নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সব কিছুই প্রথমে দেখি ভাল লাগার দৃস্টি নিয়ে , অনুভব করি তার গুনাগুণে, সত্যটুকু করি গ্রহণ আর মিথ্যাটুকু বর্জন ।

বিলুনী

বিচরী স্বর্গ মর্ত পাতাল , উড়ি গাছের ডালে ডালে ঘুরী সামুর পাতায় পাতায় , মন খুলে করি অশ্বেশন যা চাই কিছু নিয়ে যাই , কিছু ফিরিয়ে দিয়ে যাই ।

বিলুনী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের সেরা আবিষ্কার ‘হরিধান’ এর উদ্ভাবক কৃষক হরিপদ কাপালি চলে গেলেন

০৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ২:০৪


ঝিনাইদহ সদর উপজেলার আহসাননগর গ্রামের হরিধানের উদ্ভাবক হরিপদ কাপালী (৯৫) আর নেই। বুধবার রাত ১টার দিকে আহসাননগর গ্রামের নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ১৯২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়ের এনায়েতপুর গ্রামে হরিপদ কাপালির জন্ম। পিতা কুঞ্জলাল কাপালী ও মা শিরোধনী অনেক আগে মারা যান ( সুত্র : দৈনিক জনকন্ঠ)

এই ধানের উৎপাদন খরচ কম, ফলন বেশি, পোকামাকড়ও কম লাগে। অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টির মাঝেও হরিধানের ফলন ভাল হয়। বিঘাপ্রতি ২০-২২ মন হারে ফলন পাওয়া যায়। এই ধানের ভাত যেমন স্বাদের, তেমনি এর বিছালিও খুব নরম। গরুও খায় ভাল। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ ঝুঁকে পড়ে এ ধানের আবাদে। সরকারের কৃষি বিভাগ থেকে হরিধানের বীজ সংগ্রহ করে পরীক্ষামূলকভাবে মহেশপুরের দত্তনগর কৃষি ফার্ম ও সাধুহাটি খামারে চাষ করা হয়। হরিধানের ফলন দেখে অবাক হয়ে যান কৃষিবিজ্ঞানীরা।

কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, হরিধান একটি বিশেষ জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান। হরিধান আবাদে কৃষক খুবই ভাল ফলন পাচ্ছেন। কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমেও এ ধানের প্রচার শুরু হয়। ফলে অল্পদিনের মধ্যে এর প্রসার ঘটে দেশব্যাপী।

লেখক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের মতে, বাংলাদেশের সেরা আবিষ্কার হরিধান। সম্প্রতি শাহবাগে ‘সায়েন্স ফিকশন বইমেলা’ উদ্বোধনকালে তিনি এই মত ব্যক্ত করেছিলেন। তিনি ওই অনুষ্ঠানে হরিধানকে বাংলাদেশের বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার বলে বর্ণনা করেন। হরিধানের আবিষ্কারকে দৃষ্টান্ত বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, ‘বাংলাদেশে বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার কী জিজ্ঞেস করলে, আমি বলবো হরিধান।
কৃষিতে অন্যন্য অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া সরকার তাকে একটি বাড়ি তৈরি করে দেয়। সেই বাড়িতেই স্ত্রী সুনিতা রানী (৭৫) ও পলিত পুত্র রুপকুমারকে নিয়ে থাকতেন তিনি। এলাকার মানুষ তাকে নিয়ে গর্ব করতেন।

তাঁর উদ্ভাবিত ‘হরিধান’ সারাদেশকে উপকৃত করেছে। তিনি মারা গেলেও রেখে গেছেন লালিত সন্তান ‘হরিধান’। তার শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।

গত ২৩ নভেম্বর ২০০৩ এ প্রথম আলোতে প্রকাশিত হরিপদ কাপালীর একটি সাক্ষাতকার

আমার স্মৃতি ধরে রাখবে হরি ধান
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার আসাননগর গ্রামের মত ঈশ্বর কুণ্ডু কাপালীর পুত্র হরিপদ কাপালী। বিয়ে করেছেন বাল্য বয়সে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সন্তান আসেনি তার ঘরে। স্ত্রী সুনীতি রানী কাপালীকে নিয়ে ভালোই চলছে তার সংসার। বসে আলাপকালে হরিপদ জানান, ‘লেখাপড়া জানিনে, তবে মাঝ বয়সে নাম লেখা শিকিচি’।

প্রশ্ন: কৃষিকাজে যুক্ত হলেন কবে?

হরিপদ: বাল্য বয়স থেকে কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে মাঠে কাজ করতে যেতাম। অসচ্ছল পরিবারে জন্ম হওয়ায় পড়ালেখা হয়ে ওঠেনি। প্রথম জীবনে অনেক কষ্ট করত হয়েছে। বাবার মৃত্যুর পর সংসারের দায়িত্ব এসে পড়ে ঘাড়ে। কিছুদিনের মধ্যে সংসার পৃথক হয়ে যায় তাদের। মাত্র দেড় বিঘা জমি আছে আমার।

প্রশ্ন: এখন কেমন আছেন?
হরিপদ: বয়স অনেক হয়েছে। এখন মরণের জন্য অপেক্ষা। এই সময় আমার সাধনায় হরি ধান মাঠে এসেছে। খুব ভালো লাগছে। তিনি বলেন কত লেখাপড়া জানা মানুষেরে লোকে চেনে না। অথচ আমাকে সবাই চিনছে। এটা আমার বড় শান্তি।
পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক মহিলাকে দেখিয়ে বলে, ওই হচ্ছে আমার স্ত্রী। নাম সুনীতি রাণী কাপালী। আমাদের বুড়োবুড়ির সংসার ভালোই চলছে।

প্রশ্ন: হরিধান কিভাবে পেলেন?

হরিপদ: পাঁচ/ছয় বছর পূর্বে আষাঢ় মাসে ইরি ধানের ক্ষেতে ঘাস পরিষ্কার করতে গিয়ে দেখি চার/পাঁচটি গাছ। সেগুলো অন্যগুলোর চেয়ে মোটা ও বড়। তখন চিন্তা করি গাছ যখন মোটা ও বড় তখন ধানও ভালো হবে। তাই আগাছা হিসেবে কেটে না ফেলে ধানগুলো রেখে দেই। পরে ওই গাছগুলো থেকে ধান বুনি। ভালো ফলন দেখে মানুষেও বীজ চায়। একজন/দুজন করে পর্যায়ক্রমে আর সব এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। জাত না চিনতে পারলেও কম খরচে ফলন ভালো দেখে সবাই চাষ করতে শুরু করেছেন।

প্রশ্ন: এটাতো এখন হরি ধান নামে পরিচিত। নাম কে দিয়েছেন?

হরিপদ: এটা আমার নামেই হয়েছে। তবে এটার নাম দিয়েছে লোকজন। এখন শুনতে আমারও বেশ ভালো লাগে। মনে হচ্ছে এই ধানটা আমি সৃষ্টি করলাম। কৃষি বিভাগের লোকজন বাড়িতে আসছেন। দামি দামি গাড়িতে করে তারা যখন আসছেন, তখন নিজের মধ্যে গর্ববোধ হচ্ছে। মনে হচ্ছে পাড়া গাঁয়ের অশিক্ষিত হরিকে আজ সবাই চিনে ফেলেছেন। তাছাড়া বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকরা বীজের জন্য এসে হরি লোকটি কে তার খোঁজ করছেন। এটাও আমাকে খুব আনন্দ দিচ্ছে।

প্রশ্ন: এই ধান নিয়ে আপনার কোনো পরিকল্পনা আছে?
হরিপদ: আমাদের কোনো ছেলেমেয়ে নেই। এখন মনে হচ্ছে হরি ধানটি আমাদের জীবনের আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। এই ধান আমার মনের সব কষ্ট দূর করে দিয়েছে। ধানটি যে জাতেরই হোক কৃষকের দেওয়া নামটি যেন থাকে। আমার বংশে যেহেতু কেউ নেই তাই হরি ধানের মাধ্যমেই আমি বেঁচে থাকতে চাই।

প্রশ্ন: সরকারের কাছে কি আপনার কিছু চাওয়ার আছে?
হরিপদ: সরকারের কাছে দাবি—এই ধানটির ফলন ভালো এবং উত্পাদন খরচও কম, তাই কৃষকরা যাতে এই ধানের চাষ করে সে ব্যবস্থা যেন সরকার করে। তাদের দেওয়া নামটি অক্ষুণ্ন রেখে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক এই ধান।
সুত্র : Click This Link



মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ২:৫৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


কাপালি নিজের বিবেচনা (কমনসেন্সকে) কাজে লাগিয়ে জাতির জন্য সৌভাগ্য নিয়ে এসেছেন।

কৃষিবিদদের মতামত কি, কিভাবে ইরির ভেতর এই ধানটির সৃস্টি হলো?

২| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:২০

বিজন রয় বলেছেন: ব্লগে ফিরে আসুন, নতুন পোস্ট দিন।

৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:০২

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: উনি কি জিন বিজ্ঞানী যে জিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে হরিধার আবিস্কার করেছেন!? বুঝিনা কী হচ্ছে দেশে................!?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.