটিং সমাবেশ করা যাবে না। আমার মনে হয় তাতে অনেকটা যানজট এর ভোগান্তি কমবে।

৩| ১১ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৪০

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: আমাকে এক চালক বলেছিল, ভাইজান বাংলাদেশ আল্লায় চালাইন।

১২ ই মে, ২০১৭ ভোর ৬:১৭

বিদ্যুৎ বলেছেন: সব কিছুই আসলে তিনি চালান । ধন্যবাদ

৪| ১১ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৫

রিফাত হোসেন বলেছেন: দেশের একটা বন্দর ঠিকমত রাখতে পারছে না... :( আর পাতাল ... :)
আশা করা যায়, সবাই করে, আমিও করি।
সুন্দর ...

১২ ই মে, ২০১৭ ভোর ৬:২৩

বিদ্যুৎ বলেছেন: সব ঠিক হয়ে যাবে, হতাশ হওয়ার কিছু নেই। সময় মত সব ঠিক হয়ে যাবে। আমাদেরকে সেই সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। হতে পারে অপেক্ষা ধীরঘায়িত হবে তবে অবশ্যই আলোর দেখা মিলবে। ধন্যবাদ।

৫| ১১ ই মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৫

রিফাত হোসেন বলেছেন: জুরিখ শহর- সুন্দর

১২ ই মে, ২০১৭ ভোর ৬:২৫

বিদ্যুৎ বলেছেন: হ্যাঁ জুরিখ খুব সুন্দর। আসলে পুরো সুইজারল্যান্ড খুব সুন্দর। যেন স্বপ্নের দেশ।

৬| ১১ ই মে, ২০১৭ রাত ৮:২০

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: দুই পরিবার থেকে দেশ মুক্ত হলে সবই সম্ভব...

১২ ই মে, ২০১৭ ভোর ৬:৩০

বিদ্যুৎ বলেছেন: নিজ নিজ যোগ্যতা নিয়ে যদি এক পরিবারের সবাই থাকে তাতেও কোন সমস্যা নেই। সমস্যা হল অযোগ্যতাই যোগ্যতা যদি কারো বাপ বা স্বামী উত্তরাধিকার কেউ পেয়ে থাকে। তবে আমার বিশ্বাস রাহুর গ্রাস একদিন নিপাত যাবেই। শুধু আমাদের সবাইকে ভাল কাজ করতে হবে এবং কেউ করলে তাকে সহযোগিতা করতে হবে। ধন্যবাদ, শুভ কামনা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.